বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

স্নানের শব্দ

অফিসের আবহাওয়ায় সূক্ষ্ম একটা পরিবর্তন টের পাচ্ছে শবনম। ঠিক দৃশ্যমান কিছু নেই কিন্তু অদৃশ্য একটা বিভাজনের বাতাস হু হু করে বইছে যেন। ওসমান গণি সিইও হতে যাচ্ছে এই বিশ্বাসে একদল আগেভাগেই তার সুনজরে পড়ার আশায়, তার দলে যোগ দেওয়ার জন্য কসরত শুরু করে দিয়েছে। আরেকদল যারা গণিকে অপছন্দ করে তারা শবনমের পাঁ ধরার পাঁয়তারা করছে, যদিও শবনম স্বভাবগত কারণেই তাদের খুব একটা পাত্তা টাত্তা দিচ্ছে না। কিন্তু ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে তুমি যদি ওসমান গণিকে সমর্থন না করো তবে তার মানে হচ্ছে তুমি শবনমের লোক। ফলে শবনম প্রকাশ্যে কাউকে আশকারা না দিলেও মনিরুজ্জামান তার দলবল নিয়ে শবনমের পক্ষে দলভারী করে চলেছে।

‘এইসব গ্রুপিং ট্রুপিং ছাড়ো তো মনিরুজ্জামান, আমি পরিশ্রম করা মানুষ, আমার দলবাজির দরকার নাই। অফিসে এইরকম বিভক্তি একদমই ভাল লাগছে না আমার। এসব থামাও..’

মনিরুজ্জামানকে কড়া গলায় ধমক দিয়ে বলেছে শবনম। কিন্তু তাতে কি আর মনিরুজ্জামান থামে? সে বত্রিশ দাঁত বের করে হাসিমুখে বলে,
‘ম্যাডাম আপনি না চাইলে কি হবে, সবাই জানে অফিসে এখন দুইটা ভাগ। বাটপার আর তোষামোদকারীরা সব গেছে ওসমান গণির দলে আর বাকিরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সব নীরবে আপনার দলে। আপনার চাওয়া না চাওয়ায় কিছু আটকাবে না ম্যাডাম। এটা হবেই।’

শবনমের অস্বস্তি লাগে, অফিসে এই ধরনের দলাদলির চর্চা সে আগে কখনো করেনি। করার দরকারও পড়েনি। প্রফেশনের শুরুর দিকে যখন জুনিয়র পোস্টে কাজ করেছে তখন কোনো কোনো বস যে তাকে দলে টানার চেষ্টা করেনি তা নয়, কিন্তু কখনোই কারো দাবার চালের গুটি হতে ইচ্ছে করেনি তার। ফলে কৌশলে সব পক্ষের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে টেবিলে নাক মুখ গুজে নিজের কাজটা মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা করে গেছে সে। সব দলের সঙ্গেই এক ধরনের ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। রওশন আপা শবনমের এই ভারসাম্যবোধের খুব প্রশংসা করতেন। কিন্তু এখন তো সেই ভারের সমতা রক্ষা আর কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে বিনা যুদ্ধে মাঠ ছেড়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা শবনমের নেই।

এরই মধ্যে দুপুরবেলা লাঞ্চের পর শবনমের রুমে এসে একাউন্টসের আতিয়ার সাহেব জানিয়ে গেলেন ওসমান গণির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করার জন্য উপর থেকে নির্দেশ এসেছে। একটা উদ্দেশ্যপূর্ণ বাঁকা হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে মেদবহুল শরীরটা চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে বললেন,
‘আপনের তো কপাল খুলি গেছে ম্যাডাম। এবার আর কেউ আফনেরে আটকায়া রাখতে হারতো ন’।’

যেন কিছুই জানে না এমন ভঙ্গী করে শবনম বলল, ‘কি যে বলেন না! ওসমান গণির জন্য তো আমার খারাপই লাগছে। সত্য মিথ্যা তো জানি না, কিন্তু বেচারা এমন একটা বাজে অবস্থায় পড়ল!’
‘অফিসের কেউ না কেউ আছে এর পেছনে, বুঝলেননি? নাইলে এত ভিতরের খবর বাইরে যাইতে পারে ন’।’
আতিয়ার সাহেব নিচু গলায় ফিসফিস করে।

‘তাই নাকি? কারা জড়িত জানা গেছে?’ শবনম ততোধিক ফিসফিস করে জানতে চায়।
‘না, এখন পর্যন্ত জানন যায় ‘ন। তবে ধরি ফালাইব। এইসব কথা চাপা থাকে না।’
‘কিন্তু ওসমান গণির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, টাকা পয়সা এদিক সেদিক করার, সেই কাজটা কি সত্যি? আসলেই সে দুর্নীতি করছে, নাকি করে নাই, পুরাটাই কি মিথ্যা অভিযোগ..’
‘না, সেইটা আঁই জানি ন। আল্লাহ মাবুদ জানে, কার মনে কি আছে, তবে বুঝলেননি, কথায় আছে না, যা রটে তার কিছুটা তো বটে.. তদন্ত করলেই পাওন যাইব হেতি দোষী কি নির্দোষ! কিন্তু হেতি সিইও হওনের যে খায়েশ করছিলেন, সেইটা আপাতত পুরণ হওনের কোনো পথ নাই ..আফনের পথ খুলি গেছে.. আর কুনো বাঁধা নাই।’
‘কি যে বলেন না, ভাই, সবই তো বোর্ড মেম্বারদের মর্জি, দেখেন আগে, ম্যানেজমেন্ট কি সিদ্ধান্ত নেয়.. পর্দার আড়ালে কত কিছু ঘটে, সব কিছু কি আমরা জানি?’

আতিয়ার সাহেব চলে যাওয়ার পর কম্পিউটর স্ক্রিনে চোখ রেখে গত মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাবটা দেখছিল শবনম, তখনই ঘরের দরজা ঠেলে ঝড়ের গতিতে ঢুকলো ওসমান গণি। বিধ্বস্ত, রাগী চেহারা, মাথায় চুলগুলো অবিন্যস্ত, চোখে ক্রোধ, উত্তেজনায় শরীর কাঁপছে তার। দাঁড়ানো অবস্থাতেই শবনমের টেবিলে দু হাত রেখে মাথাটা সামনে বাড়িয়ে চাপা গলায় হিস হিস করে উঠল সে,
‘নোংরা খেলাটা না খেললেও পারতেন ম্যাডাম..ছি, এত নিচে কীভাবে নামতে পারলেন?’
‘হোয়াট? কী বলতে চান আপনি?’
আকস্মিক এই আক্রমণে রেগে গিয়ে সাঁই করে চেয়ার ছেড়ে উঠে ওসমান গণির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় শবনম।
‘এই চক্রান্তটা না করলেও পারতেন, ম্যাডাম। মানুষ পাওয়ারের জন্য এমন ইতরামি করতে পারে জানা ছিল না! অন্তত আপনার কাছে এটা আশা করি নাই..’
ওসমান গণির কণ্ঠে তীব্র শ্লেষ। এবার তর্জনী উঁচিয়ে গলা চড়িয়ে প্রায় চিৎকার করে উঠল শবনম।
‘মুখ সামলে কথা বলেন ওসমান গণি, যা তা অপবাদ দিলে আমি কিন্তু একদম সহ্য করব না। সাবধান করে দিচ্ছি আপনাকে।’

শবনমের রাগত কণ্ঠস্বর রুমের কাঁচের দরজা ভেদ করে সামনের করিডোর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল।
‘আমাকে কেন খামাকা আপনার কৃতকর্মের সঙ্গে জড়াতে চাইছেন? হ্যাঁ? যা বলার তদন্ত কমিটির সামনে গিয়ে বলেন! এখানে মাস্তানী করতে আসবেন না।’

শবনমের রণরঙ্গিণী মূর্তির সামনে এবার একটু থমকে গেল ওসমান গণি।
‘পদের লোভে আপনি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন, কাকে কি বলছেন বুঝতে পারছেন না। পাগল হয়ে গেছেন!’
শবনম ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে।
‘না ম্যডাম, আমি ঠিক আছি। জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায় নাই। পাগলও হই নাই। সবই আমি বুঝতে পারছি ম্যাডাম। পরিষ্কার বুঝতে পারছি। কাউকে ছাড়ব না আমি। সব কুচক্রীদের দেখে নিবো।’

হুমকি দেওয়ার ভঙ্গীতে কথাটি বলে দড়াম শব্দ করে দরজাটা ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায় ওসমান গণি। শবনম ধপ করে নিজের চেয়ারে বসে একটু হাঁপাতে থাকে। প্রচণ্ড রাগে পা থেকে মাথা পর্যন্ত চিড়বিড় করছে তার। এক গ্লাস পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে শবনম। নির্ঝর চৌধুরী একবার কথায় কথায় বলেছিলেন, প্রফেশনের ঘাত প্রতিঘাত সামলাতে হলে গায়ের চামড়া মোটা হতে হয়। রাগ ক্রোধ কদাচ থাকতে নয়। অথচ ওসমান গণির এই নোংরা কুৎসিত আক্রমণের শিকার হয়ে রাগ ক্রোধ ক্ষোভ কোনোটাই সামলাতে পারছে না শবনম। মনে হচ্ছে চিৎকার করে ওসমান গণিকে গালিগালাজ করতে পারলে বা আঘাত করতে পারলে তার ক্ষোভ হয়ত কিছুটা কমত। বুক ভরে বাতাস নিয়ে মুখ দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ে শবনম। নিজের ছোট্ট রুমের ভেতর পায়চারি করে নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে।
শবনম কখনোই বদরাগী টাইপের মানুষ নয়। সারা জীবন কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি অন্তত করেনি, কিন্তু এবার কি প্রতিযোগিতায় নেমে সে নিজের শুদ্ধ হৃদয়কে অশুদ্ধ করে ফেলল? শীর্ষে ওঠার জন্য প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে সাদা গায়ে কালি লাগিয়ে ফেলল? এই যে, ওসমান গণির সঙ্গে সংঘাত তার প্রধান কারণ তো এটাই যে তারা দুজনই একই সঙ্গে সিইও পদ পাবার জন্য আকাঙ্ক্ষা করছে। ফলে তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই প্রতিযোগিতায় একজন জয়ী হবে এটাই নিয়ম। খেলা শুরু হয়ে গেছে, এখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই। ধনুক থেকে তীর ছুটে গেছে, তাকে ফেরানো সম্ভব নয়।

ঘটনাচক্রে শবনম এই খেলায় ভালো অবস্থানে আছে। আর ওসমান গণি গাড্ডায় পড়ে গেছে। আবার উল্টোটাও হতে পারত, শবনমের কোনো ত্রুটি খুঁজে পেলে প্রতিপক্ষ নিশ্চয়ই তাকে ছেড়ে কথা কইতো না। সেই ত্রুটিটাই বড় করে ম্যানেজমেন্টের সামনে তুলে ধরে তার বিপক্ষে কাজে লাগাতো। শবনম জানে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এখন শুধু স্থির অবিচল ভাবে স্টিয়ারিংটা ধরে রাখতে হবে। কিছুতেই অধৈর্য হওয়া চলবে না। সেই পুরনো বাক্যটা নিজেকে শোনায় সে, ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।’
শবনম হারতে চায় না, যেভাবেই হোক সে এই লড়াইয়ে জিততে চায়।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ