শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

জলবায়ুর প্রভাবে বাধাগ্রস্ত ইলিশ উৎপাদন

নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে প্রমত্ত মেঘনা। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরের (রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুর) চারটি উপজেলার ৩৭ কিলোমিটার মেঘনার মোহনা। যা ইলিশ প্রজনন ও উৎপাদনের মূল কেন্দ্র। এখানকার ইলিশ ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে মৎস্য পেশার সঙ্গে জড়িতরা।

তবে গত কয়েক বছর ধরে ভরা মৌসুমে মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। জেলেদের জালে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে তার ৭০-৮০ শতাংশই সামুদ্রিক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমুদ্র থেকে মেঘনায় প্রবেশের মূল চ্যানেলসহ নদীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবোচর। এতে সমুদ্র থেকে মেঘনায় মা ইলিশসহ ছোট-বড় ইলিশ আসা-যাওয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছে। অন্যদিকে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে মেঘনায় ইলিশের প্রজননও দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।

জানা যায়, বঙ্গোপসাগর থেকে দেশে জাতীয় মাছ ইলিশ প্রবেশের একমাত্র পথ মেঘনা নদীর এ চ্যানেলটি। এ নদী হয়েই ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পদ্মা নদীসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে প্রবাহিত হয়। কিন্তু মেঘনার মূল প্রবেশ পথের চ্যানেলটির বিভিন্ন স্থানে পলি জমে ডেগার চর, ডুবোচর সৃষ্টি হয়ে আছে। ফলে সমুদ্রের ইলিশ চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে যেমন সমুদ্র থেকে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য মেঘনার মিঠা পানিতে প্রবেশ করতে পারছে না তেমনি মেঘনার নতুন ইলিশের পোনাও বড় হওয়ার জন্য সমুদ্রে যেতে পারছে না। বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি, মিঠা পানির স্তর কমে যাওয়া ও অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। যার প্রভাব পড়ছে মেঘনায় আবদ্ধ ইলিশ ও ইলিশের পোনার উপর। আর নিষিদ্ধ সময়গুলোতে নদীতে মাছ শিকার নিষেধ থাকলেও অবাদে মা ইলিশ ও জাটকা নিধন করছে অসাধু জেলেরা। যার ফলে দিনদিন মেঘনা থেকে সুস্বাদু এ ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশের অন্যান্য নদ-নদীতেও। তাই ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর খননসহ মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

লক্ষ্মীপুরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. রফিক জালাল বলেন, দেশের দীর্ঘতম ও গভীরতম নদী হিসেবে ধরা হয় মেঘনাকে। ইলিশও গভীরতম পানির মাছ। সমুদ্র থেকে আসা ইলিশ মেঘনার মিঠা পানি থেকে খাবার আহরণের পর খুবই সুস্বাদু হয়ে উঠে। লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬টি নদীর মধ্যে ইলিশ উৎপাদন ও প্রজনন হয় একমাত্র মেঘনা নদীতেই। দেশে ইলিশ উৎপাদন ও প্রজননের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার তীর এলাকা।

মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নদীর পানিতে যে পরিমাণ নিউট্রিয়েন্ট (পুষ্টি) প্রয়োজন মাটি-বালিতে মিশ্রিত হওয়ায় সেই পরিমাণ নিউট্রিয়েন্ট পায় না ইলিশ। নদীতে বা সাগরের পানিতে এক প্রকার ফাইটোপ্লাংটন থাকে, যা সূর্যের আলোতে খাবার তৈরি করে জোপ্লানের জন্য, আর জোপ্লানগুলো নিউট্রিয়েন্ট হিসেবে খেয়ে বড় হয় মাছ। যা সম্পন্ন হয় প্রাকৃতিক উপায়ে। নদীতে ডুবোচর থাকায় সমুদ্র থেকে ইলিশ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। আবার অনাবৃষ্টির কারণে পানি কমে ওই ডুবোচরগুলো ভেসে উঠে। এতে মাটির উপস্থিতি বেশি হলে সূর্যের আলো পানিতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে নিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি দেখা দেয়। তাই নদী খনন করা খুবই প্রয়োজন।

মো. রফিক জালাল বলেন, অভয়াশ্রম মৌসুমে অনেক সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমে যায় জেলেরা। এতে ইলিশের চলাচলের পথটি বাধাগ্রস্ত করলে মাটি-বালিতে পানি গোলাটে হয়। এতেও নিউট্রেয়েন্ট না পাওয়ায় ইলিশের ক্ষতি হয়। এজন্য মেঘনার ইলিশের বয়স বাড়লেও ওজন বা সাইজ বাড়ে না। অন্যদিকে ট্রলারের বিকট শব্দে ভয়ে ইলিশ সমুদ্রের দিকে পালিয়ে যায়।

দেশের ৬টি অভয়াশ্রম স্পটের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুরের ১০০ কিলোমিটারকে অন্যতম হাব উল্লেখ করে এ বিশ্লেষক বলেন, এক একটি মা ইলিশ ১০-২০ লাখ ডিম ধারণের ক্ষমতা রাখে। অভয়াশ্রম মৌসুমে সমুদ্র থেকে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে মেঘনায় প্রবেশ করে। এজন্য মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে জাটকাসহ সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসময় জেলেদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ভিজিএফ কার্ডের আওতায় চার মাস ৪০ কেজি হারে চাল দেওয়া হয়। এ ছাড়া বর্তমানে জেলার চারটি উপজেলায় জেলেদের জন্য ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে’র আওতায় গাভি বাছুর বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ব্রুড ইলিশ বা মা ইলিশের সর্বোচ্চ প্রজননের মৌসুম অক্টোবর মাসের ২২ দিন। (মধ্য আশ্বিন-মধ্য কার্তিক) অমাবস্যা-পূর্ণিমার অবস্থান বুঝে বিশ্লেষকরা জেলেদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করেন। মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য সামুদ্রিক অভিযান হিসেবে ২০ মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত মাছ ধরার উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যেন নদীতে মাছ ধরতে না পারে এজন্য অভয়াশ্রম এলাকায় ৫ জন করে পাহারাদার রয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর অংশে দু’জন। এ ছাড়া জাটকা সংরক্ষণের জন্য সাধারণভাবে (নভেম্বর-জুন) ৮ মাস জাটকা আহরণ ও ক্রয়-বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইলিশের উৎপাদন ও প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সব ধরনের পরিকল্পনা সরকারের হাতে রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১০ বছরের ব্যবধানে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ৫ হাজার ৩০৬.৫ মেট্রিক টন। ২০১০-১১ অর্থবছরে জেলায় জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৯ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ। যা উৎপাদন বৃদ্ধি হয়ে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৫০৬.৫ মেট্রিক টন ইলিশ লক্ষ্মীপুরের জেলেদের জালে ধরা পড়ে। উৎপাদিত এ ইলিশের ৭০ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ বলে ধারণা করছে মৎস্য বিভাগ।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে ২০ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হলেও পরবর্তী বছর থেকে ইলিশের উৎপাদন কমতে থাকে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৭ হাজার ১৮ মেট্রিক টন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৮ হাজার ৭৬৫ মেট্রিক টন। তবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন ৭ হাজার ২৩৫ টন কমে যায়। ওই বছর ইলিশের উৎপাদন ১১ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টনে দাঁড়ায়। একই পরিস্থিতিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয় ১১ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ক্রমেই বাড়তে থাকে। সে হারে ১৬-১৭ অর্থবছরে ১৮ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২০ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০ হাজার ৫৩৫ মেট্রিক টন ও ২০২১-২২ অর্থবছরের জুন পর্যন্ত ২৪ হাজার ৫০৬.৫ মেট্রিক টন ইলিশ লক্ষ্মীপুরের জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ে।

উপকূলীয় এলাকায় মাছ উৎপাদন ও বিক্রির বিষয়ে কথা হলে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, ভরা মৌসুমে মেঘনায় ইলিশ পাওয়া যায়নি। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপে উপকূলীয় এলাকায় নদীর পানি বাড়ায় এবং টানা বৃষ্টিতে গত ১ সপ্তাহ ধরে সমুদ্রের ইলিশ মেঘনায় আসতে শুরু করেছে। যা জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। এদিকে এ খবরে মাছঘাটগুলোতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। মতিরহাট মাছঘাটে ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের হালি ২৫০০-৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও ১ কেজি ওজনের বেশি ইলিশের হালি ৭৫০০-৮০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ওই পরিমাণের ইলিশের দাম কিছুটা কমতে দেখা গেছে। তবে বড় ইলিশের চেয়ে ঘাটে জাটকার সংখ্যায় বেশি রয়েছে।

কমলনগর উপজেলার মতিরহাট মাছঘাটের আড়তদার ও চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান লিটন বলেন, জ্যৈষ্ঠ-ভাদ্র চার মাস ইলিশ ধরার মৌসুম। পুরো মৌসুমে মেঘনায় ইলিশ না পাওয়ায় জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরে সমুদ্রের পাড়েই বিক্রি করে। এতে মাছ নিয়ে ঘাটে না আসায় আড়তদাররা লোকসানে পড়ছে। তবে শেষ কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সমুদ্রের পাশাপাশি মেঘনায়ও বেশকিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে আগামী অক্টোবর মাসে ২২ দিন অভিযান শুরু হলে মাছ ধরাও বন্ধ থাকবে। ধারদেনা করে এ খাতে বিনিয়োগ করে বিপাকে পড়ছেন তারা।

মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার দুটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেঘনা নদীর রামগতি, আলেকজান্ডার, কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, মাতাব্বরহাট, মতিরহাট, সদরের মজুচৌধুরীর হাট চ্যানেল ও রায়পুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর সৃষ্টি হয়ে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চলাচল করতে গিয়ে লঞ্চ ও ফেরিও আটকা পড়ে। ইলিশ মাছ বাধাগ্রস্ত হবে না কেন? এ ছাড়া অনাবৃষ্টিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মেঘনার ইলিশ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে। মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডুবোচরগুলো চিহ্নিত করে নদী খননের দাবি জানান তিনি।

জেলে ও ব্যবসায়ীদের কথায় স্বীকৃতি দিয়ে লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, রামগতি উপজেলায় জেলেদের আহরিত ইলিশের ৭০ শতাংশই সামুদ্রিক। ইলিশ মূলত গভীর পানির মাছ। লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় প্রচুর ডুবোচর এবং সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায়, মিঠাপানি কম থাকায় সমুদ্র থেকে মেঘনায় ইলিশ আসতে পারেনি। তাই মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়েনি। তবে গত কয়েকদিন আবার টানা বৃষ্টির কারণে মেঘনায় পানি বাড়তে শুরু করায় মাছ কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে। মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্রুত খনন করা জরুরি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তা ছাড়া মেঘনাকে ইলিশ প্রজননের উপযোগী রাখতে নদীতে তেল, মবিল ও পলিথিনসহ ক্ষতিকর বর্জ্য না ফেলতে মৎস্যজীবীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সেমিনার করা হয়ে থাকে।

এদিকে কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি (সচেতনমহল) এমএ মজিদ বলেন, এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা ইলিশের সঙ্গে জড়িত। এ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। বর্তমানে মেঘনা নদীতে ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ যে চ্যানেল দিয়ে সমুদ্র থেকে মেঘনায় ইলিশ প্রবেশ করে ওই চ্যানেলের পুরোটাই ডুবোচর ও ডেগাচরে ভরে গেছে। এতে ইলিশ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সমুদ্রে ফিরে যায়। আবার যেসব মা ইলিশ মেঘনায় ডিম ছাড়ে, ডিম থেকে সৃষ্ট পোনাগুলো আবার সমুদ্রে যেতে পারে না। আর সমুদ্রে পোনা যেতে না পারলে ইলিশ কখনোই বড় হয় না। এজন্য আমাদের এ মেঘনায় যে ছোট ইলিশের পেটে ডিম দেখা যায়, সেসব ইলিশের বয়স হয়েছে। ডুবোচরের কারণে এ মাছগুলো বিশাল জলরাশিতে যেতে পারেনি। ইলিশ উৎপাদনের মূল বাধাটি হলো ডেগাচর এবং ডুবোচর। তাই নদীটি ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় এনে ডুবোচর ও ডেগার খনন করা জরুরি। এতে মেঘনায় ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে এবং সরকার এ খাত থেকে বিশাল অংকের রাজস্ব আহরণ করতে পারবে। যা আমাদের জিডিপিতে একটা বিশাল অবদান রাখবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, নাব্যতা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এখানকার আহরিত ইলিশের ৭০-৮০ শতাংশই সামুদ্রিক ইলিশ। তবে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীর পানি বাড়ায় এখন কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে। ডুবোচরগুলো চিহ্নিত করে খননের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বলা হচ্ছে। তা ছাড়া মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, জেলায় চলতি বছর ২৮ হাজার ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় মাছ শিকারের সঙ্গে ৫১ হাজার ১২১ জেলে জড়িত। সরকার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৪৯ জন। এর মধ্যে আইডি কার্ডের আওতায় রয়েছে ৪০ হাজার ৯৫৫ জন। এ ছাড়া সমুদ্রগামী ২ লাখ ১৫ জন জেলে রয়েছে। জেলার চারটি উপজেলায় ২৬টি ইলিশের মাছঘাট রয়েছে। তারা সবাই মেঘনায় মাছ শিকার করে এ ঘাটে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। অভয়াশ্রম মৌসুমে সরকারি ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হলেও প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

এসজি

Header Ad

রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাসাবোতে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ওপর থেকে নিচে পড়ে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন আইসিউউতে রয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১০টা দিকে বাসাবোর ৭ নম্বর মায়াকানন মসজিদের পেছনে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

সবুজবাগ থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি নিহত শ্রমিকদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি।

তিনি জানান, কাজ করার সময় ১০তলা ভবন থেকে নিচে পড়ে তিনজন শ্রমিক আহত হন। তাদের মধ্যে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে এবং একজন আইসিইউতে রয়েছেন। নিহতদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা: খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা। বাংলাদেশের গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই সুরক্ষিত বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার।

শুক্রবার (১৭ মে) সকালে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা’র ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান স্বরণীয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না। প্রতিষ্ঠা হতো পাকিস্তান মডেলের গণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু কন্যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক রাজনীতির দল নয়।দলগুলোর জন্ম হয়েছে সেনা শাসকদের হাতে। ঐদলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চাও নেই। এসময় গণতন্ত্র মানেই শেখ হাসিনা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও জাতীয় চার নেতার প্রকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি ।পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

নওগাঁ নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম এ খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিভাস মজুমদার গোপাল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ বকুলসহ দলীয় নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ পালন করতে চলতি বছর এখন পর্যন্ত (১৬ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী। মোট ৬১টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১ টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্পডেস্কে তথ্যমতে, ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। যা শেষ হবে ১০ জুন।

এ বছর হজে যেতে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। এর মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৩২৩ জন। আর বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। প্রতি প্রতি ৪৪ জনে একজন করে গাইড হিসাবে ১ হাজার ৮৯৯ জন হজযাত্রীদের সঙ্গে যাবেন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

সর্বশেষ সংবাদ

রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা: খাদ্যমন্ত্রী
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
বাংলাদেশে আসছেন কুরুলুস উসমানের নায়ক বুরাক
কোপা আমেরিকার আগে ব্রাজিল শিবিরে দুঃসংবাদ
৫২৩ হজযাত্রীর টাকা নিয়ে উধাও ২ এজেন্সি মালিক
কুমিল্লায় বাস খাদে পড়ে প্রাণ গেল ৫ জনের
নামাজের সময় তালা আটকে মসজিদে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটি চালাতে নতুন বিধিমালা
প্রেমের বিয়ে, স্ত্রীকে হত্যার পর হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী!
শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রপতি
সুস্থ থাকতে বিশ্বনবি (সা.) যে দোয়া পড়তেন
৪ বছর পর পেলেন স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অনুমতি, যেভাবে মৃত্যু হবে তরুণীর
পাঠ্যবই থেকে বাদ যাচ্ছে আলোচিত ‘শরীফ-শরীফার গল্প’
মিঠা পানির ঝিনুকে উৎপাদিত মুক্তার তৈরি গহনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর
ক্রিকেট ছাড়লে আপনারা আমাকে আর দেখবেন না: কোহলি
উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন কাদের মির্জা!
চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী