শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

নদী কাটার মহোৎসবে মেতেছে প্রভাবশালীরা, রাত নামলেই শুরু হয় কর্মযজ্ঞ !

টাঙ্গাইলের নিউ ধলেশ্বরী নদীর তীরে মাটিকাটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ছবি- ঢাকাপ্রকাশ।

টাঙ্গাইলের নিউ ধলেশ্বরী নদীর সাত কিলোমিটার এলাকার কয়েকটি স্পটে তীর কেটে বিক্রির প্রতিযোগিতায় নেমেছে মাটিখেকোরা। প্রতিদিন রাত নামলেই শুরু হয় তীর কাটার মহোৎসব। দিনের আলোয় সুনশান নিরবতা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাত ৯টার পর নদীতীর এলাকায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। জনস্বার্থে নদীতীর ও জমির টপসয়েল কাটা বন্ধে পৌরসভার উদ্যোগে মাইকিং করা হলেও কেউ কর্ণপাত করছেনা।

এনিয়ে কালিহাতী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদেকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যান আদালতের একাধিক অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা আদালতের অভিযান চলাকালে আত্মগোপনে থেকে অভিযানের পর পরই কৌশলে প্রতিযোগিতামূলকভাবে মাটি-বালু কেটে বিক্রিতে মেতে ওঠছে।

টাঙ্গাইলের নিউ ধলেশ্বরী নদীর তীরে মাটিকাটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ছবি- ঢাকাপ্রকাশ।

জানা যায়, নিউ ধলেশ্বরী নদীর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া ও এলেঙ্গা পৌরসভার অংশে ছয়টি স্পটে দুই তীর কেটে মাটি ও বালু বিক্রি করছে এক শ্রেণির সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী। স্পটগুলো হচ্ছে- টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের বড় বাসালিয়ায় দুইটি স্পট এবং এলেঙ্গা পৌরসভার চরভাবলা, হায়াতপুর, চরবাঁশি।

এর মধ্যে বড় বাসালিয়ার দুইটি স্পটে উজ্জল, খোকন, সুমন, নাজমুল, আলামিন, জয়, একই এলাকার অপর স্পটে ফেরদৌস, নাজু, এলেঙ্গা পৌরসভার চরভাবলা স্পটে অসিম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, এসকে আলম, হায়াতপুর স্পটে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ছানোয়ার হোসেন, এরশাদ, বকুল তালুকদার, আরিফ, লাবু, জাহিদ, চরবাঁশি দুইটি স্পটে আওয়ামী লীগ নেতা মাজেদুর রহমান, আব্দুল হালিম, অপর স্পটে রফিক, শফিক প্রমুখ।

সরেজমিনে দেখা যায়, এলেঙ্গা পৌরসভার চরভাবলা স্পটে নিউ ধলেশ্বরী নদীর বামতীরে প্রায় আটশ’ মিটার এলাকার তীর কেটে মাটি-বালু বিক্রি করা হয়েছে। উজান ও ভাটিতে মাটি কাটার ফলে স্থানীয় মৃত সোলেমান মিয়ার প্রবাসী ছেলে শরীফদের বসত বাড়ি পুরোপুরিভাবে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সোলেমান মিয়ার এক ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে মেয়েদের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। শরীফ প্রবাসে থাকেন। বাড়িতে শুধুমাত্র তার মা শাহিদা আক্তার বসবাস করেন।

শাহিদা আক্তার জানান, তাদের বাড়ির তিন দিকে মাটি কেটে স্থানীয় ব্যবসায়ী অসিম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম ও এসকে আলমরা বিক্রি করেছে। তিনি বার বার নিষেধ করলেও তারা মানেনি। পৌরসভায় জানিয়েও কোনো সুফল হয়নি। বর্ষা মৌসুমে তার বাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সমুহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

হায়াতপুর স্পটে দিন-রাত চারটি ভেকু মেশিন (খনন যন্ত্র) দিয়ে ২০-২৫ ফুট গভীর করে নদীতীর কেটে প্রতিদিন দেড় শতাধিক গাড়ি মাটি-বালু বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। দিনের আলোয় কয়েকদফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানোর কারণে এখন রাত ৯টার পর থেকে নদীতীর সহ আশপাশের তিন ফসলি জমি কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।

এ স্পটের মাটি ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করে জানান, তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নদীতীর কেটে মাটি-বালু বিক্রি করছেন। এজন্য তারা এখন দিনে মাটি কাটেন না বা পরিবহণও করেন না। তাছাড়া আগামি বর্ষা মৌসুমে যমুনার পলি জমে কেটে নেওয়া জমিগুলো ভরাট হয়ে যাবে।

চরবাঁশি স্পটে গিয়ে দেখা যায়, নিউ ধলেশ্বরী নদীর ডানতীরে তিনটি ভেকু বসিয়ে রাখা হয়েছে। চারদিকে সুনশান নিরবতা। রাত ৯টার পর সেখানে মাটি-বালু ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। শ্রমিকরা মাটি কেটে ভেকু দিয়ে ট্রাক ভরে দেন। কেউ মাটি কাটা তদারকি করেন, কেউ পরিবহণের ট্রাকে ট্রিপ দেন। এ লক্ষে রাতে সেখানে অস্থায়ী দোকানও বসে। বালু ব্যবসায়ী ও তাদের সহযোগীরা খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়ার দুইটি স্পটে তিনটি ভেকু দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে দিনের আলোয় কোন কাজ করা হয়না। রাত নামলেই পুরো এলাকা শ’ শ’ ছোট ছোট ট্রাক ও ভেকু মেশিনের আলোয় ঝলমলিয়ে ওঠে। নিউ ধলেশ্বরী নদীর বামতীরে জমে থাকা পলি কেটে বিক্রি করা হয়।

এদিকে ওই স্পট দুটি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ও কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। জমে থাকা পলিমাটি সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া ও এলেঙ্গা পৌরসভার যৌথ অংশে হলেও তা কালিহাতীর এলেঙ্গা পৌরসভার সড়ক দিয়ে পরিবহণ করতে হয়। ফলে প্রায় দুই কোটি পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত পৌরসভার সড়কটি যেকোন সময় ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নদী তীরবর্তী স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিউ ধলেশ্বরী নদীর তীর কেটে মাটি-বালু বিক্রি করার ফলে বর্ষা মৌসুমে তীব্র ভাঙনে বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। তীরবর্তী সহ আশপাশের তিন ফসলি জমিগুলো অনাবাদী থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

রাতের আঁধার ভেদ করে উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে ট্রাক চলাচল করায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে- গ্রামীণ সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধুলাবালির কারণে আশপাশের বাড়ি-ঘরে রাখা খাবারগুলোতে বালুর স্তর পড়ে নষ্ট হচ্ছে। নারী-শিশু ও বয়ষ্করা শ্বাসকষ্ট সহ বালু ও বায়ু বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করে জানায়, মাটি-বালু ব্যবসায়ীরা এলাকায় খুবই প্রভাবশালী। কেউ কেউ সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাদেরকে অবৈধ মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধে বার বার অনুরোধ করলেও কেউ শুনেনি। এলাকার কেউ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠলে তার বিরুদ্ধে মাটি-বালু ব্যবসায়ীরা ভিন্ন অজুহাতে মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকে। এ কারণে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনা।

এলেঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর সুকুমার ঘোষ জানান, নিউ ধলেশ্বরী নদীতীর কেটে মাটি-বালু বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি তারা এলাকার মানুষদের এ বিষয়ে সচেতন করতে কাজ করছেন। তিনি মাটি-বালু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতা করছেন না বলে তাকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানোর অপচেষ্টা করছে।

এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, পৌরসভার যে কোন এলাকায় মাটি-বালু বা নদীতীর কিংবা নদী খনন করে বালু উত্তোলন বন্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে ৩-৪ দিন ধরে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া ‘টাঙ্গাইল জেলার ১০টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের’ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কায় চলাচলরত বালুবাহী ট্রাক বন্ধ করার জন্য বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এলেন/পৌঃ/প্রকৌঃ/২০২৪/১৯৫২ নং স্মারকমূলে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যথানিয়মে পত্র দিয়েছেন।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু বা মাটি উত্তোলনের অধিকার কারো নেই। ইতোপূর্বে খননকৃত ড্রেজড ম্যাটারিয়াল সংশ্লিষ্ট কমিটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করেছে এবং সেগুলো অপসারণও করা হয়েছে। নতুন করে নদী খনন করার কোন প্রকল্প নিউ ধলেশ্বরী নদীতে নেই।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, শুধু নদীতীর নয় যে কোন এলাকার মাটি-বালু উত্তোলন বা কেটে বিক্রি করার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। নিউ ধলেশ্বরী নদীর পৌলি এলাকায় মহাসড়কের আশপাশে তীর কেটে বিক্রি করার খবরে প্রায় প্রতিদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই- অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত গম বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। একই সঙ্গে এই গম আমদানিতে জড়িত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানাবে দেশটি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের ভারতস্থ রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক জানান, বাংলাদেশ সরকারকে বারবার সতর্ক করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। তার ভাষায়, "আমরা একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। ফলে এখন বিষয়টি ইইউতে তোলা হবে।"

রাষ্ট্রদূতের দাবি, রাশিয়ার কিছু কোম্পানি ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চল থেকে শস্য সংগ্রহ করে তা রাশিয়ার উৎপাদিত গমের সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করছে—যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বেআইনি এবং 'অর্থনৈতিক লুটপাটের' শামিল।

রয়টার্সের হাতে থাকা নথিতে বলা হয়, ইউক্রেনের নয়াদিল্লি দূতাবাস এ বছর বাংলাদেশ সরকারের কাছে একাধিক চিঠিতে ১.৫ লাখ টনের বেশি ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ার কফকাজ বন্দর থেকে এই গমগুলো আমদানি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল কৃষিভূমি ও ক্রিমিয়া দখল করার পর থেকেই ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ। ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। তবে রাশিয়ার দাবি, ওই অঞ্চল এখন তাদের ভূখণ্ড এবং সেখানকার শস্য রপ্তানি বৈধ।

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য দেয়নি। তবে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বাংলাদেশ কখনোই চুরি করা গম আমদানি করে না। রাশিয়ার অধিকৃত কোনো এলাকা থেকে গম আনার প্রশ্নই ওঠে না।”

Header Ad
Header Ad

খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের অভিযোগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

তবে প্রকৃত ঘটনা হলো- গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়াই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ স্থাপন করেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ শর্তে অনুমতি দেয় যে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়োজকরা অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলবেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা পারস্পরিক শর্ত লঙ্ঘন করে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা সেখানে একটি ‘মহাকালী’ (কালী মূর্তি) স্থাপন করে।

বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যবশত তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত শত শত দোকান এবং রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মূলত বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব দিক থেকে ২০০ ফুট দূরে কেবল বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় আরও দুইটি রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইন সম্পন্ন করার জন্য এ জমির খুব প্রয়োজন ছিল।

বিগত মাসগুলোতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়। গত ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে অবশেষে সবাইকে সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়, যার মধ্যে পূজা আয়োজকদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত মণ্ডপটি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে ২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে খিলক্ষেত এলাকার রেল ট্র্যাক বরাবর সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত এবং আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম।

যদিও দেশের আইন অনুসারে নির্মিত কোনো ধর্মীয় স্থাপনার সঙ্গে বৈষম্য না করে সমস্ত উপাসনালয়ের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবুও কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়। অস্থায়ী মণ্ডপের আয়োজকরা তাদের নিজস্ব অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা এবং সদিচ্ছাকে স্পষ্টতই কাজে লাগিয়েছেন।

বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে উপাসনালয়ের সুরক্ষা। বাংলাদেশকে তার সমন্বিত ঐতিহ্য বজায় রাখতে কখনও বাধা দেয়নি যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস বা বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উন্মুক্ত সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ সবাইকে তথ্য এবং বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়

আসাদুজ্জামান আলী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আলী নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এনসিপির এ পদে একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতার অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক ও সমালোচনা।

গত ২১ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কুমারখালী উপজেলা শাখার ১২ সদস্যের সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষর করেন। এই কমিটিতেই আসাদুজ্জামান আলীকে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আসাদুজ্জামান আলী কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং এক সময় কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্বও পালন করেন। তবে নানা অভিযোগে তাকে সেখান থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলী ছাত্রলীগে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা ও ঘুষ বাণিজ্য, সেল্টার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। এমনকি তার বাবা আবদুর সামাদ পাখির বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আছে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলীকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির কমিটিতে আলীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, অতীতের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জানা সত্ত্বেও কীভাবে একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনসিপির মতো একটি দলে নেতৃত্বের জায়গা পেলেন, তা নিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জবাবদিহি প্রয়োজন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান আলী খান। তিনি বলেন, “আমি আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে সক্রিয় ছিলাম। সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”

তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চাইছে। “আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অপকর্ম প্রমাণ করতে পারলে আমি কুমারখালী ছেড়ে চলে যাব,” বলেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন
খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়
দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০ জন
১১ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উইন্ডিজ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে
গাজায় হামাসের হামলায় ৩ দিনে ১৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন প্রায় ২ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৫৯
ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়া-মারধরের ঘটনায় আসামি নাসিম গ্রেপ্তার
অভিমান ভুলে বুকে জড়িয়ে নিলেন রিয়া মনি, হিরো আলমকে নিয়ে ছুটলেন ঢাকায়
এক মিনিট আগেও অফিস ছাড়তে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা
প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল: স্বীকার করলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক
বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় ভারত প্রস্তুত: রণধীর জয়সওয়ালম  
সুন্দর বিশ্ব তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট