চুয়াডাঙ্গায় ডেঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার ( ৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিহত গৃহবধূ মুক্তা খাতুন (৩২) চুয়াডাঙ্গা শহরের শেকড়াতলা মাঝের পাড়ার মাসুদ রানা রিন্টুর স্ত্রী। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহত মুক্তা খাতুনের ভাই মনিরুল জানান, ১২ দিন আগে বোনটার জ্বর হলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করি। সেখানে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর হাসপাতালে ভর্তি ছিল। চারদিন আগে জ্বর ভয়াবহ হলে কুষ্টিয়া মেডিকেলে নিই। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক ৪ ডিসেম্বর রাত্রে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেলে দু'দিন ভর্তি ছিল। এরপর আজ শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, রোগীর ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ার পর আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আমরা মুক্তা খাতুন কে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠায়। তবে ডেঙ্গু জ্বরে তার লিভার ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল। এজন্য তিনি মারা গেছেন।
মহল্লাবাসীর অভিযোগ, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে মশক নিধন অভিযান নেই। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনাও নেই। সদর হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা পায়না রোগীরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আমজাদুল ইসলাম জানান, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কেউ হাসপাতালে আসলে তাকে প্রাথমিকভাবে এনএস ওয়ান পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত কিনা তা ধরা পড়ে। এরপর জ্বর ১ থেক ৩ দিন সর্বোচ্চ ৫ দিন পর্যন্ত হলে আইজিজি এবং আইজিএম পরীক্ষা না করলে ডেঙ্গু পজিটিভ কিনা ধরা পড়ে না। গত ১৫ দিন হলো সদর হাসপাতালে আইজিজি, আইজিএম ডিভাইস শেষ হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ৩ বার চাহিদা দিয়েও পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গত ১ মাসে ২৫৬ জন রোগী পরীক্ষা করানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ জন ডেঙ্গু পজিটিভ হয়েছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাসকে বার বার ফোন করে সরকারী নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, হাসপাতালের কোন বিষয় আমি জানি না। হাসপাতালের ওষুধ, পরীক্ষার ডিভাইস, রোগীর চিকিৎসা এটি তত্ত্বাবধায়কের দ্বায়িত্ব।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বর্তমানে ৯ জন ডেঙ্গু পজিটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন।