বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ঠেকানো যাচ্ছে না ঋণের নামে অর্থপাচার

লাগামহীন হয়ে পড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সুযোগ নিলেও ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করছে না। এমনকি কেউ কেউ ভুয়া কাগজে নামে-বেনামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে পাচার করছেন। খেলাপি ঋণ আদায়ে গত ৫০ বছরে প্রায় সোয়া দুই লাখের মতো মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অর্থের পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে সোয়া দুই লাখ মামলা। আর অর্থ আদায় হয়েছে মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা।

অথচ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, ‘আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না। প্রায় চার বছর চলে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কমছে না খেলাপির সংখ্যা।‘

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকিংখাতে দুর্বল নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা টাকা তুলে পাচার করছে। এতে অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলছে। রক্তক্ষরণ আরও হবে। কমে যাবে বিনিয়োগ।

নামে বেনামে ভুয়া কাগজে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে বিদেশে পাচার করা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক ধরতে পারছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রধান মাসুদ বিশ্বাসও বলেছেন, ইনভয়েসিং ও আন্ডার ভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে। তবে কী পরিমাণ তা বলা যাবে না। গোয়েন্দা সংস্থা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা তুলে বিদেশে পাচার করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাচ্ছে না। ফলে আইনের ফাঁকে তারা টাকা পাচার করার পর ধরা পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মামলা করার পর তা আদালতে চলে যাচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেংকারির পর বিসমিল্লাহ গ্রুপ, পিকে হালদারের অর্থ লুটের পর জানাজানি হচ্ছে। কিন্তু তাদের ‍বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হওয়ায় ব্যাংকের টাকা লুট করার প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। এ নিয়ে দেশে হইচই পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার (২৬ নভেম্বর) মন্ত্রিসভা বৈঠকে খেলাপি ঋণের বিষয়ে বাস্তব চিত্র জানাতে সংশ্লিদের নির্দেশ দেন। এর পরই বাংলাদেশ ব্যাংক নড়েচড়ে বসেছে।

গত ২৭ নভেম্বর দুদকের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঋণখেলাপিরা আইনের চেয়ে শক্তিশালী নয়। তাহলে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছে। আপনারা ধরছেন না কেন? এক টাকাও খেলাপি বাড়বে না। অর্থমন্ত্রীর সেই বক্তব্য জানার জন্য মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

খেলাপি ঋণের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জিএম আবুল কালাম আজাদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ ক্লাসিফাইড (খেলাপি) ঋণ বেড়েছে, এটা সত্য। তবে খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। কারণ জনগণের আমানত থেকেই ঋণ দেওয়া হয়। খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্তক আছে, কঠোর পথে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তার গাইড লাইন মোতাবেক কাজ করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন ও সুপারভিশনে আরও বেশি জোর দিয়েছে।’

হুহু করে বাড়ছে খেলাপি, মামলা করেও আদায় হচ্ছে না। এর কারণ কী জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘বড় বড় খেলাপিরা কয়েক হাজার কোটি টাকা করে তুলে নিচ্ছে। মামলা হলেও তারা ফেরত দিচ্ছে না। কারণ ১ লাখ ৪৫ হাজার মামলায় মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে অর্থাৎ প্রতি মামলায় ১৪ হাজার ১১৯ টাকা। এটা ছোট ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। কিন্তু রাঘববোয়ালদের হাজার হাজার কোটি টাকার কিছুই হচ্ছে না। মানে যারা বড় খেলাপি তাদের ধরা হচ্ছে না। এটা খুবই ভয়াবহ চিত্র।

তিনি বলেন, তাদের মনে ঢুকে গেছে ব্যাংকের ঋণ নিলে ফেরত না দিলেও চলে। এই সংস্কৃতি খেলাপিদের মধ্যে ঢুকে গেছে। তাই ব্যাংক বাঁচাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই খেলাপি ঋণ কমবে। জনগণের আমানত হেফাজতে থাকবে।

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, খেলাপি ঋণ এমনিতেই ব্যাংক খাতের জন্য সমস্যা। তাই যারা ঋণ পরিশোধ করছে না তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অ্যাকশনে যেতে হবে। এর সঙ্গে কোনো ব্যাংকার, পরিচালক জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির ক্ষতি তো হচ্ছে, রক্তক্ষরণ আরও হবে। বিনিয়োগে ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু রাজনৈতিকভাবে অনেকে ব্যাংকের টাকা তুলে নিচ্ছে, তাই খেলাপিদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে রাজনৈতিকভাবে। কারণ ব্যাংকের টাকা মানে জনগণের আমানত লুণ্ঠন করছে তারা।’

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, করোনার সময় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে তৈরি পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য খাতের বড় বড় শীর্ষ ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের সুযোগ দিয়েছে। তারপরও খেলাপি ঋণ কমছে না। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ১৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। কিন্তু ব্যাংক মালিক থেকে শুরু করে এক শ্রেণির সুবিধাবাদি ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনেকে ঋণ ফেরত দিচ্ছে না। ফলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এরমধ্যে আদায় অযোগ্য (ব্যাড লোন) ঋণ হচ্ছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা বা প্রায় আট শতাংশ। গত তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রতি মামলায় আদায় ১৪ হাজার টাকা!

বিভিন্নভাবে তাগিত দিয়েও অনেকে ঋণ ফেরত দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলাও করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে হয়। নিম্নমান বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কু-ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক প্রভিশনও রাখতে পারছে না। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রভিশন ঘাটতি হয়েছে ১৩ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। সাধারণত ঋণের মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার পর মামলা মোকদ্দমা করলেও ৫ বছরে কোনো ঋণ আদায় করতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এগুলো ব্যাড ঋণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই ঋণের বেশির ভাগই আদায় অযোগ্য হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে (৩০ জুন) দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক খেলাপি ‍আদায়ে মামলা করেছে ২ লাখ ১৪ হাজারের বেশি। এসব মামলায় দাবিকৃত অর্থের পরিমান হচ্ছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ৬ মাস আগে অর্থাৎ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মামলা ছিলো প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার। এর বিপরীতে দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো। ছয় মাস পর পর খেলাপি মামলার প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা এখনো প্রকাশ করেনি।

তবে বিভিন্ন সূত্রে মতে, আগামী ডিসেম্বরে মামলা সোয়া ২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। আর দাবি করা অর্থের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। কারণ মামলা করলেও ঋণ আদায় হচ্ছে না। গত জুন পর্যন্ত নিষ্পত্তি করা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৫টি মামলায় অর্থ আদায়ের দাবির পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা। তাতে আদায় হয়েছে মাত্র ২০ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মামলাপ্রতি ১৪ হাজার ১১৯ টাকা। আর বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৬৯ হাজার ৩৬৯টি। তাতে দাবির পরিমাণ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এতে অর্থ আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অর্থঋণ আদালতে মামলা ছিল প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার। দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এ সময় পর্যন্ত নিষ্পত্তি করা মামলা ছিল প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার। দাবি করা অর্থের পরিমাণ ৭০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আদায় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। আর বিচারাধীন ৬৮ হাজার মামলার মধ্যে দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। তাতে অর্থ আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকে আমানত জমা হয়েছে ১৬ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এই আমানত থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা বা মোট আমানতের ৮৩ শতাংশ। এখানে নিয়ম মানা হলেও আদায়ে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।

সর্বশেষ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ঋণস্থিতি হচ্ছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গ্রাহকরা ঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ করছে না। ফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ঋণ পরিশোধ না করায় শুধু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষকদের জেল খাটানো হলেও রাঘববোয়ালরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি বা ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। এই খেলাপি ঋণের ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাড বা আদায় অযোগ্য হয়ে গেছে।

এনএইচবি/এসএন 

 

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ