
সারাদেশ
টাঙ্গাইলে উদ্ধারকৃত ১১টি মর্টার শেল যমুনা নদীতে নিষ্ক্রিয় করলো সেনাবাহিনী

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় উদ্ধারকৃত ১১টি মুক্তিযুদ্ধকালীন মর্টার শেল যমুনা নদীতে সফলভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা উপজেলার নলিন এলাকায় এই অভিযানে অংশ নেয় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
বিস্ফোরণ কার্যক্রমের সময় উপস্থিত ছিলেন ভূঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তারিকুল ইসলাম, ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রেজাউল করিমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এবং সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা।
ওসি একেএম রেজাউল করিম জানান, গত বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া গ্রামের যমুনা নদীর তীরে মাছ ধরতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদত নামে এক ব্যক্তি মরিচা ধরা অবস্থায় একগুচ্ছ ধাতব বস্তু দেখতে পান। সন্দেহ হওয়ায় তিনি স্থানীয়দের বিষয়টি জানালে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শেলগুলো উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে পাঠায়।
পরদিন বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মর্টার শেলগুলো যমুনা নদীর নলিন অংশে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, “মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহৃত এই সামরিক অস্ত্রগুলো নিস্ত্রিয় করতে গিয়ে নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে এটি সম্পন্ন করেছে।”
স্থানীয়দের ধারণা, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী পাটিতাপাড়া ও মাটিকাটা এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছিল। সেসময় একটি পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয় বলে জানা যায়। উদ্ধার হওয়া মর্টার শেলগুলো সেই সময়ের অস্ত্র বলেই অনুমান করছেন অনেকে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, এসব অবিস্ফোরিত বোমা দীর্ঘ সময় নদীর পাড়ে পড়ে ছিল, যার কিছু অংশে মরিচা পড়েছিল। সময়মতো এগুলো নিষ্ক্রিয় করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। এ কারণে সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপে স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।