শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সহজিয়া সুরে মোড়া দক্ষিণা লোকসংস্কৃতি

একটি দেশ বা জাতির জীবনচর্চার সৃজনশীল শিল্পীসুলভ রূপকেই মানুষ আপন রূপের ধারক হিসেবে গ্রহণ করে। আর সেটিই হচ্ছে সংস্কৃতির উৎস বা লোকসংস্কৃতি। লোকসংস্কৃতির মাঝে থাকে সহজিয়া সুর। কৃত্রিমতাহীন, সহজাত এবং স্বাভাবিক স্রোতে বহমান নদীর মতো জীবনবোধ, মুক্তিযুদ্ধ আর প্রাত্যহিক জীবনাচরণের ধারাবাহিকতায় নিরন্তর প্রবহমান কৃষ্টিরূপ।

সমাজে সংস্কৃতি কোনো বাহ্যিক আড়ম্বর নয়, এটি নিতান্তই একটি সমাজের মানুষের জীবনচর্যার সৃজনশীল ঐতিহাসিক রূপ তথা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তন্মধ্যে আধুনিকতার ডামাডোলে অনেক কিছুর বিবর্তন-পরিবর্তন হলেও লোকসংস্কৃতিই হলো এখানকার নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল সংস্কৃতি।

মূলত ‘লোক’ নামে কথিত সাধারণ মানুষদের প্রতিদিনের জীবনাচরণ আর নৈমিত্তিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে নিহিত আছে বাংলার লোকসংস্কৃতি। লোকসংস্কৃতি, লোকঐতিহ্য, লোকগীতি, লোককথা আর লোকশিল্পের মালায় গাঁথা বাংলার লোকসংস্কৃতি। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ।

প্রাচীনকালে বাইরে থেকে যারা এ দেশে এসেছে তাদের মধ্যে আর্য, শক, হুন, কোচ, মেচ, সেন, আরবীয়, ইরানি, তুর্কী, আফগান, মোগল, পাঠান, আফ্রিকান, ইউরোপীয়, উলন্দাজ, ইংরেজ, বিহারি, পাকিস্তানি, আরাকানি ইত্যাদি নানা স্রোতের সংস্কৃতি বিনির্মাণে উপাদান জুগিয়েছে। এখানকার মানুষ নানা ধর্ম পালন করলেও কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ার কারণে কৃষির নানা উপাচার তাদের জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। যে যে ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন, সেগুলোকে উৎরিয়ে কৃষির সেসব উপাচার এখানকার মানুষের সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

এখানকার লোক তথা জনবসতির আবহমানকালের ধারায় গড়ে উঠা সংস্কৃতিই হলো মূলত এখানকার লোকসংস্কৃতি। কালের প্রবাহে এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শাসন-শোষণ, তোষণ, ইত্যাদি নানা ধারায় সংস্কৃতির রূপান্তর বা ক্রমবিবর্তন ঘটলেও লোকসংস্কৃতির মৌল ধারাটি কিন্তু এখনো অব্যাহত আছে। এভাবেই লোকসংস্কৃতি আবহমানকাল ধরে বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইতিহাস ও বর্তমানের মধ্যে যোগসূত্র রচনা করে সেই জাতিকে আত্মবিস্মৃতির কবল থেকে উদ্ধার করে আসছে।

গ্রামীণ জীবনের আনন্দ-বেদনার কাব্য, জীবনবোধের প্রকাশ, তাদের পোশাক, খাবার, প্রার্থনা, পূজা-পার্বণ, ফসল, ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বাসস্থান, বাহন, জীবন সংগ্রাম, দ্বন্দ্ব, বিরহ- এ সবই লোকসংস্কৃতিকে রূপ দেয়। লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে তার সামগ্রিক প্রকাশ ঘটে। লোকগানে, কবিতায়, সাহিত্যে, উৎসবে, খেলাধুলাতেও প্রকাশ পায় লোকসংস্কৃতি। আছে প্রবাদ-প্রবচন, খনার বচন, লোককথা। এর মধ্যে আছে প্রকৃতির কথা, ঋতুর কথা, ভালো-মন্দের কথা, জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় দিকের কথা। এসবের সঙ্গে আছে বিজ্ঞানের সম্পর্ক, আছে যুক্তির সম্পর্কও। লোকসংস্কৃতির অনেক উপাদানের রূপ-প্রকৃতির বিচার করে একে ৪টি প্রধান ধারায় ভাগ করা হয়- বস্তুগত, মানসজাত, অনুষ্ঠানমূলক ও প্রদর্শনমূলক।

কবি পূর্ণেন্দু পত্রী বলেছেন -

'লোকসংগীতে মেলে জীবনের ভাষা
মানুষের কথা শুনি লোকসংগীতে
নির্ভীক কোনো কবিকণ্ঠের গান
ম্রিয়মাণ মন জাগায় আচম্বিতে।'

লোকসংগীত বাংলার ঐতিহ্যের ধারক। বাঙালির লোকসংস্কৃতিতে যেমন স্থান পেয়েছে যাত্রাপালা, পিঠাউৎসব, নবান্ন, পুতুল নাচ তেমনই এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে লোকসংগীত। তার মধ্যে জগেরগান, কবিগান, যোগীর গান, গোয়ালীর গান, ক্ষ্যাপাগান, জারিগান, মালশা গান, পালাগান বা কাহিনি গান, মুর্শিদি, মারফতি, ফকিরি ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, বাউল রয়ানী, হয়লা, গাজীর গান, ধানভানার গান, পালকীর গান উল্লেখযোগ্য। বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে একতারা, দোতরা, বাঁশি, ঢাক, ঢোল, খমক, খঞ্জনী বেশি ব্যবহৃত হতো।

তবে দেশের বেশিরভাগ লোকগীতি বা লোকনাট্য নির্মিত হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করে। 'ধান-নদী-খাল' এর দেশে দক্ষিণাঞ্চলের সাংস্কৃতিক প্রভাবই প্রবল। এর যথোপযুক্ত কারণও রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ এবং খাদ্যাভাসে বাঙালি ভাতের উপর পুরোদস্তর নির্ভরশীল হওয়ায় জীবিকার তাগিদে মানুষ ধানসহ অন্যান্য রবিশস্য বেশি চাষ করে। দক্ষিণাঞ্চলে দেশের অধিকাংশ নদীর অবস্থানের কারণে কৃষিজীবীদের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের নিবিড় সখ্যতা গড়ে উঠা। তাই 'লোক' অর্থাৎ সাধারণ মানষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-হতাশা, আমোদ-উৎসবে ধান এবং নদী একচ্ছত্র সিংহাসন দখল করে নিয়েছে। যেখানে উঠে এসেছে গ্রামীণ জনপদের জীবনধারণের ব্যবহার্য দ্রব্যসহ বস্তুগত সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান। যেমন বাড়ি-ঘর, দালান-কোঠা, আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, যানবাহন, সব পেশার যন্ত্রপাতি, কুটিরশিল্প, সৌখিন দ্রব্য, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্যদ্রব্য, ঔষধপত্র ইত্যাদি।

নৌকার দাঁড় বাইতে বাইতে কখনো নায়ের মাঝি ভাটিয়ালি সুরে গেয়ে উঠতেন, 'মনমাঝি তোর বৈঠা নেরে, আমি আর তো বাইতে পারলাম না..'। জমির আলপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এখনো কানে ভেসে আসে 'হেই সামালো, হেই সামালো' এর মতো লোকজ গান। ধান ঘরে তোলার পর গ্রাম্য বধূরা ধান ভানার সময় সানন্দে গেয়ে উঠতেন,
'ও ধান ভানী রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া,
ঢেকি নাচে আমি নাচি হেলিয়া দুলিয়া।'

নতুন ধান ভানার পর নতুন শস্যে গ্রামীণ পরিবারগুলো মেতে উঠত নবান্ন উৎসবে। এ ছাড়া নতুন বছর এলে প্রতিটি ঘরের গৃহিণীরা আমের পাতা ভিজিয়ে ভোরবেলা সমস্ত ঘরে ছিটিয়ে দিতেন। এই রীতিটি প্রচলিত ছিল পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে। ব্যবসায়ীরা পালন করতেন হালখাতা। এ ছাড়া বিস্তৃত মাঠ ছেয়ে বসত বৈশাখী মেলা, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, মোরগের লড়াই।

যেকোনো উৎসবের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ ছিল মেলা। মেলায় আসত মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র, মনোহরি মালামাল, টেপা পুতুল, বায়োস্কোপ, লাঠিখেলা, সার্কাস এবং যাত্রাপালা। যার মধ্যে বিখ্যাত একটি যাত্রাপালা ছিল 'দুনিয়া টাকার গোলাম'। বরিশালের হাটখোলায় বৃহৎ এলাকা নিয়ে বসত 'চৈত্র-সংক্রান্তির মেলা'। বানারীপাড়ার আহম্মদবাদ উপজেলার বেতালে গ্রামে বসত বিখ্যাত 'সূর্যমনির মেলা'।

শিল্পযুগের ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে নদীমাতৃক বাংলাদেশে আরেকটি অনন্য অনুষঙ্গ 'নৌকাবাইচ'। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনন্দ আয়োজন, উৎসব ও খেলাধুলা সবকিছুতেই নদী ও নৌকার সরব আনাগোনা। মূলত ‘মেসোপটেমিয়ার’ মানুষদের শুরু করা খেলাটি কালের পরিক্রমায় আমাদের দেশেও চলে আসে। শুরু হয় নৌকাবাইচ। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংস্করণ বাংলাদেশের নৌকাবাইচের সময় মাঝিরা একত্রে জয়ধ্বনি সহকারে নৌকা ছেড়ে দিয়েই একই লয়ে গান গাইতে আরম্ভ করেন এবং সেই গানের তালের ঝোঁকে ঝোঁকে বৈঠা টানে। কৃষকের নৌকায় যে মজুররা যায় তাদের ‘বাইচা’ বলে।

বাইচের দিন বাইচাদের খাবার আয়োজন হয় সকাল থেকেই। তারা খেয়ে কৃষকের দেওয়া একরঙা পোশাক পরে বাইচে যায়। টিকারা ও কাশির তালে চলে নৌকা। বাইচের স্বাভাবিক রীতিটি এমনি ছিল। কিন্তু ইংরেজ শাসনামলে সামন্ত জমিদাররা বাইচের সংস্কৃতিতে ঘুণ ধরায়। এরপর ক্রমেই কিছু নদীর নাব্যতা হারানো, আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব এবং বাঙালিয়ানার মধ্যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির একচ্ছত্র বিস্তারে নৌকাবাইচ এখন হয় না বললেই চলে।

একসময় বিয়ে বাড়িতে আনন্দের প্রধান উপাচার ছিল গানের পসরা যা পরিচিত ছিল 'বিয়ের গীত' বা 'হয়লা' হিসেবে। পালকিওয়ালারা পালকির গান গাইতে গাইতে নতুন বৌ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেত। এ ছাড়া বিয়েতে বহুল প্রচলিত ছিল নায়র আনার পর্ব। গ্রামীণ উৎসবে ধর্মীয় প্রভাবও কিছুটা লক্ষ্য করা যায়। হিন্দুসমাজে প্রচলিত ছিল রাধা-কৃষ্ণের কীর্তন, রয়ানী গান, চড়কপূজা, নীল নাচ ইত্যাদি। এ ছাড়াও প্রচলিত ছিল পুঁথিপাঠ। বিজয়গুপ্তের মনসা মঙ্গল পাঠ করা হতো পুরো অগ্রহায়ণ মাসজুড়ে, যা চলত শ্রাবণ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত এবং শেষ হতো মনসা পূজার মধ্য দিয়ে।

এ ছাড়া আঞ্চলিক যেকোনো অনুষ্ঠানে প্রায়ই আয়োজন করা হতো লাঠিখেলা ও কুস্তি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লাঠিয়ালরা মস্ত ট্রেনিং নিয়ে খেলতে আসতেন। গ্রামীণ এলাকা আরও প্রচলিত ছিল হা-ডু-ডু, দাঁড়িয়াবাধা, গোল্লাছুট, ডাংগুলি, মার্বেল খেলা, কানামাছি, বৌচির মতো আমোদপ্রদ সব খেলা।

মূলত মৌখিক ধারার লোকসাহিত্য মানসজাত লোকসংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত৷ লোককাহিনি, লোকসংগীত, লোকগাথা, লোকনাট্য, ছড়া, ধাঁধা, মন্ত্র, প্রবাদ-প্রবচন প্রভৃতি গদ্যে-পদ্যে রচিত মৌখিক ধারার সাহিত্য। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে সাপুড়েরা সাপখেলা দেখাত। প্রচলিত ছিল বেদের নাচ। বিনের সঙ্গে সাপের নাচ দেখতে লোকেরা যেমন ভয় পেত, তেমন ভয়ের মধ্যেই খুঁজে নিত আনন্দের খোরাক।

লোকসংস্কৃতি আসলে কোনো জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধ অর্থনীতির দ্যোতক না হলেও সচেতন সমৃদ্ধ মানস অভিব্যক্তির পরিচায়ক। তবু সংস্কৃতি একটি দেশের ধারক ও বাহক হওয়া সত্ত্বেও লোকশিল্পীরা যথাযথ সাংস্কৃতিক এবং আর্থিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর সঙ্গে আকাশ সংস্কৃতি, শিল্পায়ন ও নগরায়নযুক্ত হয়ে গ্রামীণ লোকসংস্কৃতিকে ঠেলে দিয়েছে ধ্বংসের মুখে।

প্রযুক্তির নানা সুবিধার কারণে সংরক্ষণের অভাবে লোকসংস্কৃতি এখন বিলুপ্তির পথে। বাংলা লোকসংগীতের শক্তিশালী একটি ‘ঐতিহ্যবাহী ধারা’ ভাটিয়ালি গান, যার চর্চা এখন নেই বললেই চলে। ঐতিহ্যবাহী পুঁথিপাঠের সৃজনশীলতা, মানবভাবনা ও কাব্যত্ব না থাকার কারণে এ যুগের পাঠক তা পাঠ করেন না। গাড়িয়াল ভাইয়ের জন্য এখন আর কেউ পথ চেয়ে থাকে না। আশ্বিন মাস এলেই নদীতে নৌকাবাইচ হতো, নদীর ধারে বসত মেলা। এই মেলা থেকে কত রকম নকশা করা মাটির হাঁড়ি-পাতিল কেনা হতো, দেখতে পাওয়া যেত পুতুল নাচের মতো মনোরঞ্জনমূলক কত রকমের আয়োজন। এখন আর মেলা হয় না, নৌকাবাইচও হয় না, হয় না পুতুল নাচ।

গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি হলো দেশের প্রাণ। আর সেই প্রাণ যদি বিলুপ্তির পথে যায় তাহলে সে দেশ একদিন বসবাস অযোগ্য হয়ে যাবে। তাই দেশের ফুসফুসখ্যাত লোকসংস্কৃতি রক্ষায় আমাদের তৎপর হতে হবে। নিজের দেশের সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্ব নিজেদের।

নিজ সংস্কৃতি রক্ষার্থে অগ্রণী ভূমিকা পালনের দায়িত্ব জাতির নিজেরই। গবেষক, শিল্পী, পৃষ্ঠপোষক এবং অবশ্যই শ্রোতামহল সবাকেই এক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা তো প্রয়োজনীয় বটেই, কিন্তু সবচেয়ে যে বিষয়টি এখানে প্রয়োজন তা হলো বর্তমানের শিল্পীদের শিল্পের প্রতি গভীর ভালোবাসা। কারণ হাজার প্রতিকূলতায়ও শিল্পকে তো বাঁচিয়ে রাখতে পারেন একমাত্র শিল্পী।

দেশের উন্নয়নে আধুনিকায়নের প্রয়োজন অবশ্যই আছে, কিন্তু সেই আধুনিকতার নামে নিজের সংস্কৃতিকে ভুলে যাওয়া কাম্য নয়। আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায় সজাগ হতে হবে। বিশ্বায়নের স্রোতে গা ভাসিয়ে হারিয়ে ফেলা যাবে না আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যকে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই কেবল বাঁচতে পারে আমাদের চির পরিচিত লোকসংস্কৃতি। গ্রামের মানুষদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার ব্যবস্থা করতে হবে। লোকসংস্কৃতি রক্ষার্থে ব্যবস্থা করতে হবে দারিদ্র্য প্রণোদনার। মাসে মাসে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। শুধুমাত্র শখের বশে নয়, ব্যক্তিসত্তা এবং নাগরিকসত্তাকে একত্রিত করে লোকসংস্কৃতি রক্ষা করার দায়ভার আমাদেরকেই নিতে হবে।

এসজি

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল