
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ লাখ ৪৩ হাজার ডলার অনুদান সংগ্রহ
২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৯ পিএম | আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩, ০৪:৩৬ এএম

গত মাসে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অনেকেই। ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে ডেনমার্কে বসবাসরত তুর্কিরা। তাদের সহায়তায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ২০০ ডলার ত্রাণ সংগ্রহ করেছে ডেনিশ-তুর্কিরা।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি পুরো বিশ্বের সংহতি, শোক বেড়েই চলছে। ডেনমার্কে অভিবাসী তুর্কিরা তাদের মাতৃভূমি ও স্বজনদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ডেনমার্কের অহুস শহরের একটি স্থানীয় তুর্কি সমাজের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত মসজিদের মাধ্যমে স্থানীয় অভিবাসীরা ত্রাণ সংগ্রহ করেছেন। মসজিদ কমিটি, স্থানীয় তুর্কি অভিবাসী ও ডেনিশ সম্প্রদায় মিলে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ মিলিয়নের বেশি ডেনিশ ক্রোনার বা ১ লাখ ৪৩ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছেন।
‘আমরা ভূমিকম্পের শিকার ও বেঁচে যাওয়াদের চেয়ে অনেক মাইল দূরে থাকতে পারি, কিন্তু তারা সব সময় আমাদের সবার হৃদয় ও নামাজে থাকেন’, বলেছেন মসজিদের একজন প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্বে নিয়োজিত দোভুত আতামান। তিনি আরও বলেছেন, ‘কোনো কিছু এখানে না হলেও আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবন পরিচালনা করতে পারি না।’
মসজিদ কমিটির আবেদনগুলোর প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণ, যাদের মধ্যে তুর্কিদের সঙ্গে পুরুষানুক্রমে যুক্ত নন এমনরাও নিয়মিত এসেছেন ও অনুদান দিয়েছেন।
আতামান জানিয়েছেন, দুজন মানুষ একের পর পর এক স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন ও ডেনিশরাসহ এখানকার সব মানুষের আগ্রহ নিয়ে সাহায্য করার কারণে তাদের এজন্য কোনো বড় ধরনের সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমেও আবেদন জানিয়েছি যে, হাতে-হাতে আমাদের কাছে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করুন। ফলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা ১ মিলিয়নের বেশি ডেনিশ ক্রোনার তুলে ফেলতে পেরেছি। আমাদের আরও দেওয়া হয়েছে আড়াই হাজার কম্বল।’
মসজিদ কমিটির নারী সম্পর্কিত বিভাগের প্রধান দোভুত আতামানের স্ত্রী এসমা আতামান গত ৩৮ বছর ধরে ডেনমার্কে বসবাস করেন। তিনি বলেছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি ভূমিকম্পের প্রবল আঘাতের কথা শুনেই তারা নিহত ও আহত এবং সব হারানো মানুষদের সাহায্য করতে তাদের সম্প্রদায়ের মাধ্যমে দ্রুত কাজে নেমেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মসজিদে ৯ জন মানুষ ছিলাম। দ্রুত একটি মিটিং করলাম আমরা কী করতে পারি সেই আলোচনাগুলো করতে এবং কীভাবে আমরা তুরস্কের মানুষদের আমাদের সেরা সাহায্য করতে পারি জানতে। এটি ছোট আকারে শুরু হয়েছিল। প্রতি বুধবার আমরা বাড়িতে বানানো সকালের নাস্তা মসজিদের সামনে বিক্রি করতাম বিনিময়ে অনুদান পাব বলে। এরপর আমরা বিরাট ফান্ডরাইজার কার্যক্রম করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বারবার আবেদন করেছি।’
তাদের স্লোগান ছিল-‘একটি হৃদয়, একটি জাতি।’ এর মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবীরা খাবারগুলো অনুদানের বিনিময়ে বিক্রি করতেন। এসমা আতামান জানিয়েছেন, ‘আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।’
এই অনুদানের সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি ছিলেন তুর্কি-ডেনিশ ছাত্র-ছাত্রীরা। তারাই খাবারের স্টলগুলো দিয়েছেন এবং পুরো সমাজের মানুষকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজটিতে আগ্রহী করেছেন।
দোভুত আতামান বলেছেন, ‘রমজানে আরও বিপুল পরিমাণ অনুদান তুলতে পারবেন ও মসজিদ এবং তুরস্কের অভিবাসীরা আরও সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।’
ওএফএস/