শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

যে কারণে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি

চরম এক সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে এখন শুধু হাহাকার। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে কখনো এতোটা দুরাবস্থায় পড়েনি দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সঙ্কট বেসামাল করে তুলেছে দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে। জ্বালানী তেল এবং খাদ্য কেনার জন্য উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে সাধারণ মানুষ।

বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছে না। জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশছোঁয়া।

কাগজের অভাবে দেশটির স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারণ, কাগজ আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা তাদের কাছে নেই।

জ্বালানী তেলের তীব্র সঙ্কট তৈরি হয়েছে দেশটিতে। তেল সংগ্রহের জন্য হাজার-হাজার মানুষ লাইনে ভিড় করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার। কারণ, জ্বালানী তেল আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলঙ্কার কাছে।

ইরানের কাছ থেকে জ্বালানী তেল আমদানি বাবদ আড়াই শ’ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চা ইরানে রফতানি করবে দেশটি। এভাবে ধীরে ধীরে সে টাকা পরিশোধ করা হবে।

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প:

গত ১৫ বছরে শ্রীলঙ্কা বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, রাস্তা এবং আরো নানা ধরণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

রাজধানী কলম্বোর কাছেই সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধার করে কলম্বো পোর্ট সিটি নামে আরেকটি শহর তৈরি করা হচ্ছে। এর কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২৫ বছর এবং বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার।

বলা হয়, হংকং, দুবাই এবং সিঙ্গাপুরকে টেক্কা দেবে নতুন এই শহর। চীনের সাথে একত্রিত হয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শ্রীলঙ্কা।

দেশটির বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে শ্রীলঙ্কা ঋণ নিয়েছে। বিপুল অর্থ খরচ করা হলেও অনেক প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়নি।

কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রিমাল আবিরত্নে বিবিসি বাংলাকে বলেন, কিছু বড় বড় প্রকল্প শ্রীলঙ্কার জন্য 'শ্বেতহস্তীতে' রূপান্তরিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর।

অধ্যাপক আবিরত্নে বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ তেমন একটি হয়নি। বিদেশি বিনিয়োগের পরিবর্তে বিভিন্ন সরকার ঋণ করার প্রতি মনোযোগী হয়েছে।

গত এক দশকে চীনের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কা ঋণ নিয়েছে পাঁচ বিলিয়ন ডলার। এ ঋণ দিয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করেছে।

অধ্যাপক আবিরত্নে বলেন, এক্ষেত্রে শুধু চীনের ঋণকে দোষারোপ করলে হবে না।

‘চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া সহজ। সেজন্য তাদের কাছ থেকে নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের ১০ শতাংশ চীন থেকে নেয়া,’ বলেন অধ্যাপক আবিরত্নে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের ৪৭ শতাংশ বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন বন্ড ইস্যু করে নেয়া হয়েছে।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, ঋণের অর্থ অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে না।

চীন হচ্ছে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মুদ্রা বাজার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং জাপানের কাছ থেকেও ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

ঋণের ভারে জর্জরিত:

শ্রীলঙ্কা এ সমস্যা রাতারাতি তৈরি হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে এ সমস্যা পুঞ্জীভূত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে দেদারছে ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন সরকার। মধ্যে অন্যতম উৎস্য হচ্ছে সার্বভৌম বন্ড। ২০০৭ সাল থেকে দেশটির সরকার অর্থ জোগাড়ের জন্য সার্বভৌম বন্ড ইস্যু করেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, একটি দেশের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হলে এ ধরণের সার্বভৈৗম বন্ড বিক্রি করা হয়। আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে এ ধরণের বন্ড বিক্রি করে অর্থের জোগান দেয়া হয়। শ্রীলঙ্কা সেটাই করেছে। কিন্তু এই অর্থ কিভাবে পরিশোধ করা হবে সে ব্যাপারে খুব একটা চিন্তা-ভাবনা করেনি।

ঋণ পরিশোধে বেহাল অবস্থা:

আন্তর্জাতিক সার্বভৈৗম বন্ড বাবদ শ্রীলঙ্কার ঋণ রয়েছে এখন সাড়ে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া দেশীয় উৎস থেকেও সরকার ঋণ করেছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর শ্রীলঙ্কাকে প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

এ সাত বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে বৈদেশিক ঋণ (আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড) দেড় বিলিয়ন ডলার। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর এসব ঋণ শোধ করতে পারবে না দেশটি।

কিন্তু শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব ধারণা সঠিক নয়। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো জানিয়েছে, গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড বাবদ যে ঋণ নেয়া হয়েছে সেখান থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে পাঁচ শ’ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। যে কারণে দেশটি জ্বালানী তেল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে পারছে না।

২০১১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশটিতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। এর ফলে মৌলিক খাদ্যপণ্যের সরবরাহ এখন সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি এখন প্রায় ১৫ শতাংশ।

গত জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য চীনের কাছে অনুরোধ করেছেন।

কর কমানো:

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট দেশটিতে ভ্যাট এবং ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ ধরণের পদক্ষেপে অনেক বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

ভ্যাট প্রদানের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আট শতাংশে আনা হয়। ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর মূল কারণ ছিল অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করা।

দুই হাজার নয় সালে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে (বর্তমান প্রেসিডেন্টের ভাই) একই ধরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর ফলে তখন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে গতি এসেছিল।

সে আলোকেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেও একই পদক্ষেপ নেন। কিন্তু এর কয়েকমাসের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়।

কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রিমাল আবিরত্নে বিবিসি বাংলাকে বলেন, আয়কর এবং ভ্যাট কমানোর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ফলে সরকার আরো ঋণ নিতে বাধ্য হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শ্রীলঙ্কা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ট্যাক্স কমানোর বিষয়টি ছিল একটি বড় ভুল।’

ট্যাক্স কমানোর ফলে সরকারের আয় কমে যায়। আবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অন্যদিকে সরকারকে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও মেনে চলতে হয়। সবমিলিয়ে প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয় অর্থনীতির উপর।

পর্যটন ও রেমিট্যান্স খাতের বিপর্যয়:

শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার বড় জোগান আসে দেশটির পর্যটন খাত থেকে। করোনাভাইরাস মাহারির কারণে প্রায় দুই বছর পর্যটন শিল্পে কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় চরম সঙ্কটে পড়েছে দেশটি।

মহামারি শুরুর আগে শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসতো চীন থেকে। কিন্তু চীনে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ কঠোর থাকায় চীন থেকে পর্যটক আসতে পারেনি। এর ফলে দেশটির পর্যটন খাতে বিপর্যয় নেমে আসে।

দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের আরেকটি বড় জায়গা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে কর্মরত শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের পাঠনো ডলার। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির সময় সেটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অধ্যাপক শ্রিমাল আবিরত্নে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির আগে পর্যটন এবং রেমিটেন্স থেকে শ্রীলঙ্কার ১২ বিলিয়ন ডলার আয় করতো।

অর্গানিক চাষে বিপর্যয়:

২০১৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশে অর্গানিক কৃষি চালু করেন। সেজন্য কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এর অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় সার আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল কৃষিক্ষেত্রে। এতে চালের উৎপাদন ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

একসময় চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলংকা বাধ্য হয় ৪৫০মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করতে। চালের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। অর্গানিক কৃষির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল দেশটির চা উৎপাদনের ক্ষেত্রে। চা রপ্তানি করে শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। সেখানেও বড় ধাক্কা লাগে।

কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য সরকার ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়। দেশজুড়ে একই সাথে খাদ্যঘাটতিও প্রকট আকার ধারণ করে।

অধ্যাপক আবিরত্নে বলেন, অর্গানিক কৃষি চালু করার আগে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করা হয়নি। এতে উল্টো ফল হয়েছে। তিনি বলেন, উৎপাদন কমে যাওয়ায় গ্রামের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে এবং খাদ্য আমদানি করার জন্য আরো বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়েছে।

সঙ্কট সামাল দেয়ার চেষ্টা:

বর্তমান সঙ্কট সামাল দিতে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন বৈদেশিক মুদ্রা। সেজন্য অনেকের দ্বারস্থ হচ্ছে দেশটি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ-এর সাথে আলোচনা করছে দেশটি। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণ পেতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে দেশটি। বর্তমানে মার্কিন এক ডলারের বিপরীতে শ্রীলংকার ২৩০ রূপি। এছাড়া চীন ও ভারতের কাছে আরো ঋণের আবেদন করেছে শ্রীলঙ্কা।

জরুরি কিছু খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানী কেনার জন্য গত সপ্তাহে ভারত শ্রীলঙ্কাকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। যেভাবে শ্রীলঙ্কার উপর ঋণের স্তুপ হয়েছে, সেখান থেকে সহসা দেশটি বেরিয়ে আসতে পারবে না বলে মনে করছেন দেশটির পর্যবেক্ষকরা।

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে মাত্র আড়াই বিলিয়ন ডলারের কম। গত দশ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন।

অর্থনীতিবিদ শ্রিমাল আবিরত্নে বলেন, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের মাধ্যমে বর্তমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে শ্রীলঙ্কা। এজন্য দেশটির রফতানি বাড়াতে হবে।

‘রপ্তানি বাড়াতে হলে পণ্যের বৈচিত্র্য আনা দরকার। এজন্য প্রয়োজন বৈদেশিক বিনিয়োগ। কারণ শ্রীলংকার ব্যবসা ছোট এবং তাদের পক্ষে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়,’ বলেন অধ্যাপক আবিরত্নে।

এছাড়া মধ্যমেয়াদে দেশটির রাজস্ব ও বাজেট ব্যবস্থাপনা ভালো করার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় কমাতে হবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আবিরত্নে।

 

Header Ad

যুগ্ম সচিব মর্যাদার ৩ জনকে বদলি

ছবি: সংগৃহীত

যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে বদলি করে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্মসচিব), বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, বরিশাল এর যুগ্মসচিব মো: আহসান হাবীবকে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এনআইএলজি) এর পরিচালক পদে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব জসিম উদ্দিন হায়দারকে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে।

 

এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালযয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমানকে বাংলাদেশ টেলিভিশন এর উপমহাপরিচালক করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই'র বাকবিতন্ডায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাংচুর, আহত ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টিকেট নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও রেলওয়ের টিটিই'র মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে টিটিই, গার্ড ও এক সেনা সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এই ঘটনায় ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড রুমের দরজা, জানালা ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে সেনা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর ঘটনার পর প্রায় ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়।

আর এতেই দূর্ভোগে পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী। অনেক যাত্রীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। আবার প্রায় দুই শত যাত্রীকে দেখা যায় তারা ট্রেন ছাড়ার জন্য বিক্ষোভ করতে করতে স্টেশন মাস্টারের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকাল ৫ টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে এঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেন বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় ওই ট্রেনের শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) 'গ' বগিতে থাকা সেনা সদস্য আল আমিন সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে ছুটিতে নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে। সেই ট্রেনে আরও ১০-১২ জন সেনা সদস্য ছিল। ওই ট্রেনের দায়িত্বরত টিটিই রাসেল হোসেন টিকেট চাইলে দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর টিটিই'র চাহিদামতো টিকেট বাবদ ৭ শত টাকা দিয়ে দেয় সেনা সদস্য। টাকার বিনিময়ে টিকেট চাইলে টিকিট দিতে অস্বীকৃতি জানান সেই টিটিই। আর এতেই সেখানে এক পর্যায়ে ওই টিটিইর সাথে তাদের বাকবিতন্ডা বাঁধে। ওই ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট আব্দুল মালেক, গার্ড আব্দুস সাত্তার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন।

এরপর ট্রেনটি সান্তাহার স্টেশনে পৌঁছলে ওই ট্রেনের বিভিন্ন বগিতে যাত্রা করা ১০-১২ সেনা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ট্রেনের গার্ড, টিটিই ও অ্যাটেনডেন্টসহ ৪-৫ জনকে কিল, ঘুষি ও চেয়ার দিয়ে মারপিট করে আহত করেন। পাশাপাশি ট্রেনের দরজা, জানালা ভাংচুর করেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এ ঘটনায় এক সেনা সদস্যও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ, আদমদীঘি থানা পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে। আহত টিটি ও গার্ডকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ও বেশ কিছু সেনা সদস্যকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সহকারী পুলিশ সুপার, রেলওয়ে পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ট্রেন যাত্রী বলেন, টিটিই জানতোনা সে সেনাবাহিনীর সদস্য। টিকেট না থাকায় তার কাছে টিকেট চায় কর্তব্যরত টিটি। তখন সে সেনাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে বলে আমার কাছে টিকেট নেই। টিটিই তার কাছে সাত শত টাকা চাইলে টিকেটের মূল্য বাবদ সেনাবাহিনীর ওই সদস্য টিটিকে টাকা দিয়ে দেয়। এরপর টিকেট চাইলে টিকেট দিতে গড়ি মসি করে টিটিই। মূলত টিকেট না দেওয়ায় শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বললেন, প্রায় সকল ট্রেনেই কিছু দূর্নীতিবাজ টিটিই থাকে।

যাত্রীরা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকারি লোকদের গন্ডগোলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছি আমাদের মতো প্রায় দুই হাজার সাধারণ যাত্রীরা। এই ঘটনার পর প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে এই সান্তাহার স্টেশনে। কখন যে এর সমাধান হবে কিছুই বলতে পারছি না। তবে এর দ্রুত সমাধান চাই আমরা যাত্রী সাধারণেরা।

এরিপোর্ট লেখা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সান্তাহার রেলওয়ে থানায় সেনাবাহিনীর ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

সারা দেশে আরও ২ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

নিজস্ব ছবি : ঢাকা প্রকাশ

তীব্র গরমে সারা দেশে আরও ২ দিনের জন্য সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। এ নিয়ে সপ্তমবার হিট অ্যালার্ট দিয়েছে সংস্থাটি।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এই হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এর আগে রবিবার (২৮ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছিল।

সর্বশেষ সংবাদ

যুগ্ম সচিব মর্যাদার ৩ জনকে বদলি
টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই'র বাকবিতন্ডায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাংচুর, আহত ৫
সারা দেশে আরও ২ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
জমি নিয়ে বিরোধ: স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
কক্সবাজারে হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগিরই নির্মাণ শুরু : সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গাইবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় পাওয়ার টিলার চালক নিহত
আরেক দফা কমলো স্বর্ণের দাম
জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : সেতুমন্ত্রী
মে মাসে আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
জায়েদ খানের উপস্থাপনায় মঞ্চ মাতাবেন জেমস
আইপিএল থেকে কত টাকা পাচ্ছেন মুস্তাফিজ?
পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন দিলেন স্বামী
গণমাধ্যমের যে কোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
কংগ্রেসকে পাকিস্তানের ‘মুরিদ’ বললেন নরেন্দ্র মোদি
দেশে নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ কারখানা
টাঙ্গাইলে প্রতীক পেয়েই প্রার্থীদের প্রচারণা
ওমরাহ পালন করতে সস্ত্রীক ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল
সরকারি খাদ্য গুদামে হয়রানির অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে
রোনালদোর পর সিকান্দার রাজাও সংবাদ সম্মেলনে কোমল পানীয়র বোতল সরালেন