বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

একাত্তরের শরণার্থীরা কেন মুক্তিযোদ্ধা নয়

আমি মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করলাম, ভাই হারালাম,মা মেয়ে হারালাম, তিনমাস বয়সী নাতনি হারালাম, দেশের বাড়িঘর, গরু, ছাগল, ধান, মাছ, গাছ, সহায় সম্পত্তি সব হারালাম। নিঃস্ব হলাম। ক্যাম্পে যেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলাম। বিশ্ববিবেককে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করলাম। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো কিছু ত্যাগ করলাম। নিজে নিঃস্ব হলাম। তবুও আমি কেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত হতে পারব না। কেন এই লাইনে আমার দাঁড়ানোর অধিকার নেই।

কথাগুলো বলছিলেন দক্ষিণবঙ্গের শেষ প্রান্তের গ্রাম জেলেখালি চান্নির চক এর মুক্তিযুদ্ধের জন্য সব হারানো একজন মানুষ সুরেন বাবু। সুরেন বাবু ছিলেন ঐ গ্রামের একজন জমিজমাওয়ালা বিত্তশালী ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালী লোক। হিন্দু মুসলিম অধ্যুষিত বড় গ্রামের বিচার শালিসেও তিনি থাকতেন প্রধান ভূমিকায়। হিন্দু মুসলিম সবাই তাকছ শ্রদ্ধা করতো। তার ছোট ভাই নগেন বাবুও ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার প্রভাবশালী। এলাকায় দুই ভাইয়ের প্রভাব প্রতিপত্তি ও মানুষের প্রতি আন্তরিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট সুনাম ছিল। সবাই তাদের ভালোবাসতো।

তখনও তাদের ছিল যৌথ পরিবার। দুইভাইয়েরই ছেলে মেয়ে বিয়ে দিয়েছে। পরিবারে সদস্য ও কৃষাণ-মাহিন্দার, ঝি-চাকরসহ বাড়িতে প্রায় ২৫ /৩০ জন লোক। তরপর তো আত্মীয়-স্বজন, অতিথি লেগেই আছে। প্রতি ওয়াক্তে সবমিলিয়ে প্রায় ৪০/৫০ জন লোকের রান্না হতো। তাদের পরিবারকে ছোটখাটো একটা মজলিস বাড়ি বললেও অত্যুক্তি হবে না।
প্রায় ৮০ বিঘার মতো পৈত্রিক ধানী জমি। ৩ বিঘার উপর বিশাল বাড়ি। এক বিঘার উপর বিরাট পুকুর। পুকুর ভরা মাছ। গোয়াল ভরা ৩০/৩২ টা গরু। ৭/৮ টা দুধের গাভি। উঠানে ২/৩ টা গোলায় ভর্তি ধান। গ্রামের অভিজাত পরিবার বলতে যা বোঝায় তা তারা।

তখন দেশে চলছে একটা অরাজক অবস্থা। সুরেণ বাবু সবসময় দেশকে নিয়ে ভাবতো। তার এমনি ভাব ছিল যে, দেশের ভালোর জন্য সে সব বিলিয়ে দিতে পারে।
এসে গেল ১৯৭১ সাল। দেশে শুরু হলো স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন। হটাও পাক বাঁচাও দেশ শ্লোগানে মুখর হলো সারা বাংলা। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিলেন "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তোমাদের যার যা আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো"।
ভাষণটি সুরেণ বাবুর পরিবার মনোযোগ দিয়ে রেডিওতে শুনলেন এবং মানসিকভাবে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিলেন।
২৫ শে মার্চ কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেলেন। ২৬ শে মার্চ ঘোষণাপত্রটি বঙ্গবন্ধু্র পক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন জন পাঠ করলো। সেটাও সুরেণ বাবু শুনলেন।
শুরু হয়ে গেল স্বাধীনতা যুদ্ধ।
গ্রামে গ্রামে গঠিত হচ্ছে মুক্তিবাহিনীর কমিটি। সুরেণ বাবু তার নিজ গ্রামের মুক্তিবাহিনীর প্রধান হলেন । যুদ্ধে যাওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেন। কিন্তু বাধ সাধল গ্রামের কিছু পাকিস্তানি দোসর মুসলিম রাজাকার, আলবদর, আল শামসরা। তারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ির উপর এসে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে লাগলো। বৌ, মা-বোনদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলো। লুটপাট, ছিনতাই ও বাড়িঘরদোর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো।
ভয় পেয়ে গেল হিন্দুরা। তারা জন্মভিটা ছেড়ে
শরনার্থী হয়ে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
অগত্যা পরিবারের কথা ভেবে সুরেণ বাবুও সেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন।

সুরেন বাবু যখন সিদ্ধান্ত নিলেন তার পরিবার নিয়ে ভারতে শরণার্থী হবে তখন তার গরুবাছুড় সহায় সম্পদ স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৈয়দ সানার হেফাজতে রাখার চিন্তা করলেন।
সেই মোতাবেক সৈয়দ সানার কাছে যেয়ে বললেন, দেখে বন্ধু আজ সময়ের বড় বেরহম। নিজের জন্মভিটা, জন্মভূমি, জন্মমাটি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে পরবাসে। জানিনা ভাগ্যে কি আছে? আমার এই গরু বাছুড়, সহায় সম্পদ, বাড়িঘর সব তোমার হেফাজতে রেখে গেলাম। দেখো!
যদি কখনও দেশ স্বাধীন হয় আর বেঁচে ফিরে আসতে পারি, সেদিন আবার দেখা হবে।
তারপর জন্মভিটের একদলা মাটি নিয়ে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে নিজের কপালে তিলক এঁকে দিলো। বললো হে মাটি তোমাকে ছেড়ে চললাম নিরুদ্দেশে। যদি বেঁচে থাকি আর যদি ভাগ্য সহায় হয় আবার ফিরে আসব।
সব ফেলে নিঃস্ব হয়ে পাড়ি জমালেন ভারতের উদ্দেশ্যে।
বাড়ির সকল সদস্যকে তুলে দিলেন নৌকায়। আর তারা দুইভাই তাদের বোন ও বোনজামাইকে সাথে নেওয়ার জন্য গেলেন ডাঙাপথে। কিছুদুর যেতেই পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়লো দুই ভাই। ব্রাশফায়ারের জন্য অন্যদের সাথে দুজনকেও লাইনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
সুরেন বাবু সেখান থেকে কোনোমতে পালিয়ে বেঁচে গেলেও ছোট ভাই নগেন বাবু আর পালাতে পারলো না। পাক আর্মিদের ব্রাশফায়ারে শহীদ হলো সে।

সুরেন বাবু কোনোমতে বেঁচে পরিবারের সাথে নৌকায় যোগ দিলো। সেদিন শরণার্থীদের পদে পদে ছিলো বিপদ।
কিছু দুর যেতেই এবার আবার নৌকাসহ পাক আর্মিদের আক্রমণে পড়লো। পাকদের তাড়া খেয়ে নৌকা থেকে যে যার মতো ছুটে পালালো। সুরেন বাবুর বড় পুত্রবধূ ভয়ে দৌড়াতে গিয়ে কোঁচড় থেকে তিন মাসের শিশু কন্যাটি কখন যে পড়ে গেল ঠিক পেলো না। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু আর পাওয়া যায়নি।
পুত্রবধূটি পাগলির মতো কাঁদতে কাঁদতে চললো তাদের সাথে।
অবশেষে অনেক কষ্টে যেয়ে পৌঁছালো‌ শরণার্থী শিবিরে।

অস্থায়ী একটা তাঁবুতে স্থান হলো তার পরিবারের। ঘিঞ্চি পরিবেশ। শুধু লোক আর লোক। কেউ তাঁবু খাটিয়ে, কেউ একচালা টিনের ছাবড়া বানিয়ে, কেউ কেউ স্কুল কলেজের বারান্দায়, কেউবা সিমেন্টের বড় পাইপের মধ্যে অবস্থান নিয়েছে।
ঘন জনসমাগমে তৈরি হয়েছে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বস্তির চেয়েও খারাপ অবস্থা।
নেই কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। একটা কাঁচা পায়খানায় শতাধিক লোক পায়খানা করছে। নেই স্নানের ব্যবস্থা। নদীর ময়লা নোংরা জলে পায়খানা ভাসছে সেই জলে সব ডুব মেরে স্নান করছে। খাওয়া দাওয়ার পরিবেশও অস্বাস্থ্যকরকর। রোগবালাই, মহামারী লেগে আছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু বৃদ্ধ যুবা মারা যাচ্ছে বিভিন্ন রোগে।
এরমধ্যেই সুরেন বাবু পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করছে। হঠাৎ আশ্রয়কেন্দ্রে কলেরা মহামারী আকার ধারণ করলো। তার মা ও বড় মেয়ে কলেরায় মারা গেল।
এতো কিছুর মাঝেও যারা এদেশ থেকে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে গিছিল সুরেন বাবু তাদের বিভিন্নভাবে সাধ্যমতো সহযোগিতা করলো। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিলো, খাবার ব্যবস্থা করলো, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে গেলো ইত্যাদি ইত্যাদি।

যাইহোক নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলো। শরণার্থীরা সব দলে দলে দেশে ফিরে আসতে থাকলো। সুরেন বাবুও পরিবার নিয়ে দেশে ফিরে আসলেন।
বাড়িতে ফিরে এসে দেখলেন এক বিরাণভূমি। ধানের গোলাগুলি ভাঙাচোরা। তাতে নেই কোনো ধান। ঘরে আসবাবপত্রসহ কিচ্ছুটি নেই। একেবারে ফাঁকা। পুকুরে মাছ নেই। বাড়ির বড় বড় গাছগুলো সব কেটে নিয়ে গেছে। সৈয়দ সানার কাছে গরু চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দিলো।
এখন তার পরিবার একেবার নিঃস্ব।

স্বাধীনতার কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামে গ্রামে শুরু হলো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি।
মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম ওঠানোর জন্য সব লাইন দিলো।
সুরেন বাবুও সেই লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন।
চেয়ারম্যান সাহেব সুরেন বাবুর কাছে এসে প্রশ্ন করলেন,
তুমি লাইনে দাঁড়িয়েছো কেন? তুমি কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলে?
সুরেন বাবুর স্পষ্ট জবাব, শুধু যারা যুদ্ধ করেছিল তারাই কি মুক্তিযোদ্ধা? যারা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল তারা? স্বাধীনতাকে দ্রুত পাইয়ে দিতে যারা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল তারা? তারা কি মুক্তিযোদ্ধা নয়?

আচ্ছা চেয়ারম্যান সাহেব জানা আছে কি
সেসময় এই শরণার্থীরাই স্বাধীনতার জন্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই শরণার্থীদের দুর্বিষহ জীবন বিবেচনা করে দ্রুত স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য বিশ্ব সংঘকে চাপ প্রয়োগ করেছিল।
আমি তো মনে করি এই শরণার্থীরাই অর্ধেক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার জন্য শরণার্থীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তবুও কেন তারা মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবে না।

সেদিনের অনেক রাজাকার আলবদর আল শামসকে দেখছি মুখের খোলস বদলে এই লাইনে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা বনে যাচ্ছে।
অথচ আমি স্বাধীনতার জন্য এতো ত্যাগ করার পরও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারব না? কেন পারব না বলতে পারেন?
এই বলে আক্ষেপের সুরে উপরের কথাগুলো বলছিলেন সুরেণ বাবু।
এ কথাগুলো শুধু সুরেন বাবুর নয় এ কথাগুলো আমাদের সকলের। এ কথাগুলো বিশ্ব বিবেকের।



ডিএসএস/ 

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ