শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পর্যটনের লোক-কূটনীতি

কূটনীতির ধারণা:
কূটনীতি মানে একটি দেশের প্রতিনিধি অন্য দেশের সঙ্গে পেশা, কার্যক্রম ও দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা করা। সামাজিক সচেতনতা ও আইনি কাঠামোর মধ্যে দিয়ে একটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অন্য রাষ্ট্রে নিজ দেশের পক্ষে নানাবিধ আচরণবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করেন। তাই কূটনীতির মাধ্যমে নিজ রাষ্ট্রের পক্ষে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক নানাবিধ অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। আধুনিক রাষ্ট্রে কূটনীতি হলো রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের নীতি ও কর্মকাণ্ড যা অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বহিঃস্থ সম্পর্ক রক্ষার মাধ্যমে নিজ দেশের বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন এবং বহিঃর্দেশে নিজ রাষ্ট্রের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা করা হয়।

লোক-কূটনীতির ধারণা:
লোক-কূটনীতি হলো অন্য দেশের জনমতকে জানানো বা প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচি। প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, সাংস্কৃতিক বিনিময়, রেডিও, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিদেশি জনসাধারণকে জানানো ও প্রভাবিত করার মাধ্যমে একটি দেশ তার জাতীয় স্বার্থকে উন্নীত করতে চায়। পল শার্প লোক-কূটনীতিকে পরিষ্কারভাবে সংক্ষিপ্তভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তিনি লোক-কূটনীতিকে একটি প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন যার মাধ্যমে একটি দেশের জনগণের সঙ্গে অন্য দেশের জনগণের মূল্যবোধ সম্বলিত সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে পারে। লোক-কূটনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বচ্ছতা এবং তথ্য প্রচারের প্রচেষ্টা। সেইসঙ্গে কূটনীতির পরিধিতে ঐতিহ্যগত বিষয়াদির সংযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

একটি রাষ্ট্র অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বৈদেশিক নীতি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়। আন্তর্জাতিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নতুন ও প্রভাবশালী উপাদান যুক্ত করতে হয় কূটনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, তাদের জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নিতে নতুন নীতি সংজ্ঞায়িত করে তা প্রয়োগ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব, গণমাধ্যমের প্রসার, সুশীল সমাজ ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম এই নীতি নির্ধারণের প্রধান প্রভাবক। তাই এই দেশগুলোকে অতীতের মতো তাদের আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিনিময়ে জনগণের ঐতিহ্যগত কূটনীতির উপর নির্ভর করতে হয়। নিজ রাষ্ট্রের ন্যায্যতা দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি অন্য রাষ্ট্রকে আকৃষ্ট করার জন্য এই ধরনের কূটনীতি সমধিক প্রচলিত। বিশেষত শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে এই কূটনীতির অনুশীলন করা হয়।

লোক-কূটনীতির প্রয়োগ:
লোক-কূটনীতির প্রয়োগের জন্য নিজ দেশের বৈদেশিক নীতি অন্য দেশের মানুষের উপলব্ধি, মতামত ও মনোভাবকে এমনভাবে প্রভাবিত করা; যা স্বদেশের স্বার্থে কাজে লাগানো যায়। লোক কূটনীতির আওতাধীন শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা বিনিময় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। পরিদর্শন, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিনিময়, গণমাধ্যমে সম্প্রচার ইত্যাদি ইস্যু লোক-কূটনীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের ভাষা, খাদ্য, পোশাক ও মনস্তত্ত্বগত যে মিল তা সীমান্ত দিয়ে ভাগ করা হলেও লোক-কূটনীতি দিয়ে বজায় রাখা হয়। বিভিন্ন ধরনের লোক সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন, বিভিন্ন স্তরের নাগরিক যোগাযোগ, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ইত্যাদিকে লোক-কূটনীতির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

একটি দেশ অন্য দেশের সঙ্গে এটি আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলে বা পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিশ্বাস অর্জনের মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রভাবিত করতে চায়, তার উপর লোক-কূটনীতির সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে। লোক-কূটনীতি একটি দেশের ভাবমূর্তি উন্নীত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে একটি দেশ তাদের নীতি ও স্বার্থ অনুসারে জনগণকে অন্য দেশের সঙ্গে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করে এবং তাদের নীতি অনুসরণ করার জন্য তাদের হৃদয় ও মন দখল করে। যেকোনো দেশ তার লোক-কূটনীতিকে পাঁচটি কৌশলগত ও মৌলিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবহার করে:

—অন্য দেশের জনগণকে আকৃষ্ট বা প্রভাবিত করা এবং নির্দিষ্ট নীতিগুলিকে সমর্থন করার জন্য উৎসাহিত করা।
—প্রতিষ্ঠান, মূল্যবোধ এবং তাদের সমস্ত জটিলতার মধ্যে মানুষের সঠিক বোঝাপড়া তৈরি করা। দেশের বাইরের মানুষের সাহায্য করার জন্য দেশটির লোক-কূটনীতি সম্পর্কে বাস্তব তথ্য প্রদান করা।
— সহযোগিতার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া এবং বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করা।
— অন্য দেশের সমর্থন আদায় করা। যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, আইনের শাসন, মুক্ত বাজারকে সমর্থন করা ইত্যাদি।
— বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নেটওয়ার্ক ও যোগাযোগ চ্যানেলগুলোর বিস্তার ঘটানো। যাতে দ্বন্দ্ব ও অস্পষ্টতা হ্রাস পায়।

সুতরাং এক কথায় বলা যায় যে, একটি সফল লোক-কূটনীতি হলো সফল জনসংযোগ বা প্রচারণা যা জনমতকে প্রভাবিত করতে পারে।

পর্যটনে লোক-কূটনীতির ধরন:
পর্যটন অনুশীলনের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত করাই পর্যটনে লোককূটনীতির মূখ্য বিষয়। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে এর অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন ট্যুরিস্ট গাইড সর্বনিম্ন স্তরে কূটনীতিকের ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ একজন ট্যুরিস্ট গাইড প্রদর্শনী ও বর্ণনার মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদের দর্শনীয় বিষয়ে এবং স্বাগতিক জনগোষ্ঠী সম্বন্ধে প্রকৃত ধারণা দেওয়ার জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। গাইডের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা থেকে পর্যটকরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তা পর্যটকদের মনে স্বাগতিক জনগোষ্ঠী বা গন্তব্য সম্বন্ধে স্মরণীয় ও মোহনীয় স্মৃতি জন্মায়। এই স্মৃতি একজন পর্যটক সযত্নে ধারণ করেন এবং নিজ দেশে ফিরে অন্যদের কাছে তুলে ধরেন। অর্থাৎ দেশে থেকেও একজন পর্যটক কূটনীতিকের ভূমিকা পালন করতে পারেন। একজন গাইড নিজ দেশের পক্ষে প্রকৃষ্ট কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। পর্যটনের নীতি নির্ধারকরা এইসব বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ ও সতর্ক সিদ্ধান্ত নেবেন এটি সবার কাম্য। পর্যটনের লোক-কূটনীতি তাই সৃজনশীলতায় মোড়ানো রাষ্ট্রের এক নবতর বিধান হতে পারে।

ভ্রমণের প্রধানতম উদ্দেশ্য হলো, গন্তব্যস্থলের সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানা, বোঝা ও নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। বিশেষত একটি গন্তব্যের সাংস্কৃতিক সঞ্চয়গুলোকে প্রত্যেক পর্যটক তার নিজ জীবনের সত্য হিসেবে উদঘাটন করতে চান। ফলে পর্যটকরা কীভাবে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন, এ বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও পর্যটন স্টেকহোল্ডারদের বিশেষ মনযোগী হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। পর্যটনে লোক-কূটনীতির এটি অত্যন্ত বড় বিষয়। আবার পর্যটকদের কোনো উপজীব্য বিষয় দেখানোর পাশাপাশি তাকে হস্তশিল্প, কৃষি, রন্ধনরীতি ইত্যাদির সঙ্গে হাতে কলমে পরিচিত করানো বিশেষ প্রয়োজনীয়। তাই আইটেনারারি প্রস্তুতকালে পর্যটনসম্পদগুলোর ধরন, ব্যবহার ও সংরক্ষণরীতি সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। তা না হলে পর্যটন-কূটনীতি অনেকাংশে ব্যর্থ হতে পারে।

লোক-কূটনীতিতে বাংলাদেশের করণীয়:
বাংলাদেশকে পর্যটনের লোক-কূটনীতি অর্থাৎ পর্যটনের উন্নয়নের জন্য কূটনৈতিক কার্যক্রমকে ব্যবহার করতে হবে। তবে এর পূর্বশর্ত হিসেবে রাজনৈতিক কূটনীতি ও সুশাসনের প্রতি গভীরভাবে মনযোগী হওয়া একান্ত প্রয়োজনীয়। কূটনীতির এই ফ্রেমে দেশের সম্মানজনক অবস্থানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দৃঢ়তার সঙ্গে উপস্থাপন করতে হবে। তা না হলে গন্তব্য দেশ হিসেবে অন্যদের গ্রহণ করানো যাবে না। কারণ দেশের সাংস্কৃতিক সম্পদের পরিমাণ বেশি থাকলেও ইমেজ অত্যন্ত বড় বিষয় যা আমাদের এগোতে দেয় না। এসব ঠিক করা গেলে পর্যটনের লোক-কূটনীতি সফলতা পাবে এবং মানসম্মত পর্যটন সেবাকে নিশ্চিত করা যাবে। এজন্য আমাদের বহির্দেশীয় দূতাবাসগুলোর কূটনীতিকদের পর্যটনে শিক্ষাদান ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে হবে। পর্যটন সেবার ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে আমলা, কূটনীতিক, পর্যটন শিক্ষাবিদ এবং স্টেকহোল্ডাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে পর্যটনের লোক-কূটনীতির নতুন রূপরেখা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি পর্যটন কূটনীতি বিষয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণার পরিচালনা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য পর্যটনের লোক-কূটনীতি সর্বকনিষ্ঠ অন্যতম উপায় হতে পারে। তবে এর গভীরতা ও প্রয়োগ অত্যন্ত অর্থবহ।

উপসংহার:
পর্যটনের লোক-কূটনীতি বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রায়োগিক কূটনীতি। তবে এর ব্যাপকতা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশকে অধিকতর প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশেষত করোনা উত্তর এই সময়ে এবং আগামী এক দশক পর্যন্ত পর্যটনের লোক-কূটনীতি হবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে টেকসই উন্নয়নের প্রধান সূত্র। পৃথিবীকে আমরা যত বেশি Global Village বলে মনে করি, পর্যটনের লোক-কূটনীতি ততই প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। এক রাষ্ট্রের উপর অন্য রাষ্ট্রের শক্তির আধিপত্তের সময় বোধ করি শেষ হতে চলেছে। এরপর যে পৃথিবী আমরা দেখব, তাতে পর্যটনের লোক-কূটনীতি হয়তো প্রধানতম সৃজনশীল কূটনীতি হিসেবে প্রতিভাত হবে। আমাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের ভাষাও পাল্টে যাবে। যেখানে অর্থ ও মানবতা এক সারিতে এসে দাঁড়াবে,এমন আশা করার যথেষ্ট কারণ আছে বৈকি!

মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা

এসএন 

Header Ad
Header Ad

এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তৃতীয় সাধারণ সভায় দলের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি, সাংগঠনিক নীতিমালা ও কাঠামো সংস্কার নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জেলা ও উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স ৪০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত ও শৃঙ্খলা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে অবস্থিত এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকেল ৩টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টাব্যাপী এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

সভা শেষে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অঞ্চলভিত্তিক সাংগঠনিক কাঠামো চূড়ান্তকরণ, সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়ন, গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার দাবি এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং ভারতের ওয়াকফ বিলবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের প্রতিবাদ ও দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে সরকারের প্রতি কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানায় দলটি।

দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রয়োজনীয় নীতিমালা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত কাঠামোয় দেশের ৬৪ জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটিতে ৩১ থেকে ৫১ জন এবং উপজেলা কমিটিতে ২১ থেকে ৪১ জন সদস্য থাকবে। উভয় পর্যায়ের আহ্বায়ক পদের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ন্যূনতম ৪০ বছর।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপরিসরে কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণের অভিযোগ ওঠায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি তদন্ত ও শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার ঘোষণা আসছে আগামী রবিবার।

এছাড়া বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা চলতি সপ্তাহেই একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানানো হয়।

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০
দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক