ভারতের হামলায় ‘জবাব দিতে প্রস্তুত’ পাকিস্তান, সশস্ত্র বাহিনীকে কঠোর প্রতিক্রিয়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মধ্যরাতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর পাল্টা জবাব দিতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (NSC)। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির জরুরি বৈঠকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় চালানো ভারতের সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং এটিকে দেশের সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করা হয়।
বুধবারের ওই বৈঠক শেষে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, "আত্মরক্ষার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে এবং পাকিস্তান সময় ও স্থান অনুযায়ী উপযুক্তভাবে জবাব দেবে।" জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়, নিরীহ জনগণের প্রাণহানি এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের প্রতিশোধ নেওয়ার বৈধ অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে।
এনএসসির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও মাতৃভূমি রক্ষায় তাদের ভূমিকার প্রশংসা করছে।”
বিবৃতিতে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, ভারতের ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। পাকিস্তান শান্তি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও সার্বভৌমত্ব ও জনগণের সুরক্ষায় কোনো ধরনের ছাড় দেবে না বলে কড়া বার্তা দেয় ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দাবি, ভারতীয় বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, এই হামলায় পাকিস্তানে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ভারত মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
এই ঘটনার ফলে কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতীয় কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কথা স্বীকার করেছেন।
এই উত্তেজনা শুরু হয় জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর। সেই হামলায় ভারতীয় সেনা হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অভিযান চালায়। তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
