রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

৪০ বছরের ‘যুদ্ধজয়ী’ আনোয়ার ইব্রাহিম

মালয়েশিয়ার জননন্দিত রাজনীতিক আনোয়ার ইব্রাহিম একজন ভাগ্যবিড়ম্বিত নেতা। বারবার তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার হাতছানি পেলেও শেষ পর্যন্ত তা অধরাই থেকে গেছে। উল্টো মিথ্যা মামলায় জেলে খাটাই যেন ছিল তার নিয়তি। ১৯৮২ সাল থেকে রাজনীতির ভুবনে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন তরুণ আনোয়ার ইব্রাহিম, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়ে আজ তিনি সফল হলেন। মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও তার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল চমকপ্রদ ও বৈরিতায় মুখর।

আনোয়ার ইব্রাহিমের বয়স এখন ৭৫। প্রথম নিজের নামটি তৈরি করেছেন একজন ক্যারিসমাটিক ও আগুনের মতো জ্বলে ওঠা ছাত্রনেতা হিসেবে। তিনিই তখন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মালয়শিয়ার মুসলিম তরুণদের সংগঠন ‘আনকাতান বালিয়া ইসলাম মালয়শিয়া (এবিআইএম)’। তবে এরপর অনেককে অবাক করে দিয়ে ১৯৮২ সালে তিনি যোগ দেন ‘ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অগানাইজেশন (ইউএমএনও)’-এ।

১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বহু পুরোনো ইউএমএনও দলে যোগ দেওয়া ছিল তার একটি বিচক্ষণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানেই নিজেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বারবার ওপরে উঠিয়েছেন এবং মন্ত্রীসভাতে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় মাহাথিরকে তিনি প্রত্যাশা মিটিয়ে ব্যাপক সাফল্য লাভে সহায়তা করেন।

তবে তাদের দুজনের মধ্যে উত্তেজনার শুরু হলো ১৯৯৭ সালের এশিয়ার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে। তারা দুজনেই ধাক্কা খেয়ে গেলেন অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও দুর্নীতিতে। পরের বছর ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে বরখাস্ত করা হলো এবং তিনি মাহাথির মোহাম্মদের বিপক্ষে গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেন। এই আন্দোলনই মালয়শিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি প্রজন্মকে উৎসাহিত ও বেগবান করেছে। আন্দোলনের নেতা আনোয়ার গ্রেপ্তার হন এবং তার বিপক্ষে সমকামিতা ও দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়।

শুনানিতে তিনি বিতর্কিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। যেহেতু মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়া সমকামিতার কার্যক্রমগুলোকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, তারপরও তাকে মামলাগুলোতে দোষী সাব্যস্ত করা বিরল হয়ে গেল প্রমাণের অভাবে। আনোয়ার ইব্রাহিম রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলার শিকার হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানালো। তারপরও তার ছয় বছরের কারাদণ্ড হলো। এরপর ভয়াবহ সহিংস সংঘাত দেশের রাস্তায়, রাস্তায় ছড়িয়ে গেল। এক বছর পর আনোয়ার ইব্রাহিম সমকামিতার জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন।

আনোয়ার ইব্রাহিম সবসময় উল্লেখ করেছেন যে, মাহাথির মোহাম্মদ তাকে রাজনৈতিক হুমকি হিসেবে মনে করেন। আর এজন্য তিনি তার বিপক্ষে প্রচারণা ও কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অভিযোগ ও শাস্তি প্রদান করার পাঁয়তারা করছেন।

২০০৪ সালের শেষের দিকে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হলে দেশের সুপ্রিম কোর্ট সমকামিতার মামলায় উল্টো অবস্থান নেয় এবং আনোয়ারকে জেল থেকে মুক্তি দেয়।

তারপর থেকে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি নিজেকে আরও মজবুত অবস্থানে নিয়ে যান। যখন জেল থেকে মুক্ত হলেন আনোয়ার ইব্রাহিম, তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে মাহাথির মোহাম্মদের বিপক্ষে বাস্তবে ও কার্যত সবার প্রধান হিসেবে তুলে ধরতে লাগলেন।

২০০৮ সালের নিবাচনে তার দল শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেন। তবে সে বছর আবার তার বিপক্ষে সমকামিতার অভিযোগ তৈরি করা হলো। তিনি দাবি করলেন, তাকে মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে এটি সরকারের আরেকটি পদক্ষেপ। অবশেষে ২০১২ সালের হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আনোয়ার ইব্রাহিমকে সব মামলা থেকে মুক্ত করে দেয়। তারা জানালেন, প্রমাণের অভাব রয়েছে।

পরের বছর তিনি নির্বাচনে প্রধান ভূমিকা পালন করলেন ও নতুন মাত্রা তৈরি করলেন। ফলে তিনি ক্ষমতাশীল ‘বারিশান ন্যাশনাল কোয়ালিশন (বিএনসি)’র ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল এনে দিলেন। তবে আবারও আনোয়ার ইব্রাহিমের রাজনৈতিক আশাগুলো হুমকির মধ্যে পড়ে গেল। ২০১৪ সালে তিনি একটি রাজ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যে মামলাগুলোতে আদালতের বিচারে খালাস পেয়েছিলেন, সেগুলো আবার ফিরিয়ে আনা হলো এবং তাকে জেলে বন্দী করা হলো। তবে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বহু পুরোনো ও দক্ষ খেলোয়াড় এবং মাহাথির মোহাম্মদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী কখনো কোনোভাবেই দমে যাননি। তিনি বারবার সামনে আসার চেষ্টা করেছেন।

এর মধ্যে নানা ঘটনায় সবাইকে চমকে দিয়ে ২০১৬ সালে তার সাবেক শত্রু মাহাথির ঘোষণা করলেন, তিনি অবসর বাতিল করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য আবার লড়বেন। তখন ৯২ বছরের মালয়েশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নেতা জানালেন, তার বিপক্ষে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের আনীত দুর্নীতির মামলাগুলোতে দুর্বল হয়ে গিয়েছেন। এসময় তিনি জেলে বন্দী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একটি অচিন্তনীয় চুক্তি করলেন। তিনি বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় তখন। তাকে জেল থেকে মুক্ত করলেন। দেশের জনগনকে খুশিতে ভাসিয়ে তারা একত্রে বসলেন ও আলোচনা করলেন, করমর্দন করলেন। মালয়েশিয়ার ইতিহাসে একটি অসামান্য রাজনৈতিক পূণমিলনী ও ঐক্যের সূচনা করলেন।

মাহাথির মোহাম্মদ ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে তাদের রাজনৈতিক ঐক্যের ‘দি পাকাতান হারাপান অ্যালায়েন্স’ বা আশার মৈত্রী’র নেতৃত্ব দিলেন। থামিয়ে দিলেন বারিশান ন্যাশনাল’সদের ৬১ বছরের টানা দেশটিকে শাসনের ইতিহাস। তাদের এই রাজনৈতিক ঐক্যে মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সত্যিকারেভাবে এবং প্রথমবারের মতো নানা ধর্মের মানুষরা এলেন চারটি দল থেকে। তারা লাভ করলেন দেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান, শক্তিশালী চীনা ও ভারতীয় সংখ্যালঘুদের সমর্থন। আবার মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে মাহাথির মোহাম্মদ নির্দিষ্টভাবে জানালেন যে, আগামী দুই বছরের মধ্যে আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। তিনি তাকে আদালত থেকে মুক্ত করার অঙ্গীকার করলেন ও তাকে পুরোপুরি ক্ষমা করে দেবেন।

তবে তাদের রাজনৈতিক ঐক্য অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক হতে লাগলো যখন নব্বই বছর বয়সী মাহাথির তার ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইলেন। ফলে আবার মালয়েশিয়ান জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলে তাদের ঐক্যে ভাঙন ধরে। এর মাধ্যমে আবার খালি হাতে ফিরে গেলেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

এরপর আবার ক্ষমতায় এলো ‘ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও)’, নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন মহিউদ্দন ইয়াসিন। তবে মোটে এক বছর পর, মহামারি করোনার সবচেয়ে খারাপ সময়ে প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিন কয়েক মাসের টালমাটাল অবস্থার পর পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর পদত্যাগ করেন। গত অক্টোবরে তার দলে উত্তরাধিকারী ইসমাঈল সাবরি ইয়াক্বু ক্ষমতা কামড়ে ধরবেন বলে এগুলেন। ইউএমএনও নিশ্চিত হলো যে, তারা নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আবার ক্ষমতা দখল করতে পারবে। নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের জাদু ও দূরদর্শিতায় পাকাতান হারাপান অ্যালায়েন্স বেশিরভাগ সিট দখল করে।

টানা ৪০ বছর রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সংগ্রাম সফল হলো আনোয়ার ইব্রাহিমের। তিনি হলেন দেশটির ১০তম প্রধানমন্ত্রী।

ওএফএস/আরএ/

Header Ad

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি

ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরোধিতায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম আটকে গেছে। কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকায় আপাতত বদলি প্রক্রিয়া চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে সেই প্রক্রিয়া আটকে দিলেন তারা।

রবিবার (৫ মে) বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

এর আগে গত সোমবার (২০ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আজকের বৈঠকের বিষয়টি জানা যায়।

সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী বদলি নিয়ে উপস্থিত কর্মকর্তাদের মতামত জানতে চান। এ সময় একটি সংস্থার শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। ৯৬ হাজারের বেশি শূন্যপদ থাকলেও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অর্ধেক পদও পূরণ হবে না। এ অবস্থায় বদলি চালু করা হলে গ্রামের সব শিক্ষক শহরে চলে আসবেন। গ্রামের স্কুলগুলোতে খালি হওয়া ওই পদগুলো আর পূরণ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আপাতত বদলি চালু না করতে শিক্ষামন্ত্রীকে মত দেন ওই কর্মকর্তা।

তারা আরও জানান, শিক্ষা প্রশাসনের আরেক কর্মকর্তা সরাসরি বদলি চালু করা বা সম্ভব হলে সম পদে এবং সম স্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে এখানে মামলাসহ আরও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় এ প্রস্তাবও আপাতত অনুমোদন না করার সিদ্ধান্ত হয়। বদলির প্রক্রিয়া কবে চালু হবে, সে বিষয়ে নতুন করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের আগে কমিটির পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেতেন শিক্ষকরা। এভাবে একজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন। তবে ২০১৫ সালের পর নিয়োগ সুপারিশের ক্ষমতা এনটিআরসিএর হাতে যাওয়ায় সে সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। নিজ এলাকার বাইরে চাকরি করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সদস্য কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের।

শিক্ষকদের নানা সমস্যার কথা বিবেচনা করে ২০২৩ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। গত বছরের ২২ অক্টোবর বদলি নিয়ে প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সে কর্মশালায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়।

ওই পরামর্শের আলোকে বদলির খসড়া তৈরি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয়। খসড়া নিয়ে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন কর্মশালায় বদলির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়। রবিবার (৫ মে) এ নীতিমালা চূড়ান্ত করে পরিপত্র কবে জারি হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।

৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ রবিবার (৫ মে) সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, আনসার ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া, আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার দিয়ে উপর থেকে পানি ঢালে বিমানবাহিনী। আগুনের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি করেছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে গণমাধ্যমকে বলেন, সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া জঙ্গলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন করে আগুন আর ছড়ায়নি। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় বন বিভাগের ২ শতাধিক বনকর্মীসহ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি সদস্যরা আগুন নেভাতে কাজ করে। বিমানবাহিনীও আগুন নির্বাপণে অংশ নেয়।

প্রাথমিকভাবে বনের ৫/৬ একর বনভূমির লতাগুল্ম পুড়ে গেছে বলে সিএফ জানিয়েছেন। রবিবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন ও পুলিশ সুপার মো. আবুল হাসনাত খান অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বন পরিদর্শন করেন।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ও এতে বনের ক্ষতি সম্পর্কে জানতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন
স্বামীর সঙ্গে অভিমানে নববধূর আত্মহত্যা
নারী এমপিকে মাদক খাইয়ে যৌন হেনস্তা