তল্লাশির ফাঁদে ফেলে কিশোর ধর্ষণের অভিযাগে কনস্টেবল গ্রেপ্তার
ফেনীতে এক কিশোরকে দেহ তল্লাশির ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর ভিডিও চিত্র ধারণ করে টানা তিন মাস ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে ইউনুস আলী নামে ফেনী মডেল থানার এক কনস্টেবল।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ওই কিশোরের মা বাদী হয়ে ইউনুস আলিকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই কিশোরের পরিবারের লোকজন জানায়, ফেনী মডেল থানার সামনের একটি নির্জন স্থানে নিজের বিকৃত যৌনাচারের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেন ওই থানার পুলিশ সদস্য ইউনুস আলী। এখানে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে কিশোরকে রাতে যখন-তখন এখানে আসতে বাধ্য করা হতো। প্রায় রাতে চালানো হতো যৌন নির্যাতন।
নির্যাতিত তরুণ বলেন, প্রথমে মামলার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর সেই ধর্ষণের ভিডিও ইমোতে পাঠায় এবং ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে তাকে গত কয়েক মাস ধরে ধর্ষণ করে আসছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। উপায়ন্তর না দেখে শেষ পর্যন্ত মামলা করতে হলো।
তিনি জানান, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ফেনীর শহরের মহিপালে দেহ তল্লাশির নামে ওই কিশোরকে আটক করেন ইউনুস আলী। একপর্যায়ে তাকে নিয়ে যান পাশ্ববর্তী একটি হোটেলে। সেখানে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রথম দফা ধর্ষণ করেন ইউনুস আলি। ওই ঘটনা তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেই ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ইউনুস আলি। একইভাবে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে নগদ টাকাও হাতিয়ে নেন ইউনুস আলী। একপর্যায় বিকৃত রুচির ইউনুস আলি তার কিছু সহযোগীদেরও এ কিশোরের পেছনে লেলিয়ে দিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতে চাপ দেন। এরপর উপায় না দেখে মামলা করেন ওই তরুণ।
তিনি আরও জানান, একসময় ওই কিশোর নিজেকে রক্ষা করতে কৌশলে ইউনুস আলির মোবাইল ফোনটি নিয়ে গিয়ে সব ভিডিও মুছে ফেলেন। পরে ইউনুস আলিকে দেওয়া টাকা আদায় করতে মোবাইলটি অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এ ঘটনার পর চুরির অভিযোগে মোবাইল উদ্ধারে পুলিশ মাঠে নামলে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
এদিকে পরিবার বিষয়টি জানার পর কিশোরের মা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার ফেনী মডেল থানায় পুলিশ সদস্য ইউনুস আলিকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ইউনুস আলিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, যেহেতু অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারও ব্যক্তিগত দায়ভার ডিপার্টমেন্ট নেবে না।
এদিকে পুলিশ সদস্য ইউনুস আলী গ্রেপ্তারের পরপরই ফেনীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন এক আদেশে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
এসএন