শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

একাত্তরের শরণার্থীরা কেন মুক্তিযোদ্ধা নয়

আমি মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করলাম, ভাই হারালাম,মা মেয়ে হারালাম, তিনমাস বয়সী নাতনি হারালাম, দেশের বাড়িঘর, গরু, ছাগল, ধান, মাছ, গাছ, সহায় সম্পত্তি সব হারালাম। নিঃস্ব হলাম। ক্যাম্পে যেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলাম। বিশ্ববিবেককে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করলাম। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো কিছু ত্যাগ করলাম। নিজে নিঃস্ব হলাম। তবুও আমি কেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত হতে পারব না। কেন এই লাইনে আমার দাঁড়ানোর অধিকার নেই।

কথাগুলো বলছিলেন দক্ষিণবঙ্গের শেষ প্রান্তের গ্রাম জেলেখালি চান্নির চক এর মুক্তিযুদ্ধের জন্য সব হারানো একজন মানুষ সুরেন বাবু। সুরেন বাবু ছিলেন ঐ গ্রামের একজন জমিজমাওয়ালা বিত্তশালী ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালী লোক। হিন্দু মুসলিম অধ্যুষিত বড় গ্রামের বিচার শালিসেও তিনি থাকতেন প্রধান ভূমিকায়। হিন্দু মুসলিম সবাই তাকছ শ্রদ্ধা করতো। তার ছোট ভাই নগেন বাবুও ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার প্রভাবশালী। এলাকায় দুই ভাইয়ের প্রভাব প্রতিপত্তি ও মানুষের প্রতি আন্তরিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট সুনাম ছিল। সবাই তাদের ভালোবাসতো।

তখনও তাদের ছিল যৌথ পরিবার। দুইভাইয়েরই ছেলে মেয়ে বিয়ে দিয়েছে। পরিবারে সদস্য ও কৃষাণ-মাহিন্দার, ঝি-চাকরসহ বাড়িতে প্রায় ২৫ /৩০ জন লোক। তরপর তো আত্মীয়-স্বজন, অতিথি লেগেই আছে। প্রতি ওয়াক্তে সবমিলিয়ে প্রায় ৪০/৫০ জন লোকের রান্না হতো। তাদের পরিবারকে ছোটখাটো একটা মজলিস বাড়ি বললেও অত্যুক্তি হবে না।
প্রায় ৮০ বিঘার মতো পৈত্রিক ধানী জমি। ৩ বিঘার উপর বিশাল বাড়ি। এক বিঘার উপর বিরাট পুকুর। পুকুর ভরা মাছ। গোয়াল ভরা ৩০/৩২ টা গরু। ৭/৮ টা দুধের গাভি। উঠানে ২/৩ টা গোলায় ভর্তি ধান। গ্রামের অভিজাত পরিবার বলতে যা বোঝায় তা তারা।

তখন দেশে চলছে একটা অরাজক অবস্থা। সুরেণ বাবু সবসময় দেশকে নিয়ে ভাবতো। তার এমনি ভাব ছিল যে, দেশের ভালোর জন্য সে সব বিলিয়ে দিতে পারে।
এসে গেল ১৯৭১ সাল। দেশে শুরু হলো স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন। হটাও পাক বাঁচাও দেশ শ্লোগানে মুখর হলো সারা বাংলা। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিলেন "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তোমাদের যার যা আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো"।
ভাষণটি সুরেণ বাবুর পরিবার মনোযোগ দিয়ে রেডিওতে শুনলেন এবং মানসিকভাবে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিলেন।
২৫ শে মার্চ কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেলেন। ২৬ শে মার্চ ঘোষণাপত্রটি বঙ্গবন্ধু্র পক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন জন পাঠ করলো। সেটাও সুরেণ বাবু শুনলেন।
শুরু হয়ে গেল স্বাধীনতা যুদ্ধ।
গ্রামে গ্রামে গঠিত হচ্ছে মুক্তিবাহিনীর কমিটি। সুরেণ বাবু তার নিজ গ্রামের মুক্তিবাহিনীর প্রধান হলেন । যুদ্ধে যাওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেন। কিন্তু বাধ সাধল গ্রামের কিছু পাকিস্তানি দোসর মুসলিম রাজাকার, আলবদর, আল শামসরা। তারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ির উপর এসে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে লাগলো। বৌ, মা-বোনদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলো। লুটপাট, ছিনতাই ও বাড়িঘরদোর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো।
ভয় পেয়ে গেল হিন্দুরা। তারা জন্মভিটা ছেড়ে
শরনার্থী হয়ে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
অগত্যা পরিবারের কথা ভেবে সুরেণ বাবুও সেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন।

সুরেন বাবু যখন সিদ্ধান্ত নিলেন তার পরিবার নিয়ে ভারতে শরণার্থী হবে তখন তার গরুবাছুড় সহায় সম্পদ স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৈয়দ সানার হেফাজতে রাখার চিন্তা করলেন।
সেই মোতাবেক সৈয়দ সানার কাছে যেয়ে বললেন, দেখে বন্ধু আজ সময়ের বড় বেরহম। নিজের জন্মভিটা, জন্মভূমি, জন্মমাটি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে পরবাসে। জানিনা ভাগ্যে কি আছে? আমার এই গরু বাছুড়, সহায় সম্পদ, বাড়িঘর সব তোমার হেফাজতে রেখে গেলাম। দেখো!
যদি কখনও দেশ স্বাধীন হয় আর বেঁচে ফিরে আসতে পারি, সেদিন আবার দেখা হবে।
তারপর জন্মভিটের একদলা মাটি নিয়ে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে নিজের কপালে তিলক এঁকে দিলো। বললো হে মাটি তোমাকে ছেড়ে চললাম নিরুদ্দেশে। যদি বেঁচে থাকি আর যদি ভাগ্য সহায় হয় আবার ফিরে আসব।
সব ফেলে নিঃস্ব হয়ে পাড়ি জমালেন ভারতের উদ্দেশ্যে।
বাড়ির সকল সদস্যকে তুলে দিলেন নৌকায়। আর তারা দুইভাই তাদের বোন ও বোনজামাইকে সাথে নেওয়ার জন্য গেলেন ডাঙাপথে। কিছুদুর যেতেই পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়লো দুই ভাই। ব্রাশফায়ারের জন্য অন্যদের সাথে দুজনকেও লাইনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
সুরেন বাবু সেখান থেকে কোনোমতে পালিয়ে বেঁচে গেলেও ছোট ভাই নগেন বাবু আর পালাতে পারলো না। পাক আর্মিদের ব্রাশফায়ারে শহীদ হলো সে।

সুরেন বাবু কোনোমতে বেঁচে পরিবারের সাথে নৌকায় যোগ দিলো। সেদিন শরণার্থীদের পদে পদে ছিলো বিপদ।
কিছু দুর যেতেই এবার আবার নৌকাসহ পাক আর্মিদের আক্রমণে পড়লো। পাকদের তাড়া খেয়ে নৌকা থেকে যে যার মতো ছুটে পালালো। সুরেন বাবুর বড় পুত্রবধূ ভয়ে দৌড়াতে গিয়ে কোঁচড় থেকে তিন মাসের শিশু কন্যাটি কখন যে পড়ে গেল ঠিক পেলো না। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু আর পাওয়া যায়নি।
পুত্রবধূটি পাগলির মতো কাঁদতে কাঁদতে চললো তাদের সাথে।
অবশেষে অনেক কষ্টে যেয়ে পৌঁছালো‌ শরণার্থী শিবিরে।

অস্থায়ী একটা তাঁবুতে স্থান হলো তার পরিবারের। ঘিঞ্চি পরিবেশ। শুধু লোক আর লোক। কেউ তাঁবু খাটিয়ে, কেউ একচালা টিনের ছাবড়া বানিয়ে, কেউ কেউ স্কুল কলেজের বারান্দায়, কেউবা সিমেন্টের বড় পাইপের মধ্যে অবস্থান নিয়েছে।
ঘন জনসমাগমে তৈরি হয়েছে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বস্তির চেয়েও খারাপ অবস্থা।
নেই কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। একটা কাঁচা পায়খানায় শতাধিক লোক পায়খানা করছে। নেই স্নানের ব্যবস্থা। নদীর ময়লা নোংরা জলে পায়খানা ভাসছে সেই জলে সব ডুব মেরে স্নান করছে। খাওয়া দাওয়ার পরিবেশও অস্বাস্থ্যকরকর। রোগবালাই, মহামারী লেগে আছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু বৃদ্ধ যুবা মারা যাচ্ছে বিভিন্ন রোগে।
এরমধ্যেই সুরেন বাবু পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করছে। হঠাৎ আশ্রয়কেন্দ্রে কলেরা মহামারী আকার ধারণ করলো। তার মা ও বড় মেয়ে কলেরায় মারা গেল।
এতো কিছুর মাঝেও যারা এদেশ থেকে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে গিছিল সুরেন বাবু তাদের বিভিন্নভাবে সাধ্যমতো সহযোগিতা করলো। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিলো, খাবার ব্যবস্থা করলো, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে গেলো ইত্যাদি ইত্যাদি।

যাইহোক নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলো। শরণার্থীরা সব দলে দলে দেশে ফিরে আসতে থাকলো। সুরেন বাবুও পরিবার নিয়ে দেশে ফিরে আসলেন।
বাড়িতে ফিরে এসে দেখলেন এক বিরাণভূমি। ধানের গোলাগুলি ভাঙাচোরা। তাতে নেই কোনো ধান। ঘরে আসবাবপত্রসহ কিচ্ছুটি নেই। একেবারে ফাঁকা। পুকুরে মাছ নেই। বাড়ির বড় বড় গাছগুলো সব কেটে নিয়ে গেছে। সৈয়দ সানার কাছে গরু চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দিলো।
এখন তার পরিবার একেবার নিঃস্ব।

স্বাধীনতার কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামে গ্রামে শুরু হলো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি।
মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম ওঠানোর জন্য সব লাইন দিলো।
সুরেন বাবুও সেই লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন।
চেয়ারম্যান সাহেব সুরেন বাবুর কাছে এসে প্রশ্ন করলেন,
তুমি লাইনে দাঁড়িয়েছো কেন? তুমি কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলে?
সুরেন বাবুর স্পষ্ট জবাব, শুধু যারা যুদ্ধ করেছিল তারাই কি মুক্তিযোদ্ধা? যারা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল তারা? স্বাধীনতাকে দ্রুত পাইয়ে দিতে যারা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল তারা? তারা কি মুক্তিযোদ্ধা নয়?

আচ্ছা চেয়ারম্যান সাহেব জানা আছে কি
সেসময় এই শরণার্থীরাই স্বাধীনতার জন্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই শরণার্থীদের দুর্বিষহ জীবন বিবেচনা করে দ্রুত স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য বিশ্ব সংঘকে চাপ প্রয়োগ করেছিল।
আমি তো মনে করি এই শরণার্থীরাই অর্ধেক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার জন্য শরণার্থীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তবুও কেন তারা মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবে না।

সেদিনের অনেক রাজাকার আলবদর আল শামসকে দেখছি মুখের খোলস বদলে এই লাইনে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা বনে যাচ্ছে।
অথচ আমি স্বাধীনতার জন্য এতো ত্যাগ করার পরও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারব না? কেন পারব না বলতে পারেন?
এই বলে আক্ষেপের সুরে উপরের কথাগুলো বলছিলেন সুরেণ বাবু।
এ কথাগুলো শুধু সুরেন বাবুর নয় এ কথাগুলো আমাদের সকলের। এ কথাগুলো বিশ্ব বিবেকের।



ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, দিয়েছে দেশে ফেরার সুযোগ

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য এক বছরের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। ‘সেলফ ভলান্টারি রিটার্ন’ বা স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের জেল বা বিচারের মুখোমুখি না হয়েই নিজ নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন তারা।

শুক্রবার (১৬ মে) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।

এই কর্মসূচির মেয়াদ শুরু হবে চলতি বছরের ১৯ মে থেকে এবং তা চলবে আগামী বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। অভিবাসীদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জরিমানা দিতে হতে পারে। তবে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের থেকে কোনো জরিমানা নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র বিশেষ পাসের জন্য ২০ রিঙ্গিত ফি প্রদান করতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, এর আগে যারা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে নিবন্ধন করেছিলেন কিন্তু মালয়েশিয়া ত্যাগ করেননি, তারা নতুন করে এই কর্মসূচির আওতায় পড়বেন না।

এশিয়ার ২০টি দেশের আঞ্চলিক সংগঠন 'ক্যারাম এশিয়া'র তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসী অবস্থান করছেন। তবে এই সংখ্যাটি সুনির্দিষ্ট নয়। বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও দেশটির দূতাবাসের শ্রম বিভাগ ধারণা করছে, এই সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। তবে বাংলাদেশি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও প্রবাসী ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেড় থেকে দুই লাখ বাংলাদেশি অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ বিমানবন্দর, পুলিশ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে মালয়েশিয়া থেকে ৮০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। এছাড়া, গত ছয় মাসে প্রায় আড়াই হাজার অভিবাসী ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন।

বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) জানায়, ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গিয়েছেন। তবে নানা অনিয়ম ও সমস্যার কারণে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ রয়েছে। এই বাজারটি পুনরায় চালুর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সম্প্রতি তিনি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আলোচনায় শ্রমবাজার পুনরায় উন্মুক্ত করা এবং অভিবাসীদের কল্যাণে একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সময়মতো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটি সমন্বয়ে শনিবার খোলা থাকবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দাপ্তরিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি সমন্বয়ের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার (১৭ মে) এবং পরবর্তী শনিবার (২৪ মে) দেশের সব ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ফলে সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও এদিনগুলোতে চলবে স্বাভাবিক দাপ্তরিক, আর্থিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ দীর্ঘ ছুটির ভারসাম্য রক্ষায় সরকার ৬ মে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ১৭ ও ২৪ মে, দুটি শনিবার অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত শনিবারগুলোতে খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে এসব দিনে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে স্বাভাবিকভাবে জমা-উত্তোলন, চেক নিষ্পত্তি, অনলাইন লেনদেনসহ সব কার্যক্রম চলবে। একইসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লেনদেন চলবে।

অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত—১৭ ও ২৪ মে খোলা থাকবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন এড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এসব দিনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার কথা জানিয়েছে।

সরকারের এ উদ্যোগের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা কার্যক্রমে স্বাভাবিক গতি বজায় থাকবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

‘বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়’- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পেরেছি, কিন্তু তাদের অর্থব্যবস্থা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।”

শুক্রবার (১৬ মে) কুমিল্লায় ‘জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে’ আহত, শহীদ ও বীর সন্তানদের সম্মানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

হাসনাত বলেন, “কুমিল্লার অনেক উপজেলায় সব দলের রাজনীতি আওয়ামী লীগের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। এমনকি বিএনপির রাজনীতিও চলছে তাদের টাকায়।”

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তারা জামিন পায় কিভাবে? এর পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে তা জাতির সামনে প্রকাশ করুন।”

তিনি আরও বলেন, “আপনি (আসিফ নজরুল) বলছেন, আপনাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না—তাহলে তা জাতির সামনে তুলে ধরুন। বিচার হয়নি, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল হয়নি—এটাও আপনার ব্যর্থতা।”

এনসিপি নেতা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার যদি মনে করে খুনিদের বিচার ও আওয়ামী লীগের বিচার অপেক্ষা সংস্কার বড় বিষয়, তাহলে তারা ভুল করছে। বিচার হবে, সংস্কার হবে, তার পরেই হবে নির্বাচন।”

তিনি মানবিক করিডোর ও ১৪ দল প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানান। বলেন, “আমরা কোনো পরাশক্তির আধিপত্য চাই না। ভারতের, পিন্ডির বা মার্কিন আধিপত্য নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষাই আমাদের অঙ্গীকার।”

কুমিল্লা জেলা ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের আয়োজন করা এ সমাবেশে বিএনপি, এনসিপি, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অংশ নেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ফেস দ্য পিপলের সম্পাদক সাইফুর রহমান সাগর, বিএনপি নেতা আশিকুর রহমান ওয়াসিম, এনসিপি নেতা রিফাত রশিদ, নাভিদ নওরোজ শাহ, এবি পার্টির জিএম গোলাম সামদানী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আরাফ ভূঁইয়া।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, দিয়েছে দেশে ফেরার সুযোগ
ঈদের ছুটি সমন্বয়ে শনিবার খোলা থাকবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দাপ্তরিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায় : হাসনাত আব্দুল্লাহ
সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১ হাজার ৬৬২ জন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার
নেপালকে হারিয়ে সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ
বোতল নিক্ষেপকারী শিক্ষার্থীকে বাসায় দাওয়াত দিলেন তথ্য উপদেষ্টা
এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ
পেটে বাচ্চাসহ গরু জবাই করে বিক্রি, ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে সাত কলেজ
প্রোটিয়াদের উড়িয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় ডিবি কার্যালয়ে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ল
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ও সাম্য হত্যার তদন্ত করে লাভ নেই: ফারুক
শাহজালালে ৭১ আরোহীসহ নিরাপদে অবতরণ করল চাকা খুলে পড়া বিমান
শ্রীনগর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই
উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ল চাকা, ৭১ যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে বিমান
গত ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে : মির্জা আব্বাস
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগ থানা ঘেরাও, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম