
পর্যটনের লোক-কূটনীতি
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:২৬ এএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম

কূটনীতির ধারণা:
কূটনীতি মানে একটি দেশের প্রতিনিধি অন্য দেশের সঙ্গে পেশা, কার্যক্রম ও দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা করা। সামাজিক সচেতনতা ও আইনি কাঠামোর মধ্যে দিয়ে একটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অন্য রাষ্ট্রে নিজ দেশের পক্ষে নানাবিধ আচরণবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করেন। তাই কূটনীতির মাধ্যমে নিজ রাষ্ট্রের পক্ষে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক নানাবিধ অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। আধুনিক রাষ্ট্রে কূটনীতি হলো রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের নীতি ও কর্মকাণ্ড যা অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বহিঃস্থ সম্পর্ক রক্ষার মাধ্যমে নিজ দেশের বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন এবং বহিঃর্দেশে নিজ রাষ্ট্রের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা করা হয়।
লোক-কূটনীতির ধারণা:
লোক-কূটনীতি হলো অন্য দেশের জনমতকে জানানো বা প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচি। প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, সাংস্কৃতিক বিনিময়, রেডিও, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিদেশি জনসাধারণকে জানানো ও প্রভাবিত করার মাধ্যমে একটি দেশ তার জাতীয় স্বার্থকে উন্নীত করতে চায়। পল শার্প লোক-কূটনীতিকে পরিষ্কারভাবে সংক্ষিপ্তভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তিনি লোক-কূটনীতিকে একটি প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন যার মাধ্যমে একটি দেশের জনগণের সঙ্গে অন্য দেশের জনগণের মূল্যবোধ সম্বলিত সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে পারে। লোক-কূটনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বচ্ছতা এবং তথ্য প্রচারের প্রচেষ্টা। সেইসঙ্গে কূটনীতির পরিধিতে ঐতিহ্যগত বিষয়াদির সংযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একটি রাষ্ট্র অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বৈদেশিক নীতি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়। আন্তর্জাতিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নতুন ও প্রভাবশালী উপাদান যুক্ত করতে হয় কূটনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, তাদের জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নিতে নতুন নীতি সংজ্ঞায়িত করে তা প্রয়োগ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব, গণমাধ্যমের প্রসার, সুশীল সমাজ ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম এই নীতি নির্ধারণের প্রধান প্রভাবক। তাই এই দেশগুলোকে অতীতের মতো তাদের আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিনিময়ে জনগণের ঐতিহ্যগত কূটনীতির উপর নির্ভর করতে হয়। নিজ রাষ্ট্রের ন্যায্যতা দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি অন্য রাষ্ট্রকে আকৃষ্ট করার জন্য এই ধরনের কূটনীতি সমধিক প্রচলিত। বিশেষত শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে এই কূটনীতির অনুশীলন করা হয়।
লোক-কূটনীতির প্রয়োগ:
লোক-কূটনীতির প্রয়োগের জন্য নিজ দেশের বৈদেশিক নীতি অন্য দেশের মানুষের উপলব্ধি, মতামত ও মনোভাবকে এমনভাবে প্রভাবিত করা; যা স্বদেশের স্বার্থে কাজে লাগানো যায়। লোক কূটনীতির আওতাধীন শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা বিনিময় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। পরিদর্শন, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিনিময়, গণমাধ্যমে সম্প্রচার ইত্যাদি ইস্যু লোক-কূটনীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের ভাষা, খাদ্য, পোশাক ও মনস্তত্ত্বগত যে মিল তা সীমান্ত দিয়ে ভাগ করা হলেও লোক-কূটনীতি দিয়ে বজায় রাখা হয়। বিভিন্ন ধরনের লোক সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন, বিভিন্ন স্তরের নাগরিক যোগাযোগ, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ইত্যাদিকে লোক-কূটনীতির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
একটি দেশ অন্য দেশের সঙ্গে এটি আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলে বা পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিশ্বাস অর্জনের মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রভাবিত করতে চায়, তার উপর লোক-কূটনীতির সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে। লোক-কূটনীতি একটি দেশের ভাবমূর্তি উন্নীত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে একটি দেশ তাদের নীতি ও স্বার্থ অনুসারে জনগণকে অন্য দেশের সঙ্গে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করে এবং তাদের নীতি অনুসরণ করার জন্য তাদের হৃদয় ও মন দখল করে। যেকোনো দেশ তার লোক-কূটনীতিকে পাঁচটি কৌশলগত ও মৌলিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবহার করে:
—অন্য দেশের জনগণকে আকৃষ্ট বা প্রভাবিত করা এবং নির্দিষ্ট নীতিগুলিকে সমর্থন করার জন্য উৎসাহিত করা।
—প্রতিষ্ঠান, মূল্যবোধ এবং তাদের সমস্ত জটিলতার মধ্যে মানুষের সঠিক বোঝাপড়া তৈরি করা। দেশের বাইরের মানুষের সাহায্য করার জন্য দেশটির লোক-কূটনীতি সম্পর্কে বাস্তব তথ্য প্রদান করা।
— সহযোগিতার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া এবং বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করা।
— অন্য দেশের সমর্থন আদায় করা। যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, আইনের শাসন, মুক্ত বাজারকে সমর্থন করা ইত্যাদি।
— বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নেটওয়ার্ক ও যোগাযোগ চ্যানেলগুলোর বিস্তার ঘটানো। যাতে দ্বন্দ্ব ও অস্পষ্টতা হ্রাস পায়।
সুতরাং এক কথায় বলা যায় যে, একটি সফল লোক-কূটনীতি হলো সফল জনসংযোগ বা প্রচারণা যা জনমতকে প্রভাবিত করতে পারে।
পর্যটনে লোক-কূটনীতির ধরন:
পর্যটন অনুশীলনের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত করাই পর্যটনে লোককূটনীতির মূখ্য বিষয়। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে এর অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন ট্যুরিস্ট গাইড সর্বনিম্ন স্তরে কূটনীতিকের ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ একজন ট্যুরিস্ট গাইড প্রদর্শনী ও বর্ণনার মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদের দর্শনীয় বিষয়ে এবং স্বাগতিক জনগোষ্ঠী সম্বন্ধে প্রকৃত ধারণা দেওয়ার জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। গাইডের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা থেকে পর্যটকরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তা পর্যটকদের মনে স্বাগতিক জনগোষ্ঠী বা গন্তব্য সম্বন্ধে স্মরণীয় ও মোহনীয় স্মৃতি জন্মায়। এই স্মৃতি একজন পর্যটক সযত্নে ধারণ করেন এবং নিজ দেশে ফিরে অন্যদের কাছে তুলে ধরেন। অর্থাৎ দেশে থেকেও একজন পর্যটক কূটনীতিকের ভূমিকা পালন করতে পারেন। একজন গাইড নিজ দেশের পক্ষে প্রকৃষ্ট কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। পর্যটনের নীতি নির্ধারকরা এইসব বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ ও সতর্ক সিদ্ধান্ত নেবেন এটি সবার কাম্য। পর্যটনের লোক-কূটনীতি তাই সৃজনশীলতায় মোড়ানো রাষ্ট্রের এক নবতর বিধান হতে পারে।
ভ্রমণের প্রধানতম উদ্দেশ্য হলো, গন্তব্যস্থলের সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানা, বোঝা ও নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। বিশেষত একটি গন্তব্যের সাংস্কৃতিক সঞ্চয়গুলোকে প্রত্যেক পর্যটক তার নিজ জীবনের সত্য হিসেবে উদঘাটন করতে চান। ফলে পর্যটকরা কীভাবে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন, এ বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও পর্যটন স্টেকহোল্ডারদের বিশেষ মনযোগী হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। পর্যটনে লোক-কূটনীতির এটি অত্যন্ত বড় বিষয়। আবার পর্যটকদের কোনো উপজীব্য বিষয় দেখানোর পাশাপাশি তাকে হস্তশিল্প, কৃষি, রন্ধনরীতি ইত্যাদির সঙ্গে হাতে কলমে পরিচিত করানো বিশেষ প্রয়োজনীয়। তাই আইটেনারারি প্রস্তুতকালে পর্যটনসম্পদগুলোর ধরন, ব্যবহার ও সংরক্ষণরীতি সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। তা না হলে পর্যটন-কূটনীতি অনেকাংশে ব্যর্থ হতে পারে।
লোক-কূটনীতিতে বাংলাদেশের করণীয়:
বাংলাদেশকে পর্যটনের লোক-কূটনীতি অর্থাৎ পর্যটনের উন্নয়নের জন্য কূটনৈতিক কার্যক্রমকে ব্যবহার করতে হবে। তবে এর পূর্বশর্ত হিসেবে রাজনৈতিক কূটনীতি ও সুশাসনের প্রতি গভীরভাবে মনযোগী হওয়া একান্ত প্রয়োজনীয়। কূটনীতির এই ফ্রেমে দেশের সম্মানজনক অবস্থানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দৃঢ়তার সঙ্গে উপস্থাপন করতে হবে। তা না হলে গন্তব্য দেশ হিসেবে অন্যদের গ্রহণ করানো যাবে না। কারণ দেশের সাংস্কৃতিক সম্পদের পরিমাণ বেশি থাকলেও ইমেজ অত্যন্ত বড় বিষয় যা আমাদের এগোতে দেয় না। এসব ঠিক করা গেলে পর্যটনের লোক-কূটনীতি সফলতা পাবে এবং মানসম্মত পর্যটন সেবাকে নিশ্চিত করা যাবে। এজন্য আমাদের বহির্দেশীয় দূতাবাসগুলোর কূটনীতিকদের পর্যটনে শিক্ষাদান ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে হবে। পর্যটন সেবার ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে আমলা, কূটনীতিক, পর্যটন শিক্ষাবিদ এবং স্টেকহোল্ডাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে পর্যটনের লোক-কূটনীতির নতুন রূপরেখা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি পর্যটন কূটনীতি বিষয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণার পরিচালনা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য পর্যটনের লোক-কূটনীতি সর্বকনিষ্ঠ অন্যতম উপায় হতে পারে। তবে এর গভীরতা ও প্রয়োগ অত্যন্ত অর্থবহ।
উপসংহার:
পর্যটনের লোক-কূটনীতি বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রায়োগিক কূটনীতি। তবে এর ব্যাপকতা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশকে অধিকতর প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশেষত করোনা উত্তর এই সময়ে এবং আগামী এক দশক পর্যন্ত পর্যটনের লোক-কূটনীতি হবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে টেকসই উন্নয়নের প্রধান সূত্র। পৃথিবীকে আমরা যত বেশি Global Village বলে মনে করি, পর্যটনের লোক-কূটনীতি ততই প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। এক রাষ্ট্রের উপর অন্য রাষ্ট্রের শক্তির আধিপত্তের সময় বোধ করি শেষ হতে চলেছে। এরপর যে পৃথিবী আমরা দেখব, তাতে পর্যটনের লোক-কূটনীতি হয়তো প্রধানতম সৃজনশীল কূটনীতি হিসেবে প্রতিভাত হবে। আমাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের ভাষাও পাল্টে যাবে। যেখানে অর্থ ও মানবতা এক সারিতে এসে দাঁড়াবে,এমন আশা করার যথেষ্ট কারণ আছে বৈকি!
মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা
এসএন

এবার দেশের সকল ইউএনওকে বদলির নির্দেশ
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৪ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:১৫ এএম

দেশের সকল ওসিকে বদলির নির্দেশের পর এবার দেশের সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) বদলির নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
গতকাল ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশনাটি পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্ত সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বর্তমান কর্মস্থলে ১ বছরের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।
এর আগে দেশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদলি করতে নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে এ নির্দেশনা দেয় সাংবিধানিক সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায়/অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।

ঢাকাপ্রকাশ-এর ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২০ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২৬ এএম

‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগান ধারণ করে ঢাকাপ্রকাশ-এর এবারের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) উদযাপিত হয়েছে। রাজধানীর ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার-এর নিজ কার্যালয়ে দিনটি উদযাপিত হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই ঢাকাপ্রকাশ-এর ভবনে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি উৎসবে আগতদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন।

শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেক কেটে ঢাকাপ্রকাশ-এর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহাদৎ জামান সাইফ। এ সময় অন্যান্য অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকাপ্রকাশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবিউল ইসলাম, ঢাকাপ্রকাশ-এর সাংবাদিক ও কলাকুশলীরা।

কেক কাটার পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শাহাদৎ জামান সাইফ বলেন, ঢাকাপ্রকাশ তার দ্বিতীয় বছর অতিক্রম করল। দুইটি বছর গণমাধ্যমের জন্য বড় কিছু নয়। কিন্তু এই দুই বছরে বোঝা যায়; এই মাধ্যমটির সম্ভাবনা কতটুকু। এই অল্প সময়েই ঢাকাপ্রকাশকে পাঠকরা যতটা গ্রহণ করেছে তা সত্যি অভাবনীয়। ‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা আরও সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর। তারুণ্য নির্ভর এই গণমাধ্যম পাঠকদের ভালোবাসায় সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে ছড়িয়ে পড়বে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এসময় ঢাকাপ্রকাশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আজ ঢাকাপ্রকাশের জন্মদিন। সাফল্যের দুই বছর অতিক্রম করে ৩য় বর্ষে পা রাখল তারুণ্য নির্ভর এই গণমাধ্যমটি। মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টালটি বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠকদের মাঝে ইতিধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। তারুণ্যের অদম্য শক্তিতে ঢাকাপ্রকাশ তার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, দুই বছর সময়টি কম হলেও আমরা পাঠকদের কাছে এই অল্প সময়ের মধ্যে যে জায়গা করে নিয়েছি তা সত্যিই অনেক বড় অর্জন। আমাদের এই অর্জনের পেছনে পাঠকদের ভূমিকা সব থেকে বেশি। তাদের গ্রহণযোগ্যতাই আমাদের সব থেকে বড় সম্পদ। তারাই আমাদের শক্তি, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। পাঠকদের এই ভালোবাসাই ঢাকাপ্রকাশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে।

বর্ষপূর্তিতে ঢাকাপ্রকাশের মফস্বল বিভাগের জাহিদুল ইসলাম তার অনুভতি ব্যক্ত করে জানান, নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ঢাকাপ্রকাশ তরুণ নির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে সাজানো হয়েছে এই পরিবার। ঢাকাপ্রকাশ অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় স্থান দখল করে নিয়েছে। এর জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ও কাঠামোগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
স্পোর্টস বিভাগের আশিক মোহাম্মদ রিয়াদ বলেন, সাফল্যের দুটি বছর শেষ করলাম আমরা। এবার সামনে এসেছে নতুন সম্ভাবনার দিন। ঢাকাপ্রকাশ পরিবার আরও সামনে এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করছি। শুভ জন্মদিন ঢাকাপ্রকাশ।

কথা হয় ঢাকাপ্রকাশের ক্যাম্পাস বিভাগের একরামুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন, আজ ঢাকাপ্রকাশ তার ২ বছরের সাফল্যমাখা সময় অতিক্রম করে তৃতীয় বর্ষে পা রাখল। গণমাধ্যমে সত্যতা ও সচ্ছ্বতা বিদ্যমান রাখা সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাকাপ্রকাশ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগানকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে তার নিজস্ব গতিতে। পাঠকদের ভালোবাসায় পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে চাই আমরা।
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকাপ্রকাশের বিনোদন বিভাগের আরিফ হাসান বলেন, ঢাকা প্রকাশ এগিয়ে যাক অদম্য গতিতে। ছুটে চলুক সত্যের সন্ধানে। শুভ জন্মদিন ঢাকাপ্রকাশ।

ঢাকাপ্রকাশের ওয়েব ডেভেলপার পার্থদেব জানান, প্রতিদিনই আমরা পাঠকদের মন্তব্য বিশ্লেষণ করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের ওয়েবসাইটকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাঠকদের বিভিন্ন মতামতের উপর ভিত্তি করে ঢাকাপ্রকাশকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে।
এদিকে সারাদেশ থেকে প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শোবিজ অঙ্গণের অনেকের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা এসে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ-কে।
বিভাগ : গণমাধ্যম
বিষয় : ঢাকাপ্রকাশ , তয়-বর্ষে-ঢাকাপ্রকাশ , বর্ষপূর্তি , উদযাপিত , উদযাপন , পুরাতনকে-ভুলে-নতুন-উদ্যমে-এগিয়ে-যাচ্ছি-আমরা , জন্মদিন

ইসি’র শোকজের জবাব দিলেন সাকিব
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০০ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২৯ এএম

মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান তার বিরুদ্ধে করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে করা শোকজের জবাব দিয়েছেন । শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে শোকজের ব্যাখ্যা দেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাকিব আল হাসান বলেন, সব কিছু সব সময় ক্যামেরাতে বলা সম্ভব না। দেখুন আমি তো গতকালই বললাম প্রথমবার আমি ইলেকশনে অংশগ্রহণ করতেছি। স্বাভাবিকভাবেই ভুলত্রুটি আমার হতে পারে, আমার অজান্তে। সেগুলো সংশোধন করা আমার দায়িত্ব। যখন আমি সব নিয়ম কানুন জানব, পড়ব, বুঝব, তারপর যদি হয় তখন আমার দোষ হতে পারে। কিন্তু এখন যেটা হয়েছে এটা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত একটা বিষয়। নেক্সট টাইম যাতে এমন না হয় সে বিষয়ে আমি খেয়াল রাখব।
সাকিবের আইনজীবী সাজেদুর রহমান সংগ্রাম জানান, ২৯ নভেম্বর সাকিব আল হাসান মাগুরায় আসেন। তখন কামারখালী এলাকায় লোকজন জমা হয়। সেখানে ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সেখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না কিংবা দলীয় কাউকে তিনি রাখেননি। সুতরাং এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি। ভবিষ্যতে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকব। আইন মেনে চলব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) মাগুরা-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধানী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সত্যব্রত শিকদার আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে সাকিব আল হাসানকে তলব করেন। তাকে আজ শুক্রবার অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।