রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

কুড়িগ্রামের চাকিরপশার ‘বিল’ না ‘নদী’, বিতর্ক চরমে

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অভ্যন্তরে অবস্থিত চাকিরপশার বিলকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। এটি নদী না বিল এ নিয়ে চলছে পক্ষে বিপক্ষে তুমুল বিতর্ক। পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস ও চাকিরপশার সুরক্ষা কমিটি এটিকে নদী ঘোষণার জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কর্তৃক দখল করা বিলটি যখন উদ্ধার করা যাচ্ছিল না, তখন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তৎপরতায় পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য এটি আশাব্যঞ্জক হলেও চাকিরপশার বিলকে কীভাবে নদ বা নদী বলা যায় তা নিয়ে বিতর্ক থামছেই না।

বিতর্কের মাঝেই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি তাদের প্রতিবেদনে চাকিরপশারকে কোথাও নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করেনি। তারা এটিকে বিল হিসেবে উল্লেখ করে বিলের পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য পরামর্শক হিসেবে ইটাকুড়ি বিল থেকে চাকিরপশার বিল পর্যন্ত প্রতিবন্ধক সড়কগুলোতে সেতু নির্মাণ এবং ব্যক্তি মালিকানায় দখল করা জায়গা রেকর্ড সংশোধনের মাধ্যমে পুকুর পাড় অপসারণ করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তারপরও কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলের নাম গোপন করে এটিকে নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন। যার আদৌ কোনো সত্যতা, তথ্য-উপাত্ত বা ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

সরেজমিন চাকিরপশার বিলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা শহরের এক কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত একটি অশ্বখুড়ের মতো গোলাকার বিল বা ছড়া। মাঝখানে কৈলাশকুটি নামে একটি গ্রাম রয়েছে। এই বিল বা ছড়ার সাথে নদীর কোনো সংযোগ নেই। আশির দশকে তৎকালীন জিয়া সরকার খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে বিলের পানি সহজে নদীতে স্থানান্তর করতে একটি সংযোগ খাল তৈরি করে। যা উলিপুরের বুড়ি তিস্তা খাল হয়ে ব্রহ্মপূত্র নদে গিয়ে পড়ত।

পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি নিষ্কাশন ও খাল খনন প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ করে। তারা সেচ কার্যক্রম ও পানির প্রবাহ ধরে রাখার জন্য পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে একটি রেগুলেটর স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিগ্রহণ করা খাল বা নালার সংস্কার কাজ না করায় এখন সেটি সরেজমিনে পরিণত হয়েছে। কোথাও নালার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চাকিরপশার বিল থেকে রেগুলেটরের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। মাঝখানে কোনো খাল বা নালার অস্তিত্ব না থাকায় চাকিরপশারকে কীভাবে নদ বা নদী বলা হচ্ছে এ নিয়ে হতবাক এলাকার মানুষ। তথাকথিত চাকিরপশার নদের উৎপত্তিস্থল বলা হচ্ছে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইটাকুড়ি বিল থেকে। ইটাকুড়িও একটি বদ্ধ জলাশয়, বিল বা নালা। এর সাথে তিস্তা নদীর কোনো সংযোগ নেই। এই বদ্ধ বিল বা জলাশয় থেকে নদ বা নদী কীভাবে উৎপত্তি হলো তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। ফলে রিভারনাইন পিপলসের নদী নিয়ে আন্দোলন কতটা যুক্তিসঙ্গত- তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল টিমের এক কর্মকর্তা জানান, নদী রক্ষা কমিশন থেকে যে টেকনিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল তাদের কর্মকাণ্ড ছিল একপেশে। ফলে টেকনিক্যাল টিমের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে তাতে স্বাক্ষর করেননি কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা।

রাজারহাট ভূমি অফিসের রেকর্ড অনুসারে দেখা যাচ্ছে, রাজারহাট ও চাকিরপশার ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত চাকিরপশার বিলটি বদ্ধ জলাশয় হিসেবে তৎকালীন ১৯৪০ সালে ভারত সম্রাটের নামে ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে সিএস রেকর্ডে নথিভুক্ত হয়। ৫টি মৌজায় ৬টি খতিয়ানে মোট ২৫৯.৪৫ একর জমি নথিভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকারের পক্ষে রংপুর কালেক্টরের নামে ১ নম্বর খাস খতিয়ানে ৫টি মৌজায় ৫টি খতিয়ানে ১৮৪.০৮ একর জমি ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয় ১৯৬২ সালে। এরপর নব্বই দশকের সময় ভূমিখোরদের আগ্রাসনে কমতে থাকে সরকারি নথিভুক্ত জমি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিএসএ জমি রেকর্ড করা হয় ২৬৫,৩১ একর, এসএ রেকর্ডে ১৮৪.০৮ একর এবং আরএস রেকর্ডে ৩৬.২৮ একর। অসাধু ব্যক্তিরা কতটা বেপরোয়া হলে এমন হতে পারে সেটি এখানকার জমির সর্বশেষ অবস্থান দেখলে বোঝা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বিলগুলো গ্রাস করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তারা আসলে কার পক্ষে কাজ করেছেন।

নথি ঘেটে ৫টি মৌজায় কীভাবে বিলগুলো গ্রাস হয়েছে তার চিত্র দেখে চমকে উঠার মতো। চাকিরপশার তালুকে সর্বশেষ রেকর্ড করা হয়েছিল ২০.৩৩ একর জমি। এখন সরকারের ভাগে রয়েছে মাত্র ৫.১১ একর জমি। ভূমি দস্যুদের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে ১৫.২২ একর জমি । নাফাডাঙ্গা বিলের ৮৮.৫৩ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ২,৪০৫ একর জমি। একই অবস্থা চান্দামারী বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির। এই বিলের ৪২,৬৭ একর ভূমি সরকারি ফাইল থেকে গায়েব হয়ে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে। সদাগড় বিলের ২৩.৫৩ একর জমির মধ্যে ১৬.৭৩ একর রেকর্ডভুক্ত হয়েছে ব্যক্তি মালিকানায়। সর্বশেষ খালিশা বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ৪৯.১৩ একর জমি । এ ব্যাপারে রাজারহাট ভূমি অফিসের ভাষ্য, সরকার থেকে মাঠ পর্যায়ে ব্যক্তির নামে রেকর্ড সংশোধনের জন্য রংপুর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে আপত্তি দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতের ডিগ্রির বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে এসএ ও আরএস এর মাধ্যমে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের খাস করা জমি এখন ১১৬টি হোল্ডিংয়ে পরিণত হয়েছে। অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে তারা ষাটের দশক থেকে এ সব জমি ভোগদখল করে আসছে। আগে বাপ-দাদারা জমি ভোগ করেছে, এখন করছে তাদের সন্তানরা। হচ্ছে হাত বদল। সারা বছর ধরে পানির প্রবাহ থাকা বিলকে তারা শ্রেণি পরিবর্তন করে জলাশয় থেকে কাগজে-কলমে দোলা শ্রেণিতে পরিণত করেছে। এর ফলে উজানের শত শত কৃষকের একরের পর একর ফসলি জমি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে খালি ফেলে রাখতে হচ্ছে।

এদিকে চাকিরপশার বিলের প্রবাহ বন্ধ করে পুকুরের মতো পাড় দিয়ে ছোট ছোট ডোবায় ভাগ-বাটোয়ারা করে ব্যক্তিগতভাবে মাছ চাষ করছে অবৈধ দখলদাররা। এতে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে উজানের পানি এখন আর এদিক দিয়ে বের হচ্ছে না। নিষ্ঠুরভাবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর দেয়াল তুলে দিয়েছে তারা। সরকারের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের এই বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ফলে চাকিরপশার বিল হারিয়ে ফেলেছে তার শারীরিক কাঠামো। এতে বৃত্তবানদের কাছ থেকে মালিকানা হারিয়েছে সাধারণ মৎসজীবীরা। পানিতে নামলেই লাঠিয়াল বাহিনী তেড়ে আসছে। ভূমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে উচ্ছেদে যেতেও পারছে না প্রশাসন।

সমাজকর্মী ও হরিশ্বর তালুক উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ মোল্লা (৭৪) জানান, আমরা কখনো দেখিনি এটা নদী। জন্মের পর থেকে রাজারহাটবাসী এটাকে বিল হিসেবে দেখে আসছে। জোড় করে বিলকে নদী বলা যায় না। যে বিলের মাছ খেয়েই আমরা বেড়ে উঠেছি।

চাকিরপশার কিশামত পূর্ণকর গ্রামের আবু হানিফ (৭১) বলেন, ‘হামার বাপ-দাদারা বৃটিশ আমল থাকি এটা বিল বলি জানছে। মাঝোত নদী নিয়ে আন্দোলন হইলো। এতে হামার কি লাভ হইল। আগোত হামরা মাছ মারি খাছি। এ্যালা বিলোত নামবেরে দেয় না। বড়লোকেরা বিলটা খায়া ফেলাল বাহে। হামরা সাধারণ মানুষ মাছ খাবার পাই না।’

তথ্যানুসন্ধান করে দেখা যায়, এই বিলের বড় একটি অংশ প্রায় ৬ একর জমি দখল করে আছে সাবেক চেয়ারম্যান পনির উদ্দিন আহমেদের সন্তান মিন্টু ও বাবলুরা। সাবেক ইসমাইল চেয়ারম্যানের নাতি টিটুরা দখল করে আছে ১০ একর জমি এবং আব্দুল্লাহ সরওয়ার্দীর ছেলে বর্তমান রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান বাপ্পীরা দখল করে আছে ৬ একর জমি। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা আবু বকর ১২ একর জমি দখলে নিয়ে ফারুক নামে একজনকে লিজ দিয়েছে। অপরদিকে পাঠানপাড়া ঈদগাহ মাঠ এলাকার সরকারি লিজকৃত জমি ভোগ করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুনুর গ্রুপের মোশাররফ, রনিসহ বেশ কয়েকজন। ব্র্যাক অফিস থেকে চান্দামারী রামশিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সরকারি লিজকৃত জমি ভোগদখল করছে বাপ্পী গ্রুপের রিপন, মুন, রাইসুলসহ বেশ কয়েকজন। এখানে বছরের পর বছর যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত তারা এখন মাছবিহীন জীবনযাপন করছে।

মাজাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম (৪৬) জানান, এই চাকিরপশার বিল ও চান্দামারী বিলকে ঘিরে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার। যারা বৃটিশ আমল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। মাছের উপর র্নিভরশীল। এসব মাঝি পরিবার এখন পেশী শক্তির কাছে তাদের পেশা হারাতে বসেছে।

রাজারহাট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনিমেষ ও মহসিন জানায়, বিলের উপরে এলজিইডি কর্তৃক পাকা সড়ক করা হয়েছে। যারা জমি দখলে রেখেছেন তারাও তীরে পাড় দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এসব কারণে শত শত বিঘা আবাদী জমি জলাবদ্ধতায় চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এখানে ২২ থেকে ২৫টি পরিবারের জন্য শত শত কৃষক চোখের জল ফেলছে। আমাদের আন্দোলন বিলকে পূর্বের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়া হোক। এটা নদী নয়। জোড় করে এটিকে নদী বানানো যাবে না।

এদিকে চাকিরপশা নদী না বিল এ নিয়ে গত ২০২১ সালের ২ ও ৩ নভেম্বর টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। কমিশনের পরিকল্পনা ও মনিটরিং বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মতলুবুর রহমানকে আহ্বায়ক, সহকারি প্রধান মাহমুদুল হাসানকে সদস্য সচিব, পানি বিশেষজ্ঞ মো. সাজিদুর রহমান, কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সদস্য করা হয়। টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, রাজারহাটের উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এবং রাজারহাটের ভূমি কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে চাকিরপশার বিলকে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই কমিটি। তবে দ্বিধাবিভক্ত দেখা দেয়। ফলে প্রতিবেদনে স্বাক্ষরদানে বিরত থাকেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসি ল্যান্ড। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনটি সর্বজনিন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ব্যর্থ হলেও তারা ঢাকায় গিয়ে নিজেদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুড়িগ্রাম অফিসকে প্রেরণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, নদ বা নদীর যে উপসঙ্গগুলো থাকে সেটি এখানে নেই। এখানে কোনো চর পড়ে না, নদী ভাঙন নেই, স্রোতে বা পানির প্রবাহ নেই, তীর বা পাড় নেই। ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত তিস্তা নদীর সঙ্গে কোনো প্রকার সংযোগ নেই। এখানে শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমে তদন্ত করা হয়েছে, শুকনো মৌসুমে এর অবস্থান নির্ণয় করা হয়নি। কিছুটা তাড়াহুড়ো ছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে কমিটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়লেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চাকিরপশার বিলের নাম উল্লেখ না করে পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বুড়ি তিস্তা বিলের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তান আমল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের অধিগ্রহনকৃত জমির খাজনা দিয়ে আসছে। আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাল/নালা হিসেবে গত বছরের ২৪ মে ৫ হাজার ৯১২ টাকা খাজনা দিয়েছি। বিল এবং সেচ জমির জন্য রেগুলেটর স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এটিকে নদ বা নদী বলার কোনো অবকাশ নেই।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলেছেন, গত ১৪/১১/২০২১ তারিখে কমিটি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে হয়। তৈরি করা প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌখিকভাবে জানান যে প্রেরিত প্রতিবেদনের সাথে কিছু বিষয়ে তাদের মতদ্বৈততা রয়েছে এবং কিছু বিষয়ে পরিবর্তন প্রয়োজন। পরবর্তীতে মতপার্থক্য দূর না হওয়ায় এবং সেটিতে স্বাক্ষর না হওয়ায় কিছু সুপারিশ দিয়ে চাকিরপশারকে বুড়ি তিস্তার অংশ হিসেবে ধরে এটিকে বিল হিসেবে চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের রিপোর্টের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী চাকিরপশার একটি বিল। যা এসএ রেকর্ডে অনেক ব্যক্তির নামে বিল বা দলা শ্রেণি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা আছে। এ ছাড়া ১ নম্বর খাস খতিয়ানের কৃষি জমি সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা প্রদান করা আছে। সিএস জরিপ ও বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী চাকিরপশার বিলের অভ্যন্তরে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৯৮০ সালে ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করে একটি খাল খনন করা হয়। যার মাধ্যমে রাজারহাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পানি নিষ্কাশিত হয়। চাকিরপশার বিলের সাথে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে রাজারহাট মীর ঈসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান চাঁদ জানান, এর আগে ইটাকুড়ি বিল ভোগদখল করে আসছিল ড. তুহিন ওয়াদুদের বাপ-দাদারা । তার দাদা সাফাতুল্যাহ প্রেসিডেন্ট (সাবেক চেয়ারম্যান) ইটাকুড়ি ও চাকিরপশার বিল সংযোগ স্থান ভোগদখল করে নেন। এরপর তার ছেলে অর্থাৎ ড. তুহিন ওয়াদুদের বাবা আব্দুল কুদ্দুছ ডাক্তার সেই জমিগুলো বিক্রি করে দেন।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ছাটমল্লিকবেগ গ্রামের আহমদ উল্যাহর ছেলে লেবু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই ফারুক মন্ডল সেই জমি কিনেছেন। আরো অনেকে সেই জমি কিনে নিজ স্বত্বমূলে ভোগদখল করছে। আগে সে আন্দোলন করেনি। এখন তার বাড়ি চাকিরপশার বিলের উজানে। চাকিরপশার বিলের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তাদের পারিবারিক কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বিলকে নদী বানাচ্ছেন। নিজেকে সুশীল সমাজের ধারক বাহক হিসেবে পরিচিত করতে তিনি এই হীনচেষ্টা চালাচ্ছেন। যেটা কারো কাম্য নয়।

রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে বিল হিসেবে দেখে আসছি। চাকিরপশা যদি নদী হয় তাহলে চলনবিলকে এরা মহাসাগর হিসেবে দাবি করবে। জেলার বাইরের মানুষের কাছে আমরা হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমাদেরকে বলা হচ্ছে এখানে নাকি নদ-নদী গ্রাস করা হচ্ছে। যেখানে ৪০ দশক থেকে বিল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে সেখানে কোনো বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কাউকে খুশি করার জন্য এই বিলকে নদী বলা হচ্ছে।বাইরের মানুষ এসে দেখুক চাকিরপশার বদ্ধ জলাশয়, আসলে নদী না বিল।

পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস’র পরিচালক ও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, চাকিরপশার একটি প্রাকৃতিক প্রবাহ আছে। এর বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। কোথাও চাকিরপশার, কোথাও মরাতিস্তা কোথাও বুড়িতিস্তা নামে পরিচিত। কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত বুড়িতিস্তা নদীর উজানের অংশ চাকিরশপার।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ইটাকুড়ি থেকে উলিপুরের থেতরাইয়ের তিস্তা পর্যন্ত একে বাধাহীন করতে হবে, সিএস নকশা ধরে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে, সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করলে চাকিরপশার বাঁচবে। হাজার হাজার একর জমির জলাবদ্ধতা দূর হবে। জেলেরা জীবিকা ফিরে পাবে, জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম জানান, আমাদের সংগৃহিত রেকর্ডকৃত কাগজপত্র কখনোই বলছে না চাকিরপশার একটি নদ বা নদী। ফলে কমিটির সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি। বিলের অধিকাংশ জমি বন্দোবস্ত ও ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। তাদেরকে আমি বৈধ কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছিলাম। তারা কাগজপত্র দেখিয়েছে। এখন তাদের দাবি করা কাগজপত্র যে সঠিক নয় এটি প্রমাণ করতে আমাকে আইনগতভাবে এগুতে হচ্ছে। উচ্ছেদ করতে গেলে আমাকে আইন মেনেই এগুতে হবে। ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। যে প্রক্রিয়াটা চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সবগুলো অভিযোগ পেয়েছি। পর্যালোচনা করছি। এটি জটিল আকার ধারণ করেছে। সমন্বিতভাবে সমাধান করতে হবে। ইতোমধ্যে চাকিরপশার বিলের ইজারা স্থগিত করা হয়েছে। বিলগুলো অন্যায়ভাবে ব্যক্তি মালিকানা বলে রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গেজেট হয়ে থাকলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে আপিল করা হবে। মামলা করা হবে। যদি না হয়ে থাকে তাহলে জোনাল সেটেলমেন্ট রংপুর জোনে আপত্তি করা হবে। যে কাজগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এসআইএইচ

Header Ad

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও মানবিক স্টোরি তুলে ধরে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সংসদ সদস্য।

বর্তমানে এমপি হলেও আগের মতো নানা ইস্যুতে আওয়াজ তুলেন ব্যারিস্টার সুমন। সেই ধারাবাহিকতায় মানবিকতার আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি।

মিল্টন সমাদ্দার মানবিক কাজ দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। বর্তমানে তার মানবিক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা উচিৎ, যারা মানবিক কাজ করে মুখ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে করে। মুখ দিয়ে মানবিক কাজ করলে নানা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিন্তু হৃদয় থেকে করলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।

মানবিক কাজগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলে সমাজে কী নীতিবাচক প্রভাব ফেলে না? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, সমাজে নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে ফেলতে এই পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়েছি। আর পেছনের যাওয়ার সুযোগ নেই, সামনের দিকে যেতে হবে। আমরা নষ্ট হওয়ার শেষ পেরিয়ে গেছি। এর থেকে বেশি নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, দুস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের আশ্রয় ও সাহায্যের মতো মানবিক কাজের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত পান মিল্টন সমাদ্দার।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসব কাজের আড়ালে তার নানা অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বুধবার এই মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, আশ্রয় দেওয়া অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের কিডনি বিক্রি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান

ছবি: সংগৃহীত

চলমান ছাত্র বিক্ষোভে দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি। খবর ইরানি গণমাধ্যম ইরনার

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমন প্রসঙ্গে কানানি বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের মিথ্যা রক্ষকদের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ঠেকাতে দমন-পীড়নকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য সত্যকে বিকৃত করে শিক্ষার্থী ও একাডেমিক কর্মীদের প্রকৃত ক্ষোভ ও তাদের প্রতিবাদকে ইহুদিবিদ্বেষ হিসাবে বর্ণনা করছে মার্কিন সরকার।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল। বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ক্লাস-পরীক্ষা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকতেও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তারা।

এমনকি পুলিশ এসে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। গ্রেফতার করেছে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে। তবে এতকিছু করেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পুলিশ প্রশাসন। উলটো তা আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছাড়িয়ে এখন বৈশ্বিক রূপ ধারণ করেছে।

নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, যেকোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। সরকারের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অন্যুায়ী ব্যবস্থা নিবে।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহীর চার জেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদা সুলতানা একথা বলেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি পছন্দের প্রার্থী পক্ষে নেক দৃষ্টি দিয়ে সরকারের অতি সুবিধাভোগি কিছু ব্যক্তিরা (মন্ত্রী-এমপি) এ নির্বাচনে প্রভাব খানাটোর চেষ্টা করছেন। ওই সমস্ত পদে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো- দয়া করে আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনি এলাকার ভোটার আপনি আসবেন ভোট দিবেন চলে যাবেন। আপনি যে পর্যায়ে আছেন- আপনি আপনার মান ইজ্জত রক্ষা করবেন। আপনার ইজ্জত আপনি যদি রক্ষা না করেন তাহলে কিন্তু যে কোন মুহুর্তে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর দায় কিন্তু আমরা নিব না। আপনাই সেটা বহন করবেন। আপনারা নিজের মর্যাদায় আসিন থেকে দ্বায়ীত্ব পালন করবেন।

প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে ইসি রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের সৌন্দর্য নেই, গ্রহনযোগ্যতা নেই, আনন্দও নেই। ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতা আর ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতার মধ্যে প্রার্থক্য আপনারাই বুঝতে পারবেন। তাই আপনার চিন্ত করেন, পরিবেশ নষ্ট করে ১০ শতাংশ ভোটে জিততে চান ভোটার না এনে; ৮০ শতাংশ ভোটে জিততে চান। আপনাদের উপর এই ভারটা ছেড়ে দিলাম সিদ্ধান্ত নেয়ার।

ইসি বলেন, ভোটের দিন কোন রকম উশৃঙখলতা, বিশৃঙখলাতা, সহিংস আচরণ, ভোট কেন্দ্র দখল করার মত কোন দুঃসাহস করবেন না। আপনার অবৈধভাবে যে ব্যালটই রাখেন না কেন আমাদের কাছে তথ্য গেলে প্রমান পেলে সেই ভোট বাতিল করে দিব যেকোন মুহুর্তে। আর অসাধুচারণ করেন, আচরন বিধি ভঙ্গ করেন আমরা কিন্তু নির্বাচনের মুহুর্তেও প্রার্থীতা বাতিল করে দিব। ভোটের দিন যে কোন নৈরাজ্য মূলক আচরণ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করবো, নির্বাচন বাতিল করবো, প্রার্থীতা বাতিল করবো।

তিনি আরও বলেন, গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। জনগনের মনে যেন গেঁথে থাকে এমন একটি নির্বাচন হবে এবার। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কমিশন চায় না।

নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদেশ্যে রাশেদা সুলতানা বলেন, কোন প্রার্থী জিতল কোন প্রার্থী জিতল না এ নিয়ে ইসির কোন মাথা বেথা নেই। নির্বাচন কমিশনের একটি নির্দেশনা, আপনার সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখবেন, নিরপেক্ষতার সাথে দেখবেন, যে হাঙ্গামা করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে কমিশনার নির্দেশনা যিনি প্রতি পালন করবেন না তার দায়দায়িত্বও তিনি নিবেন। আপনাদের কৃতকর্মের দায় কমিশন বহন করবে না।

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও জয়পুরহাটের উপজেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

সর্বশেষ সংবাদ

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত
টানা ৮ দফা কমার পর বাড়ল স্বর্ণের দাম
দিয়াবাড়ির লেক থেকে ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীবাসীর জন্য সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
মক্কায় প্রবেশে আজ থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ
‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান
সুন্দরবনের গহীনে ভয়াবহ আগুন, ছড়িয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে
স্কুলে দেরি করে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
আইপিএলের প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে কারা?
আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করল মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য