সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ইমরান খানও পারলেন না

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলগুলোর উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব ডেপুটি স্পিকার খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে আপাতত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টিকে গেলেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনুরোধ করায় প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধ্যতামূলক। সেই হিসেবে আগামী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দেশটিতে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও সবাইকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ফলে ইমরান খানও তাদের পূর্বসুরীদের মতোই তার মেয়াদ শেষ করতে পারলেন না।

পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই কোনও প্রধানমন্ত্রীই নিজেদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। কেউ খুন হয়েছেন, কেউ বিরোধী দলের অনাস্থার মুখে পড়ে পদ ছাড়তে হয়েছে।

স্বাধীন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন লিয়াকত আলি খান। ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট অর্থাৎ পাকিস্তানের স্বাধীনতার দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার নেন। কিন্তু তিনি ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর এক জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান লিয়াকত আলি খান। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন চার বছর ৬৩ দিন।

লিয়াকত আলি খানের পর পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন খাজা নাজিমুদ্দিন। তিনি ১৯৫১ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ১৯৫৩ সালের ১৭ অগস্ট পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তখন পূর্ব পাকিস্তানের অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলন চলছিল। আন্দোলন থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন গর্ভনর জেনারেল মালিক গোলাম।

কিন্তু খাজা নাজিমুদ্দিন এই নির্দেশ মানতে চাননি। ফলে গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা প্রয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করেন মালিক গোলাম। খাজা নাজিমুদ্দিন ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিলেন এক বছর ১৮২ দিন।

নাজিমুদ্দিনের পর প্রধানমন্ত্রী মোহম্মদ আলী বোগরা। তিনি ১৯৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে মোট দু’বছর ১১৭ দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আঞ্চলিক বৈষম্য নিয়ে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ইসকান্দার মির্জার সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। এর পরই বোগরাকে একপ্রকার পদত্যাগে বাধ্য করেন ইসকান্দার মির্জা।

পাকিস্তানের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী। ১৯৫৫ সাল থেকে শুরু করে মোট এক বছরের কিছু বেশি সময় পাকিস্তানের মসনদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল ছিলেন তিনি। সংগঠনবিরোধী কাজকর্মের জন্য তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়।

পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হন হোসেন শহীদ সোহওয়ার্দী। তিনি ১৯৫৬ থেকে শুরু করে এক বছর ৩৫ দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে গভর্নর জেনারেল ইসকান্দার মির্জার চাপে পড়ে সোহরাওয়ার্দীকেও ক্ষমতা ছাড়তে হয়।

পাকিস্তানের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হন ইব্রাহিম ইসমাইল চুন্দিরগার। মাত্র দু’মাস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন চুন্দিরগার। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলার পর তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতীয় পরিষদে। তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী হন ফিরোজ খান নুন। তার শাসনকালের সময় ছিল ২৯৫ দিন। খুব কম সময়ে ফিরোজ খান নুন জনপ্রিয়তা পান। ফলে গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দর মির্জা তাকেও গদিচ্যুত করেন ইসকান্দার।

অষ্টম পাক প্রধানমন্ত্রী হন নুরুল আমিন। তিনিই পাকিস্তানের ইতিহাসে সব থেকে স্বল্পমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিন মাত্র ১৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তবে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় তিনি নিজে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তিনিই পাকিস্তানের প্রথম এবং শেষ ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি পাকিস্তানের শেষ বাঙালি নেতা হিসেবেও পরিচিত নুরুল আমিন।

নুরুল আমিনের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন পাকিস্তান পিপলস্‌ পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে ভুট্টো তিন বছর ৩২৫ দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৭ সালের ৫ জুলাই জেনারেল মোহাম্মদ জিয়া-উল-হকের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

জুলফিকার আলী ভুট্টোর পর প্রধানমন্ত্রী হন মোহাম্মদ খান জুনেজো। তিনি তিন বছরের কিছু বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন। তবে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করে পদ থেকে সরান রাষ্ট্রপতি জিয়া-উল-হক।

পাকিস্তানের একাদশ এবং প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন জুলফিকারের মেয়ে বেনজির ভুট্টো। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রায় দু’বছর ক্ষমতায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপতি গোলাম ইসহাক খান এবং শক্তিশালী সামরিক বাহিনী-সহ রক্ষণশীল এবং ইসলামপন্থী শক্তি তার নতুন চিন্তাভাবনার প্রচেষ্টা রোধ করছে। বেনজিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে ১৯৯০ সালে ইসহাক তাকে বরখাস্ত করেন।

১৯৯০ সালে দ্বাদশ পাক প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ শরিফ। ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রপতি ইসহাক পাক সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর তিনি গদিচ্যুত হন এবং বিরোধী নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

ত্রয়োদশ এবং চর্তুদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারও প্রধানমন্ত্রী হন বেনজির ভুট্টো এবং নওয়াজ শরীফ। ১৯৯৬ সাল থেকে বেনজির ৩ বছর ১৭ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বারেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হত্যার চক্রান্তসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রপতি ফারুক লেঘারি তার সরকার ভেঙে দেন। নওয়াজের দ্বিতীয় বারের শাসনকাল চলে দু’বছর ২৩৭ দিন। এর পর ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের ফলে তার শাসনকালের অবসান ঘটে।

বেনজির এবং নওয়াজের পতনের পরে ক্ষমতায় আসেন মীর জাফারুল্লাহ খান জামিলি। তবে প্রায় দু’বছরের শাসনকালের পর হঠাৎই পদত্যাগ করেন তিনি। পদত্যাগের আগে জামিলি প্রায় ৩ ঘণ্টা তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশারফের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে পাকিস্তানের বিভিন্ন বিষয়ে মোশারফের মতের সঙ্গে জামিলির মতের মিল না হওয়ায় তাকে পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয় দাবি করেন অনেকে।

ষষ্ঠদশ পাক প্রধানমন্ত্রী হন চৌধরী সুজাত হোসেন। তার শাসনের সময়কাল ছিল মাত্র ৫৭ দিন। এর পর তিনি নিজেই শওকত আজিজকে নিজের পদ ছেড়ে দেন।

এর পর প্রধানমন্ত্রী হন শওকত আজিজ। জেনারেল মোশারফের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন শওকত। তিনি তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর নিজে থেকেই সরে যান। তবে শওকতের আমলে পাকিস্তানের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হয় বলে মনে করা হয়।

শওকত আজিজের পর প্রধানমন্ত্রী হন ইউসুফ রাজা গিলানি। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি মোট চার বছর ৮৬ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী পদে গিলানিই সব থেকে বেশি দিন বহাল ছিলেন। তবে একাধিক দুর্নীতির মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পাক সুপ্রিম কোর্ট তার প্রধানমন্ত্রী পদ খারিজ করে।

পাকিস্তানের ১৯তম প্রধানমন্ত্রী হন রাজা পারভেজ আশরাফ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শাসনের সময়কালও এক বছর পার হয়নি। আশরাফ মোট ২৭৫ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তবে ২০১৩ সালে ২৪ মার্চ তিনি তার পদ ছাড়েন। তাকেও একাধিক দুর্নীতির মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

এর পর ২০১৩ সালে ফের ক্ষমতায় ফেরেন আগে দু’বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা নওয়াজ শরীফ। তবে তৃতীয় বারে চার বছর ৫৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তবে ২০১৭ সালে পানামা পেপার দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালে তাকে ১০ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেন।

নওয়াজের পর ৩০৩ দিনের জন্য ২১তম পাক প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শহিদ খোকন আব্বাসী। তবে ২০১৮ সালে নির্বাচনের মুখে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন ইমরান খান। নির্বাচনে তার জোট সঙ্গী ছিল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম)। পাকিস্তানের ধারা বজায় রেখে ইমরানও মেয়াদ শেষ করতে পারলেন না।

আরইউ/এমএমএ/

Header Ad

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য অঞ্চলে, বৈরী আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান নিহত হয়েছেন বলে ইরানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমও এ খবর দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন। সঙ্গে তার সফরসঙ্গীরাও। তাদের মধ্যে আর কেউ বেঁচে নেই। এমন আশঙ্কাই করছে ইরানের সংবাদ কর্মীরা। তাদের ধারণা হেলিকপ্টারটি পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানের প্রাণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এদিকে এমন খবরে ইরানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক মানুষকে দেখা যায় কান্নায় ভেঙে পড়তে। রাস্তায় রাস্তায় চলছে শোকের মাতম।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বাংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে। তবে প্রেসিডেন্ট রইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি একেবারেই পুড়ে গেছে।

জানা যায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ স্থলে ‘প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই’ বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি। ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’। খবর-বিবিসি

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান খুঁজে পেয়েছে অনুসন্ধানী দল। ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, পরিস্থিতি ‌‘ভালো’ নয়। খবর-বিবিসি

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে গতকাল রোববার।

রাইসি ও তার সফর সঙ্গীদের সন্ধান পেতে দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চলছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছে।

বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারে ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এ প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন বলে জানা গেছে।

ইরানের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, আমরা আর আশা রাখতে পারছি না। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যেসব খবর আসছে তা খুবই উদ্বেগজনক। দুর্ঘটনায় সবার মৃত্যু হতে পারে।

বৈরী আবহাওয়া ও তীব্র কুয়াশা উদ্ধারকারীদের দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথ জটিল ছিলো বলে জানান তিনি।

এ অবস্থায় ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হলে ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন বলে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ওই এলাকায় সোমবার রাত পর্যন্ত বৈরী আবহাওয়া থাকতে পারে।

স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে রাতভর বৃষ্টি ও ভারী কুয়াশা পড়েছে। সোমবার পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকতে পারেও বলে জানান তিনি।

সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার: রিপোর্ট

ছবি: সংগৃহীত

সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার। ফলে ওই হেলিকপ্টারের সকল আরোহীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার অনুসন্ধান দল ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর ইরানি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমনটিই দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “কর্মকর্তা বলেন- দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে... দুর্ভাগ্যবশত, সব যাত্রী নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।”

ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান পীর হোসেইন কলিভান্ড দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাচ্ছি, যা মোটেও ইতিবাচক নয়।

সোমবার ভোররাতে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে ধ্বংসাবশেষ শনাক্তের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য উদ্ধারকারী দলগুলো রাতভর তুষারঝড় এবং কঠিন ভূখণ্ডের সাথে লড়াই করে।

জানা গেছে, রবিবার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইরানি প্রেসিডেন্ট। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। সূত্র: রয়টার্স

রাইসির দুর্ঘটনার খবরে ‘উচ্ছ্বসিত’ মার্কিন কংগ্রেসম্যান

ছবি: সংগৃহীত

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এ নিয়ে মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়েছে নানা ধরনের তথ্য। ইরান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না করলেও, এ দুর্ঘটনায় রাইসি ‘মারা গেছেন’ বলেও দাবি করছে অনেকে। আর কথিত এমন খবরকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে ‘উচ্ছ্বাস’ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক ওয়াল্টজ।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াল্টজ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন, দারুণ পরিত্রাণ। রাইসি তার প্রেসিডেন্সির আগে এবং সময়কালে একজন খুনি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার আরেকটি অজুহাত হিসেবে ইরান এখন হত্যার জন্য (রাইসিকে) ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দোষ চাপাবে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টার রোববার (১৯ মে) দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এখন পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারেরও।

এ দুর্ঘটনা নিয়ে এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টারের সম্ভাব্য বিধ্বস্তের ঘটনার খবর দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের বিষয়ে তেল আবিব কী ভাবছে- তা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ।

সর্বশেষ সংবাদ

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার: রিপোর্ট
রাইসির দুর্ঘটনার খবরে ‘উচ্ছ্বসিত’ মার্কিন কংগ্রেসম্যান
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি
আজ থেকে সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
৮০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা, নদীবন্দরে দুই নম্বর সতর্কতা
সন্ধান মেলেনি হেলিকপ্টারের, ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুর শঙ্কা
প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর
বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই
দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
১৭ মন্ত্রী-এমপির স্বজন চেয়ারম্যান প্রার্থী: টিআইবি
দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, আইন-শৃংখলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ব্রিফিং
মিশা-ডিপজল দুজনেই মূর্খ: নিপুণ
পুকুর খননের মাটির ভেতর থেকে মিলল কষ্টি পাথরের লক্ষ্মী-নারায়ন মূর্তি
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিল অটোরিকশাচালকরা
‘পৃথিবী থেকে বিদায়,ভালো থাকো সবাই, সব শেষ আমার’ লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা
মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন