ঢাবিতে ভর্তির জন্য দুই শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সহায়তা দিল নওগাঁ জেলা প্রশাসন

ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই অসহায় শিক্ষার্থীকে ঢাবিতে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
ওই দুই শিক্ষার্থী প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছিলো না। সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সংক্রান্ত কাজে ও কিছু বই কেনা বিষয়ে দুই শিক্ষার্থীর মাঝে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে নগদ এই অর্থ প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থী রিতু রানি সাহা জানায় সে নওগাঁ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে। তার বাবা একজন অটোচালক। বাবার আয়ের উপরই তাদের পরিবারের ছয় সদস্য নির্ভরশীল। তার ছোট বোন এবার ৭ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।
নিজের পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ হওয়াই সে অনেক আগে থেকেই টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ যোগান দিয়ে আসছিলো। এমতাবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াসহ যাতায়াতের অর্থের খরচ বহন করা তার বাবার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সে আর্থিক সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে। জেলা প্রশাসক স্যারের এমন সহায়তা তার জীবনকে বদলে দিতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে।
এমন সহায়তা না পেলে হয়তোবা তার ভর্তি হওয়ার সুযোগ হতো না। আর ভর্তি হতে না পারলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শেষে নিজেকে সুশিক্ষিত করে সুনাগরিক হিসেবে বিনির্মাণ করা সম্ভব হতো না। তাই এমন সহায়তা করায় জেলা প্রশাসক স্যারের প্রতি ধন্যবাদসহ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সহায়তার সঙ্গে স্যারের প্রদান করা পরামর্শ তার জীবনকে বদলে দিতে এবং জীবনের স্বপ্ন পূরণে পাথেয় হিসেবে কাজ করবে বলে জানায় শিক্ষার্থী রিতু। একই অভিমত ব্যক্ত করেছে জেলার পত্নীতলা উপজেলার আরেক অসহায় শিক্ষার্থী ইছাহক আলী।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান শহরের সুলতানপুর এলাকার রিতু রানি সাহা চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ পায়। অপরদিকে জেলার পত্নীতলা উপজেলার আরেক মেধাবী শিক্ষার্থী ইছাহক আলী একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ পায়। কিন্তু তাদের পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ার কারণে ভর্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার মতো অর্থ যোগান দিতে তাদের পরিবার সক্ষম না হওয়ার কারণে জেলা প্রশাসক বরাবর আর্থিক সহযোগিতার জন্য আবেদন করে।
সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ভর্তি সংক্রান্ত কাজে ও কিছু বই কেনার বিষয়ে সহায়তা হিসেবে কিছু নগদ অর্থ প্রদান করা। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেকে একজন নিরাপদ মানুষ হিসেবে বিনির্মাণ করে নিজের মেধা আর মননকে দেশ, জাতি ও নিজের পরিবারের কল্যাণে প্রয়োগ করার সুযোগদানে মেধাবীদের এই ধরনের সহায়তা প্রদানের কার্যক্রম বিগত সময়েও অব্যাহত ছিল এবং আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
