শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

নিউমোনিয়া প্রতিরোধযোগ্য, চাই পারিবারিক সচেতনতা

বিশেষ করে শীতের সময় শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেশি বৃদ্ধি পায়। সারাবিশ্বে কোটি কোটি মানুষকে শ্বাসতন্ত্রের জটিল এই অসুখ থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরিতে ১২ নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালন করা হয়।

সারা পৃথিবীতে নিউমোনিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ৪৫ কোটি লোক আক্রান্ত হয়। এতে মারা যায় প্রায় ৪০ লাখ রোগী। বাংলাদেশে প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। আর উন্নয়নশীল দেশে নিউমোনিয়ার ব্যাপকতা বেশি। পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশু ও বৃদ্ধরাই নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয় এবং শিশুরা বেশি মারা যায়। তুলনামূলকভাবে নারীদের চেয়ে পুরুষরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়। ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত জটিল একটি রোগ নিউমোনিয়া। ফুসফুসের প্যারেনকাইমা বা বায়ুথলিতে জীবাণু যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি সংক্রমণের ফলে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশি এসব উপসর্গ দেখা দেয়, যা নিউমোনিয়া নামে পরিচিত। এটি ফুসফুসের অত্যন্ত প্রচলিত ও প্রাচীন একটি রোগ।

আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক হিপোক্রেটস আড়াই হাজার বছর আগে এ রোগের বর্ণনা দিয়েছেন। শিশুদের ক্ষেত্রে বয়সভেদে রোগজীবাণুতে কিছু পার্থক্য থাকে। বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. এম এম মাজেদ তার কলামে লেখেন—ক্রনিক ঠাণ্ডা লাগা, বুকে শ্লেষ্মা জমে থাকার সূত্র ধরেই পরতে হয় নিউমোনিয়ায়। বর্ষার পর হঠাৎ গরম তাতেই এই অসুখের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ঠাণ্ডা লাগলেই যে সবার নিউমোনিয়া হবে তা কিন্তু নয়, তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, মূলত বয়স্ক ও শিশুরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাদের মতে, নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ খুব জ্বর। ওষুধে জ্বর নামলেও আবার ওষুধের প্রভাব কাটলেই হু হু করে বেড়ে যায় জ্বর। ১০৩-১০৪ ডিগ্রি উঠতে পারে জ্বর। এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ইত্যাদি তো থাকেই। অনেক সময় মাথা যন্ত্রণা, ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা এসবও নিউমোনিয়ার লক্ষণ। তবে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে ছুঁলেই নিউমোনিয়ার জীবাণু শরীরে ছড়ায় না। তবে আক্রান্তের কাশি বা হাঁচি থেকে তা ছড়াতে পারে। তবে সর্দি-জ্বরের সঙ্গে নিউমোনিয়ার বেশ কিছু তফাৎ থাকে। একটু লক্ষ্য রাখলেই তাই রোগ নির্ণয় করা সহজ। চিকিৎসকের মতে,প্রাথমিকভাবে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি দিয়ে এই রোগ শুরু হলেও দেখা যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জ্বর, শ্বাসকষ্ট বাড়ছে, কাশিও বাড়ছে। অনেক সময় জ্বরের ওষুধের কড়া ডোজে জ্বর নামলেও ফিরে ফিরে আসে তা। অবস্থা গুরুতর হলে কাশির সঙ্গে রক্তও উঠতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলেই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। একমাত্র চিকিৎসকই বুঝতে পারেন ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে কিনা। তবু নিশ্চিত হতে কিছু পরীক্ষা করাতে হয়।

নিউমোনিয়ার লক্ষণ:
জ্বর: এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার হয়ে থাকে। পাশাপাশি কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত নেওয়া, শ্বাস গ্রহণের সময় বাঁশির মতো শব্দ হওয়া, শ্বাস নিতে কষ্টবোধ বা কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাস, বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া, বুকে ব্যথা, খেতে না চাওয়া বা খেতে না পারা, শিশুর চঞ্চলতা কমে যাওয়া বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, বমি করা। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয়। দুই মাসের কম বয়সী শিশুদের মিনিটে ৬০ বার বা তার চেয়ে বেশি শ্বাস নিতে দেখা যায়। দুই মাস থেকে ১২ মাস বয়সী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু মিনিটে ৫০ বার বা তার চেয়ে বেশি শ্বাস নেয় এবং এক বছরের বড় শিশু ৪০ বার বা তার চেয়ে বেশিবার শ্বাস নেয়। দ্রুত শ্বাসের সঙ্গে বুকের খাঁচা দেবে যায়। এ লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসককে দেখাতে হবে। মনে রাখবেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু মৃত্যুর কারণ— দেরি করে চিকিৎসা শুরু করা। শীতকালে নিউমোনিয়া আক্রান্তের হার অনেক বেশি। তাই শীতকালে উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি করবেন না। নিউমোনিয়া মারাত্মক রোগ হলেও এটা কিন্তু প্রতিরোধ করা যায়। শিশুদের ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ালে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমে। শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়াবেন না। যেসব শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ানো হয় তাদের এ রোগে আক্রান্তের হার অন্যদের চেয়ে চার গুণ বেশি। শিশু অপুষ্টি নিউমোনিয়া আক্রান্তের কারণ। তাই শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। শীতকালে সুস্থ শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছে যেতে না দেওয়া। হাঁচি-কাশি আক্রান্ত লোকের সামনে বাচ্চাদের যেতে না দেওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। অর্থাৎ বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা। শিশুকে ভিড়ের মধ্যে অর্থাৎ বেশি লোক সমাগমের মধ্যে যেতে না দেওয়া।

শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ:
নিউমোনিয়া বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে, যেমন, ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক এবং পরজীবী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া অ্যাডেনোভাইরাস, রাইনো ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, শ্বাসযন্ত্রের সিনসিটিয়াল ভাইরাস এবং প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে হয়। আর বয়স অনুসারে পরিবর্তীত হতে পারে। অর্থাৎ, শ্বাসকষ্টের ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া, স্ট্রেপ্টোকোকাস নিউমোনিয়া এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া প্রায়শই ৫ থেকে ১৩ বছর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়। ব্যাক্টেরিয়াজনিত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং যারা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় তাদের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে দেখা দেয় এবং কম মারাত্মক হয়।

শিশুদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ:
শিশুদের মধ্যে লক্ষণগুলো কম সুনির্দিষ্ট হতে পারে এবং তারা বুকে সংক্রমণের স্পষ্ট লক্ষণ দেখাতে পারে না। শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হল -
১. জ্বর, ২. শক্তির অভাব,৩. দ্রুতগতিতে অগভীর শ্বাস। শ্বাসের সাথে জোরে জোরে শব্দ, ৪. খাওয়ানোতে অসুবিধা হওয়া, ৫. ক্লান্তি বা ঝিমুনি ভাব।

শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ:
শিশু বা বাচ্চাদের এই সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে—ক) বাচ্চার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে স্তন্যপান করান, খ) ঘরের পরিবেশ গরম এবং ভাল বায়ু চলাচল যাতে করে সে ব্যবস্থা করুন, গ) সর্দি, ফ্লু বা অন্যান্য সংক্রমণ রয়েছে এমন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ এড়ান আর শিশুর তাপমাত্রা প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যেয় কমপক্ষে একবার দেখে নিন। যদি তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি হয় তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

নিউমোনিয়া রোগীর জন্য প্রাথমিক কিছু পরামর্শ:
আক্রান্ত রোগীকে ধুমপান থেকে দূরে রাখতেই হবে। সঙ্গে প্যাসিভ স্মোকিং থেকেও দূরে রাখতে হবে রোগীকে।

দূরে রাখতে হবে যে কোনো দূষণ থেকেও। ধোঁয়া, ধুলাবালি, মশা মারার কয়েল রোগীর ঘর থেকে বাদ দিতে হবে।

পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন নিউমোনিয়া রোগীর জন্য খারাপ। তাই প্রচুর পানি ও ফ্লুয়িড জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে রোগীকে।

জ্বর কমানোর ওষুধ ঘন ঘন খাইয়ে জ্বর নামানোর চেষ্টা না করে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন।

রোগীকে ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকেও দূরে রাখতে হবে।

অ্যাজমা থাকলে অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের নির্দেশ মতো ব্যবহারের বিধি-নিষেধ মানতে হবে।

হার্ট ও লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগী ও ডায়াবেটিকরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিউমোনিয়া প্রতিরোধক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে পারেন।

হোমিও প্রতিকার:

রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এই জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডা.হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুসারে নিউমোনিয়া রোগ সহ যে কোন জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিতে পারলে আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে আরোগ্য সম্ভব। অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে যে সব ওষুধ নির্বাচন করে থাকে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে যে সব ওষুধ নির্বাচন করে থাকে নিম্নে আলোকপাত করা হলো:

ব্রায়োনিয়া:
ব্রায়োনিয়া ওষুধটি নিউমোনিয়ার জন্য আল্লাহর একটি বিরাট রহমত স্বরূপ। সাধারণত নিম্নশক্তিতে খাওয়ালে ঘনঘন খাওয়াতে হয় কয়েকদিন কিন্তু (১০,০০০ বা ৫০,০০০ ইত্যাদি) উচ্চশক্তিতে খাওয়ালে দুয়েক ডোজই যথেষ্ট। হ্যাঁ, অধিকতর জটিল কেইসের ক্ষেত্রে কয়েকদিন খাওয়ানো লাগতে পারে। আপনি যদি বড়িতে উচ্চশক্তির এক ড্রাম ব্রায়োনিয়া কিনে আনেন এবং তা থেকে একটি বড়ি আধা বোতল পানির সাথে মিশান এবং তা থেকে এক চায়ের চামচ পানি করে রোগীকে রোজ ৩ বার করে অথবা আরও ঘনঘন খাওয়ান। এভাবে দুইদিন, চারদিন অথবা ছয়দিন পর যখন নিউমোনিয়া সেরে যাবে, তখন যদি আপনি হিসেব করেন তবে দেখতে পাবেন যে, নিউমোনিয়া সারাতে আপনার খরচ হয়েছে ১০ পয়সা অথবা বেশির পক্ষে ২০ পয়সা। অথচ এলোপ্যাথিতে নিউমোনিয়া সারাতে ৫০০ টাকা দামের হাই-পাওয়ারের এন্টিবায়োটিক ইনজেকশান দিতে হয় ১৪টি। ডাক্তারের ফি, নানা রকমের টেস্ট, হাসপাতালের বেডচার্জইত্যাদি সব মিলিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অর্ধ লক্ষ টাকার মতো বিল আসতে দেখা যায়। এখন বলুন, হোমিওপ্যাথি মানবজাতির জন্য আল্লাহ্র এক বিরাট রহমত কি না ?

একোনাইট:
যদি দেখেন কোনো শিশু রোগী হঠাৎ অনবরত চিৎকার করতে থাকে কিছুতেই চিৎকার থামানো যায় না। ইহা নিউমোনিয়ার পূর্ব লক্ষণ মনে করবেন। এমন অবস্থায় একোনাইট ৩০ শক্তি প্রয়োগ করবেন। আর যদি দেখেন রোগীর শুষ্ক কাশিসহ বুকে ব্যথা হয়, রোগীর মৃত্যু ভয়, অস্থিরতা ও পানি পিপাসা হয় তখন একোনাইট অব্যর্থ মহৌষধ।

অ্যান্টিমোনিয়াম টারটারিকাম:
এন্টিম টার্টের প্রধান লক্ষণ হলো কাশির আওয়াজ শুনলে মনে হয় বুকের ভেতর প্রচুর কফ জমেছে কিন্তু কাশলে কোনো কফ বের হয় না। রেগে গেলে অথবা খাওয়া-দাওয়া করলে কাশি বেড়ে যায়। জিহ্বায় সাদা রঙের মোটা স্তর পড়বে, শরীরের ভেতরে কাঁপুনি, ঘুমঘুম ভাব এবং সাথে পেটের কোন না কোনো সমস্যা থাকবেই। কাশতে কাশতে শিশুরা বমি করে দেয় এবং বমি করার পর সে কিছুক্ষণের জন্য আরাম পায়। শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার কারণে নাকের পাখা দ্রুত উঠানামা করতে থাকে।

ইপিকাক:
ইপিকাক শিশুদের নিউমোনিয়ার আরেকটি জরুরি ওষুধ। ইহার প্রধান লক্ষণ হলো (যেকোনো রোগই হোক না কেন, তার সঙ্গে) বমিবমি ভাব থাকে এবং জিহ্বা পরিষ্কার থাকে। এই ওষুধটি শিশুদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। কারণ শিশুদের পেটের অসুখ এবং কাশি-নিউমোনিয়া বেশি হয় আর ইপিকাক এইসব রোগে দারুণ কাজ করে।

ফসফোরাস:
নিউমোনিয়া বা এই জাতীয় বিপদজ্জনক রোগে আমাদের অবশ্যই কথা মাথায় রাখতে হবে। ফসফরাসের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগী বরফের মতো কড়া ঠাণ্ডা পানি খেতে চায়, মেরুদণ্ড থেকে মনে হয় তাপ বেরুচ্ছে, হাতের তালুতে জ্বালাপোড়া, একা থাকতে ভয় পায়, অন্ধকারে ভয় পায় ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে সেটি আপনার চোখে ছানি সারিয়ে দেবে।

সালফার:
সালফার হলো বহুমুখী গুণাবলীসম্পন্ন ওষুধগুলোর একটি। নিউমোনিয়াতে যদি সালফারের লক্ষণ পাওয়া যায়, তবে সালফার প্রয়োগ করতে হবে। কোনো রোগীকে সালফার দিতে হবে, তা চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, দেখবেন রোগী শরীরে যত ছিদ্র আছে সেখানকার রঙ টকটকে লাল হয়ে যাবে। যদি দেখেন যে, রোগী মুখের ভেতরটা, নাকের ভেতরটা, পায়খানার রাস্তা অথবা প্রস্রাবের রাস্তার রঙ টকটকে লাল হয়ে আছে, তবে তাকে নিশ্চিন্তে সালফার দিতে পারেন। সালফারের অন্য কোনো লক্ষণ না থাকলেও চলবে। সে যাক, সালফারের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে সকাল ১১টার দিকে ভীষণ খিদে পাওয়া, রোগ রাতে বৃদ্ধি পাওয়া, রোগ গরমে বৃদ্ধি পাওয়া, মাথার তালু-পায়ের তালুসহ শরীরে জ্বালাপোড়া, গরম লাগে বেশি, শরীরে চুলকানি বেশি, সকাল ১১টার দিকে ভীষণ খিদে পাওয়া, মাথা গরম কিন্তু পা ঠাণ্ডা, গোসল করা অপছন্দ করে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে কোনো খেয়াল নেই ইত্যাদিসহ আরও অনেক ওষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে। তাই ওষুধ নিজে ব্যবহার না করে অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথির পরামর্শ নিন।

পরিশেষে বলতে চাই, নিউমোনিয়া রোগটি হোমিওপ্যাথির চিকিৎসায় খুব সহজেই সারানো যায়। নিউমোনিয়ার মূল লক্ষণ হলো ঘনঘন শ্বাস নেওয়া এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশগুলোতে একশটি শিশু মারা গেলে দেখা যায় তার পঁচানব্বই জনেরই মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া। সঙ্গে জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা, বুকে ব্যথা, ভীষণ শীত বোধ করা ইত্যাদি থাকে। শিশুদের শ্বাস নিতে কষ্ট হলে প্রত্যেক পিতা-মাতাকে অবশ্যই বিষয়টিকে একটি ইমারজেন্সি সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তবে নিউমোনিয়ার এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় যে সব হাই পাওয়ারের ভয়ঙ্কর বিষাক্ত এন্টিবায়োটিক শিশুদের খাওয়ানো হয়, তাদের বিষাক্ত ছোবলে শিশুদের স্বাস্থ্য চিরস্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কেউ কেউ কয়েক বছরের জন্য এবং কেউ কেউ সারাজীবনের জন্য কঙ্কালে পরিণত হয়ে থাকে। তাই নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর ভয় নয়, চাই পারিবারিক সচেতনতা।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি, চিকিৎসক, গবেষক ও কলামিস্ট

আরএ/

Header Ad

ক্ষমতায় যেতে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের সমর্থনকে তারা মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। তারা মনে করে- বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতা রক্ষা করা যায়, ক্ষমতায় যাওয়া যায়। এখনও তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?

তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।

কোটি টাকার মাদকসহ সংগীত শিল্পী এনামুল কবির গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারকৃত ব্যান্ড শিল্পী এনামুল কবির রেবেল। ছবি: সংগৃহীত

ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ এক জনপ্রিয় সংগীত শিল্পীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর রামপুরা থানাধীন মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে রামপুরা থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম এনামুল কবির রেবেল। তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী পপগুরু আজম খানের দলের সদস্য ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।

মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার(এডিসি) রাশেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জব্দকৃত আইসের মূল্য ১ কোটি টাকা। আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় রামপুরা থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।

টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড গড়ে কলকাতাকে হারাল পাঞ্জাব

বিশ্বরেকর্ড গড়ে কলকাতাকে হারাল পাঞ্জাব। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলে ইডেন গার্ডেন্সে আগে ব্যাট করে কলকাতা নাইট রাইডার্স তুলেছিল ২৬১ রান। তবে জনি বেয়ারেস্টোর সেঞ্চুরিতে আট বল বাকি রেখে ৮ উইকেটে ম্যাচ জেতে পাঞ্জাব কিংস। যেকোনো টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড এটি।

শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) ইডেন গার্ডেন্সে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ফিল সল্ট আর সুনীল নারিনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভর করে ৬ উইকেটে ২৬১ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল কলকাতা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে জনি বেয়ারেস্টোর দুর্দান্ত শতকে ভর করে ৮ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। ৪৮ বলে ৮ চার ও ৯ ছক্কায় ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন বেয়ারেস্টো। এ ছাড়া ২৮ বলে ৬৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন শশাঙ্ক সিং।

ভারত-বাংলাদেশসহ এশিয়ার এই অঞ্চলে কার্যত প্রবল খরা চলছে। ঝড় বৃষ্টির দেখা নেই কোথাও। তাপপ্রবাহ প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে। এর মধ্যেই কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের বাইশগজে যেন কালবৈশাখী তুফান ছোটালেন দুই দলের ব্যাটাররা। একটা পরিসংখ্যানে আরেকটু পরিস্কার করা যাক এই ম্যাচটা। কলকাতা ও পাঞ্জাব মিলে ৩৮.৪ ওভারে রান করেছে ৫২৪! উভয় দল ছক্কা মেরেছে ৪২টি! যা টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। এ ছাড়া আজকের ম্যাচে চারের মার রয়েছে ৩৮টি! মোট চার-ছক্কা ৮০টি! শুধু ছক্কা থেকে এসেছে ২৫২ রান (প্রায় ৫০%)।

চলতি আসরে যেন উড়ছিল কলকাতা। এদিনও টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে কলকাতাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার ফিল সল্ট ও সুনীল নারিন। দুজনে মিলে পাওয়ার প্লেতে যোগ করেন ৭৬ রান। ৮ ওভারেই তিন অঙ্ক ছাড়িয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৩৭ বলে ৩৫ রান করে সল্ট সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ১৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটি।

সল্টের মতোই তাণ্ডব চালিয়েছেন নারিনও। তার ব্যাট থেকে আসে ৩২ বলে ৭১ রান। এই ইনিংস খেলার পথে অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে শীর্ষ দুইয়ে উঠে এসেছেন এই ক্যারবিয়ান ওপেনার। চলতি আসরেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছেছেন।

দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়ে বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। পাঁচে নেমে ১২ বলে ২৪ রান করেছেন আন্দ্রে রাসেল। শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাট থেকে এসেছে ১০ বলে ২৮ রান। তাছাড়া ২৩ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ভেঙ্কেটেশ আইয়ার।

২৬২ রানের লক্ষ্য একপ্রকার অসম্ভবই ছিল পাঞ্জাবের কাছে। এমনিতেও ভালো ফর্মে নেই তারা। কিন্তু প্রথম থেকেই মারকুটে ব্যাটিং শুরু করেন প্রভসীমরন সিং আর জনি বেয়ারস্টো। প্রভসীমরনের ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি ছয় ও চারটি চারের মার। অন্যদিকে বেয়ারস্টো তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় আইপিএল সেঞ্চুরি। বলতে গেলে তার হাতেই পরাস্ত হয় কেকেআর। মাঝে রাইলো রুশো ঝড় তোলার আভাস দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফিরে গেছেন ১৬ বলে ২৬ রান করে। ইডেনের আলো ঝলমলে রাতে শেষের দিকে সব আলো কেড়ে নেন শশাঙ্ক সিং। ২৮ বলে ৬৮ রানের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৮টি ছয়।

কলকাতার হয়ে একমাত্র সাফল্য পেয়েছেন নারিন। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে এক উইকেট শিকার করেন তিনি। এছাড়া কেউই উইকেটের দেখা পাননি।

সর্বশেষ সংবাদ

ক্ষমতায় যেতে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
কোটি টাকার মাদকসহ সংগীত শিল্পী এনামুল কবির গ্রেপ্তার
টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড গড়ে কলকাতাকে হারাল পাঞ্জাব
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় ভ্যানের ৩ আরোহী নিহত
গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ, তাপপ্রবাহ ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা
গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৪ বছর লাগতে পারে: জাতিসংঘ
টাঙ্গাইলে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রের মৃত্যু, আটক ৩
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
দিনাজপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক নিহত, আটক ১
ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের ভেতরে আগুন
৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙল, জানা গেল বৃষ্টির তারিখ
ফিলিস্তিনি মৃত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি আর বেঁচে নেই
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শ্রীময়ী, দুশ্চিন্তায় কাঞ্চন মল্লিক
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি
বিয়ে না দেওয়ায় মাকে জবাই করলো ছেলে
রেকর্ড তাপপ্রবাহের জন্য সরকার দায়ী: রিজভী
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, জনজীবনে অস্বস্তি