শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বাপ-ছেলের ত্রাসের রাজত্বের অবসান, স্বস্তিতে দলীয়রাও

ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিমের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, মিতুল হাকিমের নেতৃত্বে এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের বিপক্ষে কেউ কথা বললে চরম মূল্য দিতে হতো। লুট করেছেন কোটি কোটি টাকা। রেহাই পাননি জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীরাও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, টানা ১৬ বছর জিল্লুল হাকিমের দাপট দেখেছেন পাংশা, কালুখালী ও বালিয়াকান্দির মানুষ। বাপ-বেটার সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে। খুনের অভিযোগও কম নয়। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে তাদের সেই ত্রাসের রাজত্বের অবসান হয়েছে।

এতদিন ভয়ে মুখ না খুললেও এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নৌকার টিকিটে ৫ বার সংসদ সদস্য হন জিল্লুল হাকিম। এক সময় মাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য মনোনয়ন কিনতে পারছিলেন না। অথচ অবৈধ উপায়ে এখন তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক! ক্ষমতার অপব্যবহার করে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন আলিশান মার্কেট।

আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে এতো দূর এলেও দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরাও রেহায় পাননি তার নির্যাতন থেকে। অভিযোগ আছে, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোট কারচুপির মাধ্যমে নিজেদের আশীর্বাদপুষ্টকে জিতিয়ে নিতেন জিল্লুল ও তার ছেলে। তাদের বিপক্ষে কথা বললেই চরম মূল্য দিতে হতো। নিজ দলের শত শত নেতাকর্মীকে এলাকাছাড়া করে রেখেছিলেন তারা। বাবা-ছেলের পালিয়ে যাওয়ার পর এখন মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন রাজবাড়ী-২ আসনের বাসিন্দারা। তাদের নির্যাতনে এলাকা ছাড়া মানুষ ৫ আগস্টের পর থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও বিভিন্ন অফিস থেকে ১৫ শতাংশ করে কমিশন নিতেন জিল্লুল হাকিম। অবৈধ নিয়োগে সহায়তা না করায় ১১ বছর এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে কর্মস্থলে ঢুকতে দেননি তিনি। তার বেতন-ভাতাও বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

রাজবাড়ী জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী নাদের হোসেন। রাজনীতি করতেন জিল্লুল হাকিমের সঙ্গেই। তবে প্রতিবাদ করতেন জিল্লুলের সমস্ত অন্যায়ের। ফলে ক্ষমতাধর জিল্লুলের বাঁকা নজরে পড়েন কৃষক লীগের এ নেতা। ২০১৪ সালের ২১ নভেম্বর সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে তাকে। মামলা করেও কোনো বিচার পায়নি পরিবার।

পরিবারের দাবি, জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিমের নির্দেশেই সন্ত্রাসীরা মুন্সী নাদের হোসেনকে হত্যা করে।

নাদের হোসেনের ছেলে মোস্তফা মাহমুদ হেনা মুন্সী বলন, ‘আমার বাবা এলাকায় খুবই জনপ্রিয় একজন রাজনীতিবীদ ছিলেন। জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলের অন্যায়-অপকর্মের প্রতিবাদ করার কারণে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। বাবা হত্যার বিচার চাওয়ায় তারা আমাকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। জিল্লুল হাকিম তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিচার কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে। ফলে এখন পর্যন্ত আমি বাবা হত্যার বিচার পাইনি।’

জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলের সন্ত্রাসী বাহিনীর অপকর্ম নিয়ে ২০১৭ সালে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন পাংশা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। এজন্য চরম মূল্য দিতে হয় তাকে। লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে কয়েক টুকরো করা হয় তার হাত-পা। মামলা করলেও পরে তা তুলে নিতে হয় তাকে।

সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে আমার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালানো হয়। এ হামলার নির্দেশদাতা জিল্লুল ও তার ছেলে মিতুল। আমি এ হামলার বিচার চাই। আর এ ঘটনার কারণেই আমার বাবা মারা গেছেন। এ কারণে আমার পরিবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো তাদের ভয়ে রয়েছে আমার পরিবার, কারণ তাদের অসংখ্য ক্যাডার বাহিনী আছে।’

জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলের নির্দেশ অমান্য করে ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর পাংশা উপজেলা পরিষদে একটি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডার শিডিউল কিনতে যান তাদেরই দলের কর্মী হৃদয় মীর। এ অপরাধে হাতুড়ি দিয়ে পিয়ে এবং পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় এই যুবককে।

হৃদয় মীর বলেন, ‘মিতুল হাকিমের পালিত সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার বাম পায়ের গোড়ালির ওপরের রগ কেটে ফেলে। আমি চিৎকার করলে তারা আমার মুখের ভেতরে আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকিয়ে আমার দুইটি দাঁত ভেঙে ফেলে। পরে হাতুড়ি দিয়ে আমাকে মারপিট করে এবং ধারালো চাপাতি দিয়ে আমার মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়।’

পাংশা বয়রাট মাজাইল ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসার সহকারী একটি শূন্য পদে জিল্লুল হাকিম অবৈধভাবে নিয়োগ দিতে চায়। আমি সেই কাগজে স্বাক্ষর না করার কারণে জিল্লুল হাকিমের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে অফিসে আটকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ধরে আমাকে মাদ্রাসায় ঢুকতে দেয়নি। প্রভাব খাটিয়ে এই দীর্ঘ সময় ধরে আমার বেতন-ভাতাও বন্ধ করে রেখেছে। আমি তার কাছে বছরের পর বছর ঘুরেছি। এটা নিয়ে কোনো সমাধান করেনি। বরং যখনই তার কাছে গিয়েছি তখনি তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও তার ছেলের ক্যাডার বাহিনী আমার ওপর অত্যাচার চালিয়েছে।’

পাংশা বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এস এম আতাউল্লাহ শামীম রহমান বলেন, ‘২০১৮ সালের ৬ আগস্ট রাতে জিল্লুল এবং তার ছেলের মোটরসাইকেল বাহিনী এসে আমাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। আমার অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। একমাত্র আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। এখন সময় এসেছে তাই এ সন্ত্রাসী বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে আমি মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছি।’

জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিম তাদের ক্যাডার বাহিনীকে গোপন অস্ত্র দিয়েছিল বলেও দাবি করেন এ শিক্ষক।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে জিল্লুল হাকিমের পাংশা পৌর শহরের বাড়িতে গেলে বাড়ির গেট তালাবদ্ধ দেখা যায়। জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিমের ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক এই রেলমন্ত্রী, তার ছেলে মিতুল হাকিমসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর আদালতে তিনটি ও বালিয়াকান্দি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি জিল্লুল ও মিতুলের। গাঢাকা দিয়েছে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীও।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিলের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসায় নানা ভোগান্তি আর হতাশ হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভুক্তভোগী ডিজিটাল বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের গড়মিলের নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু কতিপয় কিছু মিটার রিডারদের এই ভূতুড়ে বিল ও অনিয়ম বন্ধে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি অসংখ্য ভুক্তভোগী গ্রাহক।

শুধু তাই নয়, বিল সংশোধন করতে গেলেও পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তি আর বিলম্বনায় । গ্রাহকদের অভিযোগ সময়ের বিল সময়ে না করে মিটার রিডিং না দেখেই বিল করছে মিটার রিডার। এছাড়াও গ্রাহকদের থেকে বাড়তি সুবিধাও নেন রিডাররা। ফলে বছরের পর বছর এমন ভূতুড়ে বিল দিচ্ছে তারা।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিল ও মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে মিল না থাকায় তার প্রতিকার চেয়ে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামের ভুক্তভোগী আলতাফ হোসেন নামে এক বিদ্যুৎ গ্রাহক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আলতাফ হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (২৪ মে) দিনব্যাপি উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগীসহ অন্যান্য গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও মিটার রিডিং সরেজমিনে দেখে টাঙ্গাইলের দুদক। পরে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের গড়মিলের সত্যতা পান তারা।

অভিযোগকারী আলতাফ হোসেন বলেন, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলের মিল নেই। প্রতি মাসেই অতিরিক্ত বিলের ঘানি টানতে হচ্ছে। মিটার রিডিংম্যান কোমল ও জাহিদকে বললেও তারা মিটার না দেখেই ভুয়া বিল করে। এনিয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি। পরে বাধ্য হয়ে ভূতুড়ে বিলের প্রতিকার চেয়ে দুদকে অভিযোগ করি।

এসময় আরও শতাধিক গ্রাহক তাদের এমন সমস্যা নিয়ে দুদকের কাছে ভূতুড়ে বিলের কাগজ নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ তুলে ধরে। ভুক্তভোগীরা বলেন, কোমল ও জাহিদ মিটারগুলো দেখভালের দায়িত্বে। তাদের টাকা দিলে বিল কমিয়ে দেয় আর টাকা না দিলে পরের মাসে অতিরিক্ত বিল করে। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার ব্যাপারে কথা বলেও তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

একই গ্রামের রায়হান মাস্টার নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিলের কয়েকশো ইউনিটের গড়মিল রয়েছে। প্রতিমাসেই অতিরিক্ত বিল প্রদান করে আসছি। মিটার রিডারদের বার বার মিটার দেখে বিল করতে বললেও তারা মিটার না দেখেই মনগড়া অতিরিক্ত ইউনিট বেশি লিখে বিল করে। শুধু আমি একা নই, জিগাতলা গ্রামের প্রতিটা ডিজিটাল মিটারের বিদ্যুৎ গ্রাহক এমন ভূতুড়ে বিলের শিকার।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. নুর আলম বলেন, ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূঞাপুরের জিগাতলা গ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে শনিবার দিনব্যাপি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মিটার রিডিং ও বিদ্যুৎ বিলের কাগজের গড়মিলের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিউবো) খন্দকার কামরুজ্জামান বলেন, একজন গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা দুদক অভিযানে আসে। যেগুলো মিটারে সমস্যা সেগুলো পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে এবং মিটার পাঠক বা রিডারের বিরুদ্ধে কোনো বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সঠিকভাবে পেলে অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের তথ্যমতে ভূঞাপুরে প্রায় ৫৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। তারমধ্যে প্রিপেইড মিটার রয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার এবং ডিজিটাল মিটার (পুরাতন) রয়েছে প্রায় ১৯ হাজার। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার আংশিক কিছু এলাকাজুড়ে ভূঞাপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণের আওতায় এই ৪টি উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায় না, বরং উপদেষ্টা পরিষদের বিতর্কিত তিন সদস্যের অপসারণ চায় দলটি—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার (২৪ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি, এখনো তা চাই না। আমরা বরং তাঁর কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ চাই, যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।”

তিনি আরও জানান, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপদেষ্টা পরিষদে যারা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দলটি একটি লিখিত বক্তব্যও প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দিয়েছে।

বিএনপি নেতা বলেন, “নির্বাচনের বিলম্ব মানে স্বৈরাচারের ফেরার সম্ভাবনা বাড়ানো। তাই অবিলম্বে নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। আমরা চাই সংস্কার চলুক, আর সে সংস্কার বিএনপি ক্ষমতায় এলেও অব্যাহত থাকবে।”

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা কারও প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আইনের শাসনের পক্ষে। যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে—কিন্তু সেটা হতে হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে।”

প্রসঙ্গত, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ড. ইউনূসের পদত্যাগ সম্ভাবনা নিয়ে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তার পটভূমিতে বিএনপি এই বৈঠকে বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ।

Header Ad
Header Ad

একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১১ হাজার ৮৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ৮ হাজার ৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ২ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ধরা হয়েছে ৮১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, ধর্ম, প্রবাসী কল্যাণ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোজন, প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসন এবং শিশু শিক্ষার সম্প্রসারণ।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘আরবান ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইউসিআরআইপি)’ ও ‘প্রবৃদ্ধি: স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন (এলইডি)’ প্রকল্প দুটি অনুমোদন পেয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘৮টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবন নির্মাণ’, ‘১৫টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধির’ প্রকল্প এবং ‘তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়ন’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (অষ্টম পর্যায়)’ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘রেইজ: রিইন্টেগ্রেশন অব রিটার্নিং মাইগ্রেন্টস (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘ওজোপাডিকোর জন্য গ্রিড বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নয়ন’ এবং ‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংথেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউয়েবল এনার্জি’ শীর্ষক প্রকল্প দুটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এদিকে একনেক সভায় ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনঃনির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।

সভায় আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের বিষয়েও একনেক সদস্যদের অবহিত করেছেন। এসব প্রকল্প হচ্ছে—কক্সবাজারে শুতলি ক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন, সরকারের ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালীকরণ, বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ এবং চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প (লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত)।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রবাসী কল্যাণসহ নানা খাতে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতি সাধিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক
প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি
একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বিয়ের পর আমার ভাগ্য খুলে গেছে: মেহজাবীন
দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত
পুলিশকে হুমকি দিয়েছে নুর: পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন
বিরামপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার
সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ জারি
সালমানের বাংলোতে ঢুকতে লাগবে পরিচয়পত্র, ছাড় পাবেন না তারকারাও
ড. ইউনূস জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করছেন: রুমিন ফারহানা
রোববার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সর্বদলীয় বৈঠক
লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার ১৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ (ভিডিও)
বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ, রাগে ঘটককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: আমীর খসরু
বলিউড অভিনেতা মুকুল দেব মারা গেছেন
ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিল
বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ও পরিবারের ৩৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ
ঈদে আসছে নতুন নোট, থাকছেনা কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না
১৩ বছরের শরিফুলের অবাক করা সাফল্য, মাত্র ৬ মাসে হাফেজ!