বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে

মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির পাঁচ দশকের পরও যদি এ রকম একটি প্রশ্ন তুলতে দেখি— এ সময়ের তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে আর কী গ্রহণ করতে পারে? তাহলে বুঝতে হবে এর প্রাসঙ্গিকতা এখন আর স্বতঃসিদ্ধ বলে বিবেচিত নয়, যেন এর যা দেওয়ার, তা অনেক আগেই নেওয়া হয়ে গেছে, এখন এই গৌরবের ইতিহাসটাকে জাদুঘরে রেখে দিলেই চলে। একাত্তর নিয়ে কথা বললে এখনো অনেক তরুণ শোনে, কিন্তু সেই শোনায় তেমন মনোযোগ থাকে না, অথবা থাকলেও অতীতচারী না হওয়ার একটা সিদ্ধান্ত থেকে তারা বলে, অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে ভবিষ্যতের কথা ভাবা উচিত।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, এর গত কুড়ি বছরের অর্থনৈতিক উন্নতি চমকপ্রদ। সেজন্যই কি না জানি না, সবাই ব্যস্ত ভবিষ্যতের দিকে চোখ মেলে রাখতে। যদি সত্যি সত্যি তা–ই হতো যে আমরা অতি দ্রুত ভবিষ্যতের রাস্তায় এগোচ্ছি এবং এক একটা বিশাল অর্জনের আর উল্লম্ফনের চিহ্নরেখা অতিক্রম করে যাচ্ছি, তাহলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু ভবিষ্যৎবিহারী আমরাই তো সাম্প্রদায়িকতা আর ধর্মীয় উগ্রতার মধ্যযুগে একটা পা রাখতে চিন্তাভাবনায় অনগ্রসর অতীতেই পড়ে থাকতে ব্যগ্র। তাহলে? শুধু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলাটাই যদি অতীতচারিতার উদাহরণ হয়ে পরিত্যাজ্য হয়, মনের মধ্যে মধ্যযুগীয় অন্ধকার নিয়ে চলা মানুষেরা কেন তাহলে পরিত্যাজ্য হন না? কেন তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে?

যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তাদের এক বিশাল অংশ এখন পরলোকে; আর ৩০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা বলতে কেউ বেঁচে থাকবেন না। ফলে এই ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে কাউকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যোদ্ধারা না থাকলেও যুদ্ধের স্মৃতি থাকে। এমনকি প্রথম বা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মতো মহা ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতিও আছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মনে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের মতো এক বিশাল সৃষ্টিযুদ্ধের স্মৃতি কেন হাতড়ে হাতড়ে খুঁজতে হবে? কেন তা বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের মনে খোদাই হয়ে থাকবে না? আফ্রিকায় ১৯৬০–এর দশকে স্বাধীন হওয়া অনেক দেশে রাজনীতি হারিয়ে গেছে, গণতন্ত্র উধাও হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন অথবা দেনদরবার করেছেন, সে রকম মানুষের কথা স্কুলের শিশুরাও জানে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বাতিল করে নির্বাচনে তাকে জয়ী ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসানোর দাবি তুলেছেন সাবেক হয়ে যাওয়া এক প্রেসিডেন্ট। অথচ তার দলের মানুষজনই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ২৩৩ বছরের পুরোনো সংবিধান মাথায় তুলে রাখতে হবে। বাতিলের দাবি অরাজকতার নামান্তর, একে বরং আমাদের দেশের ৫১ বছরের পুরোনো মুক্তিযুদ্ধকে নিজের মতো করে লিখে ফেললেও কোনো শক্তিশালী দলনেতাকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ করি না, মাথায় তুলে রাখি বরং। আর কোনো শক্তিশালী নেতা সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে এর চরিত্র বদলে ফেললেও তাকে আমরা নায়কের আসনে বসাই।

মুক্তিযুদ্ধ একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছে, একটি পতাকা দিয়েছে। এর সঙ্গে আরও দিয়েছে কিছু আদর্শ, কিছু মূল্যবোধ, কিছু শিক্ষা। এর সবই তো সব সময় সব প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে, প্রতিপালন করতে হবে, চর্চা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা কী নিতে পারি—প্রশ্নটি ৫১ বছর আগে করা হলে যেমন বলা যেত, ধর্ম, বর্ণ, বিত্ত, ক্ষুদ্র-বৃহৎ জাতিসত্তানির্বিশেষে সব মানুষের ঐক্য, মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িকতা, ন্যায্যতা, সব ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা, বৈষম্যহীনতা, সব মানুষের সমানাধিকার—এখনো সেই একই উত্তরই তো দেওয়া হবে। এর কোনোটিই তো পরিত্যাজ্য নয়। তাহলে কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা উঠলে অতীতচারিতার প্রসঙ্গটি আসে, কেন তা ভবিষ্যতের পথনির্দেশক বলে অভিনন্দিত হয় না?

এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হওয়াটা জরুরি, তা না হলে এ সময়ে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে—এটি একটি রুটিন প্রশ্ন হয়েই থেকে যাবে, জরুরি কোনো জিজ্ঞাসা হয়ে আমাদের সক্রিয়তার মাঝখানে জায়গা করে নেবে না। মোটা দাগে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্বাধীনতার পর কয়েক বছর যে আবেগ, উত্তেজনা, আকাঙ্ক্ষা আর স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল, তা অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার মূলে আছে রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করেছে বাঙালির আড়াই দশকের প্রতিবাদী, উপনিবেশবিরোধী, স্বাধিকারকামী ও জনমুখী রাজনীতি। এই রাজনীতির ভিত গড়ে দিয়েছিল গণমানুষের অধিকার আদায়ের ও রক্ষার অঙ্গীকার, অর্থনৈতিক মুক্তির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালির চিরকালের ঐতিহ্যচিন্তায় আস্থা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর গণমুখী শিক্ষার দাবি। এই রাজনীতিতে প্রায় সবাই আস্থা রেখেছিলেন।

এরা ছিলেন উদারপন্থী, ওদের বিশ্বাস ছিল সবার অন্তর্ভুক্তিতে। কিন্তু এর পাশাপাশি রাজনীতির আরেকটি ধারা ছিল, যার চরিত্র ছিল অনুদার ও রক্ষণশীল। দুঃখজনক হলেও সত্য, মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ঐক্যের আড়ালে সেই বিভাজন কার্যকর ছিল। রক্ষণশীল অংশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, স্বজাতি হত্যায় পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে। যুদ্ধটা আরও বছর তিনেক চললে এরা একটা বড় শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে যেত।

মুক্তিযুদ্ধের পরও সেই মনোভাব হারিয়ে যায়নি, আড়ালে চলে গিয়েছিল শুধু। এই ৫১ বছরে তারা সংগঠিত হয়েছে, শক্তি সঞ্চয় করেছে, রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। সবচেয়ে দুঃখজনক যা, অসংখ্য তরুণের মন তারা দখল করে নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো গর্ববোধ করে না, নিজেদের গৌরবের ইতিহাস যারা বিশ্বাস করে না, এই পক্ষটিতে এখন পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীও আছেন। ওদের বৃদ্ধি ঘটেছে উদারবাদী পক্ষটির নিষ্ক্রিয়তা, আত্মতুষ্টি আর নানান স্ববিরোধিতার জন্য।

এক পক্ষের সক্রিয়তা, অন্য পক্ষের আত্মতৃপ্তির ঘুমে যাওয়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে ইতিহাসে ঠাঁই নিতে যাচ্ছে, তার একটি উদাহরণ শুধু দিই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে যে কথাটি একসময় আমরা বলতাম এবং ধরে নিতাম, এটি কোনো বিমূর্ত চিন্তা নয়, বরং কিছু নির্দিষ্ট ভাবাদর্শের প্রতিফলনে তৈরি উদ্দীপক একটি শক্তি, এখন এক বিতর্কিত শব্দ। একটি পক্ষ এর অতিব্যবহার করে একে একটা অতিশয়োক্তির পর্যায়ে নিয়ে গেল, অন্য পক্ষ একে মশকরার একটা হাতিয়ার হিসেবে নিল।

এখন রক্ষণশীলেরা ‘চেতনাপন্থী’ কথাটিকে একটা গালির মতো করে বলেন। অথচ এটি হওয়ার কথা ছিল এক ইতিবাচক, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত এক ইচ্ছাশক্তি, যা দিয়ে দেশটাকে আমরা সব মানুষের জন্য তৈরি করে দেখতাম, যে দেশে আমাদের প্রত্যাশাগুলো বাস্তবে রূপ নিত। যেন এ দুই দলের মধ্যে ‘চেতনাপন্থী’ আর ‘চেতনাবিরোধী’ বলে চালাচালির গালি হিসেবে চেতনার অবস্থান।

মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা এর আদর্শকে ধরে রাখিনি এবং কোনো কোনো সময় এর বিপরীতে হেঁটেছি বলে এই আদর্শকে অস্বীকার করা যায় না। এর চেতনাও তারিখসম্বলিত হয়ে বাতিল হয়ে যায় না। যা দরকার, তা হচ্ছে এদের পুনরুদ্ধার।

এই পুনরুদ্ধারের কাজ কে করবে, এটিই হবে বড় কথা। আমি আশাবাদী বলে বিশ্বাস করি, এটি সম্ভব। এক সময় মুক্তিযুদ্ধ আমাদের পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জানাবে, আশাবাদী হওয়ার প্রেরণা দেবে। একাত্তরে কোনো কোনো দিন গেছে সবার জীবনেই যে দিনটিতে শুধু বেঁচে থাকাটাই যেন এক অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে মনে হয়েছে। সেসব দিনও মুক্তিযুদ্ধ অর্থবহ করে দিয়েছে। এখন যে কঠিন সময় আমরা পার করছি, যে আত্মবিধ্বংসী আয়োজন দেখছি চারদিকে, যে আত্মঘাতী যুদ্ধের হুংকার শুনছি, সেসবও দীর্ঘস্থায়ী হবে না, যদি আমরা মুক্তিযুদ্ধে একবার ফিরে যাই।

অনেকেই হয়তো বলবেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের এ আশাবাদ সময়নির্দিষ্ট, এখন সেটি অচল। কিন্তু আমি এখনো বিশ্বাস করি,এই আশাবাদের ভিত্তি আছে, আর এ ভিত্তিটা কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ, যারা এর শক্তি জোগান দিয়ে চলেছেন। তারা রাজনীতি করেন না, তাঁরা শুধু একটা সহনীয় বর্তমান এবং সুন্দর আগামী চান। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কী দিতে পারে, এই প্রশ্ন করলে একটা উত্তর হতে পারে, এই পরিশ্রমী মানুষগুলোর সততা ও আশাবাদ।

মুক্তিযুদ্ধ পুরোনো হবে না, জাদুঘরেও যাবে না। এর যা দেওয়ার, তা–ও তারিখনির্দিষ্ট হয়ে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় পক্ষ-বিপক্ষ ছিল, এখনো রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষ আছে, কিন্তু বাংলাদেশ যতই এগোবে, মানুষ দেখবে, নিজেদের ইতিহাস সে আস্থা রেখে চললে চলাটা আমাদের সহজ হবে।

এ মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা দেশপ্রেমের প্রয়োজনীয়তার কথাটা নিতে পারি, শহর-গ্রাম, এলিট-দলিত বিভাজনের অসারতার বিষয়টি শিখতে পারি। তরুণদের গড়ার শক্তিতে বিশ্বাস রাখতে পারি। ঐক্য ও উদার মানবিকতার পাঠগুলো নিতে পারি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধ আগেও দিয়েছে, এখনো দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, আমরা কি নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নাকি বিভাজনের রাজনীতির চূড়ান্তটা দেখার জন্য আমরা দুই ভাগ হয়ে দুই দিকে বসে আছি? বিভাজনেই কি মুক্তি, নাকি ঐক্যে, যা একাত্তরে আমাদের এক কঠিন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রেরণা দিয়েছিল? উত্তরটাও খুব দূরে নেই: উত্তরটা আসে দেশপ্রেমের রাস্তা ধরে। সেটি থাকলে রাস্তাটা আর বন্ধুর থাকে না।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: লেখক ও শিক্ষাবিদ।

এসএন

Header Ad
Header Ad

ভারতের উচিত বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা: মাহফুজ আলম

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উচিত বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান এবং ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া। এটি দিয়েই শুরু করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে নতুন বাংলাদেশের ভিত রচনা করা হলে তা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এসব কথা লেখেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ভারতের উচিত পোস্ট-৭৫ প্লেবুক পাল্টে বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা। এটা ৭৫-পরবর্তী পরিস্থিতি নয়। জুলাই বিপ্লব ছিল একটি গণতান্ত্রিক, প্রজন্মভিত্তিক ও দায়িত্বশীল সংগ্রাম। আর এই সংগ্রাম চলবে দীর্ঘ সময় ধরে।

তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশি জনগণ আগের মতো নেই, তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও মর্যাদাবান। তারা মরার আগ পর্যন্ত তাদের মর্যাদার জন্য লড়াই করবে। বাংলার এই অংশে ভারতপ্রেমী বা ভারতীয় মিত্ররা ভাবছে যে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাবে এবং জুলাই বিপ্লব এবং ফ্যাসিবাদীদের নৃশংসতাকে এড়িয়ে গেলে তাদের কিছুই হবে না। এটা একটা ভুল ধারণা। মানুষ সব দেখছে!

ভারতীয় সংস্থা জুলাই বিপ্লবকে কিছু জঙ্গি, হিন্দু-বিরোধী, এবং ইসলামপন্থীদের ক্ষমতা দখল হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু তাদের অপপ্রচার ও উসকানি ব্যর্থ হচ্ছে।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম লেখেন, দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা! স্বদেশ না, শাহাদাত!—এই স্লোগানগুলো বাংলাদেশকে একক অঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এদেশের প্রতিটি কোণে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

তিনি সতর্ক করে লেখেন, আর ভারত যেন এই ঐক্যবদ্ধ, মর্যাদাবান ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার শত্রু না করে।

দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশের জনগণ বিনা বাধায় গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করছে-উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্য এসেছে... মিথ্যা ধ্বংস হবে। চিরকাল!

উপদেষ্টা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে লেখেন, ৭১-এর পর রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম, কিন্তু এবার নয়! আল্লাহ ভরসা!

Header Ad
Header Ad

‘শেখ হাসিনার আমলের চেয়ে হিন্দুরা এখন বেশি নিরাপদে আছে’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের চেয়ে হিন্দুরা এখন বেশি নিরাপদে আছেন বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা বেশ সুরক্ষিত। তারা শেখ হাসিনার শাসনামলের চেয়ে এখন বেশি নিরাপদে আছেন। আমরা সব স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। আমরা লিঙ্গ, জাতি, বর্ণ বা ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলাদেশির মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছি।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত হামলার বিষয়ে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে আসছে ভারত সরকার। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে বিভিন্ন খবরও প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বরাবরই ভারতের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সরকার বলছে, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর অপতথ্য বা ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আমরা এসব স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। আমরা লিঙ্গ, জাতি, বর্ণ বা ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলাদেশির মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছি।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। তবে সেই সময় কোনো গণমাধ্যমে একটি রিপোর্টও প্রকাশিত হয়নি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সময় এটা ঘটেছিল বলে ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমে একটি রিপোর্টও প্রকাশিত হয়নি। কোনো প্রবাসী সংগঠন এ নিয়ে কথা বলেনি এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও এ বিষয়টি কেউ উত্থাপন করেনি।

ইসকনের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে শফিকুল আলম বলেন, সরকার বরং ওই ধর্মীয় সংগঠনের কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য সেনা পাঠিয়েছিল। আমরা নিশ্চিত করেছি যে হিন্দুরা দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারে। আমরা কি ইসকনকে নিষিদ্ধ করেছি? আমরা বরং তাদের মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য সেনা পাঠিয়েছি।

Header Ad
Header Ad

চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বেদান্ত প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের উপযুক্ত আইনি সুযোগ দিতে হবে এবং মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সঙ্গে আচরণ করা প্রয়োজন বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানানো হয়।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল এসব কথা বলেন। এছাড়া ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এদিনের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে কথিত সহিংসতার বিষয়ে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগের সমাধান করার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চান।

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমরা প্রতিটি সরকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কাজ করি, যাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে – আমরা স্পষ্ট করেছি- মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান থাকা দরকার; ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। যেকোনও ধরনের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত এবং যে কোনও ধরনের ক্র্যাকডাউন – এমনকি ক্র্যাকডাউন না হলেও – সকল দেশের সরকারকে আইনের শাসনকে সম্মান করতে হবে এবং এর অংশ হিসাবে মৌলিক মানবাধিকারকেও সম্মান করতে হবে। আর এই বিষয়ে আমরা গুরুত্বারোপ চালিয়ে যাব।

পরে ওই প্রশ্নকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশে ইসকনের নেতা। এছাড়াও ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রস্তাবিত পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডও ইসকনের সদস্য। চিন্ময় দাসকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কারাগারে রাখা হয়েছে এবং বাংলাদেশের কোনও আইনজীবী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাঁড়াতে রাজি নয়, কারণ তার আইনজীবীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা কি কোনও ব্যবস্থা নেবেন?

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমার কাছে এই মামলার কোনও বিবরণ নেই। কিন্তু আবারও বলব, আমরা জোর দিয়ে যাচ্ছি এবং ইতোমধ্যেই জোর দিয়েছি, যারা আটক আছে তাদের পক্ষেও উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব করতে দিতে হবে এবং মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সাথে আচরণ করা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতের উচিত বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা: মাহফুজ আলম
‘শেখ হাসিনার আমলের চেয়ে হিন্দুরা এখন বেশি নিরাপদে আছে’
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
বাসায় চুরি, পুলিশের দ্বারস্থ ওমর সানী
ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
শীত জেঁকে বসেছে দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায়
আবারও সাজেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ
১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট জয়
বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়