শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

লিঙ্গ সমতার জন্য প্রয়োজন উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির সমন্বয়

প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল শিক্ষার অগ্রগতিতে এগিয়ে চলছে পৃথিবী। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য প্রসারিত করার উপর ডিজিটাল লিঙ্গ ব্যবধানের প্রভাব অন্বেষণ করবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের অধিকার রক্ষা, অনলাইন এবং আইসিটি-সুবিধাযুক্ত লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলার গুরুত্বকেও আলোকপাত করছে এই বিষয়গুলো।

প্রযুক্তির মধ্যে নারী এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীকে আনার ফলে আরও সৃজনশীল সমাধান পাওয়া যায় এবং নারীর চাহিদা পূরণ করে— লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করে এমন উদ্ভাবনের সম্ভাবনাই বেশি।

ইউএন উইমেনস জেন্ডার স্ন্যাপশট ২০২২ রিপোর্ট অনুসারে, ডিজিটাল বিশ্ব থেকে নারীদের বাদ দেওয়ায় গত এক দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন থেকে এক ট্রিলিয়ন কম হয়েছে। এই ক্ষতি যা ২০২৫ সাল নাগাদ ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। এই প্রবণতাকে উল্টাতে হলে অনলাইন সহিংসতার সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে, যা ৫১টি দেশের সমীক্ষায় দেখা গেছে— ৩৮ শতাংশ নারী ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি অনুভব করেন।

উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল শিক্ষার জন্য একটি জেন্ডার-প্রতিক্রিয়াশীল দৃষ্টিভঙ্গি নারীরা তাদের অধিকার এবং নাগরিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পারে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতি উনয়ন, মানবিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য এবং ২০৩০ এজেন্ডার টেকসই উনয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। দুর্ভাগ্যবশত, ডিজিটাল বিপ্লবের সুযোগগুলো লিঙ্গ বৈষম্যের বিদ্যমান নিদর্শনগুলোকে স্থায়ী করার ঝুঁকিও উপস্থাপন করে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ডিজিটাল দক্ষতা এবং প্রযুক্তির অ্যাক্সেসের প্রেক্ষাপটে ক্রমবর্ধমানভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, এই ডিজিটাল লিঙ্গ বিভাজনের ফলে নারীরা পিছিয়ে পড়ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং রূপান্তরমূলক প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তাই একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তিবিদ, উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা এবং জেন্ডার সমতা কর্মীদের একত্রিত করবে যাতে ডিজিটাল সরঞ্জামগুলোতে অ্যাক্সেসের উন্নতিতে সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা হাইলাইট করার সুযোগ প্রদান করা যায় এবং একটি উচ্চ স্তরের প্যানেল আলোচনা করা হবে।

যে হারে নারীর অগ্রগতি হয়েছে সে হারে কমেনি নারীর প্রতি সহিংসতা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটলেও নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি আশানুরূপ। বরং ক্রমান্বয়ে এ সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এমনকি করোনাকালে সহিংসতা আরও বেড়েছে। করোনা সংকটের কারণে চলমান অবরুদ্ধ ও আতঙ্কগ্রস্ত পরিস্থিতিতে যেখানে নারীরা অধিক সহানুভূতি পাওয়ার কথা, সেখানে তাদের প্রতি সহিংসতার হার বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এমনই প্রেক্ষাপটে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে— ‘ডিজিটাল: লিঙ্গ সমতার জন্য উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি’। নির্যাতন-নিষ্পেষণ বন্ধসহ নারীদের সব অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১৯১১ সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসের মধ্যে সব সীমাবদ্ধ। প্রতিষ্ঠিত হয়নি নারীর অধিকার, বন্ধ হয়নি নির্যাতন। তবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে মাত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। অগ্রগতি হয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকেও। এ সময়ে পরিবর্তন এসেছে নারীর অবস্থা ও অবস্থানেও।

বর্তমানে সমাজের প্রায় সব খাতেই নারীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হচ্ছে। শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের উপস্থিতি এখন শতভাগ। পোশাক শিল্পের কৃতিত্বের সিংহভাগই নারীর। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই যেখানে নারী, সেখানে অগ্রগতি দৃশ্যমান হচ্ছে খুব অল্পসংখ্যক নারীর মধ্যেই। নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার দেশের নারী সমাজের সার্বিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মক্ষেত্রে অবাধ প্রবেশ ও নীতি নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। এরপরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ঘরে-বাইরে নারীর নিরাপত্তা।

২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে হলে অবশ্যই এর ৫ এবং ১০ অভীষ্ট অর্জনে সাফল্য দেখাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ। বাংলাদেশের সংবিধানেও এর প্রতিফলন আছে। কিন্তু ৫০ বছরে কি আমরা বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ করতে পেরেছি? সিডও সনদের শর্ত বাস্তবায়ন করতে হলেও নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার কোনো বিকল্প নেই।

বিংশ শতাব্দীতে লিঙ্গসমতাভিত্তিক যে সমাজ গঠনের ডাক দিয়েছিলেন রোকেয়া, সে সমাজ গঠনের পথে আজ ৫০-উত্তীর্ণ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে দাঁড়িয়ে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে বিশ্বের নারীর ক্ষমতায়নে আজ বাংলাদেশ রোল মডেল। নারী ক্ষমতায়ন মূল্যায়নে যেসব অনুঘটক বা সূচক ব্যবহার করা হয় তার সবকটি সূচকে আজ বাংলাদেশ বিশ্বে এগিয়ে। এটি সম্ভব হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণে। বঙ্গবন্ধু মূলত একজন নারীবাদী চিন্তাবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও লিঙ্গসমতায় বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক যিনি বাংলাদেশকে একটি আধুনিক জাতিরাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তার নারী শিক্ষা প্রসার, নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। বাল্যবিয়ে নির্মূলের জন্য বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-২০১৭ সালে প্রণয়ন করা হয়। মেয়েদের শিক্ষা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করা হয়েছে অবৈতনিক, চালু হয়েছে বৃত্তি, উপবৃত্তি, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচি। এর মাধ্যমে কমেছে নারী শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার, বেড়েছে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ সব সুরক্ষা বলয় কর্মসূচির ফলে তৃণমূল ও প্রান্তিক নারীরা ভেঙে ফেলতে শুরু করেছেন বহু প্রাচীন পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, ট্যাবুর সংস্কার ও বেড়াজাল। বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের সক্রিয় উপস্থিতি ও অসাধারণ সাফল্য এ বাস্তবতাকেই তুলে ধরে।

নারীর উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারীবান্ধব সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার প্রণয়ন করেছে নারীবান্ধব বাজেট। নারীবান্ধব বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে, স্তরে ও সেক্টরে বর্তমান সরকার নারীকে সম্পৃক্ত করেছে। রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, র্অর্থনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি, খেলাধুলাসহ পেশাভিত্তিক সব ক্ষেত্রে আজ রয়েছে নারীদের গর্বিত পদচারণ। বেগম রোকেয়ার দৃপ্ত উচ্চারণ ছিল- ‘পুরুষের সমকক্ষতা লাভের জন্য আমাদিগকে যাহা করিতে হয় তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয়, তবে তাহাই করিব। আবশ্যক হইলে লেডি কেরানি হইতে আরম্ভ করিয়া লেডি ম্যাজিস্ট্রেট, লেডি ব্যারিস্টার, লেডি জজ সবই হইবই’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)। শেখ হাসিনা রোকেয়ার সেই আকাঙ্ক্ষাই আজ পূরণ করে চলেছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, উপাচার্য, বিচারকসহ সব পদেই নারীর অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রই শুধু নয়, আধুনিকায়ন ও গণতন্ত্রায়নের মূল কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত। অথচ সেই আমেরিকার বাসিন্দারা শ্বেতকায় ও ক্ষমতাধর নারী হিলারি।

দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, জাতীয় সংসদের স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী। নারী সমাজের উন্নয়নের জন্য এর চেয়ে বড় ইতিবাচক শর্ত আর কী হতে পারে? বাংলাদেশের সংবিধানসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালায় নারীর রাজনৈতিক-সামাজিক ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

নারীর প্রতি নানারকম বৈষম্য, তার অধিকারের অস্বীকৃতি কিন্তু এরকম কিছু বাস্তব ও বৈষয়িক কারণেই এসেছে— যা যুগে যুগে নারী জাতিকে কঠিন অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। অনেক নারী মেধাবী এবং রীতিমতো লড়াই করেই সমাজে নিজের অবস্থান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে সমাজের সব নারীর জন্যই এমন সুযোগ কেন আসে না? এ সব প্রশ্নের উত্তর সরলীকরণ কঠিন। বলা যায় সমাজে বিদ্যমান নারীর প্রতি নানা ধরনের বৈষম্য এবং দৃষ্টিভঙ্গি এর পেছনে কাজ করে। নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে সমাজ, মানুষের বিদ্যমান দৃষ্টিভঙ্গি যেন অদৃশ্য এক কাচের দেয়ালকে প্রতীয়মান করে।

নারী বরাবরের মতোই থেকেছে অধিকারবঞ্চিত, ক্ষেত্রবিশেষে অধিকতর। এর কারণ হলো, আমাদের মননে যা ক্রিয়াশীল তা হলো নারীকে বাঁচিয়ে রাখা, অধিকার দেওয়া নয়। এ সমাজে নারীরা শারীরিকভাবে যতটা না নির্যাতিত তার চেয়ে ঢের বেশি হয় মানসিক নির্যাতনের শিকার।
পদে পদে তাকে অপমান সইতে হয়। লজ্জার কথা হলো, এ সমাজ এখনো নারীকে মানুষ হিসেবে যে সম্মান দেওয়া প্রয়োজন তা করে না বা নারীর মানবাধিকারকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয় না। তবে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, বিচারবিভাগ, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্রবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শান্তিরক্ষা মিশনসহ সবক্ষেত্রে নারীর সফল অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর সম অধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেছেন। নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সব অগ্রগতি এবং উন্নয়নে করেছে সম-অংশীদারত্ব। আর তাই সারা বিশ্বে বদলে যাচ্ছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি। লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল।
জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেটের মাধ্যমে নারীর প্রতি বৈষম্য হ্রাস ও সুযোগের সমতা সৃষ্টি। জেন্ডার বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে জেন্ডার সমতা, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস, স্বাস্থ্য ও টিকাদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। নারীর আর্থসামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন দৃশ্যমান হয়। এজন্য দরকার নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা ও সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা এবং আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।

 

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৪ বছরের অর্জন আছে অনেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ২০২১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারী ও শিশুদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন লক্ষ্য ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন। গত ১৪ বছরে নারী ও শিশুর উন্নয়নে প্রণীত নীতিমালা, আইন ও বিধিমালাগুলোর জন্য সরকার গত ১৪ বছরে নারী ও শিশুর উন্নয়নে বেশকিছু আইন-নীতি ও বিধিমালা তৈরি করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১; জাতীয় শিশু নীতি ২০১১; শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি ২০১৩; মনোসামাজিক কাউন্সেলিং নীতিমালা ২০১৬ (খসড়া); জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নকল্পে কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০১৫; পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০; ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪; পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩; বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭।
দুস্থ নারীদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তামূলক ভিজিডি কার্যক্রম। দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার (স্তন্যদানকারী মা) সহায়তা, শিক্ষিত বেকার মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে দেশের সবকটি জেলার শিক্ষিত বেকার নারীদের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে ‘জয়িতা’: দেশের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা বিপণন এবং বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে জয়িতার মাধ্যমে একটি নারী উদ্যোক্তা বান্ধব আলাদা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে সারা দেশব্যাপী গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) স্থাপন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা, পুলিশি ও আইনি সহায়তা, মানসিক ও সামাজিক কাউন্সেলিং, আশ্রয়সেবা এবং ডিএনএ পরীক্ষার সুবিধা ওসিসি হতে প্রদান করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার, ১০৯ নম্বরে ফোন করে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু, তাদের পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট সকলে প্রয়োজনীয় তথ্য, পরামর্শসহ দেশে বিরাজমান সেবা এবং সহায়তা সম্পর্কে জানতে পারে। কিশোর-কিশোরী ক্লাব, কর্মরত নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের আবাসনের জন্য হোস্টেল নির্মাণ, শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ প্রদান। পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য চা বাগান, সিটি কর্পোরেশনের বস্তি, কেন্দ্রীয় কারাগার, যৌনপল্লীসহ প্রান্তিক শিশুদের জন্য পুরস্কার বিতরণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

জয় মোবাইল অ্যাপস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড নির্যাতনের শিকার কিংবা নির্যাতনের আশঙ্কা রয়েছে এ রকম নারী ও শিশুদের তাৎক্ষণিকভাবে সহয়তা প্রদান করার জন্য এই অ্যাপ ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর তথ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরমে বাবার পাশাপাশি মা অথবা ‘আইনগত অভিভাবকের'ও স্বীকৃতি দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সমাজে নারী পেল প্রাপ্য স্বীকৃতি৷ হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে অভিভাবকের ঘরে বাবা অথবা মা অথবা আইনগত অভিভাবক- এই তিন বিকল্পের যেকোনো একটি উল্লেখ করেই শিক্ষার্থীরা এখন থেকে ফরম পূরণ করতে পারবে।

প্রশাসনে নারী কর্মকর্তাদের অবস্থান সুদৃঢ়। বর্তমানে সিনিয়র সচিব ও সচিব পদমর্যাদায় ১০ জন, ডিসি ৯ জন। আর অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার নারী কর্মকর্তা ৫৫ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন সংস্থার চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্বপালন করছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে দায়িত্বপালন করছেন ১৬৪ জন নারী। যুগ্ম সচিব পদে ১৬৩ জন নারী কর্মকর্তা সরকারি দায়িত্বপালন করছেন। উপসচিব পদে দায়িত্বপালন করছেন ৩৭০ নারী। পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে ১৬২ জন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে ১৩৩ জন নারী কর্মকর্তা কাজ করছেন। সহকারী সচিব/কমিশনার পদে কর্মরত ৪৩৩ নারী মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বপালন করছেন। অনেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বও পালন করছেন। এ ছাড়া সহকারী সচিব ও সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তা ৪৩৩ জন।

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহার বিশ্ববাসীকে পরস্পরের কাছাকাছি এনে দিয়েছে। এর ফলে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক অগ্রগতিও সাধিত হয়েছে। তবে সব শ্রেণির মানুষের যেহেতু প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার সমান নয়, তাই এ অগ্রগতির সুফল সব মানুষের কাছে সমানভাবে পৌঁছেনি। বিদ্যমান প্রযুক্তি নারীবান্ধব কতটুকু সে প্রশ্ন সামনে আসছে। সেখানে প্রবেশাধিকার ও সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে নারীরা ব্যাপকভাবে পিছিয়ে রয়েছে প্রায় ৫৫ ভাগ নারী এখনো প্রযুক্তির বাইরে রয়েছে।

প্রযুক্তি মানবসমাজকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে। এমনকি নারী সমাজের যে অংশের প্রযুক্তিতে অভিগম্যতা ছিল, তারাও এ সুবিধা পেয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে তারা সমান দক্ষতা দেখিয়েছে। বেকারত্ব, দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হতে প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন কর্মসংস্থান বেছে নিয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে গেছে, প্রশিক্ষণ কর্মসূচিসহ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পেরেছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে বসেই পেশাগত কাজ চালিয়ে গেছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির সুযোগ গ্রহণ করেছে। প্রযুক্তির নানা নেতিবাচক ব্যবহার মোকাবিলা করেছে।

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আরএ/

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস শনাক্ত। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৯৪ জনে অবস্থান করছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৯৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৮৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৩টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চার দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ আইসোলেশনে আসেনি এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৬৬ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৫১ জন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।

দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।

গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছেন শিশু-কিশোররা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছেন ক্লান্ত মানুষজন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।

উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই গণসংযোগ চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলনে বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন কেউই আমাদের দাওয়াতের বাইরে থাকবে না। আর সর্ব প্রথম দাওয়াত হবে নিজের নফসের প্রতি। আমাদের কথা ও কাজে যেন অমিল না থাকে। যেটা মানুষকে করতে বলব, সেটা যেন আমি নিজে আগে আমল করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি জনশক্তির কথাবার্তা, লেনদেন, সামাজিক কাজকর্ম আল্লাহর দ্বীন বা কোরআন অনুযায়ী হতে হবে। যতই বাঁধা আসুক আমরা ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনলাইন মাধ্যম জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ-এ ঈদপুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধনে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে হবে। যারা রমজানে তাকওয়া অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন মূলত তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ। আমীরে জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে ১৫ দিনব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ চলবে।

সর্বশেষ সংবাদ

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন