রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

পুতিনের পাশে শি, প্রশ্নবিদ্ধ মার্কিন হুমকি

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। আর এ অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের পথে রাশিয়া অনেকটাই নির্ভর করছে চীনের উপর। রাশিয়াকে সমর্থন ও আর্থিক সাহায্যের কথা আগেই নিশ্চিত করেছে চীন। চীন পাশে থাকলে যে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না, তা যুক্তরাষ্ট্রের অজানা নয়। এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তাই হুমকি দেওয়ার পথে এগিয়েছে তারা। তবে বিশ্বের দুটি অন্যতম প্রধান পরাশক্তিকে দেওয়া হুমকি কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ।

রাশিয়াকে একঘরে করার মার্কিন তৎপরতা হালে পানি পাবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। আর এ ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন। অর্থনৈতিক ব্যাপ্তিতে যা যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়ার কথা ইতিমধ্যে চীন জানিয়ে দিয়েছে। আর এতে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গঠনের প্রশ্নটিও জোরালোভাবে সামনে এসেছে। এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল মানচিত্রে যুক্ত করে নেয়, তখনও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ধার কমে গিয়েছিল চীনের সহযোগিতায়।

মার্কিন হুমকি

পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এবার যুক্তরাষ্ট্র চীনকে সরসারি হুমকি দেওয়ার পথ নিয়েছে। ইতালির রাজধানী রোমে চীনের অন্যতম প্রভাবশালী কূটনীতিক ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে এক বৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রধান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান খোলাখুলি হুমকি দিয়েছেন–নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাশিয়াকে সাহায্যের চেষ্টা করলে চীনকে অবশ্যই এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে আমরা বলেছি, নিষেধাজ্ঞা ভাঙার বড় কোনো প্রয়াস দেখা গেলে অবশ্যই তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা ভাঙার কোনো চেষ্টা বিশ্বের কোথাও আমরা সফল হতে দেব না।’

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক পর্যায়ের বৈঠকটি সাত ঘণ্টা দীর্ঘ ছিল। দীর্ঘ এই বৈঠকে এই সময়ের নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোমের বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যোগাযোগ উন্মুক্ত রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর আগে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের এক সাক্ষাৎকারে সুলিভান বলেছিলেন, চীন যদি রাশিয়াকে সমর্থন করে, তবে চীনকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বেশ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, চীন রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দিতে ইচ্ছুক এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

তবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও চীনের সামরিক সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের জানান, ‘চীন কিংবা অন্য কোনো দেশ রাশিয়াকে সহায়তা করছে কি না, বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমরা স্পষ্ট বলছি, প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে মস্কোকে সমর্থন করলে বেইজিংকে ফল ভোগ করতে হবে।’

সাংহাইতে বিবিসির সংবাদদাতা রবিন ব্রান্ট বলছেন রাশিয়া চীনের কাছে সাহায্য চাইছে এ কথা খোলাখুলি বলা আমেরিকার একটি কৌশল, যার উদ্দেশ্য চীনের উপর চাপ তৈরি করা। ‘যাতে চীনকে হয় অস্বীকার করতে হয় অথবা স্বীকার করতে হয়।’

দৃঢ়তার পরীক্ষায় চীন-রাশিয়া সম্পর্ক

গত দুই দশক ধরে চীন এবং রাশিয়ার কৌশলগত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার হুমকি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কীভাবে মোকাবিলা করবেন, এ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাকে।

চীন এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করেনি। একাধিকার বলেছে নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ বৈধ এবং তাকে বিবেচনায় নিতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদে এবং পরে সাধারণ পরিষদের রাশিয়াকে নিন্দা করে আনা প্রস্তাবের পক্ষে তারা ভোট দেয়নি। তবে অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক এখন বলছেন ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলায় ভেতরে ভেতরে চীন অস্বস্তিতে। কারণ নীতিগতভাবে কোনো দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন জানায় চীন, অথচ এই হামলা তার উল্টো। ইউক্রেনে মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এটি চীন জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

গবেষণা সংস্থা রোয়ি ইন্সটিটিউটের গবেষক রিচার্ড ম্যাকগ্রেগর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলেছেন, গত দু সপ্তাহে ধরে বেইজিংয়ের কাছ থেকে আসা শব্দ এবং বাক্যে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় চীন খুব ধীরে মস্কোর কাছ থেকে একটি দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের মানবিক পরিস্থিতি চীনকে অস্বস্তিতে ফেলছে। তবে বেইজিংয়ের মূল বার্তা এখনো অপরিবর্তিত–এই যুদ্ধের আসল দায় আমেরিকার। চীনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার মন্তব্যে তা খুবই স্পষ্ট।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র হিসাবে পরিচিত গ্লোবাল টাইমস প্রায় প্রতিদিনই ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কিত তাদের রিপোর্ট, মন্তব্য প্রতিবেদন বা সম্পাদকীয়তে ঘুরেফিরে এই সংকটের জন্য আমেরিকাকে দায়ী করছে। পত্রিকাটি রবিবার তাদের এক উপসম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘মস্কো, কিয়েভ, প্যারিস এবং বার্লিন যেখানে দুই পক্ষকে মুখোমুখি বসানোর জন্য কূটনৈতিক চেষ্টা করে চলেছে, তখন সেখানে ওয়াশিংটন ক্রমাগত অস্ত্র জুগিয়ে চলেছে যাতে সংঘাত অব্যাহত থাকে।’ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কীভাবে অস্ত্র যোগাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সূত্রে তার একটি হিসাবও তুলে ধরা হয়েছে।

চীন ও রাশিয়ার মধ্যে যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে তা ধরে রাখতে চীন উদগ্রীব, কারণ এর পেছনে আবেগ বা অন্য কোনো কিছুর চেয়ে রয়েছে বাস্তব স্বার্থ। চীনের জ্বালানি, খাদ্যশস্য এবং অস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ জোগানদাতা রাশিয়া।

গবেষক রিচার্ড ম্যাকগ্রেগরের মতে, বিশ্বে, বিশেষ করে ইউরোপ এবং এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খাটো করার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে দুই দেশেরই। তা ছাড়া যদি কখনো তাইওয়ান প্রশ্নে রাশিয়ার সমর্থন দরকার হয়, সেটিও চীনের অন্যতম একটি বিবেচনা।

তবে শি জিনপিং একটি ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছেন। পুতিনের সরাসরি সমালোচনা তিনি হয়তো করছেন না, কিন্তু মানবিক দুরবস্থা লাঘবে ইউক্রেনে সাহায্য পাঠিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেছেন, কিন্তু ইঙ্গিত দিয়েছেন চীনা কোম্পানিগুলো নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে না।

গত ১৫ ডিসেম্বর (বুধবার) প্রায় ৯০ মিনিট ভিডিও কলে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রাশিয়া এবং চীনের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলির বিরুদ্ধে সরব হন দুই নেতা। এরপর ইউক্রেন ইস্যুতে যখন গোটা বিশ্ব শঙ্কিত, তখন শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চলতি মাসের শুরুতে চীন সফর করেন পুতিন। এ সফরে চীনে অতিরিক্ত ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারিতার মুখে আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে চীন ও রাশিয়ার অবস্থান এক বলে আলোচনায় একমত হয় উভয় পক্ষ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলায় পরস্পরকে সমর্থনেরও অঙ্গীকার করেন শি-পুতিন।

সিঙ্গাপুরের এস. রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেন, ‘তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে চীন যেমন রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা করে না, রাশিয়ার চাওয়াও ঠিক তেমন। ইউক্রেন আগ্রাসনে চীনের কাছে রাশিয়ার কোনো সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা নেই। বরং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থনই তাদের জন্য বেশি জরুরি।’

রুশ-চীন সম্পর্ক ২০১৪ সালের চেয়ে অনেকটাই এগিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। কারণ ওই সময়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে একীভূতকরণের স্বীকৃতি না দিতে নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল চীন। তবে ক্রিমিয়া দখলে নেওয়ার পর চীনা উন্নয়ন ব্যাংক ও এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নাসহ দেশটি কয়েকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়েছিল।

ইউক্রেন সংকটে কোনো অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে চায় না চীন। তবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোও। তবে দুই পরাশক্তিকে বিচ্ছিন্ন রেখে যে বিশ্ব অর্থনীতি সুস্থির থাকতে পারবে না তা বলাই বাহুল্য। সেই সঙ্গে নতুন মেরুকরণও সহজেই সামনে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন বিশ্বব্যবস্থায় পুতিন-শি নেতৃত্ব

রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত চিন্তাবিদ এবং পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিওদর লুকিয়ানভের মতে, এক মেরু কেন্দ্রিকতার মধ্য দিয়ে মার্কিন আধিপত্যের নব যুগের সূচনা হয় ১৯৯১ সালের পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় সাদ্দাম হোসেনের ইরাককে কুয়েত থেকে হটিয়ে দেওয়ার জন্য একটি বিশ্ব জোট গঠন করে।

১৯৯০-এর দশকে বসনিয়া এবং কসোভোসহ বিশ্বজুড়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের পরপরই সূচনা হয় উপসাগরীয় যুদ্ধের। ১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে ন্যাটোর বোমাবর্ষণকে কেন্দ্র করে রাশিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বলছে যে ন্যাটো নিছক প্রতিরক্ষা জোট নয়, এটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক যুদ্ধবাজ গোষ্ঠী। বেলগ্রেডের চীনা দূতাবাসে ন্যাটো বোমা হামলার ঘটনাও বেইজিং ভুলে যায়নি।

একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করা রাশিয়া এবং চীনের জন্য কেবল শক্তি প্রদর্শনের বিষয় না। এটা আদর্শের লড়াইও। পশ্চিমা উদারনৈতিক ব্যবস্থা সর্বজনীন মানবাধিকারের বক্তব্য প্রচার করে। তবে তা যে কার্যত সর্বজনীন না, সেটি আজ খুব স্পষ্ট। এর বিপরীতে রাশিয়া এবং চীনের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের তাত্ত্বিকদের দাবি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সভ্যতাকে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।

বেইজিং এবং মস্কো যুক্তি দেখায় যে, বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রয়োজন মনে করলে অন্য দেশের ওপর গণতন্ত্র ও মানবাধিকার চাপিয়ে দিতে পারে আমেরিকা। এ জন্য দরকার হলে সামরিক হস্তক্ষেপেও দ্বিধা করে না তারা। এর বিপরীতে রাশিয়া এবং চীন যে নতুন বিশ্বব্যবস্থার দাবি করছে সেখানে এমন বল প্রয়োগের বদলে স্বতন্ত্র প্রভাব বলয়গুলো সুচিহ্নিত থাকবে। নিজ নিজ প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর রাশিয়া এবং চীনের আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্র মেনে নেবে। পাশাপাশি পুতিন বা শি সরকারকে হুমকির মুখে ফেলতে কোনো আন্দোলনকে সমর্থন করাও ওয়াশিংটন ত্যাগ করবে।

শেনজেনভিত্তিক চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক ঝেং ইয়াংজিয়ান বলেন, ‘আমরা যদি বড় কোনো কৌশলগত ভুল না করি তাহলে চীনের আধুনিকায়নের যাত্রা ব্যাহত হবে না। বরং, নতুন একটি বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ার ক্ষেত্রে চীনের সক্ষমতা এবং ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি তাদের স্বার্থের সঙ্গে পরিবর্তনশীল, তা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের রাজতান্ত্রিক বন্ধুদের দেখলেই বোঝা সম্ভব। সেখানে গণতন্ত্রের বালাই নেই। এ নিয়ে মুখে কোনো কথা নেই মার্কিন কথিত উদারনীতির ধারকদের। এর বিপরীতে রাশিয়া ও চীনের সাম্প্রতিক হৃদ্যতা নতুন মেরুকরণের বাস্তবতাই তুলে ধরছে। দেশ দুটির সামরিক সহায়তার প্রয়োজন তুলনামূলক কম। তবে তাদের প্রয়োজন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন। ইউক্রেন বা তাইওয়ান ইস্যু এক নিমিশেই শেষ হচ্ছে না। আর তাই দেশ দুটির ঘনিষ্টতা পশ্চিমাদের জন্য নিশ্চিতভাবেই মাথাব্যথার কারণ। ইউক্রেনের সংকট কার্যত গোটা ভবিষ্যৎ বিশ্বব্যবস্থার লড়াই। আর এ ক্ষেত্রে মার্কিন হুমকি চীনের ক্ষেত্রে খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এমন এক বিশ্ববাস্তবতায় নতুন বিশ্বব্যবস্থার বিষয়টি প্রধান হয়ে উঠেছে। যার কুরুক্ষেত্র এখন ইউক্রেন।

এসএ/জেডএকে/

Header Ad

এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ জানাল বোর্ড

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ৯ থেকে ১১ মের মধ্যে প্রকাশিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তপন কুমার সরকার বলেন, ‘ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৯, ১০ ও ১১ মে-এই তিনটি তারিখের মধ্যে যে কোনো এক দিন ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ওপর।’

সাধারণত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সে হিসাবে, মে মাসের ১১ তারিখের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার কথা।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।

এবার সারা দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় এ বছর মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্র ১ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৬ জন। সারাদেশের ৯ হাজার ৬৭৯টি মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা ৭১৮টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা দেয়।

এছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ২০২৪ সালে মোট পরীক্ষা দিয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৩১ জন, ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। সারা দেশের ২ হাজার ৮৭৭টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৭০৯টি কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জে চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার

চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঠান্ডার পরশ নিতে চোরাবালিতে আটকে পড়া অপূর্ব বিশ্বাস নামের এক কিশোরকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গোবিন্দগঞ্জে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাকে উদ্ধার করে। অপূর্ব বিশ্বাস পৌর এলাকার বোয়লিয়া গ্রামের সুকুমার বিশ্বাসের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে তার সঙ্গীদের সাথে নিয়ে খেলার সময় নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে একটি পাইলিং কাদা পানিতে খেলা করছিল এসময় অপূর্ব বিপদজ্জনক ভাবে পাইলিংয়ের চোরাবালিতে আটকে যায়। এক পর্যায়ে সে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাকে চোরাবালি থেকে উদ্ধার করে।

গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের টিম লিটার আতিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উদ্ধার করা অপূর্ব বিশ্বাসকে সুস্থ করে তার পরিবারের কারে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চাকরি ছেড়ে বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে নাচানাচি, ভিডিও ভাইরাল

ছবি: সংগৃহীত

কর্ম পরিবেশকে বিরক্তিকর উল্লেখ করে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভারতের পুনের এক ব্যক্তি। বিক্রয় সহযোগী হিসেবে কাজ করা অঙ্কিত চাকরি ছেড়েই বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। এ ঘটনার দৃশ্য ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেন তারই বন্ধু জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর আনিশ বাগাত।

ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, এ ধরনের ঘটনা সামনে আরও দেখা যাবে, কর্ম পরিবেশ দিন দিন অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে। কারণ কর্মপরিবেশ ভালো না হলে চাকরি করা কঠিন।

বাগাত বলেন, তিন বছর ধরে কর্মপরিবেশ নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন অঙ্কিত। ইনস্টাগ্রামে ওই ভিডিও শেয়ার করে অঙ্কিত বলেন, বসের কাছে আমার কোনো সম্মান ছিল না। মধ্যবিত্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে এতদিন চাকরি করতে হয়েছে।

অঙ্কিত তার অফিসের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বন্ধু বাগাতের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাগাতই তাকে অফিসের বাইরে ঢোল বাজানোর পরামর্শ দেয়। যখন ওই অফিসের ম্যানেজার বাইরে বের হন তখনই অঙ্কিতের বন্ধুরা ঢোল বাজাতে শুরু করে। ম্যানেজার এ দৃশ্য দেখে রেগে গিয়ে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন।

 

 
 
 
View this post on Instagram

A post shared by Anish Bhagat (anishbhagatt)

হারাপ্পা ইনসাইডের ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মী বান্ধব বস এবং কর্মপরিবেশ ভালো না হলে অনেকে চাকরি ছেড়ে দেন। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বসের খারাপ ব্যবহারের কারণে প্রায় ৫৮ শতাংশ কর্মী চাকরি ছাড়েন।

সর্বশেষ সংবাদ

এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ জানাল বোর্ড
গোবিন্দগঞ্জে চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার
চাকরি ছেড়ে বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে নাচানাচি, ভিডিও ভাইরাল
টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন, হিটস্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
৬০ বছর বয়সে সেরা সুন্দরীর খেতাব, কে এই আর্জেন্টাইন নারী?
গোবিন্দগঞ্জে দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
হজের প্রথম ফ্লাইট ৯ মে
স্বর্ণের দাম আরও কমলো
আজও দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা
মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার জিতল বাংলাদেশের সিনেমা
বনানীতে সড়কের মাঝে চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন
টাঙ্গাইলে ইসতিসকার নামাজ শেষে মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল তিন বিদেশি শক্তি: জিএম কাদের
উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকা: রিজভী
চিফ হিট অফিসার একটি টাকাও বেতন নেন না: মেয়র আতিক
বৃষ্টি নিয়ে সুখবর দিলো আবহাওয়া অফিস
বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল একই পরিবারের ৩ জনের
সরকারি স্কুল খুলছে রোববার, শ্রেণি কার্যক্রম চলবে যেভাবে
শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির আশায় নওগাঁয় ইসতিসকার নামাজ
জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে তিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ