সারাবিশ্ব

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৫ হাজার


সারাবিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশ :১২ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ এএম

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৫ হাজার
ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় আরও ১২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, আহত হয়েছেন প্রায় ৩৬৩ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষও। এতে করে চলমান এই বর্বর আগ্রাসনে গাজায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলার শিকার হয়েছেন বহু নিরীহ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে অনেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। জানা গেছে, এই বিতরণকেন্দ্রগুলো ইসরায়েলি সেনা-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত, যেখানে প্রায়শই হামলার ঘটনা ঘটছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে চলেছে। তারা ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর গুলি চালানো ও খাদ্য অবরোধের মাধ্যমে ‘অনাহারে হত্যার কৌশল’ প্রয়োগ করছে বলে দাবি করেছে।

এই নিষ্ঠুর আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি জানিয়ে দিয়েছে, তারা জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেবে না, কারণ এতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট বেসরকারি ঠিকাদারদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা মানবিক সহায়তার আন্তর্জাতিক নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এছাড়াও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরাও। বিশিষ্ট বিশ্লেষক ক্রিস নিউটন মন্তব্য করেছেন, “ইসরায়েল এমন একটি সহায়তা কাঠামো তৈরি করেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সাধারণ মানুষকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ঠেলে দিয়ে খাদ্য সংকটের মধ্যে ফেলে রাখছে।” তিনি আরও বলেন, “জিএইচএফ প্রতিদিন একজনকে মাত্র ১,৭৫০ ক্যালরি খাবার দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা ১৯৪০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক অনাহার পরীক্ষার সময় নির্ধারিত মাত্রার কাছাকাছি। এটি ইসরায়েল নিজেই ২০০৮ সালে গাজার জন্য যে ন্যূনতম পুষ্টি সীমা নির্ধারণ করেছিল, তার চেয়েও কম।”

এই ভয়াবহ মানবিক সংকটে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনা বাড়ছে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই ইসরায়েলি আগ্রাসন। যুদ্ধ থামার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় গাজার জনগণের দুর্ভোগ দিনে দিনে আরও বাড়ছে।