শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিএনপি দিন দিন সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

জনকল্যাণের রাজনীতি বাদ দিয়ে অপকৌশল গ্রহণ করায় বিএনপি দিন দিন সাংগঠনিকভাবে আরো দুর্বল হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাসী দল বিএনপি নেতারা নিজেদের অত্যাচারিত-নির্যাতিত দেখিয়ে ‘সিম্প্যাথি কার্ড’ খেলার অপচেষ্টা করছে। জনকল্যাণের রাজনীতি বাদ দিয়ে এ ধরনের অপকৌশল গ্রহণ করায় বিএনপি দিনে দিনে সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট একটি রাজনৈতিক দল। অস্তিত্ব সংকটে থাকা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় দলটি সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলছে! দলের নেতৃবৃন্দ টিকে থাকার জন্য সর্বদা মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে রাজনীতিতে কৃত্রিম সংকট তৈরির অপচেষ্টা চালায়। বিএনপি নেতৃবৃন্দের বোঝা উচিত, বিরোধী দল নয় বরং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কাজ করতে হয়। সুতরাং নিজেদের নেতাকর্মীদের রাষ্ট্রবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত রাখাটাই বিএনপির জন্য শ্রেয় হবে।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এবং তাদের নেতৃবৃন্দ সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে এবং তার সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে। জনগণের সেবা করাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির মূলনীতি। আওয়ামী লীগ সবসময় শাসন-শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছে। আওয়ামী লীগের হাতেই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি শাসনমালের দুর্নীতি-লুটপাট ও দুঃশাসনের কথা জনগণ ভুলে যায়নি। কীভাবে সন্ত্রাস ও উগ্র জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল! সে সব কাহিনি যারা প্রত্যক্ষ করেছে তারা স্মরণ করলে বা কেউ শুনলে এখনো শিউরে ওঠে। জনগণ সেই দুঃসহ সময়ের দিনগুলোতে ফিরে যেতে চায় না। আমরা জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ।

Header Ad

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটি চালাতে নতুন বিধিমালা

ছবি: সংগৃহীত

গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার শিক্ষা বোর্ডের। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়ার তেমন সুযোগ ছিল না এই শিক্ষা বোর্ডেরই। ফলে দুর্নীতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেমে এসেছিল সর্বনাশ।

এ বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন জারি করা বিধিমালায় গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির ওপর শিক্ষা বোর্ডের কর্তৃত্ব অনেক বেশি রাখা হয়েছে। কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও স্বার্থহানির প্রমাণ মিললে কারণ দর্শানো ছাড়াই এই কমিটি ভেঙে দিতে পারবে শিক্ষা বোর্ড, যা আগের বিধিমালায় ছিল না। এছাড়া বোর্ড প্রয়োজন মনে করলে বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিটি দুই বছরের জন্য গঠন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারবে।

সম্প্রতি এই বিধিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০০৯ সালে জারি করা বিধিমালার আলোকে চলছিল। যদিও ঐ বিধিমালায় বেশি কিছু সংশোধনী আনা হয়েছিল। নতুন বিধিমালা জারির ফলে ২০০৯ সালের বিধিমালা অকার্যকর হয়ে যায়।

নতুন জারি করা বিধিমালা অনুযায়ী, গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির কিংবা সভাপতির বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ, গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে শিক্ষা বোর্ড বিশেষ পরিস্থিতি কমিটি গঠন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারবে।

এছাড়া ভর্তি, অতিরিক্ত ভর্তি, ফরম পূরণ এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে এবং প্রতিষ্ঠানের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে গুণগত শিক্ষাদানে অন্তরায় মনে হলেও বিশেষ কমিটি গঠন করতে পারবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, বিশেষ কমিটি সাধারণ কমিটির মতো দুই বছর হবে। তিনি জানান, আমি আশা করছি এই বিধিমালা বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা বোর্ড, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটি, নির্বাহী কমিটি, অ্যাডহক কমিটি বা বিশেষ পরিস্থিতি কমিটির যে কোনো বিষয় অনুসন্ধান করিতে কিংবা কোনো অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করিতে এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র তলব করতে পারবে।’

এই প্রবিধানমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন, সরকার বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক জারিকৃত কোনো নির্দেশনা অমান্যকরণ, অদক্ষতা, আর্থিক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থহানি বা অনুরূপ অন্য কোনো কারণ প্রমাণ হলে শিক্ষা বোর্ড যে কোনো সময় গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটি, নির্বাহী কমিটি, অ্যাডহক কমিটি বা বিশেষ পরিস্থিতি কমিটি বাতিল করতে পারবে।

এছাড়া সভাপতির বা কোনো সদস্যের কোনো কর্মকাণ্ড বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিংবা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ পরিপন্থি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বা দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের আবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বা সংশ্লিষ্ট কমিটির কোনো সদস্য শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে নতুন বিধিমালায়।

নতুন বিধিমালা আরো উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান বিধিমালায় সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে এইচএসসি উত্তীর্ণ। আগে এই পদে কোনো যোগ্যতা নির্ধারিত ছিল না। এ কারণে স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি এমন ব্যক্তিরাও উচ্চ মাধ্যমিকের বা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ‘সভাপতি’ হতে পারতেন।

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল পরিচালনা কমিটির শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাস। আর মাধ্যমিক ও কলেজ পরিচালনার জন্য সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ না থাকায় বিষয় নিয়ে সমালোচনা চলছিল। এ বিষয়টি আমলে নিয়ে গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এইচএসসি পাশ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া নতুন বিধিমালায় সভাপতি হওয়ার মেয়াদ নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি একই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে পরপর দুই বারের বেশি সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি বা অভিভাবক প্রতিনিধি হতে পারবেন না। তবে এক মেয়াদ বিরতি দিয়ে পুনরায় নির্বাচন করতে পারবেন। এক জন ব্যক্তি দুটি কলেজের গভর্নিং বডি এবং দুটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিসহ মোট চারটির বেশি পদে সভাপতি থাকতে পারবেন না।

গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানপ্রধান স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শক্রমে সভাপতির জন্য তিন ব্যক্তির নাম বোর্ডে পাঠাবেন। তবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হবে নির্বাচনের মাধ্যমে।

এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারই সব ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে। এ কারণে গভর্নিং বডির প্রভাব কমিয়ে শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রশাসনের হাতে আরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

প্রেমের বিয়ে, স্ত্রীকে হত্যার পর হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী!

নুরী বেগম ও তার স্বামী রাকিব মিয়া। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

প্রেমের সম্পর্কে এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন নুরী বেগম (১৮) ও রাকিব মিয়া (২১)। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই রাকিব তার স্ত্রী নুরীর উপর প্রায়ই অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করতো। আর এই নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেলেন তার স্ত্রী নুরী বেগম।

শুধু তাই নয়, নির্যাতন করে মেরে ফেলার পর হাসপাতালে নিয়ে আসেন নিজেই। পরে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে সেই হাসপাতালে মৃত স্ত্রী নুরীর মরদেহ ফেলে রেখেই পালিয়ে যায় রাকিব। এমন ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পৌর শহরের হাট বৈরান এলাকায়।

এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে রাকিব মিয়াকে আটক করেছে থানা পুলিশ। তার স্ত্রী নূরী বেগম উপজেলার সূতি লাঙ্গল জোড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে এবং অভিযুক্ত রাকিব হাটবৈরিয়ান গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

নুরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে রাকিবের সাথে নূরী বেগমের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ের সম্পর্কে গড়ায়। বিয়ের পর থেকেই রাকিব নূরী বেগমের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে রাকিব নুরী বেগমকে মারধর করে। এতে নুরী বেগম জ্ঞান হারালে রাকিব নিজেই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে, রাকিব পালিয়ে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হোসেন খাঁন সোহেল ঢাকাপ্রকাশকে জানান, মৃত অবস্থায় নুরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে রাকিব নামে এক যুবক। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণার সাথে সাথেই রাকিব পালিয়ে যায়। মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়।

নূরীর বড় বোন মল্লিকা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত রাকিব তার বোনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। এমনকি তাদের সাথে মোবাইল ফোনেও কথা বলতে বাঁধা দিত। আমি রাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ ঘটনায় গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব ঢাকাপ্রকাশকে জানান, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নুরী বেগমের স্বামী রাকিব মিয়াকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে অনন্য মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আর তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি গণতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে শাহাদতবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। এসময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান তারা। কিন্তু তারা দেশে ফিরতে পারেন নাই। পরিবারের সাথে শেষ দেখাটাও তাদের কপালে জোটেনি। বাবা-মা ও ভাইসহ আপনজনদের হারানোর বেদনাকে বুকে ধারণ করে পরবর্তী ৬ বছর তাকে লন্ডন ও দিল্লীতে চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ত্রয়োদশ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এটি ছিল আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের এক দূরদর্শী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন ধরনের উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। বৈরি পরিবেশ সত্ত্বেও ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। সেদিন বাংলার জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে সেদিন শেখ হাসিনা বলেন, সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন। বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমি এসেছি। আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি অনন্য মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়, বিজয় হয় গণতন্ত্রের। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। এসময় পাহাড়ি-বাঙালি দীর্ঘমেয়াদী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে পার্বত্য শান্তিচুক্তি এবং প্রতিবেশি ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডে বিচারের পথ সুগম হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে এবং জনগণের কল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর হয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অবকাঠামো, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু ও রায়ের বাস্তবায়নসহ সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থল সীমানা নির্ধারণ তথা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে গণমানুষের কল্যাণে নিরলস প্রয়াস চালান। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায় এসে ইতিহাস সৃষ্টি করে। সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূর্তপ্রতীক। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনার বিভিন্ন উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনে অনন্য গৌরব ও স্বীকৃতি। এরই ধারাবাহিকতায় জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনে টানা চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত।

নানা ধরনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু, ঢাকার স্বপ্ন ‘মেট্রোরেল’ ও কর্ণফুলী টানেল জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০২১’ এর সফল বাস্তবায়নের পথ ধরে ‘রূপকল্প ২০৪১’ ও ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ এর মতো দূরদর্শী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বিশ্বে আজ রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষ্যে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যা গোটা বিশ্বে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দারিদ্র্যবিমোচনের ধারণার ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা সূচিত কমিউনিটি ক্লিনিক এখন বিশ্বব্যাপী ‘শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ নামে পরিচিত। মহামারি করোনা ও বিশ্বে চলমান যুদ্ধবিগ্রহের প্রভাবে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত ও সাহসী পদক্ষেপে সরকার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সরকারের নানামুখী আর্থসামাজিক ও বিনিয়োগধর্মী প্রকল্প, কর্মসূচি এবং কার্যক্রম গ্রহণের ফলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। টেকসই উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইনশা আল্লাহ।

বাণীতে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সরকারের অব্যাহত সাফল্যসহ তার নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সূত্র: বাসস

সর্বশেষ সংবাদ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটি চালাতে নতুন বিধিমালা
প্রেমের বিয়ে, স্ত্রীকে হত্যার পর হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী!
শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রপতি
সুস্থ থাকতে বিশ্বনবি (সা.) যে দোয়া পড়তেন
৪ বছর পর পেলেন স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অনুমতি, যেভাবে মৃত্যু হবে তরুণীর
পাঠ্যবই থেকে বাদ যাচ্ছে আলোচিত ‘শরীফ-শরীফার গল্প’
মিঠা পানির ঝিনুকে উৎপাদিত মুক্তার তৈরি গহনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর
ক্রিকেট ছাড়লে আপনারা আমাকে আর দেখবেন না: কোহলি
উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন কাদের মির্জা!
চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
কাক পোশাকে ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ মাতালেন ভাবনা
সাবেক এমপি পাপুলের শ্যালিকা ও দুই কর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ধানমন্ডিতে ছিনতাই হওয়া ফোন উদ্ধার হলো ভারতের গুজরাট থেকে
এক শতাংশ ভোটার এলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য: ইসি হাবিব
তীব্র তাপপ্রবাহে কিশোরগঞ্জে এক বিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ
ফোর্বসের ‘অনূর্ধ্ব ৩০’ সেরা উদ্যোক্তার তালিকায় ৯ বাংলাদেশি
যে কারণে জয়কে থাপড়াতে চাইলেন মিষ্টি জান্নাত
২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন
প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১০৮ বার পেছাল