শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

যে কৌশলে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকা এস আলমের পকেটে

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকগুলোর যেন চিরচেনা রূপ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একের পর এক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সামনে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি সময়ে সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। যার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ।

এবার বেরিয়ে এসেছে কীভাবে সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে মানা হয়নি কোনো নিয়মকানুন।

ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।

ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যারা দায়ী, তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এস আলম গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়েছেন। এই পদে তার নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন এস আলম গ্রুপ ও যাদের নামে ঋণ বের হয়েছে, তাদের সব সম্পদ জব্দ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে ঋণের এক-তৃতীয়াংশ টাকাও আদায় হবে কি না, সন্দেহ আছে বলেও জানান তিনি।

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ধীরে ধীরে শেয়ার ছেড়ে দেয় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), দুবাই ইসলামী ব্যাংক, আল-রাজি গ্রুপ, কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সিসহ বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্থানীয় জামায়াত–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা, ইসলামিক সেন্টারসহ অনেককে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দিতে হয়।

আটকা পড়ে আছে যেসব ঋণ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগে বিদেশিদের শেয়ার ছিল ৫২ শতাংশের মতো, যা এখন ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ যখন ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন এটিতে এস আলমের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছিল তিন হাজার ছয় কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক ছিলেন তিনি। তখন ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা আর আমানত ছিল ৬৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। কর্মকর্তা ছিল ১০ হাজারের কম।

নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আমানত বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন শাখা খুলে পটিয়ার লোকদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ফলে সারা দেশে ব্যাংকটির শাখা এখন ৩৯৫টি। এর বাইরে রয়েছে ২৫০টি উপশাখা। ২০২৩ সাল শেষে ইসলামী ব্যাংকে আমানত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা ও ঋণ ১ লাখ ৬০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের চেয়ে বেশি টাকা ঋণ হিসেবে বের করে দিয়েছে ব্যাংকটি। বাড়তি এই টাকা এসেছে মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।

ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। ফলে একটি গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ফান্ডেড ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ও নন–ফান্ডেড ঋণ ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা ঋণ দিতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটি গ্রুপ ঋণ পেতে পারে ২ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংকঋণের টাকা পাচার করতে তাই এস আলম গ্রুপ একাধিক গ্রুপ তৈরি করেছে, ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে।

প্রাপ্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এস আলম নাম যুক্ত আছে ইসলামী ব্যাংক থেকে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণই ১৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর সাইফুল আলমের মেয়ের স্বামী বেলাল আহমেদের ইউনিটেক্সের ঋণ ৪৫৪ কোটি টাকা। এর বাইরে এস আলম–সংশ্লিষ্ট ঋণের পরিমাণ ৩২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এসব ঋণ ছড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রাজধানীর বিভিন্ন শাখায়। এছাড়া রাজশাহীর নাবিল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সৎভাবে ব্যবসা করি। অন্য ব্যাংকে আমার ঋণে কোনো সমস্যা নেই। ইসলামী ব্যাংকের ঋণে আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে আমার নামে যেসব ঋণ আছে, আমি তা শোধ করে দেব। বছরে আমার ৩০ হাজার কোটি টাকার ভোগ্যপণ্য কেনাবেচা হয়। আমার গ্রুপে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে। ব্যাংকের সার্বিক বিষয়ে জানতে তাকে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে ফোন করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখন ব্যাংকের কেউ ফোন ধরছেন না। আমি কিছু জানতেও পারছি না। আমি অনলাইনে সভায় অংশ নিই। মতামত আমি দিয়ে থাকি। সব সময় তা গ্রহণ হয়নি। ঋণ কে কত টাকা নিয়েছে, এ নিয়ে আমি কিছুই জানি না।

গত সোমবার ইসলামী ব্যাংকের ‘বৈষম্যবিরোধী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যাংকার সমাজের’ সমন্বয়ক আবু ওয়ালিদ চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। ১০ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের অনেকের যোগ্যতা নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাংক থেকে এখনো নানাভাবে অর্থ বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এস আলম গ্রুপ। পাশাপাশি গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ঋণের নথিপত্র সরানো ও তথ্য-উপাত্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিছু কর্মকর্তা। সে কারণে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন এবং এস আলমকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান আবু ওয়ালিদ চৌধুরী।

আরো বলা হয়, পটিয়া এলাকার ব্যাংকারদের পাশাপাশি গতকালও ব্যাংকে যাননি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ ও আলতাফ হুসাইন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলমপন্থী হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন অন্য কর্মকর্তারা।

ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধানদের প্রায় সবাই চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা কিংবা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বে ছিলেন। এমনকি সাইফুল আলম তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ব্যাংকটির ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে টাকা না থাকার পরও সেগুলো কীভাবে চলছে তা জানতে চাইলে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, এই সবকিছু এখন নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর। তারা যে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই চলবে।

Header Ad

গাজায় ১ দিনে নিহত ৬১, মোট নিহত ছাড়াল ৪২ হাজার ১০০

ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন ৬১ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৩১ জন। এতে গত এক বছরে অঞ্চলটিতে মোট নিহতের সংখ্যা ৪২ হাজার ১২৬ জনে এবং আহতের সংখ্যা ৯৮ হাজার ১১৭ জনে পৌঁছেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এসব তথ্য। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত গাজা উপত্যকার অন্তত ৪টি এলাকায় আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা এবং রকেট।

“নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ অনেক মৃতদেহ এবং আহত ব্যক্তি এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছে। পথ-ঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামের অভাব থাকার কারণে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না," বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে আসে তারা।

এই জিম্মিদের উদ্ধার এবং হামাসকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করতে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযান থামানো এবং হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতার জন্য গত এক বছরে ব্যাপকভাবে চেষ্টা করেছে মধ্যস্থতাকারী ৩ দেশ কাতার, মিসর. যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু সেসব চেষ্টার প্রায় সবই ব্যর্থ হয়েছে।

কারণ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করার আগ পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে এবং নিজের ভূখণ্ড ও নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে ইসরায়েল কোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়।

তবে পরিসংখ্যান বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর এক বছরের অভিযানে গাজায় নিহতদের অধিকাংশই শিশু, নারী এবং বেসামরিক লোকজন।

Header Ad

মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশনে আটকানোর গুজব না ছড়ানোর আহ্বান আজহারীর

ফাইল ছবি

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরেছিলেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। সপ্তাহখানিক কাটিয়ে গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) আবারও মালয়েশিয়ায় চলে যান । তবে মালয়েশিয়ার পুলিশ তাকে ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়ার খবর জানা যায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দেশটির স্থানীয় সময় রাত ২টার পর তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়।

এবার ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে নিজেই মুখ খুলেছেন মাওলানা আজহারী। এ ঘটনায় গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি জানান, ‘মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ভেরিফিকেশনে একটু সময় নিয়েছিল। আমি ঠিক আছি। অযথা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন’।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন মিজানুর রহমান আজহারী। তবে কয়েকদিনের মাথায় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ফের দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়া চলে যান তিনি।

আজহারীকে বহনকারী বিমান মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর তাকে বিমানবন্দরের ওয়েটিং রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে আজহারীর বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ এখনও দেশটির ইমিগ্রেশন সার্ভারে রয়ে গেছে। এ কারণে তাকে আটকে দেয় পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে দেশ ছাড়ার ঘোষণা দেন জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সংক্ষিপ্ত সফরে দেশে এসেছিলাম। বেশিরভাগ সময় পরিবারের সাথেই কাটিয়েছি। এরই মাঝে বিভিন্ন ঘরানার আলিম-ওলামা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে একটি ক্লোজ মিট-আপ প্রোগ্রাম করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সত্যিই সে-দিনটি বেশ উপভোগ্য ছিল। তবে শর্ট নোটিশে প্রোগ্রামটি আয়োজনের কারণে অনেক প্রিয় ভাই আসতে পারেননি। আবার কিছুটা তাড়াহুড়ো করে দাওয়াত দেয়ার কারণে, বেখেয়ালবশত অনেকে বাদ পড়েছেন। আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরবর্তীতে সবার সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা রইলো।

আজহারী আরও লেখেন, আজ মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছি। মাস খানেক পর আবারও দেশে ফিরবো ইনশাআল্লাহ। তখন আইনশৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা, প্রটোকল, লোকেশন সিলেকশন, শ্রোতা ধারণ ক্ষমতা, অর্গানাইজিং ক্যাপাসিটিসহ সবকিছু অনুকূল হলে, দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ে হয়ত কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারি। তবে, সব কিছুই নির্ভর করবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর।

Header Ad

নদী ও সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

মা ইলিশ রক্ষা করতে দেশের সাগর ও নদীগুলোতে মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

আজ (শনিবার, ১২ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টার পর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীগুলোতে জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা। এ সময়ে সাগর ও নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মজুত ও পরিবহন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে।

বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানও বাস্তবায়ন করা হবে। ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জামাদী তীরে ওঠাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা।

আইন অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে দায়ী ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

প্রতি বছর এই সময়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। আগামী ২২ দিন চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না। ইতোমধ্যে পদ্মা-মেঘনা পাড়ের জেলেরা জাল-নৌকা তীরে উঠিয়ে নিচ্ছেন।

এদিকে কর্মহীন এ মৌসুম নিয়ে বরাবরের মতোই দুশ্চিন্তা ভর করেছে উপকূলবর্তী জেলেদের মাথায়। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পরিবার-পরিজনের ভরন-পোষন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

সূত্রমতে, অর্ধ লক্ষাধিক জেলে রয়েছেন চাঁদপুরে। এর মধ্যে ৪৩ হাজার জেলে নিবন্ধনকৃত। শুধু নিবন্ধনকৃত জেলেরাই সরকারি সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন কর্মহীন এ মৌসুমে। তাই সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি এখানকার জেলেদের।

চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ের বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, কিছু কিছু জেলে আইন মানছে না। ২২ দিন মাছ ধরতে পারবো না কিন্তু পরিবার নিয়ে কিভাবে দিন কাটে সে খবর কেউ রাখে না। আমাদের যে চাল দেয়, সেটি দিয়ে কিছুই হয় না। চালের সঙ্গে আনুষঙ্গিক জিনিস লাগে। সে খরচ কীভাবে পাবো? ধারদেনা ও কিস্তির টাকা দিয়ে আমাদের চলতে হয়। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারি না। অভাবে পরে অনেক জেলে বাধ্য হয়েই নদীতে নামে।

চাঁদপুরের নদীকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউছার দিদার বলেন, এবার ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বিগত বছরের ন্যায় এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশা করেন তিনি।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, এ বছর ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালিত হবে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু জেলে নয়, কোনো সাধারণ ক্রেতার হাতে ইলিশ পাওয়া গেলে, তাকেও আইনের আওয়তায় আনা হবে। জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি এবার সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজায় ১ দিনে নিহত ৬১, মোট নিহত ছাড়াল ৪২ হাজার ১০০
মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশনে আটকানোর গুজব না ছড়ানোর আহ্বান আজহারীর
নদী ও সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু
গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে যুবককে হত্যা
পূজায় সব ধরনের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে : সেনাপ্রধান
চুয়াডাঙ্গায় অতিরিক্ত মদ্পানে হরিজন সম্প্রদায়ের একজনের মৃত্যু
টাঙ্গাইলে ব্যবসায়ী মুসলিম হত্যাকাণ্ড: প্রধান আসামির বাবা মর্তুজ আলী গ্রেফতার
সংবিধান বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা
ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা শিগগিরই : উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
মারধর করে ভিক্ষা করতে বাধ্য করতো সন্তানরা, কষ্টে বাবা-মায়ের পানির ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
ককপিটে পাইলটের অকাল মৃত্যু: জরুরি অবতরণের ঘটনা
মিয়ানমার দূতাবাসে জেলে হত্যার কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের
মালয়েশিয়া ফিরে গেলেন মিজানুর রহমান আজহারি, ফেসবুকে যা জানালেন
শান্তিতে নোবেল পেল জাপানি সংস্থা 'নিহন হিডানকিও'
পূজা উদযাপন পরিষদের এক কর্মকর্তার আমন্ত্রণে গান করেছিলেন শিল্পীরা: পুলিশ
ভারতে হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা
এক প্রজ্ঞাপনেই ১৭ বছরে করা ৪ লাখ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে: মির্জা আব্বাস