সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ফিরে দেখা ২০২১

গণতন্ত্রের সংকটে ‘গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা’

গণতন্ত্র কী? ক্ষমতার পালাবদল মানেই কি গণতন্ত্র? যুক্তরাষ্ট্র কি আদর্শ গণতন্ত্রের প্রতীক? প্রশ্নগুলো এ সময়ে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। কারণ অনেকের কাছে যুক্তরাষ্ট্র নির্দেশিত গণতন্ত্রই একমাত্র আদর্শ। অথচ খোদ মার্কিন মুলুকে আজও বর্ণবাদ, ইসলামোফোবিয়া, দেশে দেশে আগ্রাসনে বন্দি গণতন্ত্র। ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার, সার্বভৌমত্বের মানে পাল্টে যায় যেখানে, সেখানে ‘গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা’দের হাতে আর যা-ই হোক গণতন্ত্র যে সংকটে রয়েছে, তা হলফ করেই বলে দেওয়া যায়।

‘গণতন্ত্র’ শব্দটি ইংরেজি ‘ডেমোক্র্যাসি’ থেকে এসেছে। এর উৎপত্তি গ্রিক শব্দ ‘দেমোক্রাতিয়া’ থেকে, যার অর্থ ‘জনগণের শাসন’। গ্রিক সমাজ চিন্তাবিদ ক্লিসথেনিসের দেওয়া তত্ত্বের ভিত্তিতে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এথেন্সে এক নতুন ধরনের সরকার ব্যবস্থা গড়ে উঠে। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতকে এথেন্সসহ বিভিন্ন নগর রাষ্ট্রে মুক্ত নাগরিকদের মাধ্যমে গড়ে উঠা রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝাতে ‘দেমোক্রাতিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার মূল দলিলটি প্রণয়ন ও প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন চিন্তাবিদ টমাস জেফারসন। তিনি দুই মেয়াদে নির্বাচিত দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট। শুধু স্বাধীনতা ঘোষণার দলিলই প্রণয়নই নয়, নাগরিকদের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতেও তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তবে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রথম রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কনের দুই মিনিটের একটি বক্তৃতাকে। ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বর গেটিসবার্গে দেওয়া ওই বক্তৃতায় তিনি বলেন, গণতন্ত্র হলো ‘জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা পরিচালিত সরকার এবং জনগণের স্বার্থে পরিচালিত সরকার’। যার মানে দাঁড়াচ্ছে–জনগণের জন্য জনগণের শাসন। 

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে–যুক্তরাষ্ট্রে চর্চিত গণতন্ত্রের মডেল কার্যত ক্ষমতার পালাবদলের সংকীর্ণ দৃষ্টিকোণ থেকেই পরিচালিত। অথচ একটি দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা, সেটা নির্ভর করে তার জনগণ প্রকৃত অর্থে সে দেশের মালিক কি না, তার উপর। জনগণকে শুধু ভোট দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হলো, এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলল; কিন্তু ভোটের পর শাসন ক্ষমতা থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন রাখা হলে সেটিকে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র বলা যায় না। একটি দেশ গণতান্ত্রিক কি না, সেটি সে দেশের জনগণ বিচার করবে। বাইরে থেকে চাপিয়ে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলেই মত বিশ্লেষকদের। ২০২১ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান আবারও আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। এর আগে ২০ বছর ধরে সেখানে চলে যুক্তরাষ্ট্র নির্দেশিত ভোট-সর্বস্ব গণতন্ত্র। তবে ওই শাসন কাঠামোতে সেখানকার সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ এত বছরেও স্বীকৃত হয়নি। যে কারণে ওই ব্যবস্থাকে আপন করে নিতে পারেনি আফগানরা। এরই ফল তালেবানের ক্ষমতা পুনর্দখল। কার্যত ২০ বছরের আগ্রাসনে বিফল হয়ে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। সেখানে শুধু মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিই বিদ্ধ হয়নি, সেইসঙ্গে ঘায়েল হয়েছে তাদের শেখানো ‘গণতন্ত্র’। লিবিয়া, ইরাক, সিরিয়া একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে।

স্বাস্থ্যখাতেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে কোনো সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নেই। সেখানে মানুষ স্বাস্থ্য সুবিধা পায় মূলত বিমার মাধ্যমে। যার বিমার প্রিমিয়াম দেওয়া ক্ষমতা নেই, তার স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকারও আর থাকে না। এ ধরনের বেসরকারিকরণের ফলে আমরা দেখেছি, অনেক ক্ষেত্রে করোনা রোগী কোনো চিকিৎসা পায়নি। আবার অন্য রোগে আক্রান্তরাও প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। কারণ তাদের স্বাস্থ্য বিমা নেই। করোনাকালে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবায় যে সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে, তা আরও স্পষ্ট হয়েছে।

মানুষকে কারাগারে বন্দি রাখার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত রেকর্ড গড়েছে। সারাবিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ কারারুদ্ধ, তার এক-চতুর্থাংশই রয়েছেন মার্কিন কারাগারগুলোতে। অথচ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ আমেরিকায় বাস করে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এত মানুষকে কারাগারে বন্দি রাখা হয় না।

ক্যাপিটল হিল হামলা

গত ৬ জানুয়ারি (বুধবার) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশন চলার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ সমর্থক মার্কিন পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায়।

ট্রাম্প সমর্থকদের এ তাণ্ডবের পর রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশই হামলাটিকে সমর্থন করছেন। বিশ্বজুড়ে নিন্দার পরও ৮৫ শতাংশ রিপাবলিকান সমর্থক মনে করছেন, ট্রাম্পকে তার বাকি সময়ের জন্য সরিয়ে দেওয়া উচিত হবে না। আর সেটিই ভয় জাগাচ্ছে বিরোধী শিবিরে। জো বাইডেনের কাছে ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ট্রাম্প আরও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেন বলে ধারণা অনেকেরই। তার সমর্থকরা সক্রিয় আরেকটি ‘বিপ্লব’ ঘটাতে।

জরিপের এমন ফলে ভবিষ্যতেও ঘোর বিপদ দেখছেন সমাজবিজ্ঞানী ও সমাজকর্মীরা। তারা মনে করেন–ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়তেই ‘ট্রাম্পবাদ’ ও ফ্যাসিবাদের বিপদ দূর হয়ে যায়নি। বামপন্থী লেখক পিট ডোলাক বলেন, ‘ক্যাপিটলের ঘটনার পর আর কোনো সন্দেহই নেই যে, যুক্তরাষ্ট্র ফ্যাসিস্ট উত্থানের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। স্বৈরাচারী হওয়ার মতো ট্রাম্পের যথেষ্ট বুদ্ধি ছিল না, শাসকশ্রেণির যথেষ্ট সমর্থনও ছিল না; কিন্তু আরেকজন বাগাড়ম্বরকারীর উত্থান যথেষ্টই সম্ভব এবং তিনি ট্রাম্পের মতো নির্বোধ নাও হতে পারেন।’

এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী ওয়াল্ডেন বেলো বলেন, ‘ক্যাপিটল ভবনে হামলাই দেখিয়ে দিচ্ছে আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রে অনিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক সংঘাত হতে পারে।’ সমাজতাত্ত্বিক স্যামুয়েল ফারবার অবশ্য বলেন, ‘ট্রাম্পবাদ নামে পরিচিত খোলামেলা স্বৈরাচারী, বর্ণবিদ্বেষী, গণবিদ্বেষী, বিজ্ঞান বিরোধী রাজনীতি ততক্ষণ থাকবে; যতক্ষণ তার শিকড় উপড়ে ফেলা যাবে না। অর্থনৈতিক অবক্ষয় এবং তথাকথিত নৈতিক অবক্ষয়ের বস্তুগত পরিস্থিতিতে দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়া ঘটতেই থাকবে।’

কাঠামোগত বর্ণবাদ

নিজেদের ‘গণতন্ত্রের ধারক’ হিসেবে দাবি করলেও মার্কিন সমাজে যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুদৃঢ় নয়, তা সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নির্বাচনী বা বিচারিক কাঠামোতে সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় বছরের পর বছর ধরে কৃষ্ণাঙ্গরা আন্দোলন করে আসছেন। তবে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, এমনকি কৃষ্ণাঙ্গ ডেমোক্র্যাট বারাক ওবামা ক্ষমতায় থাকার সময়েও কালো মানুষদের হত্যার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। তখনো তাদের ‘লুটপাটকারী’, ‘দাঙ্গাবাজ’ হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন রাষ্ট্রের পদস্থ কর্মকর্তারা।

সেইসঙ্গে কালোদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে আরও বেশি নজরদারি, নিযুক্ত করা হয়েছে আরও বেশি পুলিশ সদস্য, বেড়েছে অশ্বেতাঙ্গদের ‘সংঘবদ্ধ অপরাধী’ হিসেবে দেখানো। যা শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না।

ব্যক্তি বা গোষ্ঠী পরিচয়ের ওপর নির্ভর করবে কে, কতটুকু নির্ভয়ে ক্ষোভ, হতাশা প্রকাশ করতে পারবে–এটিই আজকের দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের মানদণ্ড। ক্ষুব্ধ সশস্ত্র শ্বেতাঙ্গরা সেখানে ‘ভালো মানুষ’ খেতাব পায়, নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীরা হয়ে যান ‘উগ্রবাদী’, ‘লুটপাটকারী’, ‘দাঙ্গাবাজ’!

শুধু ট্রাম্প শাসন নয়, জো বাইডেন ক্ষমতাসীন হওয়ার পরও এ অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারণ কাঠামোগত পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ বাইডেন প্রশাসন নেয়নি।

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডিন মিশেল এ উইলিয়ামস বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য সংকটেও বর্ণবাদ কোনো অংশে কম যায় না। এই বাস্তবতা শুধু পুলিশি নির্যাতনেই দেখা যায় না, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যা করা হচ্ছে দেদার; বরং দাস প্রথা ও বিভক্তির অবশেষ সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে, যা সামাজিকভাবে স্বাস্থ্য সেবার অধিকার নির্ধারণ করে। ঐতিহাসিকভাবে যে অধিকারের জন্য কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানরা যুদ্ধ করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, আত্মাহুতি দিয়েছেন; বর্ণবাদ সেই অধিকার তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রতিদিন এই বাস্তবতা প্রকাশিত হয় অসংখ্য উপায়ে–স্কুলের অপ্রতুল তহবিল থেকে নখ-দন্তহীন স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক কর্মসূচি, আর্থিক অসঙ্গতি, গণ-গ্রেপ্তার, পুলিশি নির্যাতন প্রভৃতির মধ্য দিয়ে। আর এগুলো নিশ্চিতভাবেই তাদের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে, যার ফলে সময়ের আগেই অনেক কৃষ্ণাঙ্গ মৃত্যুবরণ করছেন।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য আর দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ কোটি। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, আর ১৪ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ। ৭২.৯ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ নিজের ঘরে থাকেন, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই হার ৪৩.৫ শতাংশ। শ্বেতাঙ্গ শিশুদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের দারিদ্র্যে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি।

গবেষক রিচার্ড রথস্টেইন উনিশ ও বিশ শতকে কেন্দ্রীয় থেকে স্থানীয় পর্যায়ের মার্কিন সরকারগুলো দ্বারা গৃহীত জননীতিকে এ বৈষম্যের জন্য দায়ী করেন। তার মতে, এসব জননীতি শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ সামাজিক বিভাজনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। ফলে বর্ণ-বিভাজন ও বৈষম্য প্রজন্মগতভাবে সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রভাব রেখেছে।

রিচার্ড রথস্টেইন সেন্ট লুইস শহরের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, কিভাবে সরকারিভাবে গৃহীত উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী শহরটিকে শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত আলাদা আলাদা অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। যেখানে শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত অঞ্চলকে আবাসিক এলাকা এবং কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত অঞ্চলকে বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এমনকি কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত এলাকার বাইরে কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকিও দিয়েছে।

আগ্রাসনের ভিত্তি ইসলামোফোবিয়া

ইসলামোফোবিয়ার বিস্তারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুসলিমবিদ্বেষী পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালে নির্লজ্জভাবে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের মিথ্যা অভিযোগে ইরাকে আগ্রাসন চালায়। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সব মুসলিমদেরই অপরাধী হিসেবে চিত্রিত করা হয়। যুদ্ধকেন্দ্রিক ইসলামোফোবিয়ার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে পশ্চিমা মিডিয়া। যারা ক্রমাগত মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা আগ্রাসনের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে গেছে, এখনো চালিয়ে যাচ্ছে।

ইরাক আগ্রাসনের মূলে বুশ প্রশাসন থাকলেও, এতে ডেমোক্র্যাটরা সমানভাবে সমর্থন দিয়ে গেছে। ২০১৬ সালে দলটির জাতীয় কনভেনশনে খিজির খানকে হাজির করা হয়, যার মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ছেলে ইরাক যুদ্ধে নিহত হন। ডেমোক্র্যাটরা এক মুসলিম ব্যক্তিকে কনভেনশনে হাজির করে মুসলিমবিদ্বেষী আগ্রাসনের ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ২০২০ সালের জাতীয় কনভেনশনেও ছিল ইরাক যুদ্ধের জয়জয়কার! ২০০৩ সালে বুশ প্রশাসনের আগ্রাসন চালানোর অনেক আগে থেকেই ইরাক দখলের পক্ষে জোরালো কণ্ঠস্বর জো বাইডেন এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও সামরিক বাহিনীর একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। এমনকি করোনাকালেও মার্কিন সামরিক বাহিনীর দানবীয় বাজেটে কাটছাঁটের বিপক্ষে তিনি। কমলা মার্কিন থিংক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির সঙ্গে যুক্ত। সংস্থাটি মার্কিন সমরবাদের প্রণোদনাকারী, যার মূল ভিত্তি মুসলিমবিদ্বেষ।

স্টকটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নাজিয়া কাজী বলেন, ‘যারা এই অচলাবস্থা নিয়ে হতাশ, তারা মার্কিন নির্বাচনী ব্যবস্থার বাইরে পরিবর্তনের কথা বলছেন। তারা ঋণ, যুদ্ধ, জলবায়ু ধ্বংসের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ও সংগ্রামী আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলনের কথা বলছেন, যা রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই এড়িয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাদামি চামড়া দিয়ে ইসলামোফোবিয়া ঢেকে রাখার বিরোধিতা করার এখনই সময়। প্রতিবার মার্কিন নির্বাচনের সময় আন্তরিক, চিন্তাশীল নাগরিকদের আন্দোলনে শামিল হতে হবে, কারণ এ ব্যবস্থা আর জনগণের সেবা করছে না। মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সবচেয়ে প্রতারণামূলক ও স্থায়ী এ উপাদানটিকে (নির্বাচন) আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসার এখনই সময়।’

ইসরায়েলি আগ্রাসনে সমর্থন

ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন দ্বিদলীয় ব্যবস্থার নিরঙ্কুশ সমর্থন ইসলামোফোবিয়ার আরেকটি দিক, যার মূলে রয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে ইসরায়েলি সেটেলারে বসতি নির্মাণ। এক্ষেত্রে মার্কিন নাগরিকদের ট্যাক্সে উৎপাদিত ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের সাথে আরেকটি বড় হাতিয়ার হলো ইসলামোফোবিয়া।

২০১২ সালে বিভিন্ন মার্কিন শহরে প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপনের কথা স্মরণ করা যেতে পারে, যেখানে ‘বর্বর’ জিহাদিদের বিরুদ্ধে ‘সভ্য’ ইসরায়েলিদের সমর্থন করার আহ্বান জানানো হয়। ২০১৪ সালে ইসরায়েল ‘অপারেশন প্রটেকটিভ এজ’ নামে অবরুদ্ধ গাজায় এক আগ্রাসী অভিযান চালায়, যাতে পূর্ণ সমর্থন জানায় ওবামা প্রশাসন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার ইসরায়েলি পরিকল্পনায়ও সমর্থন দেন। বাইডেন প্রশাসনও ইসরায়েলের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়েছে। 

গত মে মাসে ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৭৩ দশমিক ৫ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইসরায়েলের কাছে নতুন করে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি মার্কিন কংগ্রেসকে জানানো হয় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে।

গত বছরের মে মাসেও টানা আট দিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান ও কামান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় ৫৮ শিশুসহ ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

 বিস্তৃত হচ্ছে ‘ট্রাম্পবাদ’

ট্রাম্প যে ‘ছায়া সরকার’ চালাচ্ছেন, তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেখা যায় গত ৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার)। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওইদিন আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় নিহত মার্কিন সেনাসদস্যদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ট্রাম্প। সেখানে তার প্রশাসনের সব অবস্থানের সঠিকতা তুলে ধরেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি আফগানিস্তান থেকে যেভাবে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তার তীব্র সমালোচনা করেন। এটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ডোভার বিমান ঘাঁটি থেকে নিহত ১৩ সেনাসদস্যের মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করছিলেন। এ ঘটনার পর বেশিরভাগ সেনা পরিবারই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হয়নি। তারা বাইডেনকেই এ পরিণতির জন্য দায়ী করেছেন।

সাবেক সিআইএ পরিচালক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওসহ সাবেক প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ট্রাম্পের আফগানিস্তান নীতির সঠিকতা তুলে ধরে বাইডেন প্রশাসনের বিভ্রান্তিকর অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত নির্বাচন দুটি বিপরীত চিত্রকে তুলে ধরেছে। ভোটদাতাদের প্রায় অর্ধেক ট্রাম্প ও তার চেতনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সেই ৭১ মিলিয়ন মার্কিন জনগণ ওই সমাজেরই মানুষ, ওই দেশেরই নাগরিক। গত মার্কিন নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে–ট্রাম্পের দল সম্পদের উৎকট বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, উগ্র জাতি-বিদ্বেষ পোষণ করে, কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি ঘৃণা পুষে রাখে, নারী-বিদ্বেষে বিশ্বাস করে, নিশ্চিত করতে চায় যে, সাদা এলিটরা মার্কিন সমাজে নিজেদের দাপট বহাল রাখবে, গোটা বিশ্বের ওপর ছড়িটা ঘোরাবে কেবল তাদের দেশই। অপরদিকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি মুখে না বললেও প্রায় একই আধিপত্যের চেতনা ধারণ করে, তবে তারা উগ্রপন্থী নয়, নরমপন্থী। এসব নানা কারণেই নরমপন্থীদের বদলে ট্রাম্পের উগ্রপন্থী বিদ্বেষী চিন্তা প্রতিনিয়ত শক্তিশালী হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রশাসনের সাধারণ এবং অঘোষিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, সাবেক প্রেসিডেন্টরা জাতীয় নীতিগত বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখেন। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট-পরবর্তী অবস্থা সাবেক প্রেসিডেন্টের জন্য একটি দপ্তর, যার মেয়াদ আজীবন পর্যন্ত নির্ধারিত। সাবেক প্রেসিডেন্টরা এক ধরনের বিকল্প ক্ষমতা চর্চা করেন; কিন্তু নীতিগত বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সম্পাদক ক্রিস সিলিজ্জা বলেন, জর্জ ডব্লিউ বুশ তার মেয়াদ শেষ করে টেক্সাসে ফিরে যান এবং সেখানে চিত্রশিল্পে সময় কাটিয়েছেন। তিনি তার উত্তরসূরি বারাক ওবামা প্রশাসনের নীতিগত বিষয়ে কখনোই কোনো মন্তব্য করেননি। বিভিন্ন মহল থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও হোয়াইট হাউস থেকে বের হওয়ার পর ওবামা তার উত্তরসূরির কোনো সমালোচনা করতে রাজি হননি। ২০০০ সালে এক বিতর্কিত ভোটের লড়াইয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আল গোর ভোট পুনর্গণনার পর পরাজিত হন। এর পরও তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের অবস্থান অন্যদের থেকে ভিন্ন। তিনি নির্বাচনে জালিয়াতির ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়িয়েছেন, ঐক্যের বদলে বিভক্তির রেখা আরও গাঢ় করেছেন।

ব্রিটিশ কলামিস্ট ও রাজনীতিক বিশ্লেষক ওয়েন জোন্স দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় এক কলামে লিখেছেন, “করোনাভাইরাস না থাকলে ট্রাম্প নিঃসন্দেহে আরেক দফা প্রেসিডেন্ট হয়ে শ্বেত ঘরের হর্তা হয়েই থেকে যেতেন। সম্ভবত বেহাল মার্কিন গণতন্ত্রকে এক প্রজন্ম বা তারও বেশি সময়ের জন্য ধূলিসাৎ করে দিতেন তখন! এবার তার বিরোধীদের একচেটিয়া জয় পাওয়ারই কথা ছিল। তবে ভোটে ট্রাম্প পরাজিত হলেও ‘ট্রাম্পবাদ’ ঠিকই বেঁচে থাকবে।”

অভ্যন্তরীণ ও ভূরাজনীতি মোকাবেলায় গণতন্ত্রের দীক্ষা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের 'গণতন্ত্র সম্মেলন' নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনা চলছে। ডিসেম্বরের ৯ ও ১০ তারিখ এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১১০টি দেশ সেখানে অংশগ্রহণ করে।

দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশ আমন্ত্রণ পেলেও বাংলাদেশকে ওই সম্মেলনে ডাকা হয়নি। ন্যাটোর মিত্র হওয়া সত্ত্বেও তুরস্ক এবং হাঙ্গেরি যেমন বাদ পড়েছে, তেমনি চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা পাকিস্তানকে ঠিকই সম্মেলনে ডাকেন জো বাইডেন। তবে চীনের কারণে পাকিস্তান ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেনি। ফিলিপাইনও অংশ নেয়নি। যে ১১২টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, সেখানে গণতান্ত্রিক চর্চা যতটা না গুরুত্ব পেয়েছে, তারচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে ভূ-রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ এবং মার্কিন রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সম্মেলন একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ। মার্কিন শাসকরা গণতন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে আগে থেকেই। এই সম্মেলনের মাধ্যমে বৈশ্বিক গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইস্যুতে তাদের যে ঘাটতি ছিল, সে জায়গা থেকে তারা উত্তরণের চেষ্টা করছে। মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়ে তাদের যে অবস্থান তা বিশ্বব্যাপী প্রচার করতে চাইছে তারা। চীনকে কেন্দ্র করে বাইডেন সরকারের যে ভূরাজনীতিও জানান দিচ্ছে এই সম্মেলন।

এই সম্মেলন মূলত দর্শনগত, মতবাদিক এবং ভূরাজনীতি–তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সংমিশ্রণ। এখানে বাইডেন একদিকে মার্কিন রাষ্ট্রের চর্চিত গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্রবাদের মোকাবেলা করছেন; অপরদিকে চীনের মোকাবিলায় অন্যান্য দেশগুলোকে সঙ্গী করতে চাইছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানত্য চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের জন্যই বাংলাদেশ ওই সম্মেলনে ডাক পায়নি। তবে একদিক দিয়ে এটি বাংলাদেশের জন্য খারাপ হয়নি। ডাক পেলে সেখানে যোগ দেবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হতো। আর ডাক পেয়ে সেখানে যোগ দিলে চীনকে বিরাগভাজন করার সম্ভাবনাও ছিল।

গণতন্ত্রের বিভিন্ন সংস্করণে মার্কিন ধাঁচের গণতন্ত্রের প্রভাব বিস্তৃতি এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ট্রাম্পের উগ্রবাদ মোকাবিলায় বাইডেন এমন সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছেন বলেই মন্তব্য বিশ্লেষকদের।

গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ দৃষ্টান্ত নয়। আমন্ত্রিত নেতারা সম্মেলনে যোগ না দিলে মার্কিন রোষানলে পড়তে হতো । আর তারা কারও ওপর বেশি বিরক্ত হলে সেখানে সামরিক আগ্রাসন চালানোও অবাক করা কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে নিজেদের মতো করে গণতন্ত্রের ভাষ্য তৈরি করে চলেছে। গণতন্ত্রের নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করাও একটি সাধারণ বিষয়।

শঙ্কিত গণতন্ত্র

মার্কিন ধাঁচের গণতন্ত্রের মধ্যে রয়েছে গভীর দ্বন্দ্ব। প্রকৃত গণতন্ত্রকে সংখ্যাগরিষ্ঠদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের ভরসাস্থল হতে হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সামাজিক ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং একটি সুষ্ঠু জীবনই হবে গণতন্ত্রের সারবস্তু। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, মার্কিন প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র এমন রাজনীতিবিদদের জন্ম দেয়, যারা নিছক নিজেদের স্বার্থে কথা বলেন।

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক নোম চমস্কির মতে, আমেরিকার গণতন্ত্র সম্পর্কে অনেক মিথ চালু রয়েছে। সেখানে প্রকৃত অর্থে সর্বজনীন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বর্তমান বাস্তবতা হলো–সেখানে গণতন্ত্র খুবই আক্রান্ত; সেখানে রয়েছে করপোরেটোক্র্যাসি–বৃহৎ করপোরেশন, লবি, আমলাতন্ত্র এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার মিলিত রূপ। যে ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত ও শাসিত হয় করপোরেটদের দ্বারা। আর তা টিকিয়ে রাখতে, এমনকি বিশ্বব্যাপী আগ্রাসন চালাতে জনগণের সম্মতি উৎপাদন করা হয়। এ ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা থাকে মিডিয়ার। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ জনগণ শত বিভক্তির পরেও এই ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে উদ্ধত হয় না।

এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক হাওয়ার্ড জিন তার বিখ্যাত ‘দ্য কামিং রিভোল্ট অব দ্য গার্ডস, আ পিপলস হিস্টোরি’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘একটি অতি-উন্নত সমাজে, ব্যবস্থাপনা (establishment) কোটি কোটি জনগণের বাধ্যতা ও আনুগত্য ছাড়া টিকে থাকতে পারে না, যাদের ছোট ছোট অবদানে এই ব্যবস্থা বেঁচে থাকে–সেনা আর পুলিশ, শিক্ষক আর মন্ত্রী, প্রশাসক আর সমাজকর্মী, কারিগর আর উৎপাদক শ্রমিক, ডাক্তার, আইনজীবী...তারা এই ব্যবস্থার রক্ষকে পরিণত হয়েছেন, যারা উচ্চ ও নিম্নশ্রেণির মাঝের সংযোগকারী। তারা বাধ্য না থাকলে এই ব্যবস্থাও ধসে পড়বে।’

 

এসএ/এমএমএ/

Header Ad

মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিসিবি সভাপতির হঠাৎ বৈঠক, অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন!

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগের চারটিতে হেরেছে সিকান্দার জিম্বাবুয়ে। তবে আজ শেষ ম্যাচে সান্ত্বনার জয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হোয়াইটয়াশ ঠেকিয়েছে সিকান্দার রাজার দল। এদিকে মাঠে খেলা গড়ানোর আগে যখন ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি সারছিলেন; সে সময় অফিসিয়াল প্রেস কনফারেন্স ছাড়া মাঠের বাইরে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

শুধু তাই নয় এর বাইরেও বড় ঘটনা ঘটেছে হোম অব ক্রিকেটে অবস্থিত বিসিবি অফিস বিল্ডিংয়ে। সভাপতির কক্ষে বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের এক নীতি নির্ধারনী বৈঠকে বসেছিলেন বোর্ডের ১০ শীর্ষ কর্তা। সেই অনির্ধারিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন, সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন, সিনিয়র পরিচালক জালাল ইউনুস, অন্যতম পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক, খালেদ মাহমুদ সুজন, ইফতেখার রহমান মিঠুসহ কয়েকজন।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং বোর্ডের ৮- ৯ জন শীর্ষ পরিচালক বৈঠকে বসেছিলেন একজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে নিয়ে।

জানা গেছে, বিসিবি সভাপতির কক্ষে একান্ত বৈঠকটি হয়েছে মূলত বোর্ড শীর্ষ কর্তা আর অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াাদের মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ কী এমন হলো যে, মাহমুদউল্লাহর সাথে বোর্ড নীতি নির্ধারকদের বৈঠক?

প্রেস বক্সে চাপা গুঞ্জন, প্রাণচাঞ্চল্য। এরই মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লো যে, নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং ফর্ম ভালো যাচ্ছেনা। বিসিবি সভাপতি পাপনও শান্তর ব্যাটিং নিয়ে খানিক অতৃপ্ত। তাই হয়তো শান্তর বদলে মাহমুদউল্লাহকে বিশ্বকাপে অধিনায়ক করার কথা ভাবছে বিসিবি। সেজন্যই রিয়াদকে ম্যাচ শেষে প্রেসিডেন্ট রুমে ডেকে নিয়ে একান্তে বসা।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ব্যাপারটা তা নয়। শান্তর ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে যে কথা হয়নি, তা নয়। তবে অধিনায়ক রদবদলের কথা আলোচনা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন শীর্ষ পরিচালক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, না, না। এ সময়ে এসে হঠাৎ অধিনায়ক পদে পরিবর্তন করা হবে কেন? শান্তর ক্যাপ্টেন্সি বদল নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

ওই দুই পরিচালক জানান, আসলে রিয়াদ ভালো খেলেছে। এই বয়সেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে চলেছে। আজ প্রায় একাই লড়াই করেছে। তাই তাকে বাহবা দিতেই সঙ্গে নিয়ে বসা।

জানা গেছে, মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন বোর্ড পরিচালকরা। বিসিবি প্রধানও মাহমুদউল্লাহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং এখনই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা বা ঘোষণা না দেওয়ার পরামর্শও নাকি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অধিনায়ক শান্তকে সহায়তা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বর্ষীয়ান এই ক্রিকেটারকে।

অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির পরীক্ষা

অন্তর্বাসে লুকানো ডিভাইসের সাহায্যে চাকরির পরীক্ষা, গ্রেপ্তার ৭। ছবি: সংগৃহীত

মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকতো অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস। একই সঙ্গে কানেক্ট করে পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল। প্রশ্নপত্রের উত্তর সমাধানের জন্য বাইরে থেকে কাজ করত আরেকটি চক্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর জানিয়ে দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের।

বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ করার সংঘবদ্ধ এই চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. জুয়েল খান (৪০), মো. রাসেল (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল (৩৯), মো. আব্দুর রহমান (৩৮), মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫), মো. আজহারুল ইসলাম (২৯) এবং মো. মাসুম হাওলাদার (২৫)।

শনিবার (১১ মে) তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ১০ টি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, ৭ টি মোবাইল ফোন ও ১০ টি সিম কার্ড এবং ১টি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।

চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছবি: সংগৃহীত

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় পত্রফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর সাপ্লাই করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রথমত তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্রে ম্যানেজ করে প্রশ্নের কপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের প্রশ্নপত্র সমাধান টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সমাধান করে ফেলে। এরপর তারা উত্তরগুলো বলতে থাকে।

হারুন অর রশীদ বলেন, পরীক্ষার্থীর কাছে যে ক্ষুদ্র ডিভাইস থাকে সেটা পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে থাকে। আর পকেটের মধ্যে একটা রাউটার থাকে। অথবা মেয়েদের অন্তর্বাসের বা ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড একটা সিম রাখে। এরপর বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করে সাথে সাথে পরীক্ষার্থী শুনতে পায় এবং ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরগুলো সমাধান করে ফেলে।

ব্রিফ করছেন ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, দিন দিন এভাবে অপরাধের ধরন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এক সময় আমরা নকল প্রতিরোধের জন্য কাজ করেছি। সে সময় তারা পরীক্ষার হলে বই নিয়ে যেত। আমরাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে ধরার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছি। এখন সর্বশেষ আমরা যেটা পেলাম সেটা হচ্ছে তারা ক্ষুদ্রাকৃতির বল ব্যবহার করছে এবং ডিভাইসটা এমন জায়গা রাখছে যেখানে ধরার কোন উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কালেক্টর (গ্রেড-২) ও বুকিং অ্যাসিসটেন্ট (গ্রেড-২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ আরো বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় এ পন্থা অবলম্বন করেছে।

জব্দকৃত অন্তর্বাস, গেঞ্জি, ডিভাইস, মোবাইলফোন। ছবি: সংগৃহীত

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে, গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে। চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

ডিবিপ্রধান বলেন, চক্রের মূলহোতা জুয়েল খান বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যান্যদের সাথে সমন্বয় করতেন। রাসেল, মাহমুদুল হাসান শাকিল এবং আব্দুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহার বিধি শিখিয়ে দিতেন।

তিনি আর বলেন, আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের অভ্যন্তর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধামতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এরপর তাদের সমাধান টিম অতিদ্রুত সেই প্রশ্নপত্র সমাধান করে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল স্পাই ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো।

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ‌্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সীমান্তের ৪৮ নম্বর পিলারের ওপারে আরাকান আর্মির গুলিতে আবুল কালাম (২৮) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।

রবিবার (১২ মে) সকাল ৯টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৮নং পিলারের ওপারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কালাম নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বামহাতিরছড়ার মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রোববার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সীমান্তের ৪৮নং পিলারের ওপারে ছেলির ঢালা নামক এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে আবুল কালাম।খাদ্যসামগ্রী বুঝে দিয়ে ফেরার পথে আরকান বিদ্রোহীদের দখলকৃত আরাকান আর্মির ঘাঁটি বরাবর এলে তখন আরাকান আর্মির ডিউটিরত এক সদস্য চাঁদা ফাঁকি দেওয়ার বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আরকান আর্মির সেই দায়িত্বরত সদস্য আবুল কালামের মাথায় গুলি করে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আবুল কালাম নিহত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে, সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার শামশুল আলম জানান, নিহত আবুল কালাম আমার এলাকার। তার লাশটি ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরাও বিষয়টি শুনেছি। এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

সর্বশেষ সংবাদ

মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিসিবি সভাপতির হঠাৎ বৈঠক, অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন!
অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির পরীক্ষা
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
বিএনপিকে নিশ্চিহ্নে ক্র্যাকডাউনের পরিকল্পনা করছে সরকার: রিজভী
নওগাঁয় ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু কাল, আবেদন করবেন যেভাবে
ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি হাতিয়ে নিতো চক্রটি
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির
মারা গেলেন প্রথম শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনকারী সেই ব্যক্তি
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ: অধ্যক্ষের অপসারণ চান শিক্ষক-কর্মচারীরা
চামড়া ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে: শিল্পমন্ত্রী
গোবিন্দগঞ্জে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
উড়ন্ত বিমান থেকে লাফ দেওয়ার হুমকি যাত্রীর, তারপর...
রাজশাহীর কোন আম কবে বাজারে আসবে জানালো জেলা প্রশাসন
আমরা যে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছি তা এখানেই সীমাবদ্ধ না: নৌপ্রতিমন্ত্রী
এসএসসিতে ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল
বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন ভেঙে সান্ত্বনার জয় পেল জিম্বাবুয়ে
বিয়ে করছেন ‘বিগ বস’ তারকা আবদু রোজিক
এসএসসিতে কোন বোর্ডে পাসের হার কত