বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা

বছরের প্রথম দিন। শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে, যদিও সবাই এতে শামিল হতে পারে না। ২০২২ সালের প্রথমদিনও কি সে রকমটি হবে? এনসিটিবি বলছে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের বই দেওয়া হয় না, তাদের দেওয়া হয় শুধু খাতা, তা না-কি ছাপা হয়ে গেছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য গত ৯ নভেম্বর প্রেস মালিকদের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে এনসিটিবি। নিয়ম অনুযায়ী, চুক্তির পর বই ছাপাতে প্রেস মালিকরা ৮৪ দিন সময় পান। সেই হিসাবে, ৩১ ডিসেম্বরের আগে এই দুই শ্রেণির বই ছাপার কাজও শেষ হবে না। এর ফলে ১ জানুয়ারি এই দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবকটি বই নাও পেতে পারে।

এ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। এই আংশিক বই নিয়েই আগামী ১ জানুয়ারি পাঠ্যবই উৎসব করতে চায় শিক্ষা প্রশাসন। প্রতিবছরই বিনামূল্যের বই ছাপানো, দেশের বিভিন্ন স্থানে সেগুলো প্রেরণ করা এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা, সমালোচনা এবং শেষে বিলম্ব হতে দেখা যায়। বই উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়; কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা কোনো বছরই সময়মতো বই পায় না। বিলম্বের কারণ হিসেবে যেসব কারণ সামনে চলে এসেছে, সেগুলো হলো–পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য বাজার উপযোগী দাম নির্ধারণ করতে না পারা, বারবার দরপত্র আহ্বান করা, নির্ধারিত সময়ের বহু পরে ছাপার কাজ শুরু করা, অদক্ষ ও অযোগ্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া, যোগ্য কর্মকর্তাদের ওএসডি করে রাখা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঢিলেমি।

এনসিটিবি বলছে, তারা পাঠ্যবই ছাপানোর কাজের অনুমোদনের জন্য সময়মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিল; কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পায়নি। এর মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরে এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে কাজ গতি পায়। এ ছাড়া চলতি ডিসেম্বরের শেষ দিকে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অবসরোত্তর ছুটিতে যাবেন। এনসিটিবির সদস্যরা পাঠ্যবইয়ের কাজ দেখভালের পরিবর্তে তারা চেয়ারম্যান হওয়ার তদবিরে ব্যস্ত। এর ফলে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পিছিয়ে যায়। আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রি-প্রাইমারি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সোয়া দুই কোটি শিক্ষার্থীর জন্য সাড়ে ৩৫ কোটি বই ছাপা, বাঁধাই এবং স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বিতরণ করতে যে সময় আছে তাতে সমস্যা হবে এবং মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বিষয়টি এক রকম অসম্ভব।

জানা যায় যে, শিক্ষার্থীরা যাতে সময়মতো পাঠ্যবই হাতে পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এনসিটিবির কাজে হস্তক্ষেপ করেছে। বছরজুড়ে ঢিলেমি দেখিয়ে গত আগস্টের পর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে বেশি তৎপর হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ও ১০টি পরিদর্শন টিম গঠন করেছে, যারা ঘুরে ঘুরে পাঠ্যবই ছাপানোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। একইসঙ্গে এনসিটিবিও ৩৯টি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। এমন হতাশাজনক তৎপরতার মধ্যেই এনসিটিবি বলছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিও চাওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩০ অথব ৩১ ডিসেম্বরে প্রধামন্ত্রী বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন। ১ জানুয়ারি শিক্ষা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে স্কুলে বই উৎসব পালন করবে।

বই ছাপানোর এই মহাযজ্ঞ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করতে গিয়ে এনসিটিবির সবাই ব্যস্ত, মহাব্যস্ত। বই ছাপানো হয়েছে কি না এ নিয়েই পুরো এনসিটিবি ব্যস্ত, এতে তাদের উৎসাহেরও কমতি নেই। এনসিটিবিতে গেলে দেখা যায়, অনেক বিভাগে তালা মারা, আর যেসব বিভাগ বা রুমে তালা নেই সেখানকার চেয়ারগুলো খালি। জিজ্ঞেস করলে বা পরিচিতজনদের ফোন করলে জানা যায়, তারা প্রেসে বই ছাপা পরিদর্শনে গেছেন। প্রশ্ন হলো–বই ছাপানো নিয়ে সবাই ব্যস্ত; কিন্তু বইয়ের ভেতর কী লেখা আছে, কীভাবে লেখা আছে, এ নিয়ে কিন্তু কারও খুব একটা চিন্তা নেই। বই ছাপাতে হবে, ছাপানো হচ্ছে, তা সে যে কোনো মূল্যেই হোক। পরে দেখা যায়, একটি বইয়ে গণিতের সঙ্গে কিছু অধ্যায় কিংবা কিছু পৃষ্ঠা এসেছে কৃষি বিজ্ঞান কিংবা ইসলামিয়াতের। সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণির বাংলা, আবার সমাজবিজ্ঞান বইয়ের সঙ্গে কিছু কবিতা যুক্ত হয়ে শিশুদের কাছে যায়। এমনটি হয় প্রতিবছরই। আর শিশুদের কাছে বই যাওয়া তো চলে পুরো বছর ধরে। গত বছর (২০২০) অক্টোবর নভেম্বর পর্যন্ত বই বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেহেতু বিনামূল্যে বই পাচ্ছে তাই আর এ নিয়ে খুব একটা কথা কেউ বলে না, সাংবাদিকরাও সেভাবে বিষয়টিকে গুরুত্বে দেন না।

বিনামূল্যের বই না পাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের ভেতরেও তেমন হা-হুতাশ নেই–তার আরেকটি কারণ হলো–অনেক শিক্ষার্থী, অনেক শিক্ষক এনসিটিবি টেক্সট ব্যবহারই করেন না। বইয়ের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নাত্তর তৈরি করা হয়েছে। তারা সেগুলোই দেখে ও প্রস্তুতি নেয়। আর এ ছাড়া করারই বা কী আছে? হাতে সময়মতো বই পায় না প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা ইচ্ছে করলেও কোথাও থেকে বই ক্রয় করতে পারেন না। বই পেতে হবে মাঠ পর্যায়ের পেটি-অফিসারদের কাছ থেকে তৈলমর্দন করে, পোহাতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। তারপর কোনো বই নষ্ট হলে, হারিয়ে গেলে, ছিঁড়ে গেলে দ্বিতীয়বার সেই বই পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই, অতএব বিকল্প পথ তো থাকতে হবে।

অনলাইনে বই? সে তো ভাগ্যের ব্যাপার! ঢাকায় বসেই ঠিকমতো পাওয়া যায় না, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বই ডাউনলোড দিতে হয়তো আধাবেলা অপেক্ষা করতে হবে। এগুলো বাস্তবতা, এগুলো নিয়ে তেমন কেউ কথাও বলেন না। এমনিতেই শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকরা বই পড়তে চান না, তার মধ্যে আবার এত ঝামেলা। অতএব ঝামেলা এড়াতে বই নিয়ে উচ্চবাচ্য না করাই উত্তম!

২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২হাজার ১৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের মোট বই ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৪ কপি। আর মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৪ কোটি ৭১ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৬ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এনসিটিবির পরিসংখ্যান বলছে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ১৬ কোটি বই ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে ১০ কোটি বই উপজেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবি জানিয়েছে যে, বাকি সময়ের মধ্যে বাকি বইগুলো পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, জীবনে যে শিশু প্রথমবার স্কুলে যাচেছ সে জানুয়ারির ১ তারিখ বই পাচেছনা। বই না দিতে পারলে উৎসব হবে কিভাবে? তাদের সংগঠনের হিসেবে ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে ৬০ শতাংশ বই ছাপা শেষ হবে। নোয়াখালীতে অবস্থিত অগ্রণী প্রিন্টার্স একাই পেয়েছে প্রাথমিকের ৬০শতাংশ বই ছাপার কাজ। কিভাবে তারা এটি শেষ করবে?অগ্রণী প্রিন্টার্স রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। এটির ছাপাখানা নোয়াখালীতে, তারা সর্বাধিক ১০০ কোটির অধিক বই ছাপার আদেশ পেয়েছে। এত বই ছাপার মতো অবকাঠামো না থাকার পরও এ কার্যাদেশ তারা পেয়েছে। কীভাবে তারা পেল এ নিয়ে কোন কথা হবেনা কারন তারা প্রভাবশালী। তাদের বই ছাপা ও কাগজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে এনসিটিবির কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেছে মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতি।

এনসিটিবির চেয়ারম্যন বলছেন, প্রতিদিন ৫০ লাখ করে বই ছাপা হচ্ছে, প্রতিদিনই বই যাচেছ উপজেলা পর্যায়ে। ফলে সমস্যা হবে না। অপরদিকে, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জাতীয় সংগঠন মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির উপদেষ্টা বলছেন, নানা তথ্য ধামাচাপা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানো হচ্ছে। আসলে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবে না। ডিসেম্বরে চেয়ারম্যান অবসরে যাচেছন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তাকে পাওয়া যাবেনা।

অবস্থা নাকি অনেকটাই হ-য-ব-র-ল। কখনো বলা হচ্ছে করোনার প্রভাব, কখনো বলা হচ্ছে কারিকুলামের অনুমোদন দেয়নি মন্ত্রণালয়। আবার দফায় দফায় টেন্ডার ও রি-টেন্ডার করে টেন্ডারের শর্ত লঙ্ঘন ও বিধিমতো টেন্ডারের শর্ত সংশোধন না করে সময়ক্ষেপন করার কারণেই বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকে পাঠ্যপুস্তকের কারিকুলাম প্রণয়ন-সংশোধন-পরিমার্জনের জন্য বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এনসিটিবি হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে এনসিটিবিই হয়ে উঠেছে বই ছাপা ও বিতরণের মতো বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রক-পরিচালক সংস্থা। আসলেই এনসিটিবি এখন কারিকুলাম ও পাঠ্যবইয়ের বোর্ডের পরিবর্তে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতোই মনে হচ্ছে।
এনসিটিবিকে যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে এনসিটিবির চেয়ারম্যানকে পূর্ণ সচিব মর্যাদায় উন্নীত করে মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষা না হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এনসিটিবিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে কারিকুলাম প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট সব কাজে। মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। মন্ত্রণালয়ে কোনো কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই। তারা কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য অযথা নিদের্শনা ও বিলম্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এনসিটিবিতে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করেন এবং করতে পারেন তাদেরই পদায়ন করতে হবে। আত্মীয় কিংবা অন্যকোন পরিচয়ে যারা এনসিটিবিতে আছেন তাদের সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে। মন্ত্রণালয়কে শুধু অবগত করতে হবে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে, মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল করে রাখা যাবে না। এখানে লেখক, গবেষক, পাঠ্যক্রম বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় ঘটাতে হবে। রাজনৈতিক কিংবা অন্য পরিচয়ে যারা এখানে আছেন তাদের সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে। যুগ যুগ ধরে এখানে থেকে এখানকার ব্যবসা যারা ভালো বুঝে ফেলছেন, তাদের এখান থেকে সরানো যাচ্ছে না; কিন্তু সরাতে হবে আমরা যদি একটি প্রকৃত শিক্ষাক্রম জাতিকে উপহার দিতে চাই।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসএ/

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ