শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

অবশেষে পাওয়া (দ্য কনক্লুসিভ উইনস অফ লাভ)

অপুর চতুর্থ বর্ষের প্রথম ক্লাস আজ শুরু । আকাশে মেঘের ছড়াছড়ি, যেকোন সময় নেমে আসবে বৃষ্টির ফোয়ারা । তড়িঘড়ি করে ভার্সিটি এর লাল দোতলা বাসে উঠে পড়ল অপু । বাসে উঠতেই শুরু হয়ে গেল অবিরাম ধারায় বৃষ্টি । বৃষ্টির তালেতালে বাস এসে থামল একেবারেই ভার্সিটি এর মেইন গেইটের সামনে । সেখানেই বৃষ্টিসিক্ত নীল রঙয়ের ছাতা মাথায় দাড়িয়ে আছে সহজ-সরল প্রকৃতির চেহারার একটি মেয়ে । এতোটা মায়া জড়িয়ে আছে ওই চেহারায় যে, দেখেই অপুর ভেতরে কেমন একটা অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে সেটা বলে বোঝানো যাবে না । অপু দেরি না করে কাগজ বের করে লেখেছে “রিমঝিম বৃষ্টি, সহজ-সরল প্রকৃতির চেহারা সাথে সুস্পষ্ট বিরক্তির ছাপ সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে আপনাকে” আর ফেলে দিয়েছে ওই অপরিচিতার সামনে । মেয়েটি কাগজটিকে তার সামনে পড়তে দেখে তুলে নিয়ে কিছুক্ষন ভাবুক মনে তাকিয়ে থেকে রেখে দিল ব্যাগের ভেতরে ।

 

প্রথম দেখাতেই অপু মেয়েটিকে ভালবেসে ফেলেছে কিনা জানে না, তবে ও ওই অপরিচিতার সাথে কথা বলবে । আর তাই প্রতিনিয়ত খুঁজে চলেছে ভার্সিটি এর প্রত্যেক প্রান্তে প্রান্তে । এভাবেই নিজের অজান্তে অপরিচিতার খোঁজে কেটে গেছে অনেক দিন । হঠাৎই একদিন আকাশের বুক চিরে নেমে এসেছে বৃষ্টির ধারা । সবুজের সমারোহে ঘেরা বৃষ্টিস্নাত বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন ঈর্ষনীয় সৌন্দার্যে সেজেছে । মাঠে বেধে যাওয়া পানির উপরে দেখা যাচ্ছে দূর্বাঘাসের শাখা-প্রশাখাগুলো আনন্দচিত্তে ঝিরিঝিরি বাতাসে নৃত্তে মেতে আছে । দুপাশে ফুলগাছের সারি আর মাঝে পিচঢালা রাস্তা নিয়েছে এক অপরূপ । সবকিছু কেমন যেন বৃষ্টি পেয়ে আনন্দ প্রকাশে বিন্দুমাত্র কৃপণতা করছে না । এমনই সময়ে ক্লাস শেষ করে বের হয়েছে অপু । প্রতিদিনের মতই রক্তিম চোখে খুঁজে চলেছে সেই অপরিচিতাকে । দূরত্ব যাইহোক অপুর দৃষ্টি সহসাই চলে যায় বৃষ্টিতে গাড় হওয়া লাল বাসের নিচে । আর সেখানেই প্রথম দেখায় মনের আকোকে আশ্রিত সেই সহজ সরল প্রকৃতির চেহারার কাউকে দেখা যাচ্ছে । নিজের অজান্তেই কেন যেন আজ বুকের মাঝে ধুক- ধুকানি শুরু করেছে । প্রতিনিয়ত যাকে খুজেছে, দিনশেষে তাকে খুঁজে না পেলও এমন হয়নি । যতটা ওর দিকে আগাচ্ছে ধুক-ধুকানি যেন ততটা বেড়েই চলেছে । যে সুযোগ আজ অপু পেয়েছে সেটাকে ও হাতছাড়া করবে না । যেভাবেই হোক কথা বলতেই হবে । বুকে অনেকটা সাহস নিয়ে অপু এগিয়ে গেল ওর দিকে---

অপুঃ এইযে আপু-----

অপরিচিতাঃ জ্বি আমাকে বলছেন----!!!!

অপলক দৃষ্টিতে অপু তাকিয়ে আছে আর ভাবছে গাম্ভীর্যবিহীন সহজ-সরল চেহারার কোন মানুষ এতোটা মনোমুগ্ধকর হতে পারে !!!

অপুঃ হ্যাঁ, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আপনার সাথে একটু কথা বলা যাবে ?

অপরিচিতাঃ জ্বি বলুন ।

অপুঃ আসলে আমি আপনাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজে চলেছি একটা কথা বলার জন্য ।

অপরিচিতাঃ কি কথা?

অপুঃ আপনি ঐশী নামে কাউকে চেনেন?

অপরিচিতাঃ না, কেন বলেন তো??

অপুঃ না ... আমি ঐশী নামে একজনকে চিনতাম যার সাথে আপনার চেহারার অনেক মিল । (যদিও অপু ঐশী নামে কাউকে চিনত না) ।

অপুর কথাগুলো শুনে ওর আর বুঝতে বাকি রইল না যে, এই সেই মানুষটা যে তাকে গেইট এর সামনে থাকা অবস্থায় কাগজে লেখে দিয়েছিল কিছু একটা ।

অপরিচিতাঃ আপনি অপু তাই না?

অপুঃ হ্যাঁ । আপনি কি করে জানেন ?

অপরিচিতাঃ একজন মানুষ প্রতিদিন কোন একজনের প্রোফাইল ঘাটাঘাটি করবে আর সে জানবে না……!!!!

অপুঃ আপনার চেহারা অনেক সরল আর সরলের ভেতর দিয়ে কতটা সৌন্দার্য ফুটে ওঠে সেটা বলে বোঝাতে পারব না।

অপরিচিতাঃ আমাকে ডেকে কথা বলে আবার লজ্জা দিচ্ছেন কেমন হয়ে যাচ্ছে না ...? আর একথা তো একবার লিখেই দিয়েছেন ।

অপুঃ আচ্ছা আপনি অপরিচিতা মিথিলা কেন ?

অপরিচিতাঃ সবকিছু একদিনে না জানলে হবে না ?

 অপরিচিতার মুখে যে লজ্জার অক্রমে আনন্দের ফোয়ারা ছুটছিল সেটা আর অপুর বুঝতে বাকি রইল না । বাস ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়ে গেছে । মিথিলা চলে গেল । জানা হল না ওর আসল নাম । অপুর মনে আজ আনন্দের জোয়ার বইছে । এতদিন যার খোঁজ করে আসছে আজ তার সাথে দেখা হয়েছে এবং কথাও হয়েছে ।

 দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে । আজ আর ভয় কিসের । নোটিফিকেশন বক্স এর দিকে চাতকের মত চেয়ে আছে অপু। অপরিচিতা শুধু রেকুয়েস্ট অ্যাকছেপ্টই করে নি, লেখে দিয়েছে কি করছিলেন ...?

অপুঃ অপেক্ষা । আচ্ছা অপরিচিতা মিথিলা কেন বললেন নাতো-----

অপরিচিতাঃ ইচ্ছা হয়েছিল তাই নাম দিয়েছিলাম । আর নাম জেনেও কি হবে---সবাই কেন এক নামেই মানুষকে চিনবে—আপনি অন্য নামে চিনুন না---

অপুঃ তাহলে আপনাকে আমি অমি বলি---

অপরিচিতাঃ অমি কেন ?

অপুঃ অপরিচিতা মিথিলা থেকে অমি ।

অপরিচিতাঃ আপনি তো দেখি মানুষের খুব সুন্দর নামও দিতে পারেন ।

অপুঃ কিছু মনে না করলে আপনাকে একটা কথা বলি ?

অমিঃ কি কথা ?

অপুঃ আমরা কি কাল দেখা করতে পারি ?

অমিঃ আপনি আমাকে আপনি করে না বলে তুমি করে বললে আমি খুশি হব । কোথায় দেখা হবে আমাদের ?

অপুঃ গন্ধরাজ বাগানের পাশে যেখানে অদৃশ্যে থেকে ওরা কিছু পাওয়ার আশা ছাড়াই সুবাস বিলিয়ে যায় ।

 পরদিন অপু আটটি নতুন ফোঁটা বকুল ফুল নিয়ে অমির সাথে দেখা করেছে ।

অমিঃ আপনি তো সুন্দর লেখালেখি করেন ।

অপুঃ পড়েছ তুমি ?

আমিঃ হুম ।

আপুঃ অনেক ধন্যবাদ । আচ্ছা অমি, কেউ যদি তোমার সৌন্দর্য তোমার কাছে থেকে অবলোকন করে তোমাকে তার লেখনির উপকরণ করতে চাই তাহলে তাকে সেই অধিকার দেবে ?

অমিঃ ভেবে দেখতে হবে ।

 মাঝে মাঝে দেখা আর ফেইসবুকে কথা এভাবেই চলে যাচ্ছে অপু-অমির দিন ।

কিছুদিন পর হঠাৎই অমি লেখেছে----

শুনেছি যারা লেখালিখি করে তারা নাকি অনেক সুরেলাও হয় । আমি কি বলতে চাইছি আপনি অবশ্যই বুঝেছেন । কারণ আমি জানি আপনি অনেক মেধাবী একজন মানুষ ।

গান শুনতে চাইছো তাইনা ?

একি আপনি তো দেখি আমার মনকেও পড়তে শুরু করেছেন ।

পুরোটা সময় যে মস্তিস্কের সবটুকু জায়গা দখল করে থাকে তার কথা শুনলেও তো অনেক কিছু বোঝা যায় ।

নিজে নিজে সবাই গান গায় । অপুও গেয়েছে কিন্তু কাউকে কোনদিন শুনাইনি ।

অপুঃ সুরের ভুবনে আমি এখনও নবীন পথচারী । সুতরাং তোমার মনের মত করে যদি আমি গান না শুনাতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাকে ক্ষমা করে দিতে হবে । বল কি গান শুনবে ?

অমিঃ আপনার ইচ্ছা তবে বিশেষ কিছু হলে ভাল, যেটা সবার থেকে আলাদা, কারণ আমি চাই আপনার সবকিছু সবার থেকে আলাদা হোক ।

অমির ইচ্ছা পুরন করতেই অপু আজ গান শুরু করেছে ।

 

দূর থেকে দেখা …

দূর থেকে দেখা

পানি বিহীন ওই সমুদ্র---

আমি ভরেছি আমার ভালবাসায়

শুধু যে তোমার জন্য

আমি ভরেছি আমার ভালবাসায়

শুধু যে তোমার জন্য

আহা-হা-হা-হা-হা

আমি ভালবাসি তোমায়

আমি ভালবাসি তোমায় ---------------------------

 এ সুর আর কথার গান অমি আগে কখনও শোনে নি । ওর বুঝতে বাকি রইল না যে অপু অমির জন্যই এই গান রচনা করে নিজেই সুর করেছে ।

অমিঃ এক কথায় অসাধারণ ।

অপুঃ তোমাকে ঘিরেই তো আমার সব কিছু । আর তোমার জন্য এই গানটি ছোট্ট একটা উপহার । অমি-অপু হয়তো একদিন থাকবে না এই পৃথিবীতে, কিন্তু অমিকে নিয়ে অপুর রচনা করা গানটি আজীবন থেকে যাবে এইবিশ্বসংসারে 

অমিঃ অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । আপনার মত একজন মানুষ পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত ।

আজ অনেক খুশি অমি । তাইতো কিছুক্ষণ পরে সাজুগুজু করে অনেকগুলো ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছে অপুর কাছে । অপু লিখে দিয়েছে আজ আমি আকাশকে বলে দিব ও যেন প্রদীপ না জ্বেলে, বাতাসকে বলে দিব ও যেন নয়ন না খোলে । আমার পাখি আজ যে অপরূপ সৌন্দার্যে সেজেছে তাতে লজ্জা ওকে ছেয়ে ধরতে পারে ।

 ঈদের ছুটি হয়েছে,অমি অনেক আগেই বাড়িতে চলে গেছে । ঈদের কয়েকদিন আগে অপু বাড়ি পৌঁছেছে । বাড়িতেও আজ মেঘের ঘনঘটা । বৃষ্টি এসে গেছে । বৃষ্টিতে সিক্ত হচ্ছে উষ্ণ মাটির বুক । বৃষ্টি পেয়ে আনন্দচিত্তে কদম তার সুবাস ছড়িয়ে দিচ্ছে আর দেখতেও অসাধারণ লাগছে । অপু যে ওর রঙ্গিন পৃথিবীর চারিপাশে গাছগাছালির ভেতর ছোট্ট একটা ঘর বাধবে আর সেই ঘরের উত্তরের জানালার পাশে রোপন করবে সারিসারি কদমের গাছ । বর্ষায় সিক্ত কদমের সৌন্দার্য অমি পাশে থাকলে নিশ্চয় হাজারগুন বেড়ে যাবে । এরকম ভাবতে ভাবতে আর অমিকে অনুভব করতে করতেই নতুন এক সপ্নজগতে বিচরন করতে থাকে অপু ।

 যেই অনুভূতির নাম ভালবাসা সেটা কখনও বলে বোঝানো সম্ভব না । এ যে এক অদৃশ্য শক্তির মায়াজালে বাধা পড়েছে অপু যার জন্য সম্পূর্ণ অপরিচিতা থেকে অমি এমনই একজনে রূপান্তরিত হয়েছে যে অমি এখন অপুর রঙ্গিন পৃথিবীর অবিচ্ছেদ্য অংশ । অপরিচিতা থেকে অমিই এখন অপুর জীবনের ধ্যান-জ্ঞান, সবকিছু । সব চিন্তা চেতনা অমিকে ঘিরেই ।

 

এভাবে ভালই চলছিল অমি-অপুর রসায়ন । ওরা যেন একটা রঙ্গীন জগত তৈরী করে ফেলেছে যেই রাজ্যের একমাত্র রাজা অপু আর একমাত্র রাণী অমি । আশেপাশের সবকিছুকে ছাড়িয়ে ওদের মায়ার বন্ধনে মাধুর্য যেন দিনদিন বেড়েই চলছিল ।

 

চতুর্থ বর্ষের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে অপু। নামের পাশে জমা হয়েছে থিসিস এবং কয়েকটা প্রোজেক্ট । দিনে ক্যাম্পাস, সন্ধা থেকে রাত্রি অবধি টিউশনি আর বাসায় ফিরে সবকিছুর চাপ অপুর কাছে দিন যেন এখন ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার হলে ভাল হয় । ব্যস্ত অপু এখন আর আগের মত ওতটা সময় অমিকে দিতে পারছে না । দিনে দু-একবার কথা আর মাঝে মাঝে ফেইসবুকে এস. এম. এস. । এভাবেই দিন পার হচ্ছে ওদের । দিনে-দিনে অমি বুঝতে পারছে অপু আর আগের মত ওর সাথে কথা বলছে না । অনেকটা একাকিই দিন পার করছে ও । অমি এখন তার পাশের মানুষগুলোকে দেখছে । যারা ভালবাসার মানুষটি, যার সাথে ঘর বেধে আজীবন কাটিয়ে দেবে তারা কতটা রঙ্গীন সময় পার করছে । অমি কথা বলবে অপুর সাথে, এরকম তার আর ভাল লাগছে না । দিনশেষে ক্লান্ত অপুর কাছে অমির কল এসেছে । অপুও অমির আবেগকে বুঝতে না পেরে উল্টাপাল্টা কথা বলেছে । অমি রাগে-অভিমানে কল কেটে দিয়েছে । অপুকে একটা কথা খুবই আলোড়িত করছে সেটা হল, যাকে আমি এতো ভালবাসি সে কেন আমার পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা না করে আমাকে অবিশ্বাস করে অন্য মানুষের সাথে তুলনা করবে ।

 

বিন্দুমাত্র অনবশিষ্ঠ্য বিশ্বাসে যদি একদিন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তাহলে বিশ্বাস বিহীন ভালবাসা সে তো এক ক্ষণস্থায়ী মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই না । কষ্টের তীব্রতা এতোটা বেড়েছে যে ও আজ পোস্ট করেছে “যোগ্যতার তুলনায় অর্জিত সম্পদকে বিবেচনা না করে মানুষ নিজেকে উৎসর্গ করলেও অহংকারকে বেধে রাখে আজীবন” । অভিমানী অমি তার আভিমানকে এতটাই বাড়িয়েছে যে অপুর দেওয়া কলের অপেক্ষা করেছে কিন্তু অপুকে কল দেইনি । এভাবেই কেটে গেছে কয়েকটা দিন । প্রকৃতির কি নিয়ম এর মাঝে অমির বাড়ি থেকে কল এসেছে তারা অমির জন্য ছেলে দেখেছে । অমি তার অভিমানকে এতোটা প্রসিদ্ধ করেছে যে কোন কিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলে দিয়েছে । কষ্টের তীব্রতা এতোটা বেড়েছে যে অপু আর সহ্য করতে না পেরে অমিকে কল দিয়েছে । কল রিসিভ হতেই ও পাশ থেকে শোনা যাচ্ছে "আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, আপনি আমাকে কল না দিলে আমি অনেক খুশি হব" । অভিমান থেকে এখন রাগটা মনে হয় আরও বেড়ে গেছে অপুর । ও শুধু বলেছে আবেগের বশীভূত হয়ে এখন তুমি যেটা করবে সেটা ভুল আর এখনের একটা ভুল হতে পারে সারা জীবনের কান্না । যা করবে অবশ্যই ভেবে করবে । ভালো থেকো । আর হ্যাঁ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা নয় প্রতিক্ষা করব ।

 

এভাবেই কেটে যাচ্ছে প্রেমহীন, আপন হওয়া অপরিচিতা অমি বিহীন অপুর জীবন ।

যেই মায়াবী হাসিতে সকলে মুগ্ধ হয়ে যেত, সেই হাসিই অপুর মুখে আর দেখা যায় না । ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তগুলো যেন বিষাদে রূপান্তরিত হয়েছে । এমন কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত যেগুলো জীবনে একবারের বেশি আসবে না জেনেও, সেগুলোর মাঝে বিন্দু পরিমান সুখ খুঁজে পায় না অপু । পাখি হয়ে উড়তে চেয়েছিল যেই পৃথিবীতে সেই পৃথিবীই আজ অপুর কাছে কারাগার বিবেচিত হচ্ছে । এ যেন প্রদীপ জ্বেলে কারো জন্য অপেক্ষা করে হাজার বছর পার করে সে আসার আগেই প্রদীপকে নিভিয়ে ফেলা ।

 সময় চলে যেতে থাকে, দিন থেকে মাস । এভাবেই লুকানো কষ্ট আর অমিকে পাওয়ার আশা নিয়েই শেষ হয়ে যায় অপুর বি. এস. সি. ইঞ্জিনিয়ারিং । কিছুদিনের ভেতর ভালো একটা চাকরিও পেয়ে যায় অপু । এখন দিনগুলো ব্যস্ত পার হলেও নিঃশব্দ রজনীতে পুরো মাথাটা দখল করে নেয় অমি । এভাবেই চলে গেছে অনেকগুলো মাস এবং বছর ।

 আজ ১৪-ফেব্রুয়ারি । আজ অপুর বিয়ে । হ্যাঁ, আসল নাম না জানা সেই অমির সাথেই । ভাবছেন কিভাবে এটা সম্ভব তাই না ?

 কয়েকদিন আগে অপুর মোবাইলে একটা এস. এম. এস. এসেছিল যদি সত্যিই আমার জন্য প্রতিক্ষা করে থাকেন আর আমাকে ভালবেসেই থাকেন তাহলে আমার পরিবারের সাথে কথা বলে ২৫ এপ্রিল-ই বিয়ের তারিখ ঠিক করুন । আর একটা অনুরোধ থাকবে আপনার কাছে, আপনি বিগত দিনের কোন কিছু আমার কাছে জানতে চাইবেন না, শুধু এতটুকু জেনে রাখুন সেদিন আমার বিয়ে হয় নাই । অমির সেই আগের নাম্বার থেকেই এস এম এস এসেছিল, ভাষা ছিল পরিচিত, লেখার ধরন ছিল সেই  অপরিচিতার মতই । পিপাসিত অপুর মনে আজ শান্তির ফোয়ারা ছুটছে নাকি কোন প্রভাব পড়ছে না সেটাও বুঝতে পারছে না । শুধু মনে হচ্ছে “সেই অভিমানটাই প্রিয়জনের উপর করা উচিত যার জন্য প্রিয়জন প্রিয় থেকে অধিক অধিক আপন হতে পারে । সামান্য কিছু ভুল যদি কারো চোখের কান্নার জন্য দ্বায়ী হয় তাহলে সেই ভুলগুলো না করলেই তো সুখের ক্ষণস্থায়ী জীবনগুলো তৃপ্তিতে ভরে ওঠে” ।

 

ডিএসএস/ 

 

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল