সম্ভাবনাময় মধু শিল্প, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হাতছানি

২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:১২ পিএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম


সম্ভাবনাময় মধু শিল্প, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হাতছানি

অপার সম্ভাবনার এক শিল্পের নাম ‘মধু’। কিন্তু সম্ভাবনাময় এই খাতটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। তবে আশার কথা হচ্ছে দেরিতে হলেও মধু নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।

গত কয়েক বছরে দেশে সরিষা মধুর চাহিদা বাড়লেও এতদিন সরকারিভাবে মধু চাষীদের খুব একটা সুবিধা দেওয়া হয়নি। তবে চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে মধু চাষের উপর আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে সরকারের কৃষি বিভাগ। যার ফলে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো দেশে মধু চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।

বিগত সময়ে দেশে সরিষা থেকে যে পরিমাণ মধু চাষ হতো তার কয়েকগুণ বেশি মধু চাষ হবে চলতি মৌসুমে, এমনটা আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

অপরদিকে মধু চাষিরা বলছেন, সরিষা থেকে উৎপাদিত মধু খুবই উন্নতমানের। কিন্তু নানান প্রতিকূলতার কারণে চাষীরা যথাযথভাবে মধু চাষ করতে পারছেন না। এতদিন সরকারের কৃষি বিভাগ সরিষা থেকে মধু চাষের বিষয়টিতে খুব একটা গুরুত্ত্ব না দিলেও চলতি মৌসুমে এসে তারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সংকট এখনো থেকে গেছে। এটি একটি বড় ও সম্ভাবনাময় শিল্প হতে পারে দাবি করেন মধু চাষিরা।

তারা বলেন, মধু উৎপাদন থেকে শুরু করে বয়ামজাত করা এবং বাজারজাত পর্যন্ত সরকারের টেকনিক্যাল এবং আর্থিক সহযোগিতা পেলে মধু রপ্তানি করে মোটা অঙ্কের বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। শুধু দরকার সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা। একইসঙ্গে মধু চাষিরা বলছেন, মধু চাষকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে সব ধরনের সহযোগিতা দিলে বেকারত্বও দূর হবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে এবং মধু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা নিজ উদ্যোগে সরিষা ক্ষেতে স্থানীয় পদ্ধতিতে মৌ চাষ করেছেন। মধু চাষে কৃষি বিভাগের কোনো লক্ষ্যমাত্রাও ছিল না। আবার মধু চাষ করলেও চাষিরা যথাযথ নিয়মে মধু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করতে পারেননি। এখনো পারছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধু চাষিরা আহরিত মধু খোলা বিক্রি করছেন। তাতে চাষিরা আর্থিকভাবে খুব একটা লাভ হচ্ছেন না। কিন্তু মধু চাষিরা তাতে হাল ছাড়েননি। তারা প্রতি বছর সরিষা থেকে মধু চাষ করে আসছেন। নিজ উদ্যোগে চাষিদের এই মধু চাষ থেকে প্রতিবছরই তিন-চার লাখ কেজি মধু আহরণ হতো। চলতি বছরও চাষিরা একইভাবে মধু চাষের উদ্যোগ নেন। তবে তাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে এবারই প্রথম সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ মধু চাষে মনোযোগ দিয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমিকে মধু চাষের আওতায় এনেছে। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৮ লাখ ১২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছে। এ ছাড়া, শূন্য দশমিক শূন্য ৭৬ লাখ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, শূন্য দশমিক ১০৬ লাখ শতাংশে কালোজিরা, এক লাখ ৮৬৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, শূন্য দশমিক ৪০৩ লাখ হেক্টর জমিতে ধনিয়া, এক লাখ ২৯৪ হেক্টর জমিতে আম এবং শূন্য দশমিক ১২৫ লাখ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মোট ১১ লাখ ৯৯৪ হেক্টর জমিতে এসব ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ফসলী জমির মধ্যে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমি মৌ চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

এবার প্রথমবারের মতো মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভগ থেকে সারা দেশে মৌ চাষিদেরকে এক লাখ ৭১ হাজার ৪৩৩টি বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সরিষা ক্ষেতে বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৪০টি। ইতিমধ্যে এক লাখ এক হাজার ৪৬২টি বাক্সে মৌ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। যার মধ্যে শুধু সরিষা থেকে অর্জত মৌ বাক্সের সংখ্যা হচ্ছে এক লাখ এক হাজার ৩৭টি।

প্রতি বছর চাষিরা নিজ উদ্যোগে মৌ চাষ করে তিন থেকে চার লাখ কেজি মধু আহরণ করলেও চলতি রবি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে আট লাখ ৩৬ হাজার ৪৬ কেজি। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে আট লাখ ৪৮ হাজার ৩১০ কেজি মধু আহরণ বা সংগ্রহ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এখনো মধু সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও অনেক বেশি মধু সংগ্রহ হবে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

ডিএইর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমানে সারা দেশে মধু চাষের ব্যাপ্তি বেড়েছে। এখন আমরা মধু চাষের উপর গুরুত্ত্ব দিচ্ছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মৌ চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মৌ চাষের জন্য চাষিদেরকে উন্নতমানের বাক্স সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মধু চাষে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে উৎসাহ দিচ্ছি।’

ডিএই মহাপরিচালক বলেন, মধু খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। এই খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। আমরা যদি যথাযথ নিয়মে মধু সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অনেক সম্ভাবনা আছে এই খাতে।

তিনি জানান, মধু বোতলজাত বা বয়ামজাত তথা প্যাকেজিং করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ডিএই মহাপরিচালক মনে করেন, ভারতের ডাবর মধুর চেয়ে আমাদের মধু অনেক ভালো মানের। ডাবর মধু যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রি হতে পারে, তাহলে আমাদের মধু নয় কেন?

মধু চাষিরা বলছেন সম্ভাবনাময় খাত

মধু চাষিরা বলছেন, অপার সম্ভাবনার এই খাতকে প্রণোদনা দিলে মধু চাষিরা যেমন সাহস ও উৎসাহ পাবে তেমনি বহু বেকার তরুণ-যুবকের কর্মসংস্থান হবে। শুধু মধু রপ্তানি করেই শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

সাতক্ষীরার মৌ চাষি মোশাররফ হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সালে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে মধু চাষ শুরু করি। অনেক কষ্ট করে সরিষা ক্ষেতে মৌ চাষের বাক্স বসাই। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে সব কিছু করি।

তিনি বলেন, আমি যখন মধু চাষ শুরু করি তখন কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা ছিল না। আসলে তারা জানতেনই না মধু চাষের বিষয়টি। আমার মতো অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষ শুরু করেন। এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষের প্রসার ঘটে। চাষি থেকে চাষি পর্যায়ে মধু চাষ বিস্তার লাভ করে।

তিনি বলেন, ‘ইদানিং কৃষি বিভাগ মধু চাষে মৌ চাষিদের সহযোগিতা করছে। নানা পরামর্শ দিচ্ছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে মধু একটা অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। সাতক্ষীরা বিসিক আমাকে ২০০৮ সালে আশ্বাস দিয়েছিল মধু প্রক্রিয়াজাতকরণে তারা সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীতে প্রযোজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠেনি।’

মোশাররফ বলেন, মৌ চাষ শিল্পকে টেকনিক্যাল ও আর্থিক সহযোগিতা দিলে এটি একটি বৃহৎ শিল্পে রূপান্তরিত হবে। বেকারদের কাজে লাগানো যাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ৩০-৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই এই শিল্পে লাভবান হওয়া যাবে।’

মোশাররফ আরও জানান, তিনি আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মৌ চাষ করলেও ২০১৯ সাল থেকে তিনি আর এককভাবে মৌ চাষ করছেন না। এখন তিনি গ্রুপ ভিত্তিক মৌ চাষ করেন। এই মৌসুমে ১০টা ফার্ম মিলে এখন পর্যন্ত ২০ টনের বেশি মধু আহরণ করেছেন।

তিনি আরও জানান, আমাদের দেশি মধুর মান খুবই ভালো। ভালোভাবে রিফাইন করে বয়াম বা বোতলজাত করতে পারলে বৈদেশিক মুদ্র অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারের নীতি নির্ধারকরা যদি বিদেশি মধু আমদানি বন্ধ করে দেশীয় মধু চাষিদের উৎসাহিত করতে পারে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার ভাটানবাড়ি গ্রামের মৌ চাষি রেজাউল করিম স্বাধীন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিনি মৌ চাষ করে আসছেন। এখন তার মৌ চাষের পরিধি বেড়েছে। তবে সমস্যাও আছে অনেক। বিশেষ করে সরকারি সহযোগিতাটা এখনো তিনি পাননি। যদিও কৃষি বিভাগ মাঝে মধ্যে ডেকে নিয়ে মৌ চাষিদেরকে নানান পরামর্শ দেয়।

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমেও তিনি মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কোনো বাক্স পাননি। তবে নিজ উদ্যোগে ৩৩টা গ্রুপে ৩৩টা বাক্স স্থাপন করে মৌ চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৬০০ কেজি মধু আহরণ করেছেন জানিয়ে রেজাউল বলেন, তার সব মধুই বাড়ি থেকে বিক্রি করেন। কোনোরকম প্যাকেটজাত করেন না। প্যাকেজিং করতে গেলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগে। কিন্তু সেটা করতে গেলে অনেক হয়রানি হতে হয়। এ কারণে খোলা মধু বিক্রি করেন।

রেজাউলও মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু রপ্তানি করে বৈদশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

যা বললেন কৃষি সচিব

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের দেশে যে মধু উৎপাদন হয় তার গুণগত মান অনেক ভালো। এটা যদি ঠিকমত চাষিরা বাজারজাত করতে পারতেন তাহলে দেশের বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাহলে আর মধু আমদানি করতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা মৌ চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এখন উৎপাদিত মধু যদি বয়ামজাত করে বিক্রি করা যায় তাহলে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশীয় মধুর বাজারও চাঙ্গা হবে।’

তিনি আরও বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের এসএমই নীতিমালায় মধুর কথা বলা আছে। বিসিক এই কাজ করতে পারে। তারা যদি মৌ চাষিদের সহযোগিতা করে তাহলে দেশে উৎপাদিত মধুতেই দেশের চাহিদা মেটানো যেমন সম্ভব, সেইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে।

এনএচইবি/এমএমএ/


এবার দেশের সকল ইউএনওকে বদলির নির্দেশ

০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৪ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৩ এএম


এবার দেশের সকল ইউএনওকে বদলির নির্দেশ
ফাইল ছবি

দেশের সকল ওসিকে বদলির নির্দেশের পর এবার দেশের সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) বদলির নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

গতকাল ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশনাটি পাঠান।

চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্ত সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বর্তমান কর্মস্থলে ১ বছরের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।

এর আগে দেশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদলি করতে নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে এ নির্দেশনা দেয় সাংবিধানিক সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে।

চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায়/অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।


ঢাকাপ্রকাশ-এর ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২০ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৯ এএম


ঢাকাপ্রকাশ-এর ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগান ধারণ করে ঢাকাপ্রকাশ-এর এবারের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) উদযাপিত হয়েছে। রাজধানীর ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার-এর নিজ কার্যালয়ে দিনটি উদযাপিত হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই ঢাকাপ্রকাশ-এর ভবনে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি উৎসবে আগতদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন।

বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেক

 

শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেক কেটে ঢাকাপ্রকাশ-এর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহাদৎ জামান সাইফ। এ সময় অন্যান্য অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকাপ্রকাশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবিউল ইসলাম, ঢাকাপ্রকাশ-এর সাংবাদিক ও কলাকুশলীরা।

কেক কেটে ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

 

কেক কাটার পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শাহাদৎ জামান সাইফ বলেন, ঢাকাপ্রকাশ তার দ্বিতীয় বছর অতিক্রম করল। দুইটি বছর গণমাধ্যমের জন্য বড় কিছু নয়। কিন্তু এই দুই বছরে বোঝা যায়; এই মাধ্যমটির সম্ভাবনা কতটুকু। এই অল্প সময়েই ঢাকাপ্রকাশকে পাঠকরা যতটা গ্রহণ করেছে তা সত্যি অভাবনীয়। ‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা আরও সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর। তারুণ্য নির্ভর এই গণমাধ্যম পাঠকদের ভালোবাসায় সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে ছড়িয়ে পড়বে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

এসময় ঢাকাপ্রকাশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আজ ঢাকাপ্রকাশের জন্মদিন। সাফল্যের দুই বছর অতিক্রম করে ৩য় বর্ষে পা রাখল তারুণ্য নির্ভর এই গণমাধ্যমটি। মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টালটি বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠকদের মাঝে ইতিধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। তারুণ্যের অদম্য শক্তিতে ঢাকাপ্রকাশ তার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

তিনি আরও বলেন, দুই বছর সময়টি কম হলেও আমরা পাঠকদের কাছে এই অল্প সময়ের মধ্যে যে জায়গা করে নিয়েছি তা সত্যিই অনেক বড় অর্জন। আমাদের এই অর্জনের পেছনে পাঠকদের ভূমিকা সব থেকে বেশি। তাদের গ্রহণযোগ্যতাই আমাদের সব থেকে বড় সম্পদ। তারাই আমাদের শক্তি, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। পাঠকদের এই ভালোবাসাই ঢাকাপ্রকাশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে।

কর্ম ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা

 

বর্ষপূর্তিতে ঢাকাপ্রকাশের মফস্বল বিভাগের জাহিদুল ইসলাম তার অনুভতি ব্যক্ত করে জানান, নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ঢাকাপ্রকাশ তরুণ নির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে সাজানো হয়েছে এই পরিবার। ঢাকাপ্রকাশ অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় স্থান দখল করে নিয়েছে। এর জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ও কাঠামোগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

স্পোর্টস বিভাগের আশিক মোহাম্মদ রিয়াদ বলেন, সাফল্যের দুটি বছর শেষ করলাম আমরা। এবার সামনে এসেছে নতুন সম্ভাবনার দিন। ঢাকাপ্রকাশ পরিবার আরও সামনে এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করছি। শুভ জন্মদিন ঢাকাপ্রকাশ।

জন্মদিনে নতুন রূপে সেজেছে ঢাকাপ্রকাশ

 

কথা হয় ঢাকাপ্রকাশের ক্যাম্পাস বিভাগের একরামুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন, আজ ঢাকাপ্রকাশ তার ২ বছরের সাফল্যমাখা সময় অতিক্রম করে তৃতীয় বর্ষে পা রাখল। গণমাধ্যমে সত্যতা ও সচ্ছ্বতা বিদ্যমান রাখা সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাকাপ্রকাশ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ‘পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা’ এই স্লোগানকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে তার নিজস্ব গতিতে। পাঠকদের ভালোবাসায় পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে চাই আমরা।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকাপ্রকাশের বিনোদন বিভাগের আরিফ হাসান বলেন, ঢাকা প্রকাশ এগিয়ে যাক অদম্য গতিতে। ছুটে চলুক সত্যের সন্ধানে। শুভ জন্মদিন ঢাকাপ্রকাশ।

পুরাতনকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা

 

ঢাকাপ্রকাশের ওয়েব ডেভেলপার পার্থদেব জানান, প্রতিদিনই আমরা পাঠকদের মন্তব্য বিশ্লেষণ করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের ওয়েবসাইটকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাঠকদের বিভিন্ন মতামতের উপর ভিত্তি করে ঢাকাপ্রকাশকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে।

এদিকে সারাদেশ থেকে প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শোবিজ অঙ্গণের অনেকের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা এসে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ-কে।


ইসি’র শোকজের জবাব দিলেন সাকিব

০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০০ পিএম | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৫ এএম


ইসি’র শোকজের জবাব দিলেন সাকিব
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান তার বিরুদ্ধে করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে করা শোকজের জবাব দিয়েছেন । শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে শোকজের ব্যাখ্যা দেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

সাকিব আল হাসান বলেন, সব কিছু সব সময় ক্যামেরাতে বলা সম্ভব না। দেখুন আমি তো গতকালই বললাম প্রথমবার আমি ইলেকশনে অংশগ্রহণ করতেছি। স্বাভাবিকভাবেই ভুলত্রুটি আমার হতে পারে, আমার অজান্তে। সেগুলো সংশোধন করা আমার দায়িত্ব। যখন আমি সব নিয়ম কানুন জানব, পড়ব, বুঝব, তারপর যদি হয় তখন আমার দোষ হতে পারে। কিন্তু এখন যেটা হয়েছে এটা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত একটা বিষয়। নেক্সট টাইম যাতে এমন না হয় সে বিষয়ে আমি খেয়াল রাখব।

সাকিবের আইনজীবী সাজেদুর রহমান সংগ্রাম জানান, ২৯ নভেম্বর সাকিব আল হাসান মাগুরায় আসেন। তখন কামারখালী এলাকায় লোকজন জমা হয়। সেখানে ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সেখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না কিংবা দলীয় কাউকে তিনি রাখেননি। সুতরাং এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি। ভবিষ্যতে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকব। আইন মেনে চলব।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) মাগুরা-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধানী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সত্যব্রত শিকদার আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে সাকিব আল হাসানকে তলব করেন। তাকে আজ শুক্রবার অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

অনুসরণ করুন