শেরপুরে পুলিশের সামনেই হত্যার ভিডিও ভাইরাল, এসআই ক্লোজড
শেরপুরের শ্রীবরদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পুলিশের সামনেই শেখবর আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গলাকেটে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে প্রধান আসামি জিকোসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ওয়ারেস আলী নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) ক্লোজ করা হয়।
গত ২৩ মার্চ বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার হালুহাটি গ্রামে এ ঘটনার পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখবর আলীর ছোটভাই মাহফুজ বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার পর ইতোমধ্যেই প্রধান আসামি জিকোসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী জাকির হোসেন জিকোর সঙ্গে শেখবর আলীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জেরে ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলী। ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ মার্চ বিকালে ঘটনাস্থলে যান থানা পুলিশের এসআই ওয়ারেস আলীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ সময় জিকোসহ ৪-৫ জন অতর্কিতভাবে ধারালো দা, রাম দা, ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর উপর হামলা করলে ঘটনাস্থলেই শেখবর আলী মারা যান।
পরে এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে জিকোর স্ত্রীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান রাজাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে একই দিন শ্রীবরদীর বালিজুড়ি এলাকার গহীন অরণ্য থেকে মামলার প্রধান আসামি জিকোকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৪ জামালপুরের একটি দল। এ নিয়ে ওই মামলায় মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই অতর্কিতে রাম দা, দা, গরু জবাই করার ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীকে উপর্যুপরি আঘাত করেন জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ অন্যরা।
ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশ হতবিহ্বল হয়ে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাদের দিকেও তেড়ে আসে হত্যাকারীরা। মাত্র এক মিনিট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো হত্যাকাণ্ড এবং পুলিশের দিকে তেড়ে আসার ঘটনা ভিডিওতে লক্ষ্য করা যায়।
শ্রীবরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের জড়িতের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এ ছাড়া এ ঘটনায় পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ারেস আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
এমএসপি