ভাষার স্বাধীনতার বয়স সবে ৭১, শতবছর হতে আরো ২৯ বছর বাকি। ভাষার যদি মানব প্রাণের মতো প্রাণ থাকতো তবে কেমন অনুভব করতো সে ৭১ পেরিয়ে?
আমার তো ইদানিং দম আটকে আসে।
মৃত ভাষায় পরিণত হতে না চাইলে ক্রমাগত স্বাভাবিক পরিবর্তন মেনে নেওয়া জরুরী। কিন্তু সহজীকরণ এর নামে বানানে আগ্রাসন হচ্ছে না তো? বোদ্ধারা ভালো জানেন!
আর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এর কথা তো বলাই বাহুল্য। হলুদ সন্ধ্যা বলুন আর পূজার মণ্ডপ কিংবা ঈদের দিন মহল্লার মোড়ে হিন্দি ভাষার গান আমাদের রক্তে উচাটন ধরায়। উচাটন ধরানোর মতো গান বোধহয় বাংলায় নেই!
হিন্দি, ইংরেজি, তারকিশ ভাষার প্রতি আগ্রহ আমার থাকতেই পারে কিন্তু কোনভাবেই নিজের স্বকীয়তা কে বিসর্জন দিয়ে নয়।
আমি কথা বলবো বাংলিশে, পড়বো ইংরেজিতে, নাচবো হিন্দিতে আর দিন শেষে চিৎকার করবো বাংলায়, কেন এই দশা!!!
অসংখ্য সুস্থ মানবের ভীড়ে নিজেকে বড্ড অসুস্থ মনে হয়!
লেখক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
গ্রামীণফোনের ৪জি ইন্টারনেট সেবায় আকস্মিক বিভ্রাটের ঘটনায় মোবাইল অপারেটরটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি মিলনায়তনে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।
তিনি বলেন, “বুধবার প্রায় ৪০ মিনিট সময় ধরে গ্রামীণফোনের ৪জি ইন্টারনেট সেবায় বিভ্রাট দেখা যায়। এ কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ বিষয়ে আমরা গ্রামীণফোনের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছি। আশা করছি, আজকের মধ্যেই তারা আমাদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাঠাবে।”
তবে ঠিক কোন কারিগরি ত্রুটির কারণে এই বিভ্রাট ঘটেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানায়নি গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। তবে বিটিআরসি বলেছে, বিভ্রাটের উৎস, ব্যাপ্তি ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধে করণীয়—এসব বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
বিভ্রাটের সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা ৪জি ইন্টারনেট সেবা পাননি। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক ফোরামে অভিযোগ জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ নামে একটি প্লাটফর্ম পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষিত অর্ধদিবস শোক পালনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তারা এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ প্লাটফর্মে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও কয়েকটি বাম ছাত্রসংগঠনের সংশ্লিষ্টতা দেখা গেছে।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রথমে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে তালা দেওয়া হয়। পরে কলাভবন ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদেও তালা লাগানো হয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিজ্ঞান অনুষদসহ অন্যান্য একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনেও তালা দেওয়া হবে।
এ সময় এক বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে ছাত্রদলের বিজয় একাত্তর হল শাখার দপ্তর সম্পাদক সাকিব বিশ্বাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ চাই। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এই কর্মসূচি পালন করছি।”
প্লাটফর্মটি শুক্রবার (১৬ মে) পূর্ণদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে তারা শিক্ষার্থীদের সকল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
ধর্মঘট শেষে বিকেল ৫টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে একটি ঘটনা আর কেবল একটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে এমনই এক আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে একটি মরু প্রাণী—সান্ডা। এটি নিয়ে তৈরি হয়েছে মিম, রম্যকথা ও নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট। এরই ধারাবাহিকতায় অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে: সান্ডা কি খাওয়া হালাল, নাকি হারাম? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে? চলুন জেনেই এসব প্রশ্নের উত্তর।
সান্ডা কী?
সান্ডা মূলত একটি মরুভূমিতে বসবাসকারী প্রাণী। দেখতে অনেকটা গিরগিটির মতো হলেও আকারে বড় এবং শরীর পোক্ত। আরবি ভাষায় একে "দাব্ব (ضبّ)" বলা হয়। মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মরু অঞ্চলে এই প্রাণীটি দেখা যায়। অনেক এলাকায় সান্ডাকে শক্তিবর্ধক বা যৌনউত্তেজক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর তেলও বিক্রি হয় আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য।
সান্ডা। ছবি: সংগৃহীত
ইসলামে সান্ডা খাওয়া হালাল নাকি হারাম?
ইসলামী শরিয়তের বিধান নির্ধারিত হয় মূলত কুরআন, হাদীস ও ফিকহবিদদের ব্যাখ্যার আলোকে। সান্ডা নিয়ে কুরআনে সরাসরি কিছু বলা না থাকলেও হাদীসে রয়েছে একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা।
রাসূল (সা.) এর জীবনের একটি ঘটনা:
সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সান্ডা পরিবেশন করা হয়। তিনি তা খাননি। সাহাবারা জানতে চাইলেন- "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি একে অপছন্দ করেন, নাকি এটি হারাম?" তিনি বললেন, "এটি আমার কওমের খাদ্য নয়, তাই আমি খাই না।" (সহিহ বুখারি: ৫৫৩৭, সহিহ মুসলিম: ১৯৪৪)। এরপর সাহাবাগণ তার সামনেই তা খেয়ে নেন, এবং তিনি এতে কোনো নিষেধ দেননি।
চার মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি:
হানাফি- মাকরূহ তাহরিমি (না খাওয়াই ভালো), শাফেয়ি- হালাল, মালিকি- হালাল, হাম্বলি- হালাল। হানাফি মাযহাব অনুসারে, এটি একটি অরুচিকর প্রাণী হওয়ায় না খাওয়াই শ্রেয়। অন্য তিনটি মাযহাবের মতে, যেহেতু রাসূল (সা.) নিষেধ করেননি, বরং সাহাবারা খেয়েছেন, তাই এটি সম্পূর্ণ হালাল ও বৈধ।
সান্ডা তেল ও চিকিৎসা:
সান্ডা তেল অনেক আয়ুর্বেদিক ও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে যৌনস্বাস্থ্য বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার ঘাটতি রয়েছে। বাজারে যেসব তেল পাওয়া যায়, তার বিশুদ্ধতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত নয়।
তাহলে ইসলামে সান্ডা খাওয়া জায়েজ?
সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায়- কুরআনে সরাসরি নিষেধ নেই। রাসূল (সা.) নিজে খাননি, তবে খেতে নিষেধও করেননি। সাহাবীরা তার সামনেই খেয়েছেন। অধিকাংশ ফিকহ বিশারদ এটিকে হালাল মনে করেন। হানাফি মতে অপছন্দনীয় হলেও হারাম নয়। তবে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকলে কিংবা সন্দেহজনক উপায়ে প্রস্তুতকৃত তেল বা খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।