শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক

‘ওটা নাকি আমাদের দেশ নয়! আমাদের গাঁ-গঞ্জ নয়! বাপ দাদো (ঠাকুরদা) তার দাদো তার দাদো যুগযুগ ধরে বাস করে মরে ভূত হয়ে গেল, আর এখন বলছে, ও দেশ নাকি আমাদের নয়!’ ডুকরে উঠলেন হালেমা। তারপর দাঁত কামড়ে খিস্তি দিলেন, ‘ল্যাড়খেকের ব্যাটারা, বিশ্বাস না হয় তো কবর খুঁড়ে দ্যাখ গে।’

নিস্তব্ধ নদীর রাতে এক অভাগিনীর কান্না আকাশ বাতাসকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। নদীও কুলকুল করে উঠছে। নদীও তো মা। সেও তো জীবনের জন্ম দেয়। সেও তো বোঝে ভিটে ছাড়ার যন্ত্রণা। এ তো শুধু শুধু এক ভিটে ছেড়ে অন্য ভিটেই উঠে যাওয়া নয়? এক ঠিকানাহীন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেওয়া। এর শেষ কোথায় কেউ জানে না। আদৌ কোনো ভিটের ছোঁয়া মিলবে না এই নীল কালাপানির ওপর অনাহারে থেকে থেকে আল্লাহর আসমানে উঠে যেতে হবে, একমাত্র সেই আসমানের আল্লাহই জানেন। এই নীল দরিয়া থেকেই রক্ত-মাংসের খোল নিংড়ে আল্লাহর রহম করা রুহুটা হয়ত আল্লাহর ফেরেশতা ছিনিয়ে নেবেন! আরিফা গায়ে একখানা আস্ত কাঁথা, কাঁথার ওপরে একটা ময়লা চ্যাটচেটে চাদর চরিয়ে ধুঁকাতে ধুঁকাতে হালেমার কোলের কাছে এসে ঘাপুস মেরে বসল, ‘মা, আর কাঁদেন না, আমাদের কাঁদন শোনার জন্যে কেউ নেই! আল্লাহ তো কবেই মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহর কাছে আমরা মানুষ নই, পোকা-মাকড়।’

‘পোকা-মাকড়েরও দেশ আছে রে মা, আমাদের যে তাও নেই!’ হাউমাউ করে উঠলেন হালেমা। তারপর থুত্থুরে হাত দিয়ে বুক থাবড়াতে থাবড়াতে জিকির তোলার মতো বলতে লাগলেন, ‘ছেলেপিলে জন্ম দেওয়াই আমার পাপ হয়েছে। আগে জানলে, সবকটাকে পেটেই শেষ করে দিতেম। এ পোড়া দেশের মুখ দেখতে দিতেম না। মাথা গোঁজার ঠাঁই যখন দিতে পারব না তখন জনম ক্যানে দেব? তারপর হাশরের ময়দানে শেষ বিচারের দিন আল্লাহর কাছে ঠিক বুঝে নিতেম, দেশ দিতে পারবেন না তো জন্ম ক্যানে দিয়েছিলেন? মানুষ না বানিয়ে জিন-পরি ক্যানে বানাননি? গাছে ডালে, হাওয়াই হাওয়াই থাকতেম। কোনো দেশ লাগত না। ‘জ্বর গায়ে আরিফা শাশুড়ির পিঠে আলতো করে হাত দিলেন। মিনমিন করে বললেন, ‘মা, কী আর করবেন, কপালে আল্লাহ এই লিখে দিয়েছেন। নদীতে পড়ে পড়ে না খেয়ে, না নেয়ে মরব। তারপর আল্লাহর দেওয়া এই রক্ত-মাংসের দেহটা নদীর পানিতে পচে পচে পোকামাকড়ের পেটে চলে যাব।’

‘আল্লাহর দোহায়, তোমরা একটু থামবে? তোমাদের বকবকানি আর সহ্য হচ্ছে না।’ বিরক্ত হয়ে উঠল নুহু ।
‘আমি তোদের কাছে কিচ্ছু চাই নে, শুধু তোদের এই হতভাগা বাপটা যেন একটু কবরের মাটি পায়। তোরা মাটির পানে নিয়ে চল। আমিও চোখে মাটি দেখে মরতে চাই।’ বুক থাবড়াতে থাকেন হালেমা। তার জুবুথুব শরীরটা ন্যাকড়ার মতো মুচড়ে যাচ্ছে। চোখ টাটিয়ে উঠল নুহু ‘এখন কী করে জান বাঁচাব তাই ভেবেই কূল পাচ্ছি নে, আর মাটির খোঁজ করব?’ নুহু হাড়ে হাড়ে বুঝছে, হিংস্র বার্মিজ সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে তার কলিজার জানটা কণ্ঠে এসে ধুকপুক করছে। গতরাতের জাহান্নামি দৃশ্যটার কথা মনে পড়লেই, তার রুহুটা শরীরের হাড়ে মজ্জায় কটমট করছে। মাথার ঘেলুতে আতঙ্কের সূচ পটাম পটাম করে ফুটছে। ওরা কি মানুষ? মানুষের রূপ নিয়ে এত দজ্জাল হতে পারে? কবরের আজাবের সাপের থেকেও ভয়ংকর! ওদের জানে এতটুকুও কি মায়াদয়া নেই? ইনসানের রুহু হলে তো একবারের জন্যেও হাত কাঁপবে। জান টাটাবে। আল্লাহ ওদেরকে কী দিয়ে বানিয়েছেন? পাথরকে ঠুকলেও তো কখনও কখনও জল বের হয়, কিন্তু এরা তো পাথরের থেকেও পিশাচ।

নুহু তার মা হালেমার ওপর চিড়বিড় করে উঠলেও, মনে মনে কাঁদছে। একজন মা কী আর চান? তার সন্তানের জন্যে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই আর একপেট ভাত, ব্যস। কিন্তু হালেমা তো এর কিছুই দিতে পারলেন না! কোনরকমে টেনেটুনে চলা নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও পর হয়ে গেল! ওসব এখন তার কাছে পরদেশ। ওদেশে তার কোনো অধিকার নেই। ওমাটিতে যে শেকড় পোঁতা হয়েছিল, সে শেকড়ের জড় নাকি অন্যদেশের! তাঁরা নাকি বহিরাগত! ভিনদেশের মানুষ! মুখে ঝাঁটা মারতে হয়। মনে একটা গল্প এলো আর সে গল্পটাকে ফাঁদিয়ে রাষ্ট্র করে দিলেই হল? মানুষ কি কাগজের ঠোঙা, যে হাওয়াতে উড়ে চলে এল? আল্লাহ কি আসমান থেকে নেমে এসে আদমকে বলে গেছিলেন, এই আদম তোর এই ছেলের দেশ এটা আর ওই ছেলের দেশ ওটা? আল্লাহ তো এই দুনিয়ার সবকিছুই মানুষের জন্যে সৃষ্টি করেছেন। সবকিছুর মালিকই তো আল্লাহ। তাহলে মানুষ কেন খামোখা আমার আমার করে? নুহু তার বাপের হাড়জিরজিরে বুকটা ডলে দিতে দিতে মনে মনে ‘লায়লাতুল কদর’ পড়তে পড়তে আল্লাহর কাছে দোয়া মাঙছে, হে পরবরদিগার, হে রহমানের রহিম, হে মাবুদ, যতক্ষণ না কোন মাটির দেখা না পাচ্ছি ততক্ষণ তুমি আমার আব্বার জান কবজ করো না। আব্বার শেষ ইচ্ছে পূরণ না হলে যে আমরা কেউই কোনদিন ভিটেমাটি পাব না। আলি জাফর স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন, তার মৃত লাশ যদি কবরের মাটি না পায়, তাহলে তার বংশধররাও কোনোদিন বাস করার মাটি পাবে না। আজীবন ছিন্নমূল হয়েই থাকতে হবে। আর তিনি যদি কবরের মাটি পান তাহলে, তার স্বজাতিরা এই মংডুতেই দেশ ফিরে পাবে। রাখাইনই হবে তাদের দেশ। শেষ কথাটা শুনে নুহুর মন নেচে উঠেছিল। খিলি পান মুখে হালেমাও মনে মনে খিলখিল করে উঠেছিলেন।

ঘোলা চোখদুটো থির হয়ে তাকিয়ে থাকেন আলি জাফর। সেভাবে চোখে দেখতে পান না। ডানদিকের চোখটায় কবেই ঝাপসা নেমে এসেছে। আর যখন ডান দিকের চোখটাই কম দেখতে শুরু করলেন, তখন থেকেই গণ্ডগোলটা হুলুস্থুল পাকল। একেবারে কচুকাটা করে মানুষ কাটতে লাগল ওরা। একের পর এক এলাকা দখল করে নিতে থাকল। রক্তে ধুইয়ে যেতে লাগল বুথিডং, মংডুর বিভিন্ন এলাকা। ফলে চোখের ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার আর ফুরসত থাকল না। আলি জাফর স্বপ্নেও ভাবেননি যে এভাবে চোখের ছানির অন্ধকার জীবনের অন্ধকারে বদলে যাবে। জীবনের বেঁচে থাকাটাই হারাম হয়ে যাবে। নিজভূমে হয়ে যাব পরবাসী। যে বাপ-ঠাকুরদার মাটিতে এতবছর ধরে ফসল ফলিয়ে আসছি, সে মাটি নাকি আমাদের না! যে নদীতে এত্তবছর ধরে মাছ ধরে আসছি সে নদী নাকি আমাদের না! যে মাটির ফসল খেয়ে বংশের পর বংশ ভূত হয়ে গেল, যে নদীর জলে গোসুল করে জীবনের কত বেলা কেটে গেল, সেসব নাকি আমাদের না! আমরা নাকি উড়ে এসে জুড়ে বসেছি!

‘ভাই, বাঁয়ে কাত করো, কী যেন একটা শুসে আসছে!’ নদীতে কী একটা দেখে চমকে উঠল নুহু।
‘কই? কোথায় রে?’ অন্ধকারে খুঁটল দৃষ্টি হাতড়াল মতি। চোখ আরও ফেড়ে উঠল তার। নৌকোর পুব দিকের দক্ষিণ-পূর্ব কোণটা হাত দিয়ে দেখিয়ে নুহু থতমত করে বলল, ওই তো, ওই যে ওদিক থেকে ধেয়ে আসছে!’ পিঠ কুঁজো কিছু একটা দেখে মতি আন্দাজ করল, ‘কুমির মনে হয়!’ ভ্রূ কপালে তুলে নুহু চোখ ঘুলিয়ে বলল, ‘তুমি বল্লমটা পোক্ত করে ধরো। নিশানা যেন মিস না হয়।’ নুহুর কথায় মতি পরনের লুঙ্গিটা নেংটি মেরে পাটাতনের ওপর শুইয়ে রাখা সূচালো বল্লমটা দুই হাতের তালুতে এঁটে ধরল। এক পা পাটাতনের আমকাঠের তক্তায় আর এক পা বাঁশের বাতায় আঙুল খামচে, দুই পা ফাঁক করে চোখ ফেড়ে দাঁড়ালো নুহু। যেন অন্ধকার নদীর বুকে এক বীর কালবাওস ছো মেরে দাঁড়িয়ে আছে! যেন কুমিরটাকে এক কোপে ফেড়ে ফেলবে! নৌকোটা ধিরধির করে এগোতে থাকল। নৌকোটা যেদিকে যাচ্ছে সেদিক থেকেই জিনিসটা ধেয়ে আসছে। নুহু তার ধুকধুক করতে থাকা বাপটার গায়ে আচ্ছা করে কাঁথা মুড়ে দিয়ে, লম্বা পাশনিটা হাতের মুঠোয় জাব্দা করে ধরেছে। নুহু দুই হাঁটু মুড়ে, পেটটাকে হাঁটুতে ঠেকা দিয়ে নৌকোর খোলে ঘাপটি মেরে ফিসফিস করে বলতে থাকল, ‘মা, তোমরা সব টাপার ভেতরে লুকিয়ে পড়ো। কেউ বাইরে বের হবে না।’

‘আর বেঁচে থেকেই বা কী করব? আজ না হয় কাল, ঠিক মরতে হবেই। হয় শয়তানদের হাতে না হয় কুমিরের পেটে।’ বিড়বিড় করে উঠলেন হালেমা। ‘মা ভেতরে চলো তো’ বলেই আরিফা খিটমিট করতে থাকা শাশুড়িটাকে টাপার ভেতরে টেনে ঢোকাল। হালেমার কি আর দেহের সে বল আছে যে ছেলের বৌর ঠেলাকে অগ্রাহ্য করেন? আঠাত্তর বছরের মাজাভাঙা শরীরটা ধনুকের ছিলার মতো বেঁকে কবেই পড়ে গেছে। গালে চহলে বাবলা ছালের ভাঁজ। হাড়ের গাঁটে গাঁটে বাতের ব্যামু। কনকনে যন্ত্রণাটা টনটন করে উঠলে, হালেমা ছিনবিন করে বলে ওঠেন, এই দেখো, আজরাইল এবার হাড়ে বাড়ি দিতে শুরু করেছে। যাওয়ার সময় এল বলে! হালেমা যুবতী বয়সে ‘দেখনাওয়ালি’ ছিলেন। তার গা-গতর থেকে জ্যোৎস্নার মতো রূপ ঝরে ঝরে পড়ত। হলুদবাটা গায়ের রঙ। টিকালো নাক। ফালি চোখ। চেরি ফলের মতো ঠোঁটের রঙ। মাথায় খোঁপা ভরা চুল। সবাই ঠাট্টা করত, তোর মাথায় তো এক পেছে চুল রে! কোমর ছিল ঢেঁকির মতন। খুউব অল্প বয়সেই বুকের কলিগুলো দোপ হয়ে উঠেছিল। সৌন্দর্যের সব রূপকে মিলিয়ে উচ্চতাও ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট। বিহঙ্গের মতো এদিক ওদিক উড়ে বেড়াতে বেড়াতে হুট করে আলি জাফরের হাতে ধরা দিলেন একদিন। জাফর ছিলেন তাদের বাড়ির কিষেন। গরুর লেজ আর লাঙলের ঈশ ধরে তার দিন যেত।

নৌকোর খোল থেকে ফুঁসছে নুহু। সে একেবারে পাশনির কোপ মারার জন্যে ডান হাতটাকে ওপরে তুলে খাড়া করে ধরে আছে। এই মারল বলে! তার ভেতর রাগে কটমট করছে। আবার একটা ভয়ও দানা বাঁধছে। ভয় তো একটা হবেই, কুমির বলে কথা। যদিও সে কতদিন ধারালো চাকু দিয়ে কুরবানির পশু জবেহ করেছে। ছুরি দিয়ে সে পশুর গায়ের চামড়া ছিলেছে। দা দিয়ে চিড়েছে হাড়। তবুও একটা ভয় তার শরীরে দলা পাকিয়ে উঠছে। আসলে একটা জানের ভয় যখন একটা মনকে ভেঙে তচনচ করে দেয়, তখন অন্য চুটকে পুটকে ভয়ও যেন দানব হয়ে ওঠে। বিষ না থাকলেও গোখরোর মতো ছোবল মারে। নুহুদের এখন সেই হাল। ডাঙ্গার বার্মিজ সেনাদের ভয়, জলের তলে এসেও যেন কামড় বসাচ্ছে।

‘থামো, আমিও আসছি’ বলেই হাতে হাঁসুয়াটা নিয়ে তেড়ে এল আরিফা। মতি চোখ উল্টে ধমকে উঠল, ‘তুমি আবার কোথায় আসছ? মেয়ে মানুষে মদ্দানি? একদম টাপার ভেতর থেকে বের হবে না।’ জলের দিকে সতর্ক দৃষ্টির খেজাল ফেলে বিড়বিড় করে উঠল মতি, ‘কুমিরের ঠাপ তো কোনদিন খাওনি। একবার হাঁ করলেই, বাপ চোদ্দ গোষ্ঠীর নাম ভুলিয়ে দেবে। ঘাপটি মেরে বসে থাকো।’ পারলে বৌটার চুলের মুটি ধরে আড়ালে বসিয়ে দেয় মতি।

‘ভাবি, তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? এ কি আলু-পটল পেয়েছ নাকি? ব্যাটা ছেলের কাজ ব্যাটা ছেলেকে করতে দাও।’ নৌকোর খোল থেকে খিচখিচ করে উঠল নুহু। কোনা কথায় গা করল না আরিফা। ধারালো হাঁসুয়াটা নিয়ে মরদটার পাশে গিয়ে দাঁড়াল। ভাবল, আর লুকিয়ে থেকেই বা কী লাভ। মরতে যখন বসেছি, হয় একসাথে মরব, আর না হয়, একসাথে বাঁচব। নাহ, আর হাতে চুরি বালা পরে বসে থাকব না। যে হামলা করতেই আসুক, সে বার্মিজ সেনাই হোক আর জলের কুমিরই হোক, জানপ্রাণ দিয়ে কোপাব। হয় মরব না হয় মারব। দাঁত খিটমিট করল আরিফা। তার চোখ আগুন হয়ে হলকাচ্ছে। আঁচলটাকে কোমরে ঠেসে গুঁজল। মাথার কুচকুচে কালো গোছা চুল ঘাড়ে ছেড়ে পিঠে থোকা হয়ে ঝুলল। এ কোন আরিফা! কড়াই-কুন্তির নিরীহ আরিফা যেন কোন গ্রিস-রোমান যুদ্ধের রনংদেহি দেবী। মতি বিড়বিড় করলেও এই মুহূর্তে আর কথা বাড়াল না। এখন বৌর সাথে যেচে ঝগড়া করার সময় নয়। আগে ফাড়াটা কাটুক পরে বৌকে দু গাদন দেওয়া যাবে। সে বল্লমটাকে একেবারে নিখুঁত তাক করে গায়ের বল ঠেলল। পিঠ কুঁজো জিনিসটা একেবারে নৌকোর কাণার কাছে চলে আসছে! নুহু সতর্ক করল, ‘সাবধানে বড়ভাই, পা ফসকে যেন না যায়!’

‘আমি আছি তো, তুমি একদম চিন্তা করো না।’ আঁচলের কানা কোমরে গুঁজল আরিফা। স্বামী দেওরকে অভয় দিল। মনে মনে বলল, কোপ দিতে পারলেই হল। কোপে কি আর ব্যাটাছেলে বিটিছেলে আছে?

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad

নোয়াখালীতে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষ, সেনা সদস্যসহ নিহত ৪

উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক সেনা সদস্যসহ ৪ জন নিহত হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লক্ষীপুর-নোয়াখালী সড়কের বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার লতিফপুর গ্রামের মো. রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া (৬৫), সেনা সদস্য ফজলুল করিম (৫০) ও লক্ষীপুরের আমানিয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (৪৫)। এ ছাড়া আরও একজনের পরিচয় জানা যায়নি।

জানা গেছে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি লক্ষীপুর থেকে বেগমগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব এলাকায় পৌঁছালে ট্রাক ও যাত্রীবাহী সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সড়ক থেকে ১৫ ফিট নিচে ট্রাক ও সিএনজি খালে পড়ে যায়। এতে সিএনজি চালকসহ ৪ জন নিহত হয়।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখনও উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের মরদেহ এখনও খালে রয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ

‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ। ছবি: সংগৃহীত

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বেশ কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন ঢাকার বুকে এক টুকরো জমি পাচ্ছে অভিনয় শিল্পীরা। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সাড়ে তিন কাঠা জমিতে গড়ে তোলা হবে তাদের স্বপ্নের ভবন ‘অ্যাক্টরস হোম’। সেখানে থাকবে অভিনয় শিল্পীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আড্ডার জায়গা, চর্চার জায়গা।

অবশেষে শুক্রবার (৩ মে) বরাদ্দকৃত জায়গাটি বুঝে পেয়েছে সংগঠনটি। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন নাসিম নিজেই।

আহসান হাবিব নাসিম তার ফেসবুকে লিখেছেন, শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ, জেলা প্রশাসন ঢাকা’র কাছ থেকে তাদের জায়গা বুঝে নিয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এরপর এ নেতা লেখেন, আরও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জনাব মো: সাবিরুল ইসলাম এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক জনাব আনিসুর রহমান, এসি ল্যান্ড তেজগাঁও জনাব শরিফ মো. হেলাল উদ্দিন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি।

Caption

 

নাসিম আরও বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের। কেননা দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে চেষ্টা চলছিল। অবশেষে জায়গা বুঝে পাওয়াটা অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি সফলতা বলে মনে করছি। শিল্পীদের প্রশিক্ষণ, মিটিং, একসঙ্গে সময় কাটানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হবে এটি। ওই জায়গা থেকে আজ আমাদের আনন্দের দিন।

এদিকে জমি গ্রহণের খবর দেয়ার সঙ্গে দুটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করেছেন নাসিম। সেখানে তার সঙ্গে দেখা গেছে সংঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসানকে। আরও ছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদসহ বেশ কয়েকজন। বোঝা যাচ্ছে জমি গ্রহণ করার মুহূর্ত ছিল এটি। রাজধানীর আফতাব নগরে দেওয়া হয়েছে জায়গাটি।

সংঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘জায়গাটি হোল্ডিং নং: ৩২, রোড: ২, ব্লক: সি, জহুরুল ইসলাম সিটি, আফতাব নগর। গতকাল শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ, জেলা প্রশাসন ঢাকা এর কাছ থেকে তাদের জায়গা বুঝে নিয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস

ঢাকাসহ দেশের ৬ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে কয়েক সপ্তাহের দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির দেখা মিললেও কমেনি ভ্যাপসা গরম। তবে এবার সুখবর দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়ে কমবে তাপমাত্রা। তবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শনিবার (৪ মে ) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ববঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলা সমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় একইরকম থাকতে পারে।

সর্বশেষ সংবাদ

নোয়াখালীতে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষ, সেনা সদস্যসহ নিহত ৪
‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাক পেলেন আম্পায়ার সৈকত
ইসরায়েলবিরোধী পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করছে সৌদি
মুন্সীগঞ্জে প্রাইভেটকার খাদে পড়ে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
চড়া দামে গ্রাহকরা কিনছে কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট
হামাসকে ৭ দিনের সময় দিল ইসরায়েল
বিদেশে পাড়ি জমানো কানাডিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে : গবেষণা
নওগাঁয় ট্রলির চাপায় সড়কে প্রাণ গেল এনজিও কর্মীর
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ হচ্ছে বিএনপিতে বহিষ্কারের তালিকা
প্রথমবারের মতো চাঁদে স্যাটেলাইট পাঠাল পাকিস্তান
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কঠিন শর্ত দিল সৌদি
রাজশাহীতে আগুনে পুড়ল শত বিঘা জমির পান বরজ
জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক
বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর