উত্তেজনার মধ্যেই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালো পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলা ঘিরে ভারতের সঙ্গে চলমান তীব্র উত্তেজনার মাঝে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে সামরিক বাহিনী। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা (এডব্লিউএস) নামের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘ইন্দুস’ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনাকর পর্যায়ে, ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার (৩ মে) দেশটির সামরিক বাহিনী ৪৫০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম ‘আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা (এডব্লিউএস)’ নামের একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘ইন্দুস’ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়েছে। পাকিস্তান দাবি করছে, এটি তাদের অস্ত্রভাণ্ডারের উন্নত প্রযুক্তির সক্ষমতা এবং সামরিক প্রস্তুতির প্রমাণ।
এই উৎক্ষেপণের সময়টা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভারত হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, এই পরীক্ষা ভারতের কাছে ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন সময় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কৌশলগতভাবে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে।
পাকিস্তান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পরীক্ষা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সামরিক বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রস্তুতি এবং কৌশলগত সক্ষমতার অংশ। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং সেনাপ্রধানরা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তারা আস্থা রাখেন।
এর আগে ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তে গোলাগুলি, পানিচুক্তি বাতিল, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার মতো একাধিক পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে ঘনীভূত করেছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত সরাসরি কোনো আক্রমণ ঘটেনি।
কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত ও পাকিস্তান অতীতে দুইবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। আবারও একটি সংঘাতের আশঙ্কায় ভারতীয় উপমহাদেশের পরিবেশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিকভাবে এই পরিস্থিতি শান্ত করতে উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ।
