
জোট আছে, জোট নেই
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৪২ এএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:১২ পিএম

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এখন অনেকটাই অকার্যকর। অনেক দিন ধরেই সম্মিলিতভাবে জোটের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে না। বিগত দুই-তিন মাস ধরে বিএনপি এককভাবে সরকারবিরোধী কর্মসূচি পালন করছে। জোটের অন্য কোনো দলকে তেমন একটা কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ দলই বিবৃতি নির্ভর। বিএনপি নেতারাও বলছেন, ‘২০ দলীয় জোট বা অন্য জোটের ভবিষ্যৎ কী হবে তা সময়ই বলে দেবে।’
এই যখন ২০ দলীয় জোটের অবস্থা তখন জোটের শরিকদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। জোটের শরিক দলের নেতারা আশঙ্কা করছেন, যেকোনো সময় জোটের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর গত ১৩ সেপ্টেম্বর গুলশানে ২০ দলীয় জোট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান করেছি যুগপৎ আন্দোলন করার জন্য।’
জোটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘জোটের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায়নি, এখনো আছে। এই মুহূর্তে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপি হয়তো চলতে চাচ্ছে না। তাই কিছুটা কৌশলগত অবস্থান থেকে ২০ দলীয় জোটকে এড়িয়ে যাচ্ছে বিএনপি। তবে এটাও ঠিক দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত জোট নিয়ে বিএনপি যদি মনে করে নির্বাচন আসলে তারা ক্ষমতায় চলে আসবে সেটা তাদের ভুল ধারণা। কারণ আমরা সামনে নির্বাচন দেখি না, দেখছি আন্দোলন, সংঘর্ষ, সংঘাত ও রক্ত।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির কাছে ২০ দলীয় জোটের সম্মান বা কদর কতটুকু আছে তা আমাদের চেয়ে ভালো করে বিএনপিই বলতে পারবে। আপনারাও কিছুদিন অপেক্ষা করেন সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। তারা যদি মনে করে জোটকে বাদ দিয়েই তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে সেটা ভিন্ন কথা। তবে বিএনপি ছেড়ে দিলেও ২০ দলীয় জোটের দলগুলোকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের পক্ষে নিতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে কথাটাও বিএনপি নেতৃত্বকে মনে রাখতে হবে। জোট ছেড়ে দেওয়া মনে হয় না বিএনপির জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বর্তমানে এই জোট নেতৃত্ব শূন্যতায় আছে। জোটের কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘২০ দলীয় জোট হচ্ছে নির্বাচন কেন্দ্রিক একটি জোট। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ জোটকে মূলত নির্বাচনী জোট হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। এখন জোট প্রধান দল যেহেতু নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না সেই অর্থে জোটের কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তবে আমাদের মধ্যে প্রায় সময় অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণভাবে জামায়াত-বিএনপির সম্পর্কে ফাটল নেই। সম্পর্ক আগে যেমন ছিল ঠিক তেমনই আছে।’
জোট শরিক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের পরিবেশ পরিস্থিতি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই। যুগপৎ আন্দোলন হতে পারে জোটবদ্ধ হয়ে। সেক্ষেত্রে হতে পারে একাধিক জোট। যেখানে বিএনপির মতো একটি জনসমর্থিত রাজনৈতিক দল কর্মসূচি পালনে সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রের মুখে কোণঠাসা। সেখানে অন্য কোনো দল এককভাবে আন্দোলনে রাজপথে সুবিধা করতে পারবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২০ দলীয় জোট আছে, তবে নিষ্ক্রিয় বা অকার্যকর বলা যেতে পারে। জোটের প্রধান দল বিএনপির উচিত হবে এখনই ২০ দলীয় জোটকে গুরুত্ব দিয়ে রাজপথে একত্রে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রসর হওয়া।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যারা গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে বা যুগপৎ আন্দোলন হতে পারে। আর ২০ দলীয় জোট বা অন্য জোটের ভবিষ্যত কী হবে তা সময়ই বলে দেবে।’
জোট শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ ২০ দলীয় জোটের মিটিং হচ্ছে না, এটা যেমন বাস্তব। তাহলে এটা আছে বললেও সঠিক, আবার নেই বললেও সঠিক। দুই পা দুই দিকে, সেটাও সঠিক। আমরা আশা করছি, জোটের প্রধান শরিক একটা সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ তারা বারবার বলছে তারা বৃহত্তর ঐক্য চায়। কিন্তু সেটার রূপরেখা এখনো উপস্থাপিত হয়নি।’
জোটের নেতারা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০ দলীয় জোট গঠন করেন। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না, এমন শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ড নিয়ে রয়েছেন দেশের বাইরে। মূলত সঠিক নেতৃত্বের অভাবে ২০ দলীয় জোট অনেকটাই পথহারা। জোটের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তাদের কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ নেই, যেটা আছে সেটা লোক দেখানো।
সংশ্লিষ্টদের মতে, জোটের ভেতরে শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকি দলগুলোর রাজনৈতিক শক্তি তেমন একটা নেই। সেই জামায়াত সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওটার ব্যাপারে আমি জবাব দিয়ে দিয়েছি আপনাদের। আমরা এখন যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি। বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে, আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি। সব দল, সব মতকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, যেকোনো দল, যেকোনো সংগঠন এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।’
বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যে জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা প্রশ্ন রাখেন, তবে তাই যদি হয় তাহলে এখন আবার যুগপৎ আন্দোলনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে কেন পাশে পেতে চায়?
বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় দল। সেখান থেকে দু-একটি রাজনৈতিক দল জোটে না থাকলেও যেমন ক্ষতি হবে না। জোটে থাকলেও খুব একটা লাভ হবে না। ২০ দলীয় জোট ঘোষণায় আছে, হয় তো আনুষ্ঠানিকভাবে জোটগত কার্যক্রম থাকবে না।
অবশ্য জোটের শরিক দলগুলোকে বিএনপি কোনোভাবেই উপেক্ষা করছে না বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেছেন, সম্প্রতি জোটের অধিকাংশ দলের সঙ্গে সংলাপও করা হয়েছে। তাই ঢাকাপ্রকাশ-এর কাছে ২০ দলীয় জোটের এ ধরনের অভিযোগ একবারেই ভিত্তিহীন বলেও যোগ করেন তিনি।
এনএইচবি/এসজি

গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৩ এএম | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৩ এএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উত্তর সালনা এলাকায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উত্তর সালনা এলাকায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত একটি বাসে দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বাসের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।

মোটরসাইকেল তল্লাশিতে বেরিয়ে এল ১৬ কোটি টাকার সোনা
২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২১ পিএম | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৩৬ এএম

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সীমান্ত থেকে ১৬ কেজি ওজনের ৯৬টি সোনার বার জব্দ করেছে বিজিবি। এসময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাজমুল ইসলাম (৩১) নামের এক পাচারকারীকে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দামুড়হুদার সীমান্তবর্তী রুদ্রনগর গ্রামে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার নাজমুল দর্শনার শ্যামপুরের আসাদুল হকের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) পারচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, অভিযানের সময় চোরাকারবারী নাজমুল ইসলাম মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিজিবি সশস্ত্র টহলদল তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় তল্লাশি চালিয়ে ৯৬টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ১৬ কেজি ১৪ গ্রাম। এর আনুমানিক মূল্য ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এ ঘটনায় দর্শনা থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

‘ভোটার আইডি হ্যাক করে বিএনপি নেতাদের মনোনয়নপত্র তোলা হচ্ছে’
২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৭ এএম | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪২ এএম

ভোটার আইডি হ্যাক করে বিএনপির নেতাদের নামে মনোনয়নপত্র তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সরকার প্রতারণা করার চেষ্টা করছে। নেতারা জানেনও না, এরপরও তাদের নামে মনোনয়নপত্র কেনা হচ্ছে। যেহেতু পরিচয়পত্রের সব তথ্য সরকারের হাতে, অতএব এটার মাধ্যমে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামে মনোনয়ন ফরম কিনছে। এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রকেও ব্যবহার করা হচ্ছে মহাজালিয়াতির জন্য।
রিজভী বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন জানেন না, তার নাম দিয়ে, হ্যাক করা ন্যাশনাল আইডি কার্ড নিয়ে তার ফরম তোলা হয়েছে। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ এখন এক দীর্ঘ মেয়াদি সংকটের দিকে যাচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর তাণ্ডব শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার ডিবি প্রধান ২৮ অক্টোবরে ঘটনার পেছনে যুব দলের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে আটকদের স্বীকারোক্তি দিয়ে যেসব বক্তব্য রেখেছেন তাকে মিথ্যাচার বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৩৫ জনের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও ৯ মিথ্যা মামলায় ১ হাজার ১৩৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপির এ নেতা বলেন বলেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ফেনীর গ্রামের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বোমা নিক্ষেপ করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ ঘটনায় তিনি নিন্দা জানান।
বিভাগ : জাতীয়
বিষয় : বিএনপি , মনোনয়নপত্র , অভিযোগ , সংবাদ-সম্মেলন , ভোটার-আইডি-হ্যাক , রুহুল-কবির-রিজভী , জাতীয়-পরিচয়পত্র , জাতীয়-নির্বাচন