ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষক, দেশবরেণ্য ভাস্কর, একুশে পদকপ্রাপ্ত শামীম শিকদার মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কিউরেটর অব শামীম শিকদার স্কাল্পচার পার্ক ইমরান হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শামীম শিকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ছিলেন তিনি। কার্ডিওভাসকুলার, শ্বাসতন্ত্র এবং কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন ৭০ বছর বয়সী এই ভাস্কর।
১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসিতে ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা’ ভাস্কর্য নির্মাণ করেন শামীম শিকদার। ২০০০ সালে ফুলার রোডে ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ নামে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করেন তিনি তিনি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির জনকের ভাস্কর্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে স্বামী বিবেকানন্দের ভাস্কর্য ও স্ট্রাগলিং ফোর্সসহ বহু ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন তিনি। প্রখ্যাত এই ভাস্কর ২০০০ সালে একুশে পদক পান।
শিশুসাহিত্যিক ও আলোকচিত্রী হিসেবে পরিচিত টিআই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া। কয়েকটি ছড়ার বই ছাড়াও ‘হরর ক্লাব’ নামে শিশুদের জন্য সিরিজ বই আছে তার। পরিচয় সুনামের মনে হলেও আড়ালে তিনি ভয়ঙ্কর, বিকৃত মানসিকতার।
তিনি বাংলাদেশে বসে আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ভয়ংকর এ অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অনেক দেশে তিনি শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত। শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি ও বিদেশে বিক্রির অভিযোগে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।
এ সময় এক শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও শিশু পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম জব্দের কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর খিলগাঁও থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের এন্টি ইলিগ্যাল আর্মস রিকোভারি টিম। তারা হলেন টি আই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া ও মো. কামরুল ইসলাম ওরফে সাগর।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোড ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ফকরুজ্জামান এক সময়কার খুব জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক। তিনি টিপু কিবরিয়া নামে পরিচিত। টিপু কিবরিয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে বাংলায় স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে সেবা প্রকাশনীর মাসিক ‘কিশোর পত্রিকা’য় সহকারী সম্পাদক পদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি শিশু সাহিত্য রচনা করতেন। তার অর্ধশতাধিক বই রয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০০৫ সাল থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে জড়ান টিপু কিবরিয়া। দীর্ঘদিন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার পর ২০১৪ সালে সিআইডির কাছে গ্রেপ্তার হন এবং তার নামে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়। ২০২১ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন টিপু কিবরিয়া। ‘একশো এক’ নামে একটি কবিতার বই প্রকাশ করে। একই সাথে, সাহিত্য চর্চার আড়ালে পুনরায় শিশু পর্নোগ্রাফির সেই পুরোনো পথেই হাঁটতে শুরু করেন টিপু কিবরিয়া।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি কন্টেন্ট বানান। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাংবাদিক বেশে পথশিশুদের অর্থের লোভ দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিজের ক্যামেরার সাহায্যে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির নগ্ন ছবি, শরীরের বিভিন্ন গোপনাঙ্গের ছবি তোলেন এবং ভিডিও করেন। নিজের বাসা ছাড়াও বিভিন্ন পার্কের নির্জন ঝোপঝাড়ে এই ছিন্নমূল শিশুদের একই প্রক্রিয়ায় অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। শিশুদের সংগ্রহ করার জন্য তার কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। যাদের মধ্যে একজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো থেকে প্রায় ২০ জন পথশিশুর ছবি ভিকটিম হিসেবে শনাক্ত করা গেছে। তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা প্রায় ২৫শ’ শিশুর স্থিরচিত্র ও প্রায় এক হাজার ভিডিও কনটেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার ডেস্কটপে অসংখ্য ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের প্রচুর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। তিনি এসব কনটেন্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিকৃত রুচির গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতেন।
অভিযান পরিচালনার সময় তার বাসায় তার ব্যবহৃত ডেস্কটপটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি MEGA এবং Totanota নামক দুইটি এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের মাধ্যমে তার ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও জর্মানির নাগরিকসহ প্রায় ২০-২৫ টি Totanota ও MEGA আইডি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যারা এসব আইডি দিয়ে মূলহোতা টিপু কিবরিয়ার সাথে শিশু পর্নোগ্রাফির বিভিন্ন কনটেন্টের জন্য যোগাযোগ করত।
এ ছাড়া তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২৫শ’ শিশু পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা স্থির চিত্র ও প্রায় এক হাজার ভিডিও কনটেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার ডেস্কটপে অসংখ্য ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের প্রচুর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া গিয়েছে।
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে ৬ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
রাঙামাটির সাজেকে সড়ক থেকে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাজেক ইউনিয়নের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি টিলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে রওয়ানা হয়েছে।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাতুলাল চাকমা জানান, শ্রমিকরা কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় চালকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ড্রামট্রাকটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন মারা যান। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন। ট্রাকটিতে ১৭ জন শ্রমিক ছিলেন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে জনতার ধাওয়া খেয়ে চুরি করে আনা পাঁচটি গরু ও গাড়ি রেখে পালিয়েছে চোরচক্রের সদস্যরা। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী গরুগুলো উদ্ধারের পর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের গালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, চুরি করা পাঁচটি গরু ট্রাকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন গাড়িটিকে ধাওয়া করলে ট্রাকের চালকের গ্রামের রাস্তা পরিচিত না হওয়ায় গাড়িটি জামুরিয়ার গালা এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। পরে গ্রামের লোকজন গরু নামিয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ঘাটাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সজল খান জানান, উদ্ধার হওয়া গরুগুলো চুরি করা ছিল। চোরচক্রের সদস্যরা হয়তো কোথাও থেকে চুরি করে নেওয়ার সময় ধরা পড়ার ভয়ে রেখে পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।