১০ টাকার জন্য মাকে খুন, ছেলের আমৃত্যু কারাদণ্ড
আবদার করা ১০ টাকা না পেয়ে মা শেফালী বেগমকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে লক্ষ্মীপুরে নেশাগ্রস্ত ছেলে জাফরকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত মো. জাফর রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালীয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামি জাফর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে মাদক সেবন শুরু করে। এজন্য জাফরকে অনেক টাকা ঋণ করতে হয়। ওই ঋণ পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে জাফর তার মায়ের কাছে টাকা দাবি করে আসছিল। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সকালে তার ৬০ বছর বয়সী মা শেফালী বেগমের কাছে আবার টাকা দাবি করলে মায়ের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জাফর তার মাকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় ঘরে অন্য কেউ ছিল না। এ ঘটনার পর রাতেই ছেলেকে আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেন বাবা হোসেন আলী। ঘটনার পরদিন আসামি জাফরকে একই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন।
জাফরের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, আসামি জাফরের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত কর্তৃক আমাকে জাফরের আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। জাফর বেকার হয়ে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে। আসামি পুরোপুরি মাদকাসক্ত এবং মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যায়। এজন্য সে তার মাকে হত্যা করেছে। সুস্থ মস্তিষ্কে সে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়নি। আমরা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন জানান, ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট আসামি জাফর শুধুমাত্র মাদক সেবন করতে ১০ টাকার জন্য তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করছে। এ মামলায় জাফর একক আসামি। রায়ের সময় জাফর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এসজি
