সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বীরাঙ্গনা মা

মিহির তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মেধাবী ছাত্র। সেদিনও বরাবরের মতো সন্ধ্যার পড়া শেষ করে রাত দশটায় ঘুমাতে যায়। সাথে মা মরিয়ম বেগম। নানা গল্পে মিহিরকে ঘুম পাড়িয়ে অপেক্ষা করে মিহিরের বাবার জন্য। রাত এগারোটায় মিহিরের বাবা গঞ্জের বাজার থেকে ফিরে। বিদ্যুতের আলোয় ঘুমন্ত মিহিরের মুখটা ঝলমল করছে। বাবা ওদিকটায় চেয়ে আর চোখ ফিরাতে পারে না। পুত্রের কপালে স্নেহের চুম্বন এঁকে বলে, বেঁচে থাকো বাবা।’ খাওয়া শেষে স্বামী-স্ত্রী গা এলিয়ে দেয় বিছানায়। রাতের কোনো একসময় বিশাদের ছায়া নেমে আসে সুখ-সংসারে। হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু হয় মিহিরের বাবার। ঘুমের মধ্যেই।

উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা মরিয়ম। কী করবে- ভেবে পায় না। অবশেষে সেলাই মেশিন চালিয়েই সংসারের হাল ধরেন। মিহিরের পড়াশোনার খরচও চলে এভাবে। মায়ের শত কষ্টেও এতটুকু কষ্টের আচঁড় পড়েনি মিহিরের। কিন্তু মিহির বুঝতে পায় মায়ের কষ্টের পরিধি। মায়ের চোখে তাকিয়ে তার কচি মন কেঁদে ওঠে। ও স্বভাবজাতভাবেই মায়ের বাধ্যগত। পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী।

সময়ের পরিক্রমায় আজ মিহির প্রাচ্যের অক্সফোর্ড-খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার চেতনাজুড়ে বড়ই তাড়া- পড়া শেষ করেই তাকে একটি চাকরি নিতে হবে, মায়ের কষ্ট ঘুচাতে হবে, মায়ের মুুখে হাসি ফুটাতে হবে, মায়ের সাধ পূর্ণ করতে হবে। হাজারো স্বপ্ন, হাজারো কল্পনার প্রজাপতি, রঙিন ডানা মেলে ওড়ে বেড়ায় মিহিরের হৃদয়রাজ্যে।
এরই মাঝে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। রাজপথ শ্লোগানে মুখরিত। পাকিস্তানি হায়েনাদের বুলেটে ঝাঁঝড়া হয় এদেশের শত যুবকের প্রাণ। কত মায়ের বুক খালি হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ। রাতের ঘন-অন্ধকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে হামলা হয়। অসংখ্য ঘুমন্ত ছাত্রের প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতকের বুলেট। সৌভাগ্যবশত সেদিন মিহির হলে ছিল না। মায়ের আহবানে ছুটে গিয়েছিল কলাবাগানের সেই ছোট্ট নীড়ে। পরদিন প্রত্যুষে ও খবরটা পায়। সূর্য ওঠার আগেই সোহেল আর নাফিজ চলে আসে মিহিরের বাসায়। উসকো-খুসকো চুল। পরনে লুঙ্গি। মিহির ঘুমঘুম চোখে দরজা খোলে হতবাক। ঢকঢক করে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে কেঁদে ফেলে সোহেল। বলে, ‘মনে হয় হলের কেহ আর বেঁচে নেই রে মিহির। আমরা দু’জন কোনোরকমে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছি। পাকিস্তানি মিলিটারির গুলিতে নিহত হয়েছে সবাই।’ চিন্তার চিকন রেখা ফুটে ওঠে মিহিরের কপালে। মিহির বলে, ‘শুনেছি দক্ষিণ পাড়ার কয়েকজন যুবক ইন্ডিয়া যাবে। সেখান থেকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। চল, আমরাও তাদের সাথে যোগ দিই।’ সোহেলের চোখে তখনও বিভীষিকার দৃশ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। সে কাঁপা কণ্ঠে বলে, ‘ঠিকই বলেছিস। এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। চল, আজকেই আমরা ওদের সাথে যোগ দিব।’ মিহির বলল, ‘তোরা তো জানিস, আমার পরিবারে মা ছাড়া আর কেউ নেই। যাব, তবে মাকে কিছু জানতে দেয়া যাবে না। মা জানতে পারলে কিছুতেই আমাকে যেতে দিবেন না। মা ভীষণ কষ্ট পাবেন।’ গোপন আলোচনায় হঠাৎ মরিয়ম বেগমের উপস্থিতিতে তারা আশ্চর্য হয়। সকলেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। মরিয়ম বেগম পাঁচটি এক হাজার টাকার নোট মিহিরের হাতে ধরিয়ে দেন। বলেন, ‘মিহির, তোমাদের সব কথাই আমি শুনেছি। না, আমি তোমাদের বাঁধা দেব না। এই টাকাটা রাখো। কাজে লাগবে।’ মরিয়ম বেগমের এহেন অনুপ্রেরণায় মিহির উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে। বলে, ‘মা, যদি আর ফিরে না আসি? মরিয়ম বেগমের চোখ জলে ছলছল, তিনি আচঁল দিয়ে চোখ মুছে বলেন, ‘কত মায়ের বুক ইতিমধ্যে খালি হয়ে গেছে। তাঁদের যে অবস্থা, আমারও না হয় তাই-ই হবে।’

মায়ের দোয়া নিয়ে মিহির চলে যায় ইন্ডিয়া। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসে। সঙ্গে আরো অনেকে। ২৭ অক্টোবর ১৯৭১ সাল। রাত দশটায় মায়ের সাথে খাবার খাচ্ছিল মিহির। কমান্ডারের ফোন- ‘আজ শেষ রাতে বড়বাজারে একটি জরুরি অপারেশনে যেতে হবে। তুমি এই অপারেশনের নেতৃত্ব দিবে। অপারেশন সাকসেসফুল হলে পাক বাহিনীর মনোবল একেবারে ভেঙ্গে পড়বে। জলদি চলে আসো।’
মিহিরের আর খাওয়া হয় না।

মরিয়ম বেগম বাঁধা দেননি বরং বন্দুক এগিয়ে দেন। বলেন, ‘আর ছাড় নয়, এবার রুখে দাঁড়াও।’
মায়ের কপালে চুমু দিয়ে মিহির চলে যায়। মরিয়ম বেগম সারা রাত না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন। ফজরের নামায পড়ে তসবিহ হাতে বসেছিলেন। এমন সময় দরজায় আলতো টোকা। চমকে ওঠেন মরিয়ম বেগম। পাকিস্তানিরা আবার তার বাসায় হানা দেয়নি তো? তিনি আস্তে আস্তে দরজা খোলেন। মিহির, সোহেল আর নাফিস দাঁড়িয়ে। আনন্দে মিহিরের চোখ চিকচিক করে ওঠে। ‘মা, অপারেশন সাকসেসফুল।’

মরিয়ম বেগম দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন, বলেন, ‘এখনো অনেক পথ বাকি বাবা। তোমরা ক্ষুধার্ত, একটু বসো। খাবার দিচ্ছি।’
ঘরে খাবার বলতে কিছু নেই। মরিয়ম বেগম খুঁজে খুঁজে কিছু মুড়ি পেলেন। তা-ই খেতে দিলেন। মিহির এক মুঠ মুড়ি মুখে দিবে এমন সময় আবার দরজায় টোকা। সবাই দরজার দিকে তাকাল। চোখে মুখে ভয়। এই অসময়ে আবার কে এল?
মরিয়ম বেগম বললেন, তোমরা বসো। আমি দেখছি।
বন্দুক তাক করে ঘরে ঢুকল পাকিস্তানি বাহিনী। মিহিরের কপালে একজন বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বলল, তুই কি মিহির? মিহির, সোহেল, নাফিসের চোখে চোখ রাখে। সবার চোখেই আতঙ্ক। মায়ের পানে তাকায় মিহির। মায়ের চোখে অশ্রু নয়, দেখেছে প্রতিশোধের আগুন। মিথ্যা নয় সত্য বলার সিদ্ধান্ত নেয় মিহির, ‘হ্যাঁ, আমি মিহির।’

বড়বাজার হত্যা কা-ের সন্দেহজনক আসামী হিসেবে মিহিরকে ধরে থানায় নিয়ে গেল পাকিস্তানি বাহিনী।
অমানসিক শারীরিক নির্যাতন চলে তার ওপর। পায়ে রশি বেঁধে মাথা নিচে ঝুলিয়ে রাখা হয়। নখের নিচে সুঁচ বিঁধানো হয়। অসহ্য অত্যাচারেও মিহির দৃঢ় কঠিন প্রতিজ্ঞ। গোপন তথ্য ফাঁস করেনি।

মরিয়ম বেগম তাকে দেখতে থানায় আসেন। একটি আধো-অন্ধকার প্রকোষ্টে শুয়ে আছে মিহির। গায়ে কাপড় বলতে একটি প্যান্ট। মায়ের ডাকে ঘাড় উচিয়ে দেখে। এক বিধবা মা খাবার হাতে দাঁড়িয়ে আছে ওপাশে। ওঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি নেই মিহিরের। পায়ের হাড় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অতি কষ্টে গ্রিল ধরে দাঁড়ায় মিহির। সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন। চোখের নিচে কালো দাগ। কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে তখনও। যে ছেলের শরীরে এতটুকু আচঁড় পড়েনি কোনো দিন, সে ছেলের আজ ক্ষত-বিক্ষত অব¯’া দেখে মরিয়ম বেগমের মন কালবোশেখী ঝড় ওঠে। কিন্তু চোখে জল নেই। প্রতিশোধের আগুন ঝরছে চোখ থেকে। ছেলের কপালে হাত বুলিয়ে মরিয়ম বেগম জানতে চায়।
-ওরা তোমার কাছে কী জানতে চায় মিহির?
-ওই অপারেশনে কে কে ছিল? কে কমান্ডার ছিল? কোথায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প- জানতে চায় ওরা।
-তুমি কিছু বলোনি তো?
- মিহির ডানে-বামে মাথা ঝাঁকায়। না।
-তুমি কিছুই বলবে না। ওরা তোমাকে যতই মারুক। তুমি কিছুতেই মুখ খুলবে না। মরিয়ম বেগম মিহিরের পিঠে হাত বুলিয়ে জানতে চান-ওরা তোমাকে খেতে দেয় বাবা?
- দেয় মা, ওরা দিনে একবার খেতে দেয়। পেট ভরে না মা। মিহিরের দু’চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি গড়িয়ে পড়ে। মায়ের চোখে মুখে হাত বুলিয়ে মিহির আবার বলে, কতদিন হল তোমার হাতের পিঠা খাই না মা। তোমার হাতের পিঠা খেতে বড়ই ইচ্ছা করছে। খাওয়াবে মা?
-হে বাবা, খাওয়াব। আমি কালই তোমার জন্য পিঠা নিয়ে আসব। মরিয়ম বেগম শাড়ির আচল দিয়ে ছেলের চোখ মুছেন।

পরের দিন সকাল বেলা। মরিয়ম বেগম পিঠা ভর্তি বাটি নিয়ে দারোয়ানকে মিনতি করে, ‘শুধু একটা পিঠা আমার মিহিরকে খাইয়ে চলে আসব। আমাকে পাঁচ মিনিটের জন্য অনুমতি দিন। অনুগ্রহ করুন।’
-অল্প কিছুক্ষণ আগে ওরা মিহিরকে হাত বেঁধে নিয়ে গেছে। দারোয়ান গোঁফের ফাঁক গলে ফিসফিসিয়ে বলে।
-ওরা কোথায় নিয়ে গেছে মিহিরকে? দারোয়ানের কথায় মরিয়ম বেগম হতবিহবল হয়ে পড়েন।
-বড়বাজার বালুর মাঠে।
মরিয়ম বেগমের মন কেঁদে ওঠে অজানা সঙ্কায়। তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে বালুর মাঠের দিকে হাঁটা দেয়। পাক-বাহিনী মিহিরসহ বহু যুবককে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। মাঠের ওপাশ থেকে মরিয়ম বেগম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন মিহিরকে। হঠাৎ করেই মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। মুর্হূতেই ঝরে পরে বহু মিহিরের নিথর দেহ। মরিয়ম বেগম জ্ঞান হারায়। এক সময় জ্ঞান ফিরে আসে কিন্তু স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি।

মিহিরদের তাজা রক্তের বিনিময়ে দেশের স্বাধীনতা এসেছে। স্বাধীন পতাকা এসেছে। কিন্তু মিহির ফিরে আসেনি। সেই থেকে মিহিরের মা মরিয়ম বেগম পাগল। তিনি এখনো শাড়ির আঁচলে পিঠা নিয়ে বসে থাকেন বধ্যভূমির গেটে। তাঁর বিশ্বাস, মিহির কোনোএকদিন পিঠা খাওয়ার বায়না নিয়ে ঠিকই ফিরে আসবে। মিহিরের নামানুসারে পাশের বাজারের নামকরণ করা হয়েছে মিহিরবাজার। এই বধ্যভূমির নামকরণ করা হয়েছে মিহিরবাজার বধ্যভূমি। বধ্যভূমিতে আগত লাখো জনতা আজও মরিয়ম বেগমকে দেখে মমতা ভরা চোখে। পরম শ্রদ্ধা ভরে তাকে ডাকে ‘বীরাঙ্গনা মা’ বলে।

 

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

৪ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধে সাকিব আল হাসানকে আইনি নোটিশ প্রদান

সাকিব আল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডকে ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ইস্যু করা চেক বাউন্স করায় ব্যাংকটি এই আইনি পদক্ষেপ নেয়।

আইনি নোটিশে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সমগ্র ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে বিষয়টি গত সপ্তাহে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। জানা যায়, ২০১৭ সালে ব্যবসার মূলধন হিসেবে প্রথমে ১ কোটি এবং পরে আরও দেড় কোটি টাকা ঋণ নেয় সাকিবের প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে এ ঋণ মেয়াদী ঋণ সুবিধায় রূপান্তর করা হয় এবং ঋণের পরিমাণ ২ কোটি ৪২ লাখ টাকায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়।

২০২৩ সালে ঋণটির পরিমাণ ৯৫ লাখ টাকায় পুনর্গঠন করা হয়। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে অ্যাগ্রো ফার্ম দুটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার দুটি চেক ইস্যু করে। তবে, গত ২০ অক্টোবর উভয় চেক বাউন্স করে, কারণ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সাকিব পুরো আর্থিক সুবিধাটি গ্রহণ করলেও ঋণ অনুমোদনের চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে সুদসহ বকেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইএফআইসি ব্যাংক দাবি করেছে, সাকিব ইচ্ছাকৃতভাবে ও অসৎ উদ্দেশ্যে চেকগুলো ইস্যু করেছেন, যা দায়িত্বশীলতার লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধের শামিল। তাছাড়া পর্যাপ্ত তহবিল ছাড়া চেক ইস্যু করা একটি বিশ্বাসঘাতকতার নিদর্শন।

এ বিষয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মুস্তাকের প্রতিক্রিয়াও এ বিষয়ে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাকিব তার সংসদ সদস্য পদ হারান এবং দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার মূল্য নিয়ে কারসাজি করার অভিযোগে তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে।

আইএফআইসি ব্যাংকের দেয়া এ আইনি নোটিশ সাকিবের জন্য নতুন একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যা তার বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

Header Ad

আদানির বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করা হবে: প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় গোষ্ঠী আদানি পাওয়ারের বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রবিবার সন্ধ্যায় ফরেস সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধের গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ অর্থ পায়, তা সত্য। তাদের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে গতি বাড়িয়েছি। যে ব্যাকলগ (পূর্বের বিল) আছে, তার জন্য মূলত দায়ী পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিশাল ফাইল অব ব্যাকলগ রেখে গিয়েছিল।

প্রেস সচিব বলেন, আদানি গ্রুপকে গত মাসে আমরা ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি, যা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো রিজার্ভে হাত না দিয়েই করতে পারছি। ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে। তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারব।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বছরে ১৬-১৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছিল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারে অর্থ পাচারের এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেই অর্থ ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। কত অর্থ পাচার হয়েছে, তা বের করতে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ৭ নভেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার।

Header Ad

আসিয়ান সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান ড. ইউনূস

আসিয়ান সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান ড. ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসিয়ানে বাংলাদেশের সদস্যপদে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিকে বাংলাদেশিদের ব্যবসার জন্য আরও সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো তেজগাঁওস্থ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘আমি আশা করি ইন্দোনেশিয়া আমাদের আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে সাহায্য করবে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে আরও জানান, তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আগামী জানুয়ারিতে মালেশিয়া আসিয়ানের সভাপতিত্ব গ্রহণ করবে।

রাষ্ট্রদূত সুবোলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তার দেশের সমর্থন জানান।

তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া আসিয়ান সদস্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদন নিবিড়ভাবে অনুসরণ করবে।

‘ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। আশা করি এটি উভয় দেশের জন্য উপকারী হবে,’ বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা ক্ষুদ্রঋণ প্রচারের জন্য ইন্দোনেশিয়ায় তার একাধিক সফরের কথা স্মরণ করেন। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে তিনি ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশি ব্যবসার খুব কম উপস্থিতি দেখেছেন বলেন জানান।

‘একটা বিষয় সবসময় অনুশোচনার যে, ইন্দোনেশিয়ায় খুব বেশি বাংলাদেশি নেই। বাংলাদেশিরা সর্বত্র আছে কিন্তু ইন্দোনেশিয়ায় নেই,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া বৃহত্তম মুসলিম দেশ। কিন্তু সে দেশের মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন জানেন না। আমরা খুব বেশি যোগাযোগ করছি না। আমাদের কাছাকাছি আসার জন্য অবশ্যই একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

তিনি ইন্দোনেশিয়াকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিসহ বাংলাদেশি চিকিৎসক নিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে ওষুধপত্র আমদানি করার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত সুবোলো বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মাতারবাড়ি এবং অন্যান্য এলাকায় সোলার পিভি বিনিয়োগ প্রকল্পের বিষয়ে পারটামিনা পাওয়ার ইন্দোনেশিয়া এবং কোল জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট প্রবোও সুবিয়ানতোকে তার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৪ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধে সাকিব আল হাসানকে আইনি নোটিশ প্রদান
আদানির বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করা হবে: প্রেস সচিব
আসিয়ান সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান ড. ইউনূস
সংবিধান সংস্কারে নেওয়া হবে জনগণের মতামত, চালু হচ্ছে ওয়েবসাইট
চব্বিশের আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ একই সূত্রে গাঁথা, বললেন সোহেল তাজ
পরিবর্তন আনতে তরুণদের স্বপ্ন দেখতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা
মেহেরপুরে শিক্ষার্থীদের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
অক্টোবরে ২৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে
নতুন নির্দেশনা এলো ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে
দেশের সব সিটি করপোরেশনে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক নিয়োগ করা হবে: উপদেষ্টা হাসান আরিফ
চট্টগ্রামে শাহাদাত ভোটে জিতেছিলেন, ফল কেড়ে নেওয়া হয়েছিল: মির্জা ফখরুল
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে, নির্ধারক ফ্যাক্টর ‘ইলেকটোরাল কলেজ’
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, নেবে ১২০ জন
যোগী আদিত্যনাথকে হত্যার হুমকি: ১০ দিনের মধ্যে পদত্যাগ না করলে ঘটবে ‘বাবা সিদ্দিকির মতো পরিণতি’
চিত্রনায়িকা মৌসুমীর জন্মদিন আজ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা
নিজেদের দুর্গে ২৪ বছর পর হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবল ভারত
৪ দিনের মধ্যে বকেয়া না দিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের আল্টিমেটাম আদানির
বিক্ষোভের মুখে শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ
সাবেক বিসিবি সভাপতি পাপনের পিএসসহ গ্রেপ্তার ২