মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩০ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

৩১ বছরে কেউ কথা রাখেনি

কেউ কথা রাখেনি। সরকার অন্ধ ও বধিরদের। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কেউ কথা রাখেনি কবিতার লাইনই আজ লেখার মূল শিরোনাম। রাষ্ট্রে বহুমাত্রিক সংকট বর্তমান, কিন্তু একটি মৌলিক সংকটকে উপেক্ষা করে সরকার আরও অসংখ্য সংকট তৈরি করছে। এটা কীভাবে সবার নজর এড়িয়ে গেল সেটাই আজ বিস্ময়কর ও আশ্চর্যজনক বটে। চরম সত্যের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আজ সুনীলের বিখ্যাত সেই কবিতার লাইন।

রাষ্ট্র জন্মের বিগত ৫২ বছরে যে হারে কথা না রাখার সংস্কৃতি চালু হয়েছে সেটা ভাববার বিষয়। এই সময়ে রাষ্ট্রের শাসনে যে দলই ক্ষমতায় এসেছেন তারাই জিইয়ে রেখেছেন এই কথা না রাখার সংস্কৃতি। বলছি কবিতায় কথা না রাখার ৩৩ বছর আর বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের ৩১ বছর। এই বাস্তবতা আজ চরম সত্য। প্রতিষ্ঠার ৩১ বছরেরও অধিককাল উচ্চশিক্ষায় নিযুক্ত শিক্ষক শ্রেণি বেতনবঞ্চিত। এই তথ্য জানে না মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এই গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে না পারাটাও চরম চিন্তার দারিদ্র্য বলেই মনে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর জল গড়িয়েছে বহুদূর। কিন্তু কথা রাখেনি কেউ! ভাবখানা এমন কথা দেওয়া হয়েছে কথা না রাখার জন্য।

সরকারের ভাষ্যমতে, গলগ্রহ আর করুণা প্রত্যাশী এসব শিক্ষক, কিন্তু বিষয়টি অধিকারের, আইনের শাসন ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার। বাস্তবতা হলো এটা শিক্ষকদের অধিকার এটা রক্ষা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব, সাংবিধানিক অধিকার। স্পষ্টত সংবিধানে এই শিক্ষাব্যবস্থা অবৈতনিক, একমুখী ও সার্বজনীন ঘোষণার পরেও কীভাবে চলে এমন অন্যায় সেটাই আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব নৈরাজ্য আর অবিচার চললেও অবসান হয়নি। ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হয়েছে ক্ষেত্র বিশেষে। আর এই নীরব ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে মানবেতর দিনযাপন করছেন বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজের বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রায় ৫ হাজার ৫০০ জন শিক্ষক।

সুদীর্ঘ এই সময়ে দেশের গণমানুষের প্রধান দুটি দল ক্ষমতায় টিকে ছিল। ছিল আধ ডজন শিক্ষামন্ত্রী। সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল সামনে রেখে সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বহুক্ষেত্রে ঘটেছে সুদূর প্রসারী পরিবর্তন। অথচ গুণগত পরিবর্তন হয়নি এইসব ভাগ্যবিড়ম্বিত শিক্ষকদের। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষায় মেগা প্রজেক্টের কথা বলে দিয়েছেন সান্ত্বনা, শিক্ষামন্ত্রীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, সচিবদের সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করাসহ সরকারের সব মুখপাত্রই দীর্ঘদিনের জমে থাকা এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কথা রাখেনি কেউ। এমন টালবাহানার মধ্যেই কেটে গেছে ৩১ বছর। আর এই শোষণ এখন অন্যায়, অবিচার আর বঞ্চনার ২৪ বছর বারবার সামনে এনে দাঁড় করাচ্ছে পাকিস্তানের লুটপাট আর শোষণ। অধিভুক্ত কলেজের কলেজ প্রশাসন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর সরকারের অদূরদর্শী শিক্ষাচিন্তার ফলেই টিকে আছে এই শোষণ।

সরকারের বিতর্কিত শিক্ষানীতি, খামখেয়ালিপনা, সিদ্ধান্তহীনতা আর অদক্ষ পরিচালনার কারণেই উচ্চশিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত আজ ধ্বংসের কিনারায়। কথা না রাখার সংস্কৃতির কারণে একদিকে যেমন সরকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় পিছিয়ে গেছে অন্যদিকে বিঘ্নিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গতি পেয়েছে সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা। সর্বাত্মকবাদী, ফ্যাসিবাদী সরকারে শিক্ষা ও সংস্কৃতির সংকোচন নীতির মতো চলেছে বিগত দিনগুলো।

১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩ সাল থেকে স্থানীয় পর্যায়ের বেসরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজগুলো নিয়োগ দেওয়া শিক্ষকদের তাদের নিজস্ব আয় থেকে বেতন দেবে এই শর্তে অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে কলেজগুলো। এই বিষয়ে শিক্ষক নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরণাপন্ন হলে তারাও এ বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেনি। অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের এমন নিরবতা আর অধিভুক্ত কলেজগুলোকে শিক্ষা ব্যবসার সুযোগ দানের ভেতর দিয়েই শুরু কথা না রাখার সংস্কৃতির। কারণ হিসেবে কলেজ দেখিয়েছিল কলেজে পর্যাপ্ত আয় না থাকা কিন্তু বাস্তবতা ছিল উল্টো। এসব শিক্ষকদের শ্রমকে পুঁজি করে কলেজগুলো ব্যবসার জাল পেতে বসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যক্ষ মদদে। শিক্ষক ও ছাত্রদের এভাবে ধোঁকা দিয়েই চলছে পাঠদান কার্যক্রম মূল কুশীলবের ভূমিকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের শোষণ করে শিক্ষকদের ফাইফরমাস খাটিয়ে দিনের পর দিন অধিভুক্ত কলেজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে এমন অন্যায় আর অবিচার।

শিক্ষকদের বেতন দেয় না প্রতিষ্ঠানগুলো অপরপক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় উচ্চ হারে বেতন। কলেজভেদে এই বেতনের পরিমাণ ৫০০-১৫০০ ছাড়িয়েছে কোথাও কোথাও। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের দাবি এমপিও নতুবা বেসরকারি অর্থের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শিক্ষকদের বৈষম্য হ্রাস। এমন বৈষম্য বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনো লাভ হয়নি উল্টো নবায়নের নামে কামিয়েছে কাড়ি কাড়ি টাকা। ইউজিসির টাকায় অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চললেও ছাত্র অনুপাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। সাম্প্রতিক সময়ে কলেজগুলোর টাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের প্রধান উৎস এখন এসব কলেজগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর যোগসাজসে বেশ সম্প্রসারণশীল এই বাজার বেশ রমরমা। এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসছেন শোষিত-বঞ্চিত শিক্ষকসমাজ। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির দল ক্ষমতায় থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এমন দৈন্যতা নিশ্চিতভাবেই স্ববিরোধী। বঞ্চনার এই দীর্ঘসময়ে গত একযুগে দেশের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সচিব, সাংসদ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ডিসি, ভিসিসহ মিটিং মিছিল লবিং স্মারকলিপি দেন দরবার করেও কোনো লাভ হয়নি। সবাই আশা দিয়েছেন, কিন্তু কথা রাখেননি কেউ। এই অন্ধ, মূক ও বধির সরকার শোনেনি শিক্ষকদের চিৎকার। শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি সরকার।

শিক্ষকদের ভাষ্যমতে, একই নিয়মে নিয়োগ নিয়ে সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজগুলোর শিক্ষকরা যদি সরকারি বেতনের অংশ পেতে পারে, ডিগ্রির তৃতীয় শিক্ষকরা যদি এমপিও পেতে পারে তাহলে তাদের সমস্যা কোথায়। আদতে কোনো সমাধান নেই খোদ সরকারেই হাতেই। নিপীড়িত এসব শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সবোর্চ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কেন অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে না এই মর্মে সংসদে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষমেষ তারাও কথা রাখেনি। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি বারবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব সমস্যার সমাধানকল্পে কাজ শুরু হয়েছে বললেও এখন পর্যন্ত তার আন্তরিকতার দৃশ্যমান কোনো প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।

জাতীয় স্বার্থে রাষ্ট্রের একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উচ্চশিক্ষার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারের এমন নীরব ভূমিকা খোদ শিক্ষকদেরই ভাবিয়ে তুলেছে। শিক্ষাকে অবহেলা করে অতীতে পিছিয়ে গেছে এমন দেশের নজির বিরল নয়। এতে রাষ্ট্রেরই ভীত দুর্বল হয়ে ওঠে। শিক্ষায় বৈষম্য আর অবিচারের ফলে তারা তাদের অনিবার্য পতন রোধ করতে পারেনি। বাংলাদেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের চিন্তা এর বাইরে নয়। সবশেষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও সেটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাষ্ট্রে সমস্যা ছিল, আছে, থাকবে সমাধানও আছে কিন্তু একটা সমস্যা কীভাবে দীর্ঘ ৩১ বছর টিকে থাকে কল্যাণকর সরকারের তকমার মধ্যে। এভাবে টিকে থাকা সমস্যা সরকারের অদূরদর্শী, ভঙ্গুর, আর ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ ছাড়া আর কিছুই নয়। শিক্ষা নিয়ে সরকারের কোনো কার্যকর গুণগত পরিবর্তনমুখি টেকসই পরিকল্পনা আছে কি না সেটা সুশীল সমাজের বোধগম্য নয়। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও বিশ্ব প্রতিযোগিতার বাজারে নিজের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত করতে পারবে সেটা সময়ই বলবে। এভাবে কথা না রাখার সংস্কৃতি জাতি হিসেবে আমাদের কোথায় দাঁড় করাবে সেটা বিবেচ্য বটে। ফলে সুনীলের সেকথাই আজ চরম সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবেই দিন কেটে যায়। নিখিলেশরা কখনো এসে দেখে না, তাদের ভাগ্য বিধাতাও চোখ মেলে তাকাই না।

হাসিবুল হাসান: অ্যাসিসন্ট্যান্ট ম্যানেজার,
সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলামোটর, ঢাকা।

এসএন

 

 

Header Ad
Header Ad

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা জিয়ার আপিলের রায় বুধবার

খালেদা জিয়ার আপিলের রায় বুধবার। ছবি: সংগৃহীত

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ।

আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু হয়।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, হাইকোর্ট বিভাগ এ মামলায় খালেদা জিয়াকে যে সাজা দিয়েছেন তাতে আইনের মারাত্মক ব্যত্যয় হয়েছে। শুধু তাই নয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের যে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে সেই অর্থও সুরক্ষিত আছে; সেই অ্যাকাউন্টে তা সুরক্ষিত রয়েছে। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই এ রায় দেওয়া হয়।

২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেওয়া ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেন আদালত। পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে আপিলের সারসংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

গত বছরের ৩ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অরফানেজ ট্রাস্টের নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান।

একইসঙ্গে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বাকি চার আসামি হলেন—সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান।

এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।

Header Ad
Header Ad

এবার টিউলিপকে দায়িত্ব ছাড়ার আহ্বান দুর্নীতিবিরোধী জোটের

টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগের মুখে ক্রমেই বাড়ছে চাপ, যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর। প্রথমে বিরোধী দল এবং এখন দেশটির দুর্নীতিবিরোধী জোটও টিউলিপকে দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছে। এই জোটে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনগুলো, যেমন অক্সফাম এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জোটটি এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাজ্যের মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা টিউলিপের বিরুদ্ধেই অর্থ আত্মসাৎের অভিযোগ উঠেছে। যা তার কাজের সঙ্গে সাংঘার্ষিক। ফলে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো অবস্থানে তিনি আছেন কি না বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ট্রেজারি মন্ত্রী যুক্তরাজ্যের মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার কাঠামোর দায়িত্বে রয়েছেন, অথচ তার এমন একটি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাথে সরাসরি পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে যা সেই কাঠামোর অধীনে তদন্ত করা যেতে পারে।

সম্প্রতি কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেয়ার অভিযোগ উঠে। এছাড়া, বাংলাদেশের ৯টি মেগা প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

এই অভিযোগের মধ্যেই টিউলিপের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানান ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ।

টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

Header Ad
Header Ad

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী ড. পুরনজিত মহালদার মারা গেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন,‘ গতকাল দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর বার রাস্তার মোড় এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ড. পুরনজিত মহালদার। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।’

সহকর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ড. পুরনজিত মহালদারের মরদেহ আজ সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে রাখা হবে। তার বন্ধু শুভানুধ্যায়ী, সহকর্মী, শিক্ষার্থীদের সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হলো।

ড. পুরনজিত মহালদারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি জামিল রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইকবাল। নি মারা যান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা জিয়ার আপিলের রায় বুধবার
এবার টিউলিপকে দায়িত্ব ছাড়ার আহ্বান দুর্নীতিবিরোধী জোটের
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
ময়মনসিংহে হামলার হুমকিতে ৭৫৫ বছরের ওরস বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রশাসনের  
নারায়ণগঞ্জে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ২ বন্ধুর মৃত্যু  
এলপিজি গ্যাসের সাড়ে ৭ শতাংশ অতিরিক্ত ভ্যাট অব্যাহতি  
অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্তের পথে  
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ, ঢাকার কড়া প্রতিবাদ
এ বছরের মাঝামাঝিতে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি  
নাইজেরিয়ায় কৃষকদের জড়ো করে গুলি, নিহত অন্তত ৪০
দুর্দান্ত ডেথ বোলিংয়ে ঘুরলো ম্যাচের মোড়, রংপুরের সাতে সাত
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা
এইচএমপিভি নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি
স্বচ্ছ ভোটার তালিকা ১৮ কোটি মানুষের আমানত : নির্বাচন কমিশনার
চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল নেতা বহিষ্কার
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা, থানায় সোপর্দ
এবার মাদক অধিদপ্তরের ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’
সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে এক নারীর গুরুতর অভিযোগ
জাপানে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
বাংলাদেশে কিছুই নেই, ওই দেশে দরিদ্র মানুষ বেশি: বিজেপি নেতা