শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক ভ্রমণ, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা

পিরামিডের শহর বলতে কায়রো আর পিরামিডের দেশ বলতেই মিশরের যে ছবি চোখে ভেসে আসে সেখানে মরুভূমিতে তিনটি বিশাল আকৃতির পাথুরে ত্রিভূজের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা গোটা কয়েক খেজুর গাছ আর চলমান উটের কাফেলা। অবশ্য মানসচক্ষুর আর দোষ কী! সেই দূর শৈশব থেকে বইয়ের পাতায় দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডারে, এমন কি সিনেমার দৃশ্যপটেও দেখেছি সেই একই দৃশ্য। সারা দেশে বর্তমানে টিকে আছে একশ আঠারোটি পিরামিড, এর মধ্যে গিজার প্রাচীনতম ‘গ্রেট পিরামিড’, স্ফিংস এবং সাক্কারার অসমাপ্ত পিরামিডসহ পাঁচ সাতটা পিরামিডে ঘুরে নিজের চোখে দেখে ফেলতে পারলে পর্যটকের কায়রো ভ্রমণ অনেকটাই সম্পন্ন হয়ে যায়। বাকি শতাধিক পিরামিড খুঁজে বের করা গবেষকের কাজ। কিন্তু এই একশ আঠারোর বাইরে সুদানে যে নুবিয়ান সাম্রাজ্যের দুইশর বেশি পিরামিড আছে তা অনেকেরই জানা নেই। সেই কারণে গিজায় প্রতি বছর কোটি খানেক মানুষ পিরামিড দেখতে এলেও সুদানের পিরামিডগুলোতে বছরে পাঁচ লাখ পর্যটক আসে কিনা সন্দেহ!

দূরে থেকে পিরামিড। ছবি: লেখক

পরিকল্পনা ছিল ‘অবশ্য দর্শনীয় আকর্ষণ’ হিসাবে পরদিন সকালে প্রথমে সাক্কারা এবং পরে গিজায় পিরামিড দেখে বিকেলের মধ্যে কায়রো ফিরে আসবো। সকাল আটটায় আমাদের বেরিয়ে যাবার কথা। সময় সচেতন চালক তার বাহন নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মিনিট পনের আগেই এসে হাজির। দেশের বাইরে কোথাও গেলে আমরা সাধারণত পূর্ব নির্ধারিত সময়-সূচি মেনে চলি। নিজের ঘরে শুয়ে বসে আলসেমি করে সময় কাটানো যায়, কিন্তু ডলার পাউন্ড ইওরো দিয়ে কেনা সময় অকারণে বয়ে যেতে দেয়ার কোনো মানে হয় না। বিভিন্ন সময়ে অনেক দেশেই ঝিরঝির করে ঝরে পড়া তুষারের তীব্র শীতে, ঠা ঠা রোদের দুপুরে কিংবা তুমুল বৃষ্টির দিনে যথা সময়ে বেরিয়ে যাবার রেকর্ড আমাদের আছে। কাজেই আগের দিন প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে পরদিন সকাল সাতটায় উঠে পড়াটা তেমন কঠিন কিছু নয়।

সৌরভ আগেই বলে রেখেছিল, প্রথম দিন সন্ধ্যায় দেশি বিদেশি মিলিয়ে কয়েকজন অতিথি আসবেন। আয়োজন ঘরে হলেও ঘুম ভাঙার পরে আমরা লিভিংরুমে এসে বসার আগেই চলে এসেছেন আন্তর্জাতিক রেডক্রস কর্মকর্তা সৈয়দ আজিজ এবং তার স্ত্রী মান্নি সৈয়দ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তা কামরুল হাসানসহ আরও দুই একজন। প্রাথমিক আলাপ পরিচয়ের পরে দেখা গেল আগে কখনো দেখা সাক্ষাৎ না হলেও আমরা আসলে পরস্পরের অনেক কাছের মানুষ। সৈয়দ আজিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন আবৃত্তি চর্চায় যুক্ত ছিলেন। কণ্ঠশীলন এবং সংস্কৃতি সংসদ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক জগতের অনেকের সাথেই তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ এখনো থেকে গেছে। যখন যে দেশে থাকেন সেখানে থেকেই বাংলা ভাষার কবিতা ও নাটকের চর্চা এবং উৎকর্ষের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। মান্নি সৈয়দ আমাদের সিনেমা জাগতের খ্যাতিমান পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের কন্যা। ঢাকার সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র, নাটক এবং টেলিভিশন নিয়ে কথার ফাঁকে অনিবার্যভাবেই ঢুকে পড়েছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। সান্ধ্যকালীন আড্ডায় পর্যায়ক্রমে যোগ দিযেছেন বৈমানিক রাজিউল ইসলাম এবং তার সুইস স্ত্রী ভ্যালেরি। রাজি বাংলাদেশের সেনাবাহিনি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন আর ভ্যালেরি কায়রোতে সুইস দূতাবাসের কর্মকর্তা। সার্বক্ষণিক তথ্য উপাত্ত যোগান দিয়ে আড্ডা জমিয়ে রেখেছেন রানা ভাই আর খাদ্য পানীয়ের ব্যবস্থাপনা তো গৃহকর্তার উপরেই বর্তায়।

পথ নির্শের সামনে সিলভিয়া ও হেনা। ছবি: লেখক

আজকাল বাসায় বন্ধু বান্ধব নিয়ে পার্টির আয়োজন করলে আমাদের দেশেই স্ত্রী, কন্যা, বোন বা ভাবিদের গলদঘর্ম হয়ে রোস্ট-রেজালা, বিরিয়ানি-পোলাও কিংবা ফিরনি-ফালুদা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয় না। ছোটখাটো ক্যাটারিং সার্ভিস ছাড়াও পান্ডা ষণ্ডা নামের হোম ডেলিভারিওয়ালারা মুখরোচক খাবার বাড়ির দোরগোড়ায় পৌছে দেবার জন্যে একপায়ে দাঁড়িয়ে। বিদেশে তো এ সব চালু হয়ে গেছে আরও বহু বছর আগেই। কাজেই খাদ্য যোগান দেয়া স্থানীয় পাণ্ডারা আমার জানা অজানা নানা রকম খাবার দিয়ে গেছে এবং সে সব রান্নাঘর হয়ে টেবিলেও চলে এসেছে। স্বাস্থ্যবান মিশরিয় মুরগির গ্রিল বাদ দিলে বাদবাকি খাবার সম্পর্কে কিছু ধারণা নেয়া যেতে পারে। ভাতের পরে রুটিই যেহেতু ভেতো বাঙালির প্রাধান খাবার, সেক্ষেত্রে প্রথম প্রসঙ্গ রুটি নিয়ে। মিশরের ‘আইশ বালাদি’ আমাদের তন্দুর রুটি এবং হাতে বানানো রুটির মাঝামাঝি একটা জিনিস। নির্ভেজাল আটার তৈরি । সেই ফারাওদের আমল থেকেই নাকি ধনী গরিব সকল মিশরিয় এই রুটি খেয়েই জীবন ধারণ করে আসছে। আইশ মানে জীবন অর্থাৎ আমাদের যেমন পানির অপর নাম জীবন, মিশরিয়দের রুটির আপর নাম জীবন। প্রবহমান নীল নদ বাদ দিলে মরুভূমিতে পানির বড় অভাব, সম্ভবত সেই কারণেই পানি নয়, রুটিই এখানে জীবন।

পরিচিত খাবারের মধ্যে ফালাফেলের সঙ্গে পরিচয় অনেক আগের। এবারে কাতার এয়ারওয়েজের খাদ্য তালিকাতেও ছিল এই বড়া জাতীয় জিনিস। তবে একে বড়া না বলে পাকোড়াও বলা যেতে পারে। সেই ছোলার ডাল, মটরশুটি, পেঁয়াজ কাঁচা মরিচ ধনেপাতা এবং প্রয়োজনীয় মশলা ব্যবহার করে তেলে ভাজা। উপকরণ প্রায় এক হলেও আমাদের কাছে মিশরিয়দের চেয়ে ভারতীয়দের পাকোড়া অনেক বেশি সুস্বাদু! এই কারণে ফালাফেলের চেয়ে কোশারি আমার বেশি পছন্দের খাবার।

আইশ বালাদি। ছবি: লেখক।

মিশরের জাতীয় খাবার কোশারি আসলে এক ধরনের খিচুড়ি বললে ভুল বলা যাবে না। বাঙালির খিচুড়ির মূল উপাদান চাল আর ডালের সাথে ইতালির ম্যকারুনি মিশিয়ে দেবার বুদ্ধিটা মিশরিয়রা কোথায় পেয়েছিল জানি না, কিন্তু কোশারি এতেই এক ধরনের নতুন রূপ লাভ করেছে। এতে মশলা হিসাবে সাধারণত পেঁয়াজ ধনিয়া জিরা রশুন এবং টমেটো ব্যবহার করা হলেও ইচ্ছে মতো হটসস বা ভিনিগার দেয়া যেতে পারে। কোশারিতে ডালের বদলে ছোলা কিংবা ম্যাকারুনির পরিবর্তে স্প্যাগাটি দিলে হয়তো চেহারা খানিকটা বদলায় কিন্তু তাতে কোশারির চরিত্র বদলায় না। স্ট্রিট ফুড হিসাবে এর জনপ্রিয়তা থেকে পরবর্তী সময়ে অভিজাত রেস্তোরাতেও নিজের জায়গা করে নিয়েছে মিশরিয় খিচুড়ি! পানাহার শেষ করে অতিথিদের বিদায় দিয়ে ঘুমাতে রাত সাড়ে বারোটা বাজলেও নির্ধারিত সময়ের মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমরা গাড়িতে উঠে পড়েছি। তরুণ চালক বাসাম মাআদি এলাকারই একটা দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে আমাদের পথপ্রদর্শক সিলভিয়াকে তুলে নিয়েছে। কায়রোর হেলওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্যুরিজম এ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্টে গ্রাজুয়েশন করেছে সিলভিয়া নাবিল। গাড়িতে উঠে পরিচয় দেবার পরপরই সে তার জবরদস্ত একখানা সচিত্র কিতাব বের করে খ্রিস্টপূর্ব ছয় হাজার অব্দের ইতিহাস বর্ণণা শুরু করেছিল। রানাভাই তাকে একরকম থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আসলে বিস্তারিত ইতিহাসের ব্যাপারে আমরা খুব বেশি আগ্রহী নই। তুমি বরং ফারাও রাজত্বকাল বা পিরামিড সম্পর্কে যে সব কথা ইতিহাসে নেই, তেমন কোনো গল্প থাকলে শোনাতে পারো।’

পিরামিডের সামনে উট। ছবি: লেখক।

মেয়েটি বোধহয় রানাভাইয়ের কথায় একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। বই পুস্তক গুটিয়ে একেবারে চুপচাপ হয়ে যাবার পরে রানা ভাই আবার বললেন, ‘ইতিহাস আমরা জানতে চাই না তা নয়। তবে তা চোখের দেখার সাথে মিলিয়ে জানতে পারলেই ভালো। পিরামিড দেখা শেষ হলে কোথাও চা কফি খেতে খেতে তোমার বিবরণ শোনা যাবে।’ যদিও কথা ছিল প্রথমে সাক্কারা এবং পরে গিজায় যাওয়া হবে, কিন্তু সিলভিয়ার পরামর্শ অনুসারে গিজা হয়ে সাক্কারা যাওয়াই স্থির হলো। আমরা যখন গিজার পথে কায়রো শহর পাড়ি দিচ্ছি, তখন রাস্তার দুপাশে আবার সেই ধূলি ধুসর অসমাপ্ত অর্ধসমাপ্ত ভবনের সারি। বসবাস উপযোগি ভবনগুলোর দেয়ালেও দীর্ঘ দিন তেল পানি বা রং বার্নিশ পড়েছে বলে মনে হয় না। সিলভিয়াকে প্রশ্ন করে এর কোনো যুৎসই উত্তর পাওয়া গেল না। রানাভাই বললেন, বৃষ্টিহীন শুকনো আবহাওয়ার কারণে এখানে কোনো রংই স্থায়ীত্ব পায় না, সেই কারণে দেয়ালে যে সব রং ব্যবহার করা হয়, সেই রংও এ রকম ধূসর। আমরা এই ধূসর শহর পেরিয়ে গিজার দিকে এগিয়ে যাবার পথে অনেক দূর থেকে হঠাৎ করেই দেখা হয়ে গেল প্রাচীন বিশ্বের সাতটি বিস্ময়ের অন্যতম মিশরের পিরামিড! এরপর যানবাহন এবং গাছপালার ফাঁকে মাঝে মাঝেই উঁকি দিয়ে যাচ্ছিল পৃথিবীতে টিকে থাকা সবচেয়ে উঁচু দুটি পিরামিডের চূড়া।

আমাদের চোখে দেখা পিরামিডগুলোর মধ্যে ফারাও সম্রাট খুফুর তৈরি পিরামিডের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি, এটি তৈরিও হয়েছিল সবচেয়ে আগে। গবেষকেরা গবেষণা করে বের করেছেন খুফুর পিরামিডের নির্মাণকাল খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০০ অব্দ। তার অর্থ হলো এখন থেকে ছয়হাজার সাতশ বছরেরও আগে। মহামহিম ফারাও সম্রাটেরা সে সময়ের যাবতীয় খাদ্য পানীয়, সুখ সাচ্ছ্যন্দ এবং আরাম আয়েশ উপভোগের পরেও মৃত্যুটা মেনে নিতে পারেননি। মৃত্যু পরবর্তী জীবনে কিংবা পুনরুত্থানকালে নতুন করে বিলাসবহুল জীবনের প্রত্যাশায় দেহকে মমি করে রাখা এবং তা অনড় অজর কোনো প্রকোষ্ঠে সংরক্ষণের ধারাবাহিকতায় বিপুল বিত্ত বৈভব ও জনশক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছিল পিরামিডের মতো স্থাপনা। নিশ্চয়ই সে সময়ের ধাপ্পাবাজ পুরোহিত যাজক বা ধর্মগুরুদের কেউ এই অমরত্বের ধারণা দিয়েছিল এবং ক্ষমতাবান সম্রাটেরা তা বিশ্বাস করে কাজে লাগাতেও কার্পণ্য করেনি।

পরবর্তী কয়েক মিনিটের মধ্যে বাসাম তার বাহন নিয়ে এসে দাঁড়ালো গিজার পিরামিডের প্রবেশ পথের পার্কিং-এ। এখানে টিকেট ঘর এবং প্রক্ষালন কক্ষ ছাড়াও রয়েছে বিস্তৃত পিরামিড চত্বরের পথ নির্দেশিকা। প্রক্ষালন কক্ষ ব্যবহারের জন্যে দশ ইজিপশিয়ান পাউন্ড অর্থাৎ ষাট টাকা আমার কাছে খুব বেশি মনে হয়নি। ইওরোপের যে কোনো জায়গায় দিতে হতো এক ইওরো, যা একশ টাকার সমান। সবগুলো পিরামিড ঘুরে দেখতে দুশ ইজিপশিয়ান পাউন্ড আর পিরামিডের ভেতরে ঢুকতে চাইলে গিজার ‘গ্রেট পিরামিডে’ চারশ এবং ছোট দুটি পিরামিড খাফরা ও সেনকাওরায় একশ পাউন্ড করে অতিরিক্ত টিকেট কিনতে হবে। গত শতকের পঞ্চাশের দশকেই সৈয়দ মুজতবা আলীর দুই সফর সঙ্গী পিরামিডের ভেতরে প্রবেশ করলেও তিনি নিজে ভেতরে যেতে উৎসাহ বোধ করেননি। কারণ, তিনি জানতেন সেখানে আসলে কিছু নেই। ‘জলে ডাঙায়’ যারা পড়েছেন তারা কায়রো ভ্রমণে গেলে নিশ্চয়ই পিরামিডের ভেতরে ঢুকতে চাইবেন না, আর আমার নিজের ক্ষেত্রে চরণযুগলের অসহযোগিতার কারণে পিরামিডের গায়ে খাড়া পাথুরে পথ বেয়ে ওঠা এবং অপরিসর সুড়ঙ্গ পথে নাম দুটোই অসসম্ভব। অতএব পিরামিডে প্রবেশের চারশ পাউন্ড বাঁচিয়ে আমরা সিলভিয়াকে অনুসরণ করে এগিয়ে চললাম খুফুর পিরামিডের পথে।

পিরামিডের সামনে থেকে। ছবি: লেখক।

আমরা যখন পায়ে হেঁটে সামনে এগোচ্ছি বাসাম তখন তার লাল গাড়িটা নিয়ে মূল পার্কিংলটে চলে গেছে। সেখানে অসংখ্য বাস, মিনিবাস, ট্যুরিস্ট ভ্যান এবং ছোট ছোট গাড়ির ভিড়ে নিজেদের বাহন খুঁজে বের করাই কঠিন। যন্ত্রযানের পাশাপাশি এখানে ঘোড়ায় টানা টাঙ্গা এবং মরুর জাহাজ উটের আনাগোনা দেখে বোঝা যায় মিশরের পর্যটন ব্যবস্থা তাদের অতীত ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। তবে ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হলেও এই এলাকায় উটের পিঠে চড়ে মরুভূমি পাড়ি দেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। নেহায়েতই সৌখিন পর্যটক উটের পিঠে হেলেদুলে এক আধ কিলোমিটার ঘুরে এসে উটের কাফেলায় সামিল হবার অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে যায়।

কাঠের পাটাতনে পায়ে চলার পথ ধরে পিরামিডের চড়াইতে উঠবার জন্যে যেখানে পাথরের খাঁজে খানিকটা পথ তৈরি করা হয়েছে আমরা যখন সেখানে এসে দাঁড়ালাম তখন অসংখ্য দর্শনার্থী বিশাল আকৃতির পাথর খণ্ডে পা রেখে উর্ধ্বলোকে যাত্রা করেছেন। আমার দুই সফর সঙ্গী উপরের দিকে উঠতে শুরু করলে পিরামিডের ছায়ায় আমাকে একা পেয়ে দাঁড়িয়ে সিলভিয়া আবার তার ইতিহাসের ঝাঁপি খুলে বসেছিল। এবারে অবশ্য বই পুস্তক থেকে নয়, তার আত্মস্থ করা বিবরণী থেকে জানা গেল খ্রিস্টপূর্ব ৪৬০০ অব্দে নির্মিত গিজার দ্বিতীয় পিরামিড খাফরার উচ্চতা চারশ একাত্তর ফুট আর ৪৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সেনকাওয়ার উচ্চতা ২১০ ফুট। এক লক্ষ শ্রমিক কুড়ি বছর ধরে একটার উপরে আরেকটা পাথরের চাঁই সাজিয়ে নির্মাণ করেছে এই ‘গ্রেট পিরামিড অফ গিজা’!

ঘরোয়া আড্ডা  কায়রো। ছবি: লেখক।

আমি ভাবছিলাম অন্য কথা। এতোদিন দূরে থেকে যা ভেবেছিলাম পিরামিড আসলে তেমন সুক্ষ্ণ শিল্পকর্ম নয়। এখানে জ্যামিতি, ত্রিকোণোমিতি বা অংকের হিসাব নিকাশ আছে, দূর দূরান্ত থেকে পাথর বহন করে আনার ব্যয় ও ব্যবস্থাপনা আছে, রক্ত জল করা পরিশ্রমে নিয়োজিত লক্ষ লক্ষ শ্রমদাসের জীবন ধারণের বিপুল বিনিয়োগ আছে, সবচেয়ে বড় কথা সমকালীন সকল ক্ষমতার উৎস সম্রাটদের বিশ্বাস ও উচ্চাকাক্সক্ষার প্রতিফলন আছে, কিন্তু এখানে উঁচুমানের শিল্পের কোনো সুক্ষ্ণ কারুকাজ নেই। সিলভিয়ার কথা শুনতে শুনতে এবড়ো থেবড়ো পাথরের শরীর থেকে আমার দৃষ্টি চলে যায় পিরামিডের শীর্ষে।

(চলবে)

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিরাপত্তা বেষ্টুনীবিহীন একটি ভবনে কাজ গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে বাবুল মিয়া বাবু (৫৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার মাইজবাড়ী এলাকার গুটু মিয়ার ছেলে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ভূঞাপুর পৌর শহরের ফসলআন্দি এলাকায় সাংবাদিক আসাদুল ইসলাম বাবুলের তিন তলা ভবনের নিচের একটি ড্রেনে পড়ে গিয়ে তিনি মারা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াহেদুজ্জামান পলাশ জানান, জুয়েল নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন বাসায় কাজ করছিলেন ওই নির্মাণ শ্রমিক। কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ পা ফসকে ভবনের চার তলা ছাদ থেকে নিচের একটি ড্রেনে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানান, নির্মাণাধীন এই ভবনের কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না। নির্মাণ শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে আসছিলেন। নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় এর আগেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ উঠেছে, থানা পুলিশকে না জানিয়ে কৌশলে ভবনের মালিক জুয়েল হাসপাতাল থেকে তার লাশ নিয়ে যায়।

ভবন মালিক জুয়েল বলেন, নির্মাণ শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের সাথে সমঝোতা হয়েছে। পরিবারকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, এ বিষয়ে কেউ অবগত করেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রাজিবুল ইসলামকে (বাপ্পি) সভাপতি ও সজল কুণ্ডুকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনুমোদন দিয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এ কমিটির অনুমোদন দেন।

কমিটি অনুমোদন দিয়ে এতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ', 'স্মার্ট মহানগর' বিনির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলো।

ঘোষিত কমিটিতে সহ-সভাপতি হয়েছেন কাউসার আহমেদ (ইমন), সৈয়দ ইমরান হোসেন, মো. নাজমুল হোসেন, উবায়দুর রহমান লিও, নিবাস মজুমদার, রেহানুল হক রাফি, রাজীব সাহা, আবু তালিম ভূইয়া, আরাফাত হোসেন মারুফ, মো. হাসিবুল আলম পুলক, শাখাওয়াত হোসেন আরেফিন, মো. শাকিল তালুকদার, আহমেদ আলী রেজওয়ান, সালমান রহমান (আশরাফ), আদনান আইয়ুব, মো. রিয়াজ মোল্লা, শাহজালাল শাহীন, ইশতেফাক হক (ইফাজ), সৈয়দ আমিনুল ইসলাম (নিবিড়), কাজী জাহিদুল ইসলাম রাজন, মাশরুফ বিন নেসার শান, মো. শাহরিয়ার শাওন, মো. আক্তার হোসেন, মো. বিপ্লব খান,নাইমুল ইসলাম নোমান, নাজমুল হাসান প্রিন্স তালুকদার, সারোয়ার হোসেন, ফারকিলিত সাফাক-ই-আরফাকসাজ, আনিসুর রহমান আনিস, জুটন চন্দ্র দাস,মাহমুদুল হাসান (ইমন)।

এছাড়াও সহ-সভাপতি হিসেবে আরও আছেন, মাজেদুল মজিদ মাহমুদ (সাদমান), সাদি মোহাম্মদ সৈকত, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ রাজু, রাকিবুল ইসলাম শাওন, মো. ফজলে রাব্বি, সোহানুর রহমান সোহান, ওহিদুল ইসলাম অপু, মেহেদী হাসান, তানভীর আহমেদ, রুবেল মাহমুদ, সাব্বির বিন ইসলাম, মাসুদ রানা, মো. আবু ইউসুফ হৃদয়, আশিক মাহমুদ, মো. নুরুদ্দিন হাওলাদার, মাহমুদ হাসান জিল্লু, মো. ইনজামুল ইসলাম (আকিব), সোহেল রানা, আব্দুল্লাহ আল-হাসান, আহমেদ সারোয়ার স্বচ্ছ, মো. কামরুজ্জামান ইফতি, আরাফাত হোসেন রনি, মো. ইমরান হোসেন, সিফাত হোসেন, শেখ কোরবান ইসলাম, আব্দুল্লাহ আশিক, এফ এম সাইফুজ্জামান সজিব, মো. শামীম খান, বখতিয়ার শিকদার বাপ্পি, সুজন দাস, মো. তাবারক হোসেন (বিপ্লব), বাবু দাস, মো. ইমরান হোসেন পাভেল, জবিউল্লাহ শান্ত, বিশ্বজিৎ হাওলাদার জিৎ, ফেরদাউস আনসারী, নাইমুর রহমান দুর্জয়, জহিরুল ইসলাম খান তুহিন, মেহেদী হাসান রাজু, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, আল আমিন।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাগর (সানাফ), সৈয়দ মুক্তাদির সাদ, সৌরভ দেব নয়ন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আবিয়াজ সাজেদ, নয়ন শিকদার, কাজী তানবীর হোসেন, মাহবুব আলম মাহিব, রফিকুল ইসলাম রাসেল, ইয়াসির আরাফাত, আক্তারুজ্জামান মান্না।

সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন, সাকিব হোসাইন, শাকিল হোসেন (জীবন), আরমান মাহমুদ তুষার, রহমান ইকবাল (ইকু), জোবায়েদ সাদাফ সাজিদ, দিপ্ত কুন্ডু, জাহিদুল ইসলাম দিপু, মো. রাকিব হোসেন, নাইমুল ইসলাম, মো. সাইদুল ইসলাম জনি, মো. রাহাত হোসেন রাব্বি।

প্রচার সম্পাদক হয়েছেন হামিম খান কাজল। উপ-প্রচার সম্পাদক করা হয়েছেন আরিফুল ইসলাম, এরশাদ হোসাইন, এম আহসানুর রহমান ইমন, এম এস আর সবুজ, মাহবুব আলম খান তনিম, মুনতাসির রাফি।

দপ্তর সম্পাদক করা হয়েছে মো. সাকিব আল হাসান (রাজিব) কে। উপ-দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন নাঈফুজ্জামান কোতোয়াল, শিমুল রায়, জুনাইদ বোগদাদী প্রধান, রাইসুল আলম ইসতিয়াক, শফিক বেপারী, কাজী রাকিব হোসেন।

গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হয়েছেন মীর মোহাম্মদ সাইকুন আলী শান্ত। উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হয়েছেন মোকারোম হোসাইন রুদ্র, মো. জনি ইসলাম, জুয়েল রানা, মো. মারজুক হোসেন ভুবন, মারুফ বিল্লাহ ও জাফরুল ইসলাম (লিটন)।

শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক করা হয়েছে শাহাদাত মাহমুদ সাকিবকে। উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হয়েছেন মো. জিন্নাত হোসেন, সাব্বির হাওলাদার, প্রতীম বিশ্বাস, রোহান আহমেদ, আহসান হাবিব ইমরান।

সাংস্কৃতিক সম্পাদক হয়েছেন তমাল পাল। উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয়েছেন এইচ. এম. আমিনুল, নীলপদ্ম রায় প্রান্ত, স্বপন চৌধুরী, রাহুল কুমার ভৌমিক, সোহেল জামান রাকিব।

সমাজসেবা সম্পাদক হয়েছেন শাকিল আহমেদ হৃদয়। উপ-সমাজসেবা সম্পাদক করা হয়েছে শেখ মেহেদী হাসান, মাসুম বিল্লাহ, সাদ্দাম হোসেন সাদমানকে। ক্রীড়া সম্পাদক হয়েছেন মো. আবু হোসাইন। উপ-ক্রীড়া সম্পাদক হয়েছেন নাঈম ইসলাম দুর্জয়, তারিকুল ইসলাম অপু, সজল হাওলাদার, মো. নূর নবী (রাঈদ), সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, আব্দুল্লাহ সাবিত আনোয়ার চৌধুরী।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন শাহ আলম বিজয়। উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন শাহরিয়া ইসলাম জয়, মোস্তাফিজুর রহমান দিপু, শেখ মুহাম্মদ নাঈম উল ইসলাম, ওয়াহিদুল ইসলাম নিশান, সৈয়দ লামমিম হাসান নিলয়। পাঠাগার সম্পাদক হয়েছেন সাফায়েত খন্দকার সিয়াম। উপ-পাঠাগার সম্পাদক হয়েছেন ইমতিয়াজ আহমেদ ইমরান, ফয়সাল আহম্মেদ তমাল, মাহমুদুল হাসান তুষার।

তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হয়েছেন হাবিবুর রহমান শাকিল। উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হয়েছেন ফয়সাল আহমেদ ভুবন, সাবের হোসাইন, মুরসালিন সরকার। অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মো. সোহাগ রানা। উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন সুরুজ ফরাজী, গোলাম রাব্বি সিকদার শফিউদ্দিন মাহমুদ তুষার, আখিয়ারুল ইসলাম আফিক।

আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মেহেদী হাসান (নাহিদ)। উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন কাজী জার্জিস বিন এরতেজা, মো. মঈন হোসেন (সজীব), মো. জুবায়ের হোসেন শেখ রওনক আহমেদ, আরিফুর রহমান ফাহাদ, নওফেল হামিদ জয়। পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ইরফান আহমেদ বাধন। উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মো. রাব্বী হোসেন, সজীব হাওলাদার, জাহিদুল ইসলাম।

স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মো. আরাফাত উল্লাহ। উপ-স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আহসানুল্লাহ সজীব, নিয়ামাল ওয়াকিল, নিবিড় হাসান, মো. ফয়সাল রাব্বি। বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আবরার খান তাহমিদ। উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন আবু কাওসার, মো. তানভীর আহমেদ বাপ্পি, মো. জিসান হাওলাদার, মো. ওয়ালিউল।

দিনাজপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু

দিনাজপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে গরুবোঝাই ভটভটির সঙ্গে মোটরসাইকেল সংঘর্ষে মোটরসাইকেলের থাকা দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। এর আগে, সকালে ঘোড়াঘাট উপজেলায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকের চালক ও সহকারীর মৃত্যু হয়।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে বিরামপুর-হাকিমপুর আঞ্চলিক সড়কের ডাঙ্গাপাড়া বাজারের উত্তর পাশে হাকিমপুর - বিরামপুর উপজেলার জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে ভোরে ঘোড়াঘাট উপজেলার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের টিএন্ডটি মোড় এলাকায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত দুই মোটরসাইকেল আরোহী হলেন- নবাবগঞ্জ উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের ধীরাজ কুমার ছেলে ধীমান কুমার ঘোষ (৩০) ও একই উপজেলার দাউদপুর এলাকার আনারুলের ছেলে আরিফ হোসেন (৩৫)।

হাকিমপুর থানা পুলিশ জানায়, দুপুরের দিকে মোটরসাইকেল যোগে হাকিমপুর থেকে দুই বন্ধু বিরামপুর যাবার পথে হাকিমপুর উপজেলার শেষ সীমানায় গরু বোঝাই ভটভটির সাথে মোটরসাইকেল ধাক্কা খেয়ে পাকা রাস্তায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়।

নিহত ধীমান কুমার ঘোষ এর মামা হাকিমপুর হিলি পৌরসভার বাসিন্দা স্বপন কুমার বলেন, আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে মোবাইল ফোনে আমাকে ভাগিনা ধীমান কুমার বলেন, মামা আমি জরুরি কাজে হিলি আসছিলাম তাই আপনার সাথে দেখা করতে পারলাম না। এর কিছুক্ষণ পরে দুর্ঘটনার খবর শুনতে পাই এবং হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগিনা মারা গেছে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. দুলাল হোসেন জানান, দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেলের আরোহীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠিয়ে দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গরুবাহী ভটভটি জব্দ করে থানায় এবং নিহতদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি না থাকায় লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ভটভটি চালক পলাতক রয়েছে।

এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলায় মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলার দিনাজপুর -ঢাকা মহাসড়কের ঘোড়াঘাট টিএনটি মিশন মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ট্রাকচালক গোলাম রাব্বি (৪৫)। সে জয়পুরহাট জেলা সদরের আমদই এলাকার মমতাজের ছেলে। তার সহযোগী রেজোয়ান ইসলাম (২৮) একই এলাকার চৌমুহনীর বাসিন্দা।

স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ভুট্টাবোঝাই ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো-ট-২০৬৬৪৯) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা দিনাজপুর শহরমুখী সারবোঝাই ট্রাকের (ঝিনাইদহ-ট-১১১৬৪৬) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় ২ জনকে উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা সকালে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ২ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছি।’

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সা-আদ আস সামস বলেন, ‘সকালে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ২ জন রোগীকে মৃত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উপজেলার টিএনটি মোড় এলাকায় ভুট্টা ও সারবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ভুট্টাবোঝাই ট্রাকটিকে দিনাজপুর শহরমুখী সারবোঝাই একটি ট্রাক সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ভুট্টাবোঝাই ট্রাকের চালক ও সহকারীর মৃত্যু হয়। ট্রাক দুটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
দিনাজপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক নিহত, আটক ১
ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের ভেতরে আগুন
৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙল, জানা গেল বৃষ্টির তারিখ
ফিলিস্তিনি মৃত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি আর বেঁচে নেই
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শ্রীময়ী, দুশ্চিন্তায় কাঞ্চন মল্লিক
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি
বিয়ে না দেওয়ায় মাকে জবাই করলো ছেলে
রেকর্ড তাপপ্রবাহের জন্য সরকার দায়ী: রিজভী
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, জনজীবনে অস্বস্তি
বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার
প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ
দুই বিভাগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
অভিষেকেই শূন্য রানে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রোহমালিয়া
ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে অস্ত্র ত্যাগ করবে হামাস
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েক মিনিটের দেরিতে বিসিএসের স্বপ্ন ভঙ্গ ২০ পরীক্ষার্থীর
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত