শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রতিবন্ধী নাগরিকরা সমঅধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক

আমরা জানি, ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। তবে আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, ২৩শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপুর্ণ দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে। এজন্য দিনটিকে আমরা পতাকা উত্তোলন দিবসও বলি, প্রতিরোধ দিবসও বলি। যদিও উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এদিনটি লাহোর প্রস্তাব দিবস ।

১৯৪০ সালের ২৩শে মার্চ লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ সভায় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এই উপমহাদেশে দুটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এনেছিলেন। তার একটি হবে উত্তর পূর্ব ভারতকে নিয়ে এবং বাংলাদেশ, অন্যটি পাকিস্তান। তবে নির্মম রাজনৈতিক ইতিহাস ঘটনা প্রবাহকে পাল্টে দেয়। দুটির জায়গায় একটি রাষ্ট্র হয়। মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান, ১৯৪৭ সালে। চব্বিশ বছরের বঞ্চনা, বৈষম্য নিপীড়ন, অত্যাচার, এমনকি আমাদের মাতৃভাষার উপরে যখন আঘাত এসবের বিরুদ্ধে আমাদের পর্যায়ক্রমে জবাব দিতে হয়েছে।

আমি একজন দৃস্টি প্রতিবন্ধী নাগরিক। এই দেশে কোনো প্রতিবন্ধী নাগরিকের, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য কোনো রকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে আমার চক্ষু বিশেষজ্ঞ আমার মরহুম পিতা-মাতাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, আমার দুটি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই তখন আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অর্থাৎ তখন সবাই বলতেন, অন্ধ হয়ে গেছে। তখন এদেশে আমার লেখা পড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তখন পূর্ব পাকিস্তান সরকার পরিচালিত হচ্ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আতাউর রহমান খান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তখন এক তরুন তেজস্বী রাজনৈতিক নেতা এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৭ সালের ২ এপ্রিল ঢাকায় রোটারি ক্লাব আয়োজন করে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে দৃস্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু এদেশে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে ছিল না, কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, তাই কলকাতা রোটারি ক্লাবের সহায়তায় একজন শিক্ষক প্রয়াত বিভূতি ভূষণকে নিয়ে আসা হয়। আর আমাকে সনাক্ত করা হয় প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র হিসেবে।

১৯৫৭ সালের ২ এপ্রিল ৭ বছর বয়সে আমি আমার দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করি। অর্থাৎ দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে আবারও লেখাপড়া করার জন্য আমার প্রথম স্কুলে যাওয়া। একটি ভাড়াটে বাড়িতে ১৭/৮ ওয়ারি র‌্যাংকিং স্ট্রিট, পুরোনো ঢাকায় আমার প্রথম স্কুল জীবন শুরু। এখনও মনে পড়ে মাস্টার বাবুর হাতে যখন আমার মা আমাকে নিয়ে গেলেন, তার আগে স্কুল উদ্বোধন হয়েছিল ১৫ই মার্চ। সেদিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন, মিসেস চৌধুরী, আপনি মনসুরকে নিয়ে ভাববেন না। সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে বটে, কিন্তু আজ থেকে সে পড়ালেখা শিখবে। আমাদের হেড মাস্টার সাহেব তিনি আমাকে বাংলা ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত করলেন। ইংরেজি বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় করলেন। বললেন, প্রথমে ইংরেজি বর্ণমালা শিখবে। ছয়টি বিন্দু বা ডট দিয়ে নানানভাবে সাজানো হয়। সেভাবেই শিখলাম। তিন চার দিন সময় লাগল। তারপর বাংলা শেখানো হল। বিভিন্ন বস্তুর আকার প্রকার বোঝানোর জন্য বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আসা হল। পাতার যে ঘ্রাণশক্তি সেটি পরীক্ষা করার চেষ্টা চলল। তারপর দুপুরবেলা মাদুর পেতে সংগীত শিক্ষার ব্যবস্থাও করা হল। আজও সেই গানটির কথা মনে আছে, জীবনের গভীর অর্থ তখন বুঝি নাই। গানের কথাগুলো ছিল এরকম,

এই করেছ ভাল নিঠুর হে, নিঠুর হে
এই করেছ ভাল
এমনি করে হৃদয়ে মোর
তীব্র দহন জ্বালো
এই করেছ ভাল নিঠুর হে, নিঠুর হে
এই করেছ ভাল।

জীবনের এই প্রান্তে এসে রবীন্দ্রনাথের লেখা এই গানটি আমার মনে হয় যেন প্রতিদিনের প্রার্থনা সংগীত।

খুব মনে হচ্ছে, জাতির পিতা সম্পর্কে একটি কথা বলা উচিত। আমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, শুধুমাত্র তার কন্ঠস্বর শুনি নাই, তাকে স্পর্শ করেছি। তার সঙ্গে করমর্দন করেছি। সেটি প্রথম ঘটেছিল ১৯৬৯ সালে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পাকিস্তান থেকে ছয়জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ব অন্ধ প্রতিবন্ধী সম্মেলনে কলম্বোতে যাবেন। পাকিস্তান থেকে আমরা তিনজন ছাত্র। সে উপলক্ষে ১৯৬৯ এর সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যাই। বঙ্গবন্ধু তার কয়েকজন বন্ধু ও সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমরা যাব তিনি জানতেন। খুব স্নেহ করলেন, আদর করলেন। বললেন, এই বয়সে তোমরা যাচ্ছ, নিজের দেশেকে তুলে ধরবে। তোমাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবে। তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেদিন অনেক উৎসাহ অনেক প্রেরণার কথা শুনিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার তার সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। সেটি ২৫শে জানুয়ারি ১৯৭২, পুরানো গণভবনে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী’র সঙ্গে আমাদের আগের দিন দেখা হয়। তিনি যেহেতু রোটারি ক্লাবের চেয়ারম্যান ছিলেন, সে কারণে শৈশব থেকেই আমাকে চিনতেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। তার সঙ্গে দৃষ্টি প্রতিবন্দ্বীদের সমস্যা নিয়ে আমরা আলাপ করতে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তোমরা কাল দেখা করতে যাবে, আমি তোমাদের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। উনি প্রথমে ভুল বুঝেছিলেন। উনি ভেবেছিলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েছি। আমরা তাকে জানিয়েছিলাম, আমরা শৈশব থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আমরা বলেছিলাম, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। এটি কোনো কল্যাণজনক কিছু হতে পারে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের অধীনস্ত করা হোক। তিনি সহমত প্রকাশ করে বলেছিলেন, অত্যন্ত ভাল কথা। তিনি বললেন, ‘তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ সাহেবকে আমি এ ব্যাপারে বলে দেব। ‘আমাদের লিখিত স্মারকলিপি তিনি রাখলেন এবং অনেক উৎসাহ দিলেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল, কিছু অনাহূত জটিলতার কারণে পরিশেষে সেটি আর বদল করা যায়নি। আজও এ দেশের প্রতিবন্দ্বীদের শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। অথচ আমরা কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অথচ আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

ফিরে আসি ১৯৭৪সালে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। যেমন প্রতিটি মহকুমার অধীন সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমন্বিত কার্যক্রমে ১০ জন করে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। উনি এরকমই নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রক্রিয়াটি তিনি চালু করে দিয়ে গিয়েছিলেন। তার সেই অসম্পূর্ণ কাজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশ বছর পরে সেটি পুনরায় চালু করেছেন। বর্তমানে মেধাবি প্রতিবন্দী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়া হয়।

ইতিহাস অনেক লম্বা। অনেক সময় পেরিয়ে গেছে, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কিছু কাজ নিশ্চয় হয়েছে। তবে দুঃখজনক হল, যতটুকু হয়েছে অথবা যেটুকু হবার কথা ছিল, তা খুব বেশি কিছু নয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সকল প্রকার প্রতিবন্ধীদের নানা সমস্যা, যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। শিক্ষাক্ষেত্র, শিক্ষা শেষে তার কর্মসংস্থান, মর্যাদার সঙ্গে চাকরি করে বেঁচে থাকার পরিবেশ এখনো হয়নি। রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে পারে, কিন্তু তাকে বাস্তবায়িত করতে হবে। এ কথা আবারও বলি যে, প্রতিবন্দ্বী মানুষের সমস্যা ব্যাপক। উন্নয়নশীল দেশে এই সমস্যা অনেক গভীর ও অনেক বেশি। আমরা সভ্যতার উষালগ্ন থেকে আজ অব্দি যেভাবে এগিয়ে চলেছি, একসময় প্রতিবন্ধীদের আইসোলেটেড করে রাখতাম, এখন ইনক্লুসিভ করা হয়েছে। এখন আমরা সমঅধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি। আমার বিশ্বাস এই স্বাধীন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় হয়তো একদিন আমি থাকব না, আমি না থাকি, তাতে কি আসে যায়। এদেশের প্রতিবন্ধী নাগরিকেরা সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক। আপনারা মনে রাখবেন, আমরা যারা প্রতিবন্ধী মানুষ, আমরা প্রথমে মানুষ, তারপর প্রতিবন্ধী। 


লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মানবাধিকার কর্মী

হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান

আইআরজিসি টিমের প্রধান জেনারেল আহমেদ হাকতালাব। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের ইসফাহান শহরে হামলা ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবিটি নাকচ করে দিয়েছে ইরান। তেহরানের জানিয়েছে, ইরানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা হয়নি, তিনটি ড্রোন এসেছিল সেগুলো আকাশেই ধ্বংস করা হয়েছে। খবর প্রকাশ হবার কয়েক ঘণ্টা পর একজন জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রতিশোধ নেয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই ইরানের।'

এদিকে পারমাণবিক স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইআরজিসি টিমের প্রধান জেনারেল আহমেদ হাকতালাব এক বার্তায় বলেছেন, ‘যদি জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী আমাদের পরমাণু স্থাপনা ও কেন্দ্রগুলোতে কোনো প্রকার ক্ষতি সাধনের পদক্ষেপ নেয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমরা তার প্রতিক্রিয়া জানাব এবং সেই প্রতিক্রিয়া হবে ভয়াবহ।’

ইসরায়েল যদি সত্যিই পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে, তাহলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন জেনারেল হাকতালাব। ‘ইসরায়েলের ভুয়া জায়নবাদী গোষ্ঠী যদি ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য পারমাণবিক স্থাপনা ও প্রকল্প কার্যালয়ে হামলা করে, তাহলে ইরানও তার পারমাণবিক ডকট্রিন ও নীতি সংশোধন করবে এবং পূর্বঘোষিত বিবেচন্য বিষয়গুলো থেকে সরে আসবে।’

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমিও ছিলেন।

হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার। গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান ও আঞ্চলিক মিত্রদের সহায়তায় বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে ইরান।

আকস্মিক এই হামলার পর ইরানকে পাল্টা জবাব দেওয় হবে বলে ঘোষণা করেছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও দ্ব্যর্থহীনভাবে আইডিএফের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে।

তারপর আজ শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় দুপুর সাড়ে ১২ টার (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬ টা) দিকে ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী ইসফাহানে ড্রোন হামলা চালায় আইডিএফ। তবে হামলায় ব্যবহৃত ৩টি ড্রোনই ধ্বংস করে দিয়েছে ইরানের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা।

রাজধানী তেহরান থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ইসফাহানে ইরানি সেনাবাহিনীর বেশ বড় একটি বিমান ঘাঁটি ও বেশ কয়েকটি পরমাণু স্থাপনা রয়েছে। সূত্র: তেহরান টাইমস

আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‌‘দেশটা এখন মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।’

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অব্যাহত গতিতে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করে বিরোধী নেতাকর্মীদের পর্যদুস্ত ও নাজেহাল করা হচ্ছে। আর এ ধরনের অপকর্ম সাধনের একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে—দেশের বিরোধী দলগুলো যেন দখলদার সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের সমালোচনা করতে সক্ষম না হয়। মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই কারাগারে পরিণত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদল সভাপতি ও যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. মমিনুল ইসলাম (দলিল লেখক), বিরল উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবুল মনছুর খান দিপক এর জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে প্রেরণ জুলুমবাজ আওয়ামী সরকারের চলমান নিরবচ্ছিন্ন অপকর্মেরই অংশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, আদালত কতৃর্ক উল্লিখিত নেতাদের জামিন বাতিল ও কারান্তরীণের ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বানোয়াট ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বক্তব্য রাখছেন প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত

স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে চলচ্চিত্র বাছাই কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, 'স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন, সরকার সেটিও নিশ্চিত করতে চায়।'

সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সামনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদনকৃত মোট ১৯৫ টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৪৫ টি চলচ্চিত্রের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে।

এ দিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখে চলচ্চিত্রগুলোকে স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা গোপনীয়ভাবে আলাদা আলাদা নম্বর প্রদান করেছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাছাই কমিটির সদস্যরা আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মানদন্ডের উপর ভিত্তি করে আবেদনকৃত চলচ্চিত্রের প্রস্তাবনার উপর আলাদা আলাদা ভাবে নম্বর প্রদান করছেন। পরবর্তীতে সকল সদস্যদের নম্বরগুলো গড় করে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আবেদনগুলো অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, যুগ্ম সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ ও আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটারও পারফরম্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী চলচ্চিত্রের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের, তেহরানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক
নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে: প্রধানমন্ত্রী
দাঁড়িয়ে থাকা বাসকে পিকআপের ধাক্কা, ১০ পোশাককর্মী আহত
নতুন রেকর্ড গড়ে ইউরোপা লিগের সেমিতে লেভারকুসেন
ইরানে ইসরাইলের হামলা: লাফিয়ে বাড়ছে তেল ও স্বর্ণের দাম
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ১৩ বিজিপি সদস্য
চুয়াডাঙ্গায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে সেমিনার
ইরানে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি