লালমনিরহাটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) রুহুল আমীন বাবু নামে এক সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ রায় ঘোষণা দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আকমল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পিপি আকমল হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম শহর এলাকার রসুলগঞ্জ কলেজ রোডের একটি স'মিলে অভিযান চালিয়ে জেএমবি সদস্য রুহুল আমীন বাবুকে আটক করে র্যাব-১৩। আটকের সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন গুলিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত ৭৭টি উগ্রবাদী ও আড়াইশ জঙ্গিবাদী বই জব্দ করা হয়। পরে তার নামে পাটগ্রাম থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করে র্যাব। দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার দুপুরে এ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অপরাধে অস্ত্র আইনে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে আসামি এ মামলায় যতদিন জেল খেটেছেন, তা সাজা থেকে বাদ যাবে।
সব ইউনিটের নতুন কমিটি গঠনে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার সময় কোনো ধরনের আর্থিক মূল্যমান, মনোনয়ন ফি অথবা চাঁদা আদায় নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কোনো ইউনিট নির্দেশনা না মানলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর, জেলা সমমর্যাদার ইউনিট বা সরাসরি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত মেডিকেল কলেজ, কলেজ ও অন্যান্য ইউনিটের নতুন কমিটি গঠনের জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বানের সময় কোনো আর্থিক মূল্যমান/মনোনয়ন ফি/চাঁদা আদায় নির্ধারণ করা যাবে না। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর, জেলা ও অন্যান্য ইউনিট তাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটের নতুন কমিটি গঠনের জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বানের সময় আর্থিক মূল্যমান/মনোনয়ন ফি/চাঁদা আদায় নির্ধারণ করা যাবে না।
এছাড়া উপজেলা, কলেজ, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও অন্যান্য ইউনিট তাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটের নতুন কমিটি গঠনের জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বানের সময় আর্থিক মূল্যমান/মনোনয়ন ফি/চাঁদা আদায় নির্ধারণ করা যাবে না। উল্লেখিত নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিশুসাহিত্যিক ও আলোকচিত্রী হিসেবে পরিচিত টিআই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া। কয়েকটি ছড়ার বই ছাড়াও ‘হরর ক্লাব’ নামে শিশুদের জন্য সিরিজ বই আছে তার। পরিচয় সুনামের মনে হলেও আড়ালে তিনি ভয়ঙ্কর, বিকৃত মানসিকতার।
তিনি বাংলাদেশে বসে আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ভয়ংকর এ অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অনেক দেশে তিনি শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত। শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি ও বিদেশে বিক্রির অভিযোগে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।
এ সময় এক শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও শিশু পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম জব্দের কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর খিলগাঁও থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের এন্টি ইলিগ্যাল আর্মস রিকোভারি টিম। তারা হলেন টি আই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া ও মো. কামরুল ইসলাম ওরফে সাগর।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোড ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ফকরুজ্জামান এক সময়কার খুব জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক। তিনি টিপু কিবরিয়া নামে পরিচিত। টিপু কিবরিয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে বাংলায় স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে সেবা প্রকাশনীর মাসিক ‘কিশোর পত্রিকা’য় সহকারী সম্পাদক পদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি শিশু সাহিত্য রচনা করতেন। তার অর্ধশতাধিক বই রয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০০৫ সাল থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে জড়ান টিপু কিবরিয়া। দীর্ঘদিন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার পর ২০১৪ সালে সিআইডির কাছে গ্রেপ্তার হন এবং তার নামে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়। ২০২১ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন টিপু কিবরিয়া। ‘একশো এক’ নামে একটি কবিতার বই প্রকাশ করে। একই সাথে, সাহিত্য চর্চার আড়ালে পুনরায় শিশু পর্নোগ্রাফির সেই পুরোনো পথেই হাঁটতে শুরু করেন টিপু কিবরিয়া।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি কন্টেন্ট বানান। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাংবাদিক বেশে পথশিশুদের অর্থের লোভ দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিজের ক্যামেরার সাহায্যে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির নগ্ন ছবি, শরীরের বিভিন্ন গোপনাঙ্গের ছবি তোলেন এবং ভিডিও করেন। নিজের বাসা ছাড়াও বিভিন্ন পার্কের নির্জন ঝোপঝাড়ে এই ছিন্নমূল শিশুদের একই প্রক্রিয়ায় অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। শিশুদের সংগ্রহ করার জন্য তার কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। যাদের মধ্যে একজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো থেকে প্রায় ২০ জন পথশিশুর ছবি ভিকটিম হিসেবে শনাক্ত করা গেছে। তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা প্রায় ২৫শ’ শিশুর স্থিরচিত্র ও প্রায় এক হাজার ভিডিও কনটেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার ডেস্কটপে অসংখ্য ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের প্রচুর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। তিনি এসব কনটেন্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিকৃত রুচির গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতেন।
অভিযান পরিচালনার সময় তার বাসায় তার ব্যবহৃত ডেস্কটপটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি MEGA এবং Totanota নামক দুইটি এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের মাধ্যমে তার ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও জর্মানির নাগরিকসহ প্রায় ২০-২৫ টি Totanota ও MEGA আইডি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যারা এসব আইডি দিয়ে মূলহোতা টিপু কিবরিয়ার সাথে শিশু পর্নোগ্রাফির বিভিন্ন কনটেন্টের জন্য যোগাযোগ করত।
এ ছাড়া তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২৫শ’ শিশু পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা স্থির চিত্র ও প্রায় এক হাজার ভিডিও কনটেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার ডেস্কটপে অসংখ্য ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের প্রচুর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া গিয়েছে।