রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা কে?

সেবা প্রকাশনী’র কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিংবদন্তি এই লেখকের মৃত্যুতে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনায় আসে সেবা প্রকাশনীর তুমুল জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা ও স্বত্ব প্রসঙ্গটি।

সম্প্রতি ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানা স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমের বলে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। গত ১৩ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।

মাসুদ রানা সিরিজের বইয়ের স্বত্ব নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যে রায়ের মাস চারেক আগে গত আগস্টে না ফেরার দেশে চলে যান জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক শেখ আবদুল হাকিম। আর রায়ের মাস খানেক পর বিদায় নিলেন সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেন।

সেবা প্রকাশনীর ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানা স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমকে দিয়েছিল কপিরাইট অফিস।

২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের কিছু বইয়ের বিষয়ে কপিরাইট অফিসের দেওয়া আদেশ এক মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট।

আদেশে কপিরাইট অফিসের এ সিদ্ধান্ত কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিল আদালত।

কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে লেখক কাজী আনোয়ার হোসেনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দিয়েছিল।

২০২০ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ দাখিল করেন।

তুমুল জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজ ‘মাসুদ রানা’। এই বিখ্যাত সিরিজটির লেখক হিসেবে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। সবাই তাই জানতও। কিন্তু শেখ আবদুল হাকিম নিজেকে এই সিরিজের অধিকাংশ বইয়ের লেখক হিসেবে দাবি করে কপিরাইট আইনে মামলা করেন। দীর্ঘ প্রায় এক বছরের আইনি লড়াই শেষে গত ১৪ জুন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এই মামলায় আবদুল হাকিমের পক্ষে রায় দেয়।

এতে বলা হয়, গোয়েন্দা সিরিজ মাসুদ রানার প্রথম ১১টি বইয়ের পরের ২৬০টি বইয়ের লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন। এর লেখক শেখ আবদুল হাকিম।

কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেছিলেন, শেখ আবদুল হাকিমের দাবিকৃত ২৬০টি মাসুদ রানার বইয়ের মধ্যে একটি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা নেই। তবে সেগুলো তার লেখা এটা তিনি প্রমাণ করেছেন।

জানা গেছে, গত বছরের ২৯ জুলাই শেখ আবদুল হাকিম অভিযোগ করার পরে অভিযোগকারী ও প্রতিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে ওই বছরের ১১ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৪ নভেম্বর শুনানি হয়। আদালতে উভয়পক্ষ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়ে প্রতিপক্ষ লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন। প্রতিপক্ষের ওই লিখিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাদী পুনরায় নিজের পক্ষে লিখিত যুক্তিতর্ক দাখিল করেন। পরে অভিযোগকারীর দাখিলকৃত যুক্তির বিষয়ে প্রতিপক্ষ পুনরায় লিখিত যুক্তিতর্ক পেশ করেন।

জটিল এই বিষয়টির এবং দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিবেচনা করে এর সন্তোষজনক ও সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে অভিযোগের বিষয়ে দেশের বিখ্যাত ও প্রথিতযশা কয়েকজন লেখক ও প্রকাশক এবং সেবা প্রকাশনীর সাবেক ব্যবস্থাপকের লিখিত মতামত চাওয়া হয়। যাদের মধ্যে ছিলেন লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, প্রখ্যাত শিল্পী হাশেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খান। তাদের লিখিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই কপিরাইট অফিস ওই রায় দেয়।

এ প্রসঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন বক্তব্য হচ্ছে : `এ কথা তো আমি বহুবার বলেছি, কোনো দিন গোপন করিনি যে, সবগুলো মাসুদ রানা সিরিজের বই আমি লিখিনি। সাক্ষাৎকারে বলেছি। এখানে অভিযোগ আসার কোনো সুযোগই নেই। আমার ছোট ভাই এবং দুই ছেলেও মাসুদ রানা সিরিজের বই লিখেছে। সিলেটের একজন চিকিৎসক ছিলেন, তিনিও লিখেছেন। আমি তো সবার সামনেই বলেছি, আমার পক্ষে সবগুলো লেখা সম্ভব হচ্ছে না। আমি কাহিনী সাজিয়ে দিচ্ছি, কাহিনীটা আমার।'

বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি বিভিন্ন কাহিনী, যা আমার মাসুদ রানা সিরিজের সঙ্গে মেলে, সে ধরনের কাহিনী আমি নিজেই বাছাই করি। ইংরেজি সাত-আটটা বই থেকে ধারণা নেই যে এই ধরনের কাহিনী হতে পারে। এরপর সেই অনুযায়ী আমি প্লট সাজাই। এরপর আমি বিভিন্ন লেখকদের সঙ্গে আলোচনা করি, এই প্লটে আমি গল্প লেখাতে চাই। কারণ, আমার সময় হবে না। যার যেটা ভালো লাগে তিনি সেটা নেন। আমার ছেলে লেখে। আমার প্রয়াত ছোট ভাই মাহবুব হোসেন লিখত। শেখ আব্দুল হাকিম লিখেছেন। বিচিত্রা সম্পাদক প্রয়াত শাহাদত চৌধুরীও লিখেছেন।’

শেখ আবদুল হাকিম কখনো ‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা হিসেবে দাবি করেননি। তবে দাবি করেছেন, তিনি ‘মাসুদ রানা’ লেখার পর থেকেই এটি জনপ্রিয়াতা পায়। 

শেখ আবদুল হাকিমের বক্তব্য : ‘১৯৬৬-৬৭ সালের দিকে চিত্রশিল্পী হাশেম খান আমার বড় ভাই রহমানকে বই লেখার প্রস্তাব দিলে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। হাশেম খান ‘কুয়াশা’র একটি গল্প বলে দেন। আমি এক রাতে লিখে ফেলি। এটি কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেব পছন্দ করেন। আমার ভাইয়ের মাধ্যমে আমাকে ১০০ টাকা দেওয়া হয়। এরপর আমাকে নিজেই কাহিনী তৈরি করে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই লিখে দিতে বলা হয়। ১৯৭০ সালের দিকে মাসুদ রানা সিরিজের বই আমাকে লিখতে বলা হয়। আমি লেখা শুরু করার পরই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার কপি পর্যন্ত ছাপা হতে থাকে একেকটি বই। তখন আমি রয়ালটি হিসেবে টাকা দাবি করি। দেখা গেল, একেকটি বইয়ের জন্য সাত হাজার টাকা আমার পাওনা। কিন্তু অর্ধেক টাকার বেশি আমাকে দেওয়া হয় না। আবার বলা হলো, রয়ালটি পাব মাত্র চার বছর। এটা কাজী সাহেবের নিজের তৈরি আইন। এটা আর কোথাও নেই।’

এমএ/এপি/

Header Ad
Header Ad

সবগুলো দল প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসব বৈঠক শেষে শনিবার (২৪ মে) রাত সোয়া ১০টার দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সব দলই প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অংশ নেয়া তিনটি দলই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচনের সময়সীমা, সংস্কার প্রক্রিয়া এবং বিচারব্যবস্থা নিয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। বৈঠকে ড. ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব আবারও উল্লেখ করেন বলে জানান প্রেস সচিব।

শফিকুল আলম বলেন, "প্রধান উপদেষ্টার প্রতি দলগুলো আস্থা রেখেছে। কেউ তার পদত্যাগ দাবি করেনি। বরং তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সময় দিতে প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।"

বৈঠকে উপস্থিত দলগুলোর শীর্ষ নেতারা নির্বাচন আয়োজন, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক সংস্কারে ইতিবাচক ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চান, তিনটি দল সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে। সে জায়গা থেকে সরকারের কাছ থেকে এ সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপটা আসলে কবে পাবে?

এর জবাবে প্রেস সচিব বলেন, প্রফেসর ইউনূস বারবার বলেছেন, ইলেকশন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে। ... এই জুন, ৩০ তারিখটা একটা সুনির্দিষ্ট ডেট। উনি বলছেন যে, এর বাইরে যাবে না। উনি এক কথার মানুষ।

এর আগে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন বিএনপির চার নেতা। এতে নেতৃত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

প্রতিনিধি দলে থাকা অন্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সময় জামায়াতের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। তারা হলেন- জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের সঙ্গেও বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। অন্য সদস্যরা হলেন, দলটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা।

Header Ad
Header Ad

ঢাবি উপাচার্যের দাপ্তরিক ফোন হ্যাকড, বিকাশে চাওয়া হচ্ছে টাকা

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের দাপ্তরিক মোবাইল নম্বর হ্যাক করে হ্যাকাররা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছে বিকাশে টাকা দাবি করেছে। শনিবার (২৪ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমেদ।

তিনি জানান, হ্যাকিংয়ের বিষয়টি জানার পরপরই নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)কে অবহিত করা হয়েছে।

হ্যাক হওয়া নম্বরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সময় থেকে দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পরে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল এবং বর্তমানে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান একই নম্বরটি দাপ্তরিক যোগাযোগে ব্যবহার করছিলেন।

শনিবার দুপুরে হ্যাকার ওই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একাধিক ব্যক্তিকে ‘জরুরি প্রয়োজন’ উল্লেখ করে ১৫ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। বার্তায় বলা হয়, “বিকাশে ১৫ হাজার টাকা হবে? আমার আর্জেন্ট লাগবে। এখন পাঠিয়ে দেওয়া যাবে?” আরেকটি বার্তায় লেখা ছিল, “আমি কালকে ব্যাংক থেকে তুলে দিয়ে দিব, সমস্যা নেই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদকসহ বেশ কয়েকজন এই ধরনের বার্তা পেয়েছেন। তবে অনেকে সন্দেহজনক বার্তা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

প্রক্টর বলেন, “এটি একটি গুরুতর বিষয়। উপাচার্য স্যারের দাপ্তরিক নম্বর হ্যাক করে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা আইনি সহায়তা চেয়েছি। নম্বরটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে উপাচার্যের ব্যক্তিগত নম্বর নিরাপদ আছে।”

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিলের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসায় নানা ভোগান্তি আর হতাশ হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভুক্তভোগী ডিজিটাল বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের গড়মিলের নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু কতিপয় কিছু মিটার রিডারদের এই ভূতুড়ে বিল ও অনিয়ম বন্ধে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি অসংখ্য ভুক্তভোগী গ্রাহক।

শুধু তাই নয়, বিল সংশোধন করতে গেলেও পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তি আর বিলম্বনায় । গ্রাহকদের অভিযোগ সময়ের বিল সময়ে না করে মিটার রিডিং না দেখেই বিল করছে মিটার রিডার। এছাড়াও গ্রাহকদের থেকে বাড়তি সুবিধাও নেন রিডাররা। ফলে বছরের পর বছর এমন ভূতুড়ে বিল দিচ্ছে তারা।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিল ও মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে মিল না থাকায় তার প্রতিকার চেয়ে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামের ভুক্তভোগী আলতাফ হোসেন নামে এক বিদ্যুৎ গ্রাহক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আলতাফ হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (২৪ মে) দিনব্যাপি উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগীসহ অন্যান্য গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও মিটার রিডিং সরেজমিনে দেখে টাঙ্গাইলের দুদক। পরে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের গড়মিলের সত্যতা পান তারা।

অভিযোগকারী আলতাফ হোসেন বলেন, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলের মিল নেই। প্রতি মাসেই অতিরিক্ত বিলের ঘানি টানতে হচ্ছে। মিটার রিডিংম্যান কোমল ও জাহিদকে বললেও তারা মিটার না দেখেই ভুয়া বিল করে। এনিয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি। পরে বাধ্য হয়ে ভূতুড়ে বিলের প্রতিকার চেয়ে দুদকে অভিযোগ করি।

এসময় আরও শতাধিক গ্রাহক তাদের এমন সমস্যা নিয়ে দুদকের কাছে ভূতুড়ে বিলের কাগজ নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ তুলে ধরে। ভুক্তভোগীরা বলেন, কোমল ও জাহিদ মিটারগুলো দেখভালের দায়িত্বে। তাদের টাকা দিলে বিল কমিয়ে দেয় আর টাকা না দিলে পরের মাসে অতিরিক্ত বিল করে। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার ব্যাপারে কথা বলেও তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

একই গ্রামের রায়হান মাস্টার নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিলের কয়েকশো ইউনিটের গড়মিল রয়েছে। প্রতিমাসেই অতিরিক্ত বিল প্রদান করে আসছি। মিটার রিডারদের বার বার মিটার দেখে বিল করতে বললেও তারা মিটার না দেখেই মনগড়া অতিরিক্ত ইউনিট বেশি লিখে বিল করে। শুধু আমি একা নই, জিগাতলা গ্রামের প্রতিটা ডিজিটাল মিটারের বিদ্যুৎ গ্রাহক এমন ভূতুড়ে বিলের শিকার।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. নুর আলম বলেন, ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূঞাপুরের জিগাতলা গ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে শনিবার দিনব্যাপি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মিটার রিডিং ও বিদ্যুৎ বিলের কাগজের গড়মিলের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিউবো) খন্দকার কামরুজ্জামান বলেন, একজন গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা দুদক অভিযানে আসে। যেগুলো মিটারে সমস্যা সেগুলো পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে এবং মিটার পাঠক বা রিডারের বিরুদ্ধে কোনো বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সঠিকভাবে পেলে অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের তথ্যমতে ভূঞাপুরে প্রায় ৫৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। তারমধ্যে প্রিপেইড মিটার রয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার এবং ডিজিটাল মিটার (পুরাতন) রয়েছে প্রায় ১৯ হাজার। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার আংশিক কিছু এলাকাজুড়ে ভূঞাপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণের আওতায় এই ৪টি উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সবগুলো দল প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন: প্রেস সচিব
ঢাবি উপাচার্যের দাপ্তরিক ফোন হ্যাকড, বিকাশে চাওয়া হচ্ছে টাকা
টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক
প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি
একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বিয়ের পর আমার ভাগ্য খুলে গেছে: মেহজাবীন
দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত
পুলিশকে হুমকি দিয়েছে নুর: পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন
বিরামপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার
সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ জারি
সালমানের বাংলোতে ঢুকতে লাগবে পরিচয়পত্র, ছাড় পাবেন না তারকারাও
ড. ইউনূস জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করছেন: রুমিন ফারহানা
রোববার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সর্বদলীয় বৈঠক
লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার ১৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ (ভিডিও)
বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ, রাগে ঘটককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: আমীর খসরু
বলিউড অভিনেতা মুকুল দেব মারা গেছেন
ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিল
বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ও পরিবারের ৩৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ
ঈদে আসছে নতুন নোট, থাকছেনা কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর