বুধবার, ৮ মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

নারীরা বাসে বেশি যৌন হয়রানির শিকার: গবেষণা

দেশে মোট তরুণীদের মধ্যে ৬৫ দশমিক ৫৮ শতাংশই যৌন হয়রানির শিকার হয়। এর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ তরুণী জানিয়েছেন যে তারা বিকৃত যৌন ইচ্ছার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ তরুণীকে আপত্তিকর স্পর্শের ভুক্তভোগী হতে হয়েছে। আর বিভিন্ন জায়গায় ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান আঁচল ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, জরিপে অংশগ্রহণকারী এক হাজার ১৪ জন শিক্ষিত তরুণীদের থেকে সাম্প্রতিককালে তারা কতটা বৈষম্য, লাঞ্ছনা, যৌন হয়রানি, সমাজ ও পরিবারে প্রতিবন্ধকতা, নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি বিষয়ের শিকার হয়েছেন ও এ সব বিষয় তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে সমন্বয়করা তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণালব্ধ পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।

জরিপে অংশগ্রহণ করেছেন ১৮ থেকে ৩০ বছরের সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের তরুণী। অংশগ্রহণকারী তরুণীদের ভেতর অবিবাহিত ৮৮ দশমিক ১৭ শতাংশ ও বিবাহিতের সংখ্যা ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং বাকীরা আর সংসার করছেন না।

নারীরা বাসে বেশি অনিরাপদ-

আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, দেশের শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র ও বিভিন্ন প্রয়োজনে নারীরা গণপরিবহণ ব্যবহার করে থাকেন। তবে সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৫ দশমিক ২৭ শতাংশ তরুণী গণপরিবহণে যৌন হয়রানির শিকার হন। গণপরিবহণ হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত বাস বা বাসস্ট্যান্ডে যৌন হয়রানির মতো অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হন ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ তরুণী। এ ছাড়াও, রেল বা রেল স্টেশনে ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ তরুণী যৌন হয়রানির শিকার হন।

বাইরে আপত্তিকর স্পর্শের শিকার হন নারীরা-

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির মধ্যে আপত্তিকর স্পর্শের শিকার হয় ৬৪.৯২ শতাংশ তরুণী। এমনকি ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ তরুণী কুদৃষ্টি এবং অনুসরণের শিকার হয়েছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী আরও জানা যায়, তরুণীরা সবচেয়ে বেশি এ ধরনের নিপীড়নের শিকার হন একাকী চলার সময়ে, যা ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। তবে ২১ দশমিক ৫৭ শতাংশ মা, বোন, বান্ধবী বা অন্য নারী সঙ্গী থাকা অবস্থায় এবং ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাবা, স্বামী, ভাই বা অন্য পুরুষ সঙ্গী থাকা অবস্থায় নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে সমীক্ষায় উঠে আসে।

শৈশবেও রেহাই পায়নি নারী-

সমন্বয়করা তথ্যানুসারে, ৩৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ তরুণী শৈশবে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন। তার মধ্যে আত্মীয়-স্বজনের দ্বারা ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ যৌন নিগ্রহমূলক আচরণের শিকার হন। শৈশবে অপরিচিত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা ভুক্তভুগী হন ২৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়াও ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এহেন হীন আচরণের শিকার হন। শৈশবের এরূপ ঘটনা ২৮ দশমিক ৪৩ শতাংশের মনে সবার প্রতি অবিশ্বাসের জন্ম দেয় এবং ২৮ দশমিক ১৭ শতাংশের ভেতর পুরুষ বিদ্বেষী মনোভাবের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ একা থাকতে ভয় পান। সমীক্ষা মতে, ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ নারী উল্লেখিত সব ধরনের ট্রমার ভেতর দিয়ে গেছেন বলে জানা যায়।

সংবেদনশীল ছবি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়-

সংগ্রহকরা তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে দেখা যায়, ৪৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ তরুণী অনলাইনে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে অবান্তর ও কুরুচিপূর্ণ মেসেজ পাঠিয়ে এবং মন্তব্য করে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে ৬১ দশমিক ১২ শতাংশকে। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন ১০.৩৪ শতাংশ। ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ছবি নিয়ে দুর্ভোগ পোহান বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও অযাচিত আইডি স্টাকিংয়ের শিকার হন ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ।

জরিপে অংশ নেয়াদের মধ্যে তরুণীরা মতামতের ক্ষেত্রে তার পরিবারে গুরুত্ব পায় কিনা, সেই প্রশ্নের নেতিবাচক উত্তর দেন অংশগ্রহণকারীদের ২২ দশমিক ২৯ শতাংশ। শুধুমাত্র নারী হওয়ার দরুণ মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় ৪৬ দশমিক ২৫ শতাংশকে।

নারী ক্ষমতায়নের যুগে নারীদের এই আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপট নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী সাইফুদ্দিনের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সমাজের একটি অংশ হিসেবে নারীদের যতটুকু সন্মান বা মর্যাদা পাওয়া উচিত সেটা আধুনিক সময়ে এসেও আমাদের সমাজে এখনো নেই। ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন ছাড়া এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়, এজন্য প্রতিটি স্তরের নারীদের এগিয়ে আসতে হবে, বিশেষ করে এখন যারা বড় বড় অবস্থানে আছেন তাদের উচিত এ বিষয়ে অনুজদের যথাযথ জ্ঞান দেওয়া।

তিনি বলেন, সমাজের প্রতিটি শিক্ষিত মানুষকে বুঝতে হবে যে সমাজকে ছেলে মেয়ে সবার জন্য সমানভাবে নিরাপদ জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যেন মেয়েরা একা বের হতে ভয় না পায়। নারীদের উন্নতির পাশাপাশি আমাদের মনোভাবেও নারীদের প্রতি ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।

পারিবারিক টানাপোড়েন তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সর্বাধিক প্রভাব-

সমীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, পারিবারিক টানাপোড়েন তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সর্বাধিক প্রভাব ফেলে, যা ৩১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর্থিক অস্বচ্ছলতা অংশগ্রহণকারীদের ২৪ দশমিক ৪৬ শতাংশের মনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। বেকারত্বের কারণে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ মানসিকভাবে বিপর্যস্ততার শিকার হন। ১৪.৪০ শতাংশ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্নতার মাধ্যমে ও ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ তরুণী যৌন নিপীড়নের কারণে মানসিকভাবে প্রভাবিত হন।

সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যমতে, পারিবারিক টানাপোড়েনের পেছনের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ৩০ দশমিক ৭২ শতাংশ তরুণীদের মনে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পারিবারিক কলহ ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশের মনে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। সেই সাথে পরিবার থেকে অযাচিত চাপের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ততার শিকার হয়েছেন ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ নারী।

বাড়ছে বিয়ের জন্য অযাচিত চাপ-

জরিপে অংশগ্রহণকারী তরুণীদের মধ্য থেকে ২৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ তরুণী নিজেদের অসম্মতি থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে বিয়ের চাপের সম্মুখীন হন। যারা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাদের মধ্যে ১০৯ জনের পরিবার পরবর্তী সময়ে বিয়ে না হওয়ার ভয় থেকে এমন চাপের সৃষ্টি করেন বলে জানা যায়। কমবয়সী মেয়েদের ভালো বর হয় এরূপ ধারণার কারণে ৮৬ জনের ওপর পারিবারিকভাবে বিয়ের চাপ আসে। করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ৮৫ জনকে বিয়ের চাপ মোকাবিলা করতে হয়েছে। লক্ষণীয় বিষয় যে এক বিংশ শতাব্দীতে এসেও ধারণা প্রসূত কারণে নারীদের ওপর কর্তৃত্ব আরোপের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বডি শেমিং করায় এগিয়ে আত্মীয়রা-

পরিসংখ্যানের তথ্য ও উপাত্ত অনুযায়ী, ৬৯ দশমিক ৯২ শতাংশ তরুণী শারীরিক অবয়ব নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৭ দশমিক ২৪ শতাংশ তরুণী জানিয়েছেন, তাদের শরীরের আকৃতি ,গঠন এবং অবয়ব নিয়ে নিজেদের আত্মীয়রাই কথায় ও ইঙ্গিতে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। বন্ধুবান্ধবের কাছে বডি শেমিংয়ের শিকার হয়েছেন ২২ শতাংশ। এমনকি পরিবার থেকে এ ধরনের মন্তব্য শুনেছেন বলে জানিয়েছেন ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। পথচারীর মাধ্যমে শারীরিক অবয়ব নিয়ে নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ তরুণীর। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিনিয়ত হেয় প্রতিপন্ন হলে একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং হীনমন্যতা কাজ করে। পরবর্তী সময়ে যেটা অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।

কারণ খুঁজতে গিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষণায় এসেছে, ওজনের কারণে নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হতে হয় বলে ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ তরুণী মনে করেন। গায়ের রঙের কারণেও ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ তরুণী এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। এছাড়াও উচ্চতা, মুখাবয়বের গঠন ও দাগ, কণ্ঠস্বর প্রভৃতি বিষয় নিয়ে তরুণীরা বিরূপ মন্তব্য শুনে থাকেন বলে জানিয়েছেন।

‘তরুণীদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং মানসিক স্বাস্থ্যে এর প্রভাব’ শীর্ষক সমীক্ষা নিয়ে শনিবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন।

এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী সাইফুদ্দিন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর শাহানা হুদা রঞ্জনা এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ।

প্রসঙ্গত, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও আত্মহত্যা ঝুঁকি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে আঁচল ফাউন্ডেশন ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে। তরুণ প্রজন্ম দ্বারা পরিচালিত মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এই সংগঠনটির একটি অন্যতম কার্যক্রম হল মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জরিপ পরিচালনা করা। ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জরিপগুলো থেকে জানা যায় যে, তরুণ অপেক্ষা তরুণীরা অধিক মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

কেএম/কেএফ/

Header Ad

বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেও ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে এলে বিমানবন্দরেই মেরে ফেলা হবে, এমন হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ২০০৭ সালের ৭ মে সব বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অনির্ধারিত এই আলোচনার সূত্রপাত করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। বহুল আলোচিত ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে উত্থাপিত এ আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটা (৭ মে) আমার জীবনের অনন্য দিন, কারণ আমি সেদিন দেশে ফিরে এসেছিলাম শত বাধা অতিক্রম করে। আমাকে সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক উপদেষ্টাও ফোনে বলেছিল আপনি আসবেন না, আপনি বাইরে থাকেন, যা যা লাগে করব। আবার কেউ কেউ ধমকও দিয়েছিল। এ কথা বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে ফিরলে ওই এয়ারপোর্টেই মেরে ফেলে দেবে। আমি বলেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ, আমি নিজের দেশের মাটিতেই তো কিন্তু আমি আসব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল এয়ারলাইন্সকে নিষেধ করা হয়েছিল, আমাকে বোর্ডিং পাস যেন না দেওয়া হয়। আমেরিকায় তিন ঘণ্টা এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে লন্ডন পর্যন্ত আসি। লন্ডনে যেদিন আমি বিমানে উঠতে যাব উঠতে দেওয়া হয়নি। সে দিন আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেভাবেই হোক আমি দেশে ফিরব। এমনকি আমি যখন এয়ারপোর্টে রওনা হই, তখন অনেকে আমাকে ফোনে বলেছে আপনি আসবেন না, আসলে আপনাকে মেরে ফেলে দেবে। আমি পরোয়া করিনি। তবে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী ভাইদের প্রতি।

শেখ হাসিনা বলেন, তখন বলা হয়েছিল যে কেউ যেন এয়ারপোর্ট না যায়। এমনকি আমার দলের ভেতর থেকেও। তখন দলের যিনি সেক্রেটারি ছিলেন তিনি সবাইকে বলে দিয়েছিলেন এয়ারপোর্টে গেলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। আর আমাদের নেতা-কর্মী কেউ রাস্তায় থাকতে পারবে না। আমি শুধু একটাই মেসেজ দিয়েছিলাম সবাই থাকবে। আমরা গেরিলা যুদ্ধ করেছি, সবাই থাকবা, তবে ঘাসের সঙ্গে থাকবা, আমি বলেছিলাম আমার প্লেনটা না নামা পর্যন্ত, আমি দরজা খুলে না বের হওয়া পর্যন্ত তোমরা বের হবে না।

তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, আমি গাড়িতে উঠলে আমাকে একটা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি ড্রাইভারকে বলেছিলাম যেদিকে মানুষ যাচ্ছে সেদিকে যাবা, ফ্লাইওভারের উপরে উঠবা না। হাজার হাজার মানুষ তখন রাস্তায়। আমার দলের কিছু লোকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শুধু সংবর্ধনা নয় আমাকে নিরাপত্তাও দিয়েছে নেতা-কর্মীরা।

তিনি আরও বলেন, সেই সময় কালে ভদ্রে দুই এক জন আমার কাছে আসতে পারত। সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ, আমি গেরিলা কায়দায় বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের চোখ এড়িয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেদিন সেখানে আমি খুব কড়া কথা বলি, আমি বলেছিলাম সে সময় দেশ চালাচ্ছে কে? পরের দিন সকালে পুলিশ এসে হাজির। আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে সংসদ ভবনের এক পরিত্যক্ত নোংরা ভবনে। সেখানেই আমাকে বন্দি করে রাখা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু এই দিন নয়, ৮৩ সালেও এরশাদ সাহেব আমাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল ৩০ হেয়ার রোডে লাল দালানে। সেখান থেকে ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এরশাদ সাহেব আমাকে আরও কয়েকবার গ্রেপ্তার করে। আমি মতিয়া আপা, সাহারা আপা (এখন নেই) আমাদের তিনজনকে এক সঙ্গে নিয়ে কন্ট্রোল রুমে সারা রাত বসিয়ে রাখে। শুধু তাই নয়, বার বার গ্রেপ্তার সরাসরি গুলি বোমা গ্রেনেড সব কিছু অতিক্রম করে আজকে এখানে এসে জনগণের সেবা করতে পারছি। এখন আমি শুধু দাঁড়িয়েছি, বাংলাদেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাতে, দলের নেতা-কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে।

হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! সিসিটিভি ফুটেজে পর্দাফাঁস স্ত্রীর

স্বামীকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! শুধু তাই নয়। স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করেন স্ত্রী।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে। যদিও অভিযুক্ত মহিলার অভিযোগ, স্বামী তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে স্বামী তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। যার জেরে নিজের প্রাণ বাঁচাতেই তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিসের কাছে দাবি করেছেন অভিযুক্ত স্ত্রী। খবর: জি ২৪ ঘণ্টা

তবে পুলিশ এই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগে ২৮ বছরের ওই স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। পুরো ঘটনাটি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। নির্যাতিত স্বামী বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তার অভিযোগ, অভিযুক্ত মেহের জাহান ২৯ এপ্রিল দুধে নেশার সামগ্রী মিশিয়ে স্বামীকে সেই দুধ পান করতে বাধ্য করেন। এরপর স্বামী বেহুঁশ হয়ে পড়লে স্বামীর হাত-পা বেঁধে তার সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। শুধু তাই নয় সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে তার সারা শরীর পুড়িয়ে দেয়। এমনকি গোপনাঙ্গেও ছ্যাঁকা দেয়। গোপনাঙ্গ কেটে ফেলার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।

জানা গেছে, গত নভেম্বরের ১৭ তারিখ সেওহারা থানা এলাকার সাফিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা মেহের জাহানকে বিয়ে করেন মান্নান। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি। স্বামীর অভিযোগ, বিয়ের কয়েকদিন পর তিনি দেখতে পান যে তার স্ত্রী মদ্যপ এবং ধূমপান করেন। তিনি বাধা দিলে স্ত্রী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।

পাল্টা মেহের জাহানেরও অভিযোগ, স্বামী মান্নান তার উপরে নির্যাতন চালান বিবাদের সময়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত জাতীয় পরিচয়পত্র হস্তান্তর করছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (৭ মে) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে এ পরিচয়পত্র হস্তান্তরের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি।

এদিন দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত জাতীয় পরিচয়পত্রটি হস্তান্তর করেন।

এসময় সচিব কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। পর্যায়ক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, এটি মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের অনন্য স্বীকৃতি। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান জাতি সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।

মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের কল্যাণে সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিসহ সরকারের নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং যেকোনো প্রয়োজনে সরকার সবসময় তাদের পাশে থাকবে।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! সিসিটিভি ফুটেজে পর্দাফাঁস স্ত্রীর
বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ির মানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’: দেবপ্রিয়
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন
বন্ধুদের আড্ডায় রাসেল ভাইপারের ছোবল, প্রাণ গেল রাবি শিক্ষার্থীর
সিক্স-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে হাজির জাপান, গতি ফাইভ-জি’র চেয়ে ২০ গুণ
হ্যাটট্রিক জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তৃতীয় বিয়ের আলোচনার মধ্যে ‘তুফান’ নিয়ে হাজির শাকিব খান
ডেঙ্গুতে আমার মা মারা গেছেন, আর কেউ যেন মারা না যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিনেমায় আসছেন সোহেল চৌধুরী–দিতির কন্যা লামিয়া
৬ মাসের মধ্যে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালু : মন্ত্রী
টানা পঞ্চমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন পুতিন
ডামি ও প্রতারণার উপজেলা নির্বাচনের সঙ্গে জনগণ নেই : রিজভী
কারওয়ান বাজারে হঠাৎ প্রাইভেটকারে আগুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে লাগবে ডোপ টেস্ট
ম্যাডোনার কনসার্টে হাজির ১৬ লাখ দর্শক
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
এ বছর পুলিৎজার পুরস্কার পেল যেসব সংবাদমাধ্যম