রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

গত দেড় দশকে রেল ও সড়কের সবচেয়ে বেশি অর্থের কাজ পেয়েছে যেসব ঠিকাদার

গত দেড় দশকে রেল ও সড়কের সবচেয়ে বেশি অর্থের কাজ পেয়েছে যেসব ঠিকাদার। ছবি: সংগৃহীত

আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটে সব থেকে বেশি বরাদ্দ পেত পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাত। নতুন সড়ক, সেতু, রেলপথ নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। খাতটিতে বিভিন্ন বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন স্থানীয় ঠিকাদাররাও। তবে এসব ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। তৎকালীন সরকারের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে গত দেড় দশকে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সবচেয়ে বেশি টাকার কাজ করেছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও তমা কনস্ট্রাকশন। অন্যদিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরে শীর্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)। এছাড়াও তালিকার শীর্ষ দশের মধ্যে থাকা অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো রানা বিল্ডার্স, হাসান টেকনো বিল্ডার্স, মোজাহার এন্টারপ্রাইজ, ময়েনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড, মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স ও মুহাম্মদ আমিনুল হক। দেশের একটি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

গত দেড় দশকে রেল ও সড়কের সবচেয়ে বেশি অর্থের কাজ পেয়েছে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতে কাজ করা স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। লাকসাম-চিনকি আস্তানা, কাশিয়ানি-গোপালগঞ্জ রেলপথসহ রেলওয়ের একাধিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে রেলের চলমান দুটি প্রকল্পের কাজ করছে ম্যাক্স। এর মধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে ৩ হাজার ৫০২ কোটি টাকার। আর আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ প্রকল্পে চীন ও বাংলাদেশের দুই প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। অভিযোগ আছে বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া ঠিকাদারদের অন্যতম তিনি। এ বিষয়ে জানতে গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করেও গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে ছাড়াও সম্প্রতি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে সড়কটির একাংশের নির্মাণকাজ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

রেলের আরেক শীর্ষ ঠিকাদার তমা কনস্ট্রাকশন। দোহাজারী-কক্সবাজার ও আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ৬ হাজার ১৬১ কোটি টাকার কাজ করছে তমা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আতাউর রহমান ভূঁইয়া।

একসময় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন তিনি। তমা কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

অন্যদিকে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে শীর্ষে রয়েছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)। সরকারি ক্রয়সম্পর্কিত তথ্যভাণ্ডার সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ১১৩টি কার্যাদেশ পেয়েছে। এসব কাজের চুক্তি মূল্য ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকার বেশি। সড়ক, সেতুর পাশাপাশি বিদ্যুৎ, আবাসনসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের কাজও করে এনডিই। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন সরকার।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আরেক শীর্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৪২২টি কার্যাদেশ পেয়েছে। এসব কাজের চুক্তি মূল্য ৫ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। রানা বিল্ডার্সের মালিক মো. আলম।

গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, চার দশকের বেশি সময় ধরে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. আলমের উত্থান হয়েছে মূলত গত এক দশকে। এর আগে সওজসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ছোট ছোট কাজ করত রানা বিল্ডার্স। তবে ২০১০ সালের পর থেকেই সওজের বড় বড় উন্নয়নকাজ পেতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পটুয়াখালীর শেখ রাসেল সেতু, খেপুপাড়া সেতু, মহিপুর সেতু, জিঞ্জিরা-দোহার মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়ক, জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়ক, কাঁচপুর-ভৈরব-সিলেট-জাফলং মহাসড়ক, দৌলতদিয়া-খুলনা-যশোর মহাসড়ক, লাকসাম-মাইজদী মহাসড়ক, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েসহ একাধিক বড় বড় প্রকল্পের কাজ করেছে রানা বিল্ডার্স।

রানা বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আলমের ভাগনে নাজমুল হাসান (পাখি)। তার মালিকানায় থাকা হাসান টেকনো বিল্ডার্স ২০১৫ সালের অক্টোবরের পর থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৪২০টি কাজ পেয়েছে, যেগুলোর চুক্তি মূল্য ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। একইভাবে আলমের ভাতিজা জুলফিকার হোসেন মাসুদ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকার কাজ পেয়েছে।

রানা বিল্ডার্সের মালিক মো. আলমের দাবি, তারা সব ধরনের নিয়মকানুন মেনেই কাজ পেয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যেসব কাজ পেয়েছি, সবই যথাযথ দরপত্র অনুযায়ী হয়েছে। কোথাও কোনো গরমিল কেউ পাবে না। ২০২০ সালের পর আমাদের কাজের পরিমাণ কমে এসেছে। এজন্য মূলত সরকারের ক্রয় পদ্ধতি (ইজিপি) দায়ী। সড়কে অনেক ঠিকাদার রয়েছে, যাদের কাজ বেশি কিন্তু মূল্য কম। অথচ দরপত্র প্রক্রিয়ায় যাদের কাজের পরিমাণ বেশি, তাদেরই কাজ দেয়া হয়। এ সুযোগে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে অস্বাভাবিকভাবে কাজ পেয়েছে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আরেক শীর্ষ ঠিকাদার মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। সিপিটিইউর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ১৭৬টি কাজ পেয়েছে। এসব কাজের চুক্তি মূল্য ৪ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। মোজাহার এন্টারপ্রাইজের মালিক কাজী মোজাহারুল হকের বাড়ি খুলনায়। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থক স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ঠিকাদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৬৪১টি কার্যাদেশ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ময়েনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড। এসব কাজের চুক্তি মূল্য ৪ হাজার ৬০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের নভেম্বরের পর থেকে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৩ হাজার ১৮৯ কোটি টাকার কার্যাদেশ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান খান মো. আফতাব উদ্দিন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের শীর্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে উঠে এসেছে নওগাঁর মুহাম্মদ আমিনুল হক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির মালিক নওগাঁর আমিনুল হক। নব্বইয়ের দশকে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত আমিনুল হকের পাওয়া কাজের সংখ্যা হাতে গোনা। এরও একটি অংশ আবার তিনি পেয়েছিলেন অন্য কোম্পানির সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমে।

সিপিটিইউর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ৩ হাজার ৮১১টি কার্যাদেশ পেয়েছে আমিনুল হক লিমিটেড। এসব কাজের চুক্তি মূল্য ২ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে গতকাল আমিনুল হকের সেলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের শীর্ষ ঠিকাদারের মধ্যে আরো রয়েছে এমএম বিল্ডার্স, মাহফুজ খান, ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স ও আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন। এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কয়েকটির বিরুদ্ধে জাল সনদ ব্যবহার করে কার্যাদেশ বাগিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধান করে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ, আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন, মাসুদ হাইটেক, ময়েনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স, হাসান টেকনো বিল্ডার্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‌আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন কিন্তু এক ঠিকাদারের বেশি কাজ পাওয়ার ঘটনা অনেকটাই কমে এসেছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে আরো কমে আসবে। আর দেশে কাজের বিপরীতে ঠিকাদারের সংখ্যা কিন্তু কম। তাই অনেক ঠিকাদারকে বেশি বেশি কাজ করতেই হবে।’

এদিকে বিদ্যমান সরকারি ক্রয় পদ্ধতি বাংলাদেশে ঠিকাদারদের বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রত্যেক ঠিকাদারেরই নিজস্ব সক্ষমতার একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ঠিকাদারের যে পরিমাণ আর্থিক সক্ষমতা, জনবল ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, তার চেয়ে তার কাজের পরিমাণ বেশি হলে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। কাজ বিলম্বিত হয়। মান খারাপ হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার বেশি কাজ পায়, সে তৃতীয় পক্ষকে সেটা হস্তান্তর করে। এ ধরনের ঘটনা কাজের গুণগত মান আরো খারাপ করতে ভূমিকা রাখে। এ ধরনের জটিলতা এড়াতে দরপত্র পদ্ধতিতে মৌলিক কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। আহ্বান করা দরপত্রের শর্ত কিছুটা শিথিল করে বেশি বেশি ঠিকাদারদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিলে এ খাতে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এর বাইরে প্রত্যেক ঠিকাদারের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা সীমারেখা বেঁধে দেয়া উচিত। বলেও মনে করেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা

আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা বিবেচনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। শনিবার (১০ মে) রাতে এক জরুরি বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

গণমাধ্যমকে তিনি জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীও অনুমোদিত হয়েছে, যার আওতায় এখন থেকে ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন কিংবা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

বৈঠক-পরবর্তী বিবৃতিতে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর নেতাদের বিচার চলমান থাকা পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলটির সব ধরনের কার্যক্রম—অফলাইন ও অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই—সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেই ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়। জননিরাপত্তা বিঘ্ন, সহিংসতা, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সংগঠনটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হয়। সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত আরও জোরালো ভিত্তি পায়।

Header Ad
Header Ad

আমরা ফ্লাই করার ২০ মিনিট পর এয়ারপোর্টে মিসাইল পড়ে: রিশাদ

রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে গিয়ে ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের তরুণ দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ফেঁসে গিয়ে আতঙ্কিত অবস্থায় ছিলেন তারা।

শনিবার (১০ মে) বিকেলে দেশে ফিরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেন।

তিনি জানান, ‘আমরা ফ্লাই করার ২০ মিনিট পরই পাকিস্তানের বিমানবন্দরে মিসাইল পড়ে। পুরো ফ্লাইটের সবাই শকে ছিল। এমন ঘটনা জীবনে প্রথম দেখলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘উৎকণ্ঠা ছিল অবশ্যই। কিন্তু বিসিবি ও পিসিবির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আমাদের মানসিকভাবে অনেক শক্ত থাকতে সাহায্য করেছে। বিদেশি খেলোয়াড়রাও খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিল।’

পরিবারের উৎকণ্ঠা, নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা—সব মিলিয়ে কঠিন সময় কেটেছে বলে জানান রিশাদ। তবে নিরাপদে দেশে ফিরে আসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। একইসঙ্গে দেশবাসীকেও ধন্যবাদ জানান পাশে থাকার জন্য।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় আবারও পিএসএল মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

রিশাদ জানালেন, ‘পিএসএল যদি আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হয়, তবে আমি আবারও লাহোর কালান্দার্সের সঙ্গে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করব।’

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: এক ঘণ্টার মধ্যে কাশ্মীরে আবারও ড্রোন হামলা

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা উত্তেজনা ও সংঘর্ষের পর আজ (১০ মে) শনিবার উভয় দেশই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে, যুদ্ধবিরতির মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভারতশাসিত কাশ্মীরের শ্রীনগর ও অন্যান্য অঞ্চলে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠেছে।

শনিবার (১০ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ ঘটনার পর জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের কিছু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার পর এই হামলা সংঘটিত হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর, আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।”

যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও, ভারত পাকিস্তানের ক্রমাগত ড্রোন হামলা মোকাবেলা করে চলেছে। তবে, ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা এই হুমকিগুলির বেশিরভাগই নিরপেক্ষ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৭ মে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী শিবিরগুলিকে লক্ষ্য করে ভারতের কঠোর প্রতিশোধমূলক হামলা - 'অপারেশন সিন্দুর' - শুরু হওয়ার পর উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অভিযানটি ছিল ২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার সরাসরি প্রতিক্রিয়া, যেখানে ২৬ জন মানুষ, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক, পাকিস্তান-সমর্থিত হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা
আমরা ফ্লাই করার ২০ মিনিট পর এয়ারপোর্টে মিসাইল পড়ে: রিশাদ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: এক ঘণ্টার মধ্যে কাশ্মীরে আবারও ড্রোন হামলা
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিবৃতি
সিগারেটের দাম বাড়ানোর দাবি তরুণ চিকিৎসকদের
বেনাপোলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবকের মৃত্যু
শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব বিটু ও সাবেক এমপি শামীমা গ্রেপ্তার
জনগণ আর পলাতক অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না: তারেক রহমান
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে এক ঘণ্টা সময় দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করলো ভারত-পাকিস্তান, সামরিক অভিযান বন্ধ
জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয়: জিএম কাদের
১৫ বছর পর দেশে ফিরলেন হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক
আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করলেন শর্মিলা রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমান
ভারত-পাকিস্তান ‘যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প
মুন্সীগঞ্জে লঞ্চে ২ তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানো সেই যুবক আটক
চট্টগ্রামে বিএনপির তারুণ্য সমাবেশে উপস্থিত তামিম ইকবাল
শীর্ষ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোদির জরুরি বৈঠক
টানা দ্বিতীয়বার স্কাই স্পোর্টসের সেরা একাদশে হামজা চৌধুরী
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়টা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ইস্যু: আযম খান
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক