শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

বর্জ্য হতে পারে শক্তি ও সম্পদের প্রধান উৎস্য

পৃথিবীর নবম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ। জনসংখ্যার ঘণত্বের দিক থেকে দেশটির অবস্থান ১২তম। শহরে জনসংখ্যা বাড়ছে ২ থেকে ৩ শতাংশ হারে। এখানে অন্যান্য অনেক সমস্যার চেয়ে বড় আকারে বাড়ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যা। রাজধানী ঢাকার বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেক রকমের তথ্য রয়েছে। ধরা হয়, বাসযোগ্যতার অনুপযোগিতার দিক থেকে ঢাকা পৃথিবীর দশম শহর। এটি মাঝে মাঝে দুই এক এর মধ্যে চলে আসে। ঢাকা শহরের বর্জ্য স্থানান্তর বা বিন্যাসের কোনো সুব্যবস্থা নেই। অতি দুর্বল এখানকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

আমরা যদি দেশের বর্জ্যের দিকে তাকাই, তাহলে যে উপাত্ত পাই, তা হলো, প্রতি বছর কমবেশি ৩০ থেকে ৩৫ মিলিয়ন টন বর্জ্য জমছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনেই ১০ থেকে ১৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ জৈব বর্জ্য, ১৫ ভাগ অজৈব প্লাস্টিক বর্জ্য ও বাকি ১৫ ভাগ বিবিধ বর্জ্য। এই প্লাস্টিক বর্জ্যের্ ২০ ভাগ একবার ব্যবহৃত পলিথিন। এই পলিথিন এখন দেশের জন্য সর্বগ্রাসী হয়ে উঠছে। ঢাকা সংলগ্ন নদী বুড়িগঙ্গা শীতলক্ষা থেকে শুরু করে নগরীর সকল ড্রেনেজ, সূ্য়্যেরেজ ও কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে পলিথিনে।

ঢাকাসহ প্রধান প্রধান শহরের মিউনিসিপ্যাল আবর্জনা অপসারণের জন্য নির্ধারিত এলাকাগুলোর সংলগ্ন বিশাল আয়তন জুড়ে রোগ জীবানুর প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত এডিস মশা থেকে শুরু করে বহু রোগের জীবানু ছড়াচ্ছে। এসব আবর্জনাকেন্দ্রে ঢাকা শহরেরই শত শত টোকাই পলিথিন, প্লাস্টিকসহ নানা পণ্য সংগ্রহ করছে। তারাও প্রতিনিয়ত নানা জীবানু বহন করছে ও রোগ ছড়াচ্ছে।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে ঢাকা শহরের নাগরিক বর্জ্যের মধ্যে ১৫ ভাগ প্লাস্টিক আবর্জনা, ৬৫ ভাগ জৈব আবর্জনা ও ২০ ভাগ বিবিধ আবর্জনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচ, চামড়া, ধাতব পদার্থ, কাপড়, কাঠ ইত্যাদি।

প্রশ্ন হলো এসব আবর্জনার ব্যবস্থাপনা কী হতে পারে?

আমরা ওয়েস্ট টেকনোলজি এলএলসি ইউএসএর পক্ষ থেকে গত এক দশকে দেশের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি, নগর পরিকল্পনাবিদ এমনকি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। পৃথিবীর সর্বাধুনিকতম বর্জ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ বান্ধব সার্কুলার ইকোনমির ধারণা তাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। আমরা পৃথিবীর অনেক দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, বিষয়টিতে তারা যথেষ্টই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে বরাবরই চেয়েছি আমাদের প্রযুক্তি ও কর্মতৎপরতার সুফল সর্বপ্রথম বাংলাদেশে পৌঁছাক, সেই লক্ষ্যে এখনো আমাদের প্রয়াস ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

নগরের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা দাতা সংস্থা, সিটি করপোরেশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সমন্বয় করে একটি অসাধারণ কর্মব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। যে ব্যবস্থার আওতায় গৃহস্থ বর্জ্য তথা নাগরিক বর্জ্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জমা হবে, সেখান থেকে আরেকটি ইউনিটে বিভিন্ন উপাদান পৃথকীকরণ করা হবে। যেখান থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে উৎপাদিত হবে ডিজেল, অ্যাভিয়েশন জ্বালানি ও এলপিজি। জ্বালানি থেকে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। জৈব আবর্জনা থেকে তৈরি হবে বায়োগ্যাস, উচ্ছিষ্ট অংশ থেকে হবে জৈব সার, বায়োগ্যাস রূপান্তর করা হবে সিএনজিতে যা পরিবহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হবে, অন্যদিকে জৈব সার ব্যবহার হবে আবাদি জমিতে। একইভাবে সিটি করপোরেশনের অন্যান্য বিবিধ আবর্জনা কাঠ, কাঁচ, চামড়া, ধাতব পদার্থ বানিজ্যিক ভিত্তিতে বিক্রি হবে সংশ্লিষ্ট ইণ্ডাষ্ট্রিতে। এখানেই শেষ নয়, আবর্জনার যেসব অংশ থেকে জ্বালানী আসবে সেসব জ্বালানি থেকেই উৎপাদিত হবে বিদ্যুৎ। যা যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে।

কাঠের যুগ, পাথর যুগ, ধাতব যুগ পেরিয়ে আমরা এখন প্লাস্টিক যুগে বসবাস করছি। চারদিকে প্লাস্টিকে সয়লাব। এক হিসেবে দেখা যায়, পৃথিবীতে অশোধিত যে তেলের ভাণ্ডার তা মূলত ব্যবহার হয় একদিকে পরিবহন খাতের জ্বালানি বাবদ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে। আরেকদিকে ব্যবহার হয়, মানুষের ব্যবহার্য প্লাস্টিক সামগ্রি উৎপাদনে। আর প্লাস্টিক ব্যবহারের পরপরই পরিণত হয় বর্জ্যে। এটি সবচেয়ে বড় ও ভয়াবহ সমস্যা।

খোলা মাথায় একটু ভেবে দেখতে পারেন, প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে না কোথায়? আমরা শুধু প্লাস্টিক বোতলে পানি খাচ্ছি, ওষুধ খাচ্ছি বা ব্যাগে পণ্য বহন করছি তা-ই নয়, জীবনের প্রতিটি অংশে, এমনকি কৃষি ও পরিবেশের যত কাজ সেখানেও প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। আর এই প্লাস্টিক আমাদের জন্য হয়ে উঠছে এক বিভীষিকা। প্লাস্টিক কী কী ভাবে আমাদের এই সুন্দর ধরিত্রীকে তার নিজের ক্ষেত্রে পরিণত করছে তা দেখতে পারি।

এক. একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ভাগাড় দিনে দিনে বহু আয়তন দখল করে নিচ্ছে।

দুই. ব্যবহৃত প্লাস্টিক ভাগাড় পর্যন্ত পৌছতে অতিরিক্ত পরিবহনর প্রয়োজন হচ্ছে।

তিন. এসব ক্ষেত্রেও রয়েছে অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন।

চার. যেহেতু এগুলো মাটিতে মেশেনা সেহেতু পরিবেশে এর কঠিন নেতিবাচক প্রভাব তো বলাই বাহুল্য।

পাঁচ. এখান থেকে পানি দুষণ হচ্ছে।

ছয়. বাতাস দুষিত হচ্ছে।

সাত, আমাদের সামুদ্রিক জীবন দিনে দিনে বিপদজনক হয়ে উঠছে।

আট. দুষণে আক্রান্ত হচ্ছে নদ-নদী।

নয়. ড্রেনেজ ও সুয়েরেজ বন্ধ হয়ে একটু বৃষ্টিতেই বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে একেকটি শহর।

প্লাস্টিক কী?

প্লাস্টিক হচ্ছে ম্যাক্রোমোলিকিউলস, পলিমারাইজেশন দ্বারা গঠিত হয় যা যথার্থ পরিমাণে তাপ এবং চাপপ্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোনও ধরনের শক্তির মাধ্যমে আকৃতির পরিবর্তন হতে পারে।

প্লাস্টিকগুলো তাদের অর্থনৈতিক মূল্য, সহজ প্রাপ্যতা, সহজ প্রক্রিয়া ক্ষমতা, হালকা ওজন, স্থায়িত্ব এবং শক্তি দক্ষতার কারণে আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

প্লাস্টিক আধুনিক বিশ্বকে গড়ে ওঠার পেছনে এক নিয়ামক হয়ে উঠেছে। আমাদের জীবনযাত্রার মানকে রূপান্তরিত করেছে। এমন কোনো মানবিক ক্রিয়াকলাপ নেই যেখানে প্লাস্টিক পোশাক থেকে আশ্রয়, পরিবহন থেকে যোগাযোগ এবং বিনোদন থেকে স্বাস্থ্যসেবা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না।

প্লাস্টিক কীভাবে তৈরি হয়

প্লাস্টিক কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, ক্লোরিন এবং অন্যান্য উপাদানের বিভিন্ন সংমিশ্রণ বা সমন্বয়ে গঠিত। এখন প্লাস্টিকের অগণিত রকমের ব্যবহার রয়েছে। কাঠ, বাঁশ. কাঁচ, চামড়া, রাবার, ও ধাতব পদার্থের জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক।

প্লাস্টিকের উৎস্য

ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বেশিরভাগই নিম্নলিখিত রাসায়নিকগুলো থেকে উদ্ভূত হয়:

১. ইথিলিন, ২। প্রোপিলিন, ৩। বিউটাডিন এবং ৪। বেনজিন

এই রাসায়নিকগুলি প্রক্রিয়াকরণের পরে পেট্রোলিয়াম পরিশোধন প্রক্রিয়ার সময় বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রাপ্ত ন্যাপথা থেকে উদ্ভূত হয়।

কত রকমের প্লাসটিক

থার্মো প্লাস্টিক ও থার্মোসেটিং প্লাস্টিকের মধ্যে দুটি ধরন আছে। একটি উচ্চতাপমাত্রায় আকৃতির পরিবর্তন হয়, আরেকটি উচ্চ তাপমাত্রায় আকৃতির পরিবর্তন হয় না।

থারমোপ্লাস্টিক থেকে পলিথিন, পলিপ্রোফিলিন, নাইলন, পলি কার্বোনেট ইত্যাদি হয়। এখান থেকেই বাকেট, কাপ, নাইলন রশি, দুধ ও পানির বোতল, কন্টেনার ইত্যাদি তৈরি হয়। অন্যদিকে থার্মোসেটিং প্লাস্টিক থেকে ফেনল ফর্মালডিহাইড, ইউরিয়া ফরমালডিহাইড, মেলামাইন ফর্মালডিহাইড, থার্মোসেটিং পলিয়েস্টার ইত্যাদি হয়। সেখান থেকে আমরা ইলেক্ট্রিক সুইচ, ফরমিকা সেমিকা টেবিল-টপ, মেলামাইন বাসন কোসন তৈরি হয়।

প্লাস্টিক ফিড স্টক রিসাইকেলিং বুক এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্লাস্টিক বর্জের ১০ ভাগ পুণর্ব্যবহার হয়, ২৫ ভাগ পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং ৬৫ ভাগ ভাগাড়ে অথবা যত্র তত্র ফেলে দেয়া হয়। এগুলোই মাটিতে মেশে।

ওয়েস্ট টেকনোলজি এলএলসি ইউএসএ উদ্ভাবিত প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে চাই। বর্জ্য প্লাস্টিক সংগ্রহ করে বাছাই, ধোয়া ও শুকানোর পর চুর্ণ করা হয়। সেগুলোকে উচ্চ তাপে গলানো হয়। সেগুলোকে একটি নির্দিষ্ট ঘনত্বে ছেকে প্রক্রিয়াজাতকরণেল মাধ্যমে তৈরি কনরা হয় জ্বালানি। এই জ্বালানিই পরিশোধন করে বিমানের জ্বালানি ও এলপিজি করা হয়। ওই জ্বালানি থেকেই দহন ইঞ্জিন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।

আমরা ওয়েস্ট টেকনোলজি এলএলসি ইউএসএ’র পক্ষ থেকে হিসেব কষে দেখেছি, বছরে ২৮ মিলিয়ন টন বর্জের ১৫ ভাগ যদি প্লাস্টিক বর্জ্য হয়, তাহলে তার পরিমাণ হবে ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন টন। এই পরিমাণ বর্জ্য প্লাস্টিক থেকে ৫ হাজার ৪’শ ৬০ মিলিয়ন টন ডিজেল, ৪২ দশমিক ২ মিলিয়ন সিলিণ্ডার এলপিজি ও ৯৬. ৬ মিলিয়ন লিটার এভিয়েশন ফুয়েল বা গ্যাসোলিন পেতে পারি। যদি মোট বর্জ্য প্লাস্টিকের ভেতর থেকে ২ শতাংশ একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকও ব্যবহার করি তাহলে তা থেকে আমরা পাবো ১ হাজার ৪২ মিলিয়ন লিটার ডিজেল, ৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন সিলিণ্ডার এলপিজি এবং ১ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন লিটার এভিয়েশন ফুয়েল। এই জ্বালানি থেকে প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ২ দশমিক ১ মেগাওয়াট। বছরে হবে ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মেগাওয়াট। এখানে কর্মসংস্থান হবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ মানুষের।

বাংলাদেশে ২৮ মিলিয়ন টন কঠিন বর্জ্য জমে, বা উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ১৮ দশমিক ২ মিলিয়ন টন জৈব বর্জ্য দিয়ে বছরে বিপুল পরিমাণ বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ ও জৈব সার পেতে পারি। এর পরিমাণটি বছরে ১৬৩ মিলিয়ন সিলিন্ডার বায়োগ্যাস, ৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ও ৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন টন জৈব সার।

আমাদের প্রতিষ্ঠানে সুদীর্ঘকালের গবেষণা, জরীপ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ও শিল্প স্থাপন করে তা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে নিশ্চিত হয়েছি, বাংলাদেশকে বর্জ্যের অভিশাপমুক্ত করা পাহাড় সমান সংকট নয়। শুধু উদ্যোগ ও কর্মতৎপরতার প্রশ্ন। আমি দেশের বারোটি গুরুত্বপূর্ণ সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় যোগাযোগ করেছি। অনেকের অসাধারণ সাড়া পেয়েছি। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে ওই তৎপরতার ধারাবাহিকতা কিছুটা ব্যহত হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই সে পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এক বৈপ্লবিক কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। মানুষ জানবে, বর্জ্যই আমাদের সবচেয়ে দামী সম্পদ।

ড.মঈনউদ্দিন সরকার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ, ইউএসএ

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫

চক্রের পাঁচজন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ে বসে ‘জেট রোবোটিক’ নামে একটি অ্যাপস ও নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়িত্ব নিতেন কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। ২০২০ সাল থেকে তিনি দুবাইয়ে থাকেন। গত তিন থেকে সাড়ে তিন মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার সমমূল্যের রেমিট্যান্স ব্লক করেছেন মামুন।

তবে তিনি ঠিকই চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে টাকা পাঠিয়েছেন। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের মোবাইল ব্যাংকিং ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসকে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৮টি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট সিমে আগে থেকেই সমপরিমাণ বা বেশি অনলাইনে টাকা সংগ্রহ করে রাখা হয়। এরপর সংগ্রহ করা টাকা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপের ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্মীয়দের নম্বরে অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্রটি বলে দাবি করেছে সিআইডি।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন, সিমকার্ড ল্যাপটপ ও ২৮ লাখ ৫১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রায় এক মাস ধরে অনুসন্ধান করে এই চক্রের সন্ধান পায়। এই চক্রের কারণে রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল দেশ। অনেকের অবৈধ উপার্জনের টাকা এই চক্রের মাধ্যমে বৈধ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মালিবাগে নিজ কার্যালয়ে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাসির আহমেদ (৬২), ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), খায়রুল ইসলাম (৩৪) ও জহির উদ্দিন (৩৭)। তাদের মধ্যে নাসির ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মালিক। ফজলে রাব্বি ও মো. কামরুজ্জামান ডিস্ট্রিবিউশন হাউজে কাজ করেন। আর পরের দুজন দুবাই থেকে শহিদুলের পাঠানো প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিতেন।

সিআইডির প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই চক্র দুই ভাগে হুন্ডির কাজ পরিচালনা করে। দুবাইয়ে থাকা চক্রের সদস্যরা প্রবাসীদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। আর দেশে থাকা চক্রের সদস্যরা ওই প্রবাসীর দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। এতে প্রবাসীদের মাধ্যমে যে রেমিট্যান্স আসত, সেটা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের কালোটাকার মালিকেরা এই চক্রের মাধ্যমে তাদের অবৈধ উপার্জন বৈধ করছেন। আর এই পুরো কাজটি পরিচালিত হতো জেট রোবোটিকস অ্যাপের মাধ্যমে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান আরও বলেন, চক্রের সঙ্গে এমএফএস কোম্পানির চট্টগ্রামের তাসনিমা অ্যাসোসিয়েট নামের একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের লোকজন জড়িত। তাদের কাছ থেকে কম লেনদেন হয় এমন এমএফএস এজেন্ট অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। বিনিময়ে ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের লোকজন হুন্ডির লাভের টাকার একটি ভাগ পেতেন।

সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। ছবি: সংগৃহীত 

 

মোহাম্মদ আলী বলেন, এই চক্রের মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই বসবাস করেন। মালয়েশিয়ান একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মাধ্যমে অ্যাপটি তৈরি করে দুবাই বসে শহিদুল হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই অ্যাপের সঙ্গে একটি এমএফএস কোম্পানির ৪১টি অ্যাকাউন্ট নম্বরের সংযোগ ছিল। গত তিন মাসে ওই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের প্রায় ১৫০টি এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে চক্রটি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের অধীন প্রায় ১ হাজার ১০০ এজেন্ট থাকে। যেসব এজেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন কম হয়, সেই সব অ্যাকাউন্ট হুন্ডির কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে এমএফএস কোম্পানির নজরদারির ঘাটতি রয়েছে।

নতুন নতুন অ্যাপসের মাধ্যমে কৌশলে এ ধরনের ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রম চলতে পারে উল্লেখ করে সিআইডি প্রধান বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমরোধে সিআইডিসহ সব দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানকে ইন্টেলিজেন্স, মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে।

তিন মাস ধরে অস্বাভাবিক লেনদেন, রেমিট্যান্স ব্লক হলো অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক টের পেল না? তাদের তো একটা শক্তিশালী মনিটরিং সেল আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কি-না জানতে চাইলে সিআইডিপ্রধান বলেন, ব্যর্থতা বলবো না, সার্ভিলেন্স সিস্টেমকে কতটা পেট্রলিং করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের পেট্রলিংয়ে এটা ধরতে পেরেছি। এর দায়িত্ব শুধু সিআইডি’র নয়, ডিবি, র‌্যাব, বাংলাদেশ ব্যাংকেরও।

হুন্ডি তো আগেও হতো, এটাকে ডিজিটাল হুন্ডি বলছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সিস্টেম আসলেই ডিজিটাল হুন্ডি। আগে ফোন করে বলে দিতো অমুকের টাকা অমুককে দিয়ে দাও। এটা ম্যানুয়াল সিস্টেমে। কিন্তু এখন এসবের দরকার নেই। ফোন বা লোকাল এজেন্ট অথবা ডিস্টিবিশন হাউজ দরকার পড়ে না। অ্যাপস যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দেবে সেভাবে নম্বরে নম্বরে টাকা চলে যায়।

দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন, হাইজিন, বায়ু ও সীসা দূষণ বছরে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ। এর ফলে বছরে ৫.২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত হয়। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশদূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সিসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে এই রিপোর্টে পরিবেশগত অগ্রাধিকারসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে, বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, পরিবেশ নীতি পদ্ধতিগুলোর বৈচিত্র্যকরণ ও জোরদারকরণ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদারকরণ এবং সবুজ অর্থায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ এর পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে, পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে।

বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ

নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

যোহরের নামাজ চলাকালীন বরিশালে জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে এসি বিস্ফোরণ হয়েছে। বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম সড়ক চকবাজার এলাকার জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের দ্বিতীয় তলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে দ্রুত আগুন আনে তারা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মুসল্লিদের দাবি, এসি বিস্ফোরণ মধ্য দিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত না করলেও এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিরা জানিয়েছেন, বেলা দেড়টার দিকে মুসলিরা জোহরের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর তখন মসজিদের দোতলার একটি এসি চালুর জন্য মুয়াজ্জিন বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করতেই স্পার্ক করে। পরে তিনি সেটি তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। এরপর সবাই নামাজে দাঁড়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দ হয়। পরে পাশের ইমামের কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হলে দেখা যায় সেখানে এসির কাছাকাছি আগুন জ্বলছে। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও থানায় বিষয়টি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, হতাহতের ঘটনা ছাড়াই স্থানীয়দের সহযোগিতায় মুসলিরা নিরাপদে মসজিদ থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট অল্প সময়ের চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। আগুনে ইমাম সাহেবের রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কিছু বই ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, মুসল্লিদের তথ্যানুযায়ী একটি এসি থেকে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস পাশে থাকায় ব্যস্ততম এই ব্যবসায়িক এলাকাটিতে বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি, অল্পতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে কিছুটা বেগ পেতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চকবাজারের সব রাস্তাগুলো সব সময় চালু রাখা উচিত, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো অপসারণের জন্য আমরা মসজিদ ও ব্যবসায়িক কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।

স্থানীয়রা বলছেন, চকবাজারের রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে সব সময় যানজট লেগে থাকে, আর যেটুকু জায়গা খালি থাকে তা পার্কিং নয়তো হকরদের দখলে থাকে। এমনকি গোটা চকবাজারের ফুটপাতও দখলে রয়েছে বিভিন্ন পণ্যের পসরায়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) নাফিছুর রহমান জানান, ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিক সারা দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এমনকি নামাজের সময় হওয়ায় মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে থাকলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ