শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

৪০ বছরের ‘যুদ্ধজয়ী’ আনোয়ার ইব্রাহিম

মালয়েশিয়ার জননন্দিত রাজনীতিক আনোয়ার ইব্রাহিম একজন ভাগ্যবিড়ম্বিত নেতা। বারবার তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার হাতছানি পেলেও শেষ পর্যন্ত তা অধরাই থেকে গেছে। উল্টো মিথ্যা মামলায় জেলে খাটাই যেন ছিল তার নিয়তি। ১৯৮২ সাল থেকে রাজনীতির ভুবনে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন তরুণ আনোয়ার ইব্রাহিম, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়ে আজ তিনি সফল হলেন। মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও তার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল চমকপ্রদ ও বৈরিতায় মুখর।

আনোয়ার ইব্রাহিমের বয়স এখন ৭৫। প্রথম নিজের নামটি তৈরি করেছেন একজন ক্যারিসমাটিক ও আগুনের মতো জ্বলে ওঠা ছাত্রনেতা হিসেবে। তিনিই তখন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মালয়শিয়ার মুসলিম তরুণদের সংগঠন ‘আনকাতান বালিয়া ইসলাম মালয়শিয়া (এবিআইএম)’। তবে এরপর অনেককে অবাক করে দিয়ে ১৯৮২ সালে তিনি যোগ দেন ‘ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অগানাইজেশন (ইউএমএনও)’-এ।

১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বহু পুরোনো ইউএমএনও দলে যোগ দেওয়া ছিল তার একটি বিচক্ষণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানেই নিজেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বারবার ওপরে উঠিয়েছেন এবং মন্ত্রীসভাতে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় মাহাথিরকে তিনি প্রত্যাশা মিটিয়ে ব্যাপক সাফল্য লাভে সহায়তা করেন।

তবে তাদের দুজনের মধ্যে উত্তেজনার শুরু হলো ১৯৯৭ সালের এশিয়ার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে। তারা দুজনেই ধাক্কা খেয়ে গেলেন অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও দুর্নীতিতে। পরের বছর ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে বরখাস্ত করা হলো এবং তিনি মাহাথির মোহাম্মদের বিপক্ষে গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেন। এই আন্দোলনই মালয়শিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি প্রজন্মকে উৎসাহিত ও বেগবান করেছে। আন্দোলনের নেতা আনোয়ার গ্রেপ্তার হন এবং তার বিপক্ষে সমকামিতা ও দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়।

শুনানিতে তিনি বিতর্কিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। যেহেতু মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়া সমকামিতার কার্যক্রমগুলোকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, তারপরও তাকে মামলাগুলোতে দোষী সাব্যস্ত করা বিরল হয়ে গেল প্রমাণের অভাবে। আনোয়ার ইব্রাহিম রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলার শিকার হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানালো। তারপরও তার ছয় বছরের কারাদণ্ড হলো। এরপর ভয়াবহ সহিংস সংঘাত দেশের রাস্তায়, রাস্তায় ছড়িয়ে গেল। এক বছর পর আনোয়ার ইব্রাহিম সমকামিতার জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন।

আনোয়ার ইব্রাহিম সবসময় উল্লেখ করেছেন যে, মাহাথির মোহাম্মদ তাকে রাজনৈতিক হুমকি হিসেবে মনে করেন। আর এজন্য তিনি তার বিপক্ষে প্রচারণা ও কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অভিযোগ ও শাস্তি প্রদান করার পাঁয়তারা করছেন।

২০০৪ সালের শেষের দিকে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হলে দেশের সুপ্রিম কোর্ট সমকামিতার মামলায় উল্টো অবস্থান নেয় এবং আনোয়ারকে জেল থেকে মুক্তি দেয়।

তারপর থেকে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি নিজেকে আরও মজবুত অবস্থানে নিয়ে যান। যখন জেল থেকে মুক্ত হলেন আনোয়ার ইব্রাহিম, তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে মাহাথির মোহাম্মদের বিপক্ষে বাস্তবে ও কার্যত সবার প্রধান হিসেবে তুলে ধরতে লাগলেন।

২০০৮ সালের নিবাচনে তার দল শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেন। তবে সে বছর আবার তার বিপক্ষে সমকামিতার অভিযোগ তৈরি করা হলো। তিনি দাবি করলেন, তাকে মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে এটি সরকারের আরেকটি পদক্ষেপ। অবশেষে ২০১২ সালের হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আনোয়ার ইব্রাহিমকে সব মামলা থেকে মুক্ত করে দেয়। তারা জানালেন, প্রমাণের অভাব রয়েছে।

পরের বছর তিনি নির্বাচনে প্রধান ভূমিকা পালন করলেন ও নতুন মাত্রা তৈরি করলেন। ফলে তিনি ক্ষমতাশীল ‘বারিশান ন্যাশনাল কোয়ালিশন (বিএনসি)’র ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল এনে দিলেন। তবে আবারও আনোয়ার ইব্রাহিমের রাজনৈতিক আশাগুলো হুমকির মধ্যে পড়ে গেল। ২০১৪ সালে তিনি একটি রাজ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যে মামলাগুলোতে আদালতের বিচারে খালাস পেয়েছিলেন, সেগুলো আবার ফিরিয়ে আনা হলো এবং তাকে জেলে বন্দী করা হলো। তবে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বহু পুরোনো ও দক্ষ খেলোয়াড় এবং মাহাথির মোহাম্মদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী কখনো কোনোভাবেই দমে যাননি। তিনি বারবার সামনে আসার চেষ্টা করেছেন।

এর মধ্যে নানা ঘটনায় সবাইকে চমকে দিয়ে ২০১৬ সালে তার সাবেক শত্রু মাহাথির ঘোষণা করলেন, তিনি অবসর বাতিল করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য আবার লড়বেন। তখন ৯২ বছরের মালয়েশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নেতা জানালেন, তার বিপক্ষে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের আনীত দুর্নীতির মামলাগুলোতে দুর্বল হয়ে গিয়েছেন। এসময় তিনি জেলে বন্দী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একটি অচিন্তনীয় চুক্তি করলেন। তিনি বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় তখন। তাকে জেল থেকে মুক্ত করলেন। দেশের জনগনকে খুশিতে ভাসিয়ে তারা একত্রে বসলেন ও আলোচনা করলেন, করমর্দন করলেন। মালয়েশিয়ার ইতিহাসে একটি অসামান্য রাজনৈতিক পূণমিলনী ও ঐক্যের সূচনা করলেন।

মাহাথির মোহাম্মদ ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে তাদের রাজনৈতিক ঐক্যের ‘দি পাকাতান হারাপান অ্যালায়েন্স’ বা আশার মৈত্রী’র নেতৃত্ব দিলেন। থামিয়ে দিলেন বারিশান ন্যাশনাল’সদের ৬১ বছরের টানা দেশটিকে শাসনের ইতিহাস। তাদের এই রাজনৈতিক ঐক্যে মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সত্যিকারেভাবে এবং প্রথমবারের মতো নানা ধর্মের মানুষরা এলেন চারটি দল থেকে। তারা লাভ করলেন দেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান, শক্তিশালী চীনা ও ভারতীয় সংখ্যালঘুদের সমর্থন। আবার মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে মাহাথির মোহাম্মদ নির্দিষ্টভাবে জানালেন যে, আগামী দুই বছরের মধ্যে আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। তিনি তাকে আদালত থেকে মুক্ত করার অঙ্গীকার করলেন ও তাকে পুরোপুরি ক্ষমা করে দেবেন।

তবে তাদের রাজনৈতিক ঐক্য অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক হতে লাগলো যখন নব্বই বছর বয়সী মাহাথির তার ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইলেন। ফলে আবার মালয়েশিয়ান জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলে তাদের ঐক্যে ভাঙন ধরে। এর মাধ্যমে আবার খালি হাতে ফিরে গেলেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

এরপর আবার ক্ষমতায় এলো ‘ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও)’, নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন মহিউদ্দন ইয়াসিন। তবে মোটে এক বছর পর, মহামারি করোনার সবচেয়ে খারাপ সময়ে প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিন কয়েক মাসের টালমাটাল অবস্থার পর পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর পদত্যাগ করেন। গত অক্টোবরে তার দলে উত্তরাধিকারী ইসমাঈল সাবরি ইয়াক্বু ক্ষমতা কামড়ে ধরবেন বলে এগুলেন। ইউএমএনও নিশ্চিত হলো যে, তারা নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আবার ক্ষমতা দখল করতে পারবে। নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের জাদু ও দূরদর্শিতায় পাকাতান হারাপান অ্যালায়েন্স বেশিরভাগ সিট দখল করে।

টানা ৪০ বছর রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সংগ্রাম সফল হলো আনোয়ার ইব্রাহিমের। তিনি হলেন দেশটির ১০তম প্রধানমন্ত্রী।

ওএফএস/আরএ/

Header Ad

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ওমরাহ পালনে বিদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাপনা আরও সহজ করেছে সৌদি আরব। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরব গেলেই বিদেশিরা ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো দেশ থেকে এবং যেকোনো ভিসায় সৌদি আরবে আগতরা এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারবেন।

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ট্রানজিট, শ্রম ও ই-ভিসাসহ সব ভিসাধারী ব্যক্তিরা এ সুযোগ পাবেন। এছাড়া ওমরাহ পালনের অনুমতি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ‘নুসুক’ অ্যাপ ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।

এদিকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের ইবাদত সহজ করতে ‘ডিজিটাল ব্যাগ’ চালু করেছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, এই ব্যাগ প্রোগ্রাম হজ ও ওমরাহযাত্রীদের জীবনমান সহজ করবে। তাদের হজ ও ওমরাহ পালন সহজ করবে। মুসল্লিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এর মাধ্যমে। বিশেষ করে কখন তারা কোন বিধান পালন করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।

নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু

নিহত জাওহার আমিন লাদেন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে মামাতো বোনের বউভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জাওহার আমিন লাদেন (১৮) নামে আরও এক কলেজছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন প্রাণ হারালেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়

নিহত জাওহার বড়াইগ্রামের গোপালপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে যায় তিন ভাই। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে বের হন তারা। পথে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামাতো ভাই আকিব হাসান (১৫) ও খায়রুল বাশার ছাগির (১৭) মারা যায়। বুধবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেক ভাই জাওহারের মৃত্যু হয়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম খান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার ধামানিয়াপাড়া গ্রামে মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন মামাতো-ফুফাতো ভাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনই মারা গেছেন।

জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপরই বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চক্রটি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কয়েকশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ঢাবি শিক্ষার্থী ও তিনজন পরীক্ষার্থী।

ডিবি জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে বসে এ পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করতেন তারা। পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হতো উত্তরপত্র।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মণ্ডল (৩০)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ডিবিপ্রধান বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এ পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা করে সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, কীভাবে এবং কখন তার মোবাইলে উত্তরপত্র এসেছে। মাদারীপুরে গ্রেপ্তার হওয়া পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যান। ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ তদন্তে নামে।

মাঠে নেমে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে। তারা দুজনেই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

তারা গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, পরীক্ষার আগেই তারা প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এ প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসিম গাইনের মাধ্যমে।

প্রশ্ন প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধান করান অসিম। এ প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাতজন ঢাবির জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে তারা প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান। অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সামাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে, এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন।

পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসিম গাইন। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টিই মিলেছে।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি, তাতে এ চক্রের হোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। তিনি আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। তিনি অল্পদিনে কয়েকশ’ কোটি টাকা আয় করেছেন। এ টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকা অসিমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ডিশের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেপ্তার করলে কীভাবে প্রশ্নগুলো পান, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।

এ ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানানো হবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন বলেন, আমরা এ মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন না-কি বহাল রাখবেন।

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়