আটকের পরও যে ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ঘিরে দেশে শুরু হয়েছে ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোড়ন। অভিযোগ উঠেছে, বিমানবন্দরে আটকানোর পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অফিস থেকে আসা ফোন কলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতারা।
বুধবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটকায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তিনি দেশ ত্যাগ করেন। এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ অভিযোগ করেন, “চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন) অফিস থেকে ফোন কল আসার পরই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।” তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “এরপরও কি ইন্টেরিম সরকারকে সমর্থন করা চলে?”
এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। তারা দাবি করেছে, একজন হত্যা মামলার আসামিকে এইভাবে ছেড়ে দেওয়া গণতন্ত্রের প্রতি চরম অবমাননা। সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খানের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, "৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু ব্যাখ্যা, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও আবদুল হামিদকে দেশে ফিরিয়ে না আনা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। না হলে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, যার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।"
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদি রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, “আপনারা পদত্যাগ করুন। নইলে ইন্টেরিম সরকারের বিরুদ্ধেই আন্দোলনে নামা হবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, "এখনো সময় আছে আমাদের কাতারে আসুন, না হলে আপনাদের আর সম্মান দেখানো হবে না।"
এই ঘটনা কিশোরগঞ্জেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হত্যামামলার আসামি এবং প্রভাবশালী চিকিৎসক ডা. নওশাদ খানসহ সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ এখন ‘টক অব দ্য কিশোরগঞ্জ’। কিশোরগঞ্জবাসী বিস্মিত যে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে এত সহজে মামলার ঝুলিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে যেতে পারলেন।
