রাগের বশে ২ বছরের শিশু সন্তানকে হত্যা করে পুকুরে ফেলেন মা!
ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন স্থানীয়রা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলের বাসাইলে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে মোহাম্মদ আলী নামে ২ বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার মায়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরআগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসাইল পূর্ব মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিশু মোহাম্মদ আলী (২) ইব্রাহিম আলীর ছেলে।
স্থানীয় সাবেক প্যানেল মেয়র সাজ্জাদ হোসেন আলাল স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, ইব্রাহিমের ২ বছরের শিশু ছেলে মোহাম্মদ আলীকে রাত ৩টার পর ঘরে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশেপাশের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজখুঁজি শুরু করে।
এরপর শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা হিরা বেগম স্বীকার করে রাগের বশে শিশুটিকে রাত ৩ টার দিকে পানিতে ফেলে দেন তিনি।
হিরা বেগমের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, এসময় আমার হিতাহিত কোন জ্ঞান ছিল না। কীভাবে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারিনি।
এ ঘটনায় বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইনি বিষয় প্রক্রিয়াধীন।
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন
দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন
কবি হেলাল হাফিজ। ছবি: সংগৃহীত
না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন দ্রোহ আর প্রেমের খ্যাতিমান কবি হেলাল হাফিজ। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানী শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। কর্তৃপক্ষ তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।
প্রতিভাবান এই কবির জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।
২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ হওয়া দেশের প্রথম শ্রেণির বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, যারা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বাণীতে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
বাণীতে তারেক রহমান বলেছেন, ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে শাহাদৎ বরণকারী দেশের প্রথম শ্রেণির শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অম্লান স্মৃতির প্রতি আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’
‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির ইতিহাসে এক মর্মস্পর্শী ও শোকাবহ দিন। অমর বুদ্ধিজীবীরা দেশের ক্ষণজন্মা শ্রেষ্ঠ সন্তান, যারা একটি সমৃদ্ধ এবং মাথা উঁচু করা জাতি দেখতে চেয়েছিলেন। তারা ন্যায় বিচারভিত্তিক শোষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু হানাদার বাহিনীর দোসররা চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিত এ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে।’
‘স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই অগণতান্ত্রিক শক্তি তাদের মুখোশ খুলে ফেলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ন্যায় দেশের মানুষের সর্বজনীন গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো একের পর এক হরণ করতে থাকে, এক নদী রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্ব দিনে দিনে দুর্বল করে এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশা ধূলিসাৎ করে। সেই দুঃশাসনের ঐতিহ্য ধারণ করে তাদের উত্তরসূরী আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা বিভেদ অনৈক্য এবং সংকীর্ণতা, গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের দ্বারা ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়া ও জাতীয় অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল এবং গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। সুতরাং আমাদের রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ এবং দেশকে একটি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার বদলে একদলীয় দু:শাসনের বাতাবরণ তৈরি করে।’
‘সুতরাং আজ পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহুমত ও পথের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা আমাদের প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে যাবেন।’
‘আজকের এ শোকাবহ দিনে আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই- আসুন শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা একসাথে কাজ করি। আমি শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’