শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

নৌকার প্রার্থী হয়েও হারলেন যারা

ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়েও অনেকে পরাজিত হয়েছে। পরাজিত এসব প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে মন্ত্রী পদে রয়েছেন এমন ব্যক্তি রয়েছেন। এছাড়া অনেক পরিচিত মুখও নৌকার পাল তুলতে পারেননি। নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছেই তাদের হারতে হয়েছে।

নৌকা নিয়ে হেরে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন- বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য এনামুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী তিনবারের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য।

এছাড়া ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগের শরিক হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করে হেরে যায়।

এবারের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাতে কেউ নির্বাচিত হতে না পারেন, সেজন্য দলের নেতাদেরও স্বতন্ত্র হওয়ার সুযোগ দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপর প্রায় দেড়শ আসনে দলের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নামেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের মধ্যে অনেকে জয় পেয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় এবং নির্বাচন কমিশন থেকে তাদের বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

যেসব আসনে স্বতন্ত্রের কাছে নৌকার হার-

বরগুনা-১ আসনে (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে হেরে গেছেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি নৌকা প্রতীকে ৫৪ হাজার ১৬৮ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।

এ আসনে জয় পেয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরোয়ার টুকু। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬১ হাজার ৮৭৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম সরোয়ার ফোরকান (স্বতন্ত্র) পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৮৭৪ ভোট।

নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে নৌকার প্রার্থী অসীম কুমার উকিল হেরে গেছেন; তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোট।

এ আসনে জয় পেয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। তিনি ভোট পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৮০৩টি।

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে হেরেছেন নৌকার মৃণাল কান্তি দাশ; ভোট পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮৩৩টি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌরসভা মেয়র মোহাম্মদ ফয়সাল স্বতন্ত্র হিসেবে কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৭০৫টি।

নরসিংদী-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের ফজলে রাব্বি খান ৪৫ হাজার ১১৫ ভোট পেয়ে হেরে গেছেন। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা স্বতন্ত্র হিসেবে ভোট করে ঈগল প্রতীকে জয় পেয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৭৭৯ ভোট।

যশোর-৬ আসনে নৌকা নিয়ে হেরেছেন শাহীন চাকলাদার, ভোট পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৬৯টি। জয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকে আজিজুল ইসলাম, ভোট পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৭টি।

চট্টগ্রাম-১৬ আসনে শেষ বেলায় আচরণিবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা হারালে নৌকার মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট বাতিল করা হয়।

বাঁশখালীর এ আসনে জেলা আওয়ামী নেতা মুজিবুর রহমান ঈগল প্রতীকে ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরেক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির। তিনি ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।

এবার ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দেন ১ লাখ ২৯ হাজার ২২৩ জন। এর মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৬৮টি ভোট, যা মোস্তাফিজুরের বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর-৩ সদর আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট পেয়ে হেরে যান। এখানে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তিনি ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট।

ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ এবারও হেরে গেছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট।

এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা নিক্সন চৌধুরী ঈগল প্রতীকে তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট।

হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী হেরে গেছেন। টানা দুইবারের এই সংসদ সদস্য পেয়েছেন মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফেসবুকের পরিচিত মুখ স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জয়ী হয়েছেন। যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এ প্রার্থী পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট।

মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে হেরে গেছেন।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক আওয়ামী লীগ নেতা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মোসা. তাহমিনা বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট।

ঢাকা-১৯ আসনে নৌকার প্রার্থী ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। এ আসনে নৌকা তৃতীয় স্থান পেয়েছে। সাইফুল আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

এখানে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সাবেক সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হেরে গেছেন।সাইফুল পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। আর নৌকা প্রতীকের এনামুর পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট।

রাজশাহী-২ আসনে নৌকা প্রতীকের ১৪ দলের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন।

প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯০৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪৬৩ ভোট। সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে ১৪ দলের প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা এর আগের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য।

কুষ্টিয়া-২ আসনে ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়েছেন। ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। ফলাফল অনুযায়ী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিন ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

যশোর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য হেরে গেছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২ ভোট। ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াকুব আলী ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামান।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন তিনবারের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।

এ আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। ঘোষিত ফল অনুযায়ী মোট ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রে টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট আর মমতাজ পেয়েছেন ৮২, হাজার ১৩৮ ভোট।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত গম বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। একই সঙ্গে এই গম আমদানিতে জড়িত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানাবে দেশটি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের ভারতস্থ রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক জানান, বাংলাদেশ সরকারকে বারবার সতর্ক করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। তার ভাষায়, "আমরা একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। ফলে এখন বিষয়টি ইইউতে তোলা হবে।"

রাষ্ট্রদূতের দাবি, রাশিয়ার কিছু কোম্পানি ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চল থেকে শস্য সংগ্রহ করে তা রাশিয়ার উৎপাদিত গমের সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করছে—যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বেআইনি এবং 'অর্থনৈতিক লুটপাটের' শামিল।

রয়টার্সের হাতে থাকা নথিতে বলা হয়, ইউক্রেনের নয়াদিল্লি দূতাবাস এ বছর বাংলাদেশ সরকারের কাছে একাধিক চিঠিতে ১.৫ লাখ টনের বেশি ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ার কফকাজ বন্দর থেকে এই গমগুলো আমদানি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল কৃষিভূমি ও ক্রিমিয়া দখল করার পর থেকেই ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ। ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। তবে রাশিয়ার দাবি, ওই অঞ্চল এখন তাদের ভূখণ্ড এবং সেখানকার শস্য রপ্তানি বৈধ।

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য দেয়নি। তবে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বাংলাদেশ কখনোই চুরি করা গম আমদানি করে না। রাশিয়ার অধিকৃত কোনো এলাকা থেকে গম আনার প্রশ্নই ওঠে না।”

Header Ad
Header Ad

খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের অভিযোগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

তবে প্রকৃত ঘটনা হলো- গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়াই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ স্থাপন করেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ শর্তে অনুমতি দেয় যে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়োজকরা অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলবেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা পারস্পরিক শর্ত লঙ্ঘন করে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা সেখানে একটি ‘মহাকালী’ (কালী মূর্তি) স্থাপন করে।

বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যবশত তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত শত শত দোকান এবং রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মূলত বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব দিক থেকে ২০০ ফুট দূরে কেবল বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় আরও দুইটি রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইন সম্পন্ন করার জন্য এ জমির খুব প্রয়োজন ছিল।

বিগত মাসগুলোতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়। গত ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে অবশেষে সবাইকে সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়, যার মধ্যে পূজা আয়োজকদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত মণ্ডপটি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে ২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে খিলক্ষেত এলাকার রেল ট্র্যাক বরাবর সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত এবং আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম।

যদিও দেশের আইন অনুসারে নির্মিত কোনো ধর্মীয় স্থাপনার সঙ্গে বৈষম্য না করে সমস্ত উপাসনালয়ের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবুও কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়। অস্থায়ী মণ্ডপের আয়োজকরা তাদের নিজস্ব অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা এবং সদিচ্ছাকে স্পষ্টতই কাজে লাগিয়েছেন।

বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে উপাসনালয়ের সুরক্ষা। বাংলাদেশকে তার সমন্বিত ঐতিহ্য বজায় রাখতে কখনও বাধা দেয়নি যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস বা বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উন্মুক্ত সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ সবাইকে তথ্য এবং বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়

আসাদুজ্জামান আলী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আলী নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এনসিপির এ পদে একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতার অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক ও সমালোচনা।

গত ২১ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কুমারখালী উপজেলা শাখার ১২ সদস্যের সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষর করেন। এই কমিটিতেই আসাদুজ্জামান আলীকে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আসাদুজ্জামান আলী কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং এক সময় কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্বও পালন করেন। তবে নানা অভিযোগে তাকে সেখান থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলী ছাত্রলীগে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা ও ঘুষ বাণিজ্য, সেল্টার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। এমনকি তার বাবা আবদুর সামাদ পাখির বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আছে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলীকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির কমিটিতে আলীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, অতীতের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জানা সত্ত্বেও কীভাবে একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনসিপির মতো একটি দলে নেতৃত্বের জায়গা পেলেন, তা নিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জবাবদিহি প্রয়োজন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান আলী খান। তিনি বলেন, “আমি আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে সক্রিয় ছিলাম। সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”

তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চাইছে। “আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অপকর্ম প্রমাণ করতে পারলে আমি কুমারখালী ছেড়ে চলে যাব,” বলেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন
খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়
দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০ জন
১১ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উইন্ডিজ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে
গাজায় হামাসের হামলায় ৩ দিনে ১৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন প্রায় ২ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৫৯
ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়া-মারধরের ঘটনায় আসামি নাসিম গ্রেপ্তার
অভিমান ভুলে বুকে জড়িয়ে নিলেন রিয়া মনি, হিরো আলমকে নিয়ে ছুটলেন ঢাকায়
এক মিনিট আগেও অফিস ছাড়তে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা
প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল: স্বীকার করলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক
বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় ভারত প্রস্তুত: রণধীর জয়সওয়ালম  
সুন্দর বিশ্ব তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট