রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

৩০০ কোটি টাকা নিয়ে নিরুদ্দেশ নওগাঁর ৮ সমবায় সমিতি!

৩০০ কোটি টাকা নিয়ে নিরুদ্দেশ নওগাঁর ৮ সমবায় সমিতি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

পুকুরের মাছ, খেতের ফসল বিক্রি করে তিল তিল করে ১৬ লাখ টাকা জমিয়েছিলেন নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম (৫০)। টাকাগুলো চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে কয়েক ধাপে দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমিতিতে স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রেখেছিলেন।

৮ মাসের লভ্যাংশসহ তা বেড়ে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। কিন্তু দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি গত ২৫ অক্টোবর রাতারাতি বন্ধ করে পালিয়ে যান উদ্যোক্তারা। এত টাকার সঞ্চয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় জাহিদুলের বৃদ্ধ মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

জাহিদুল বলেন, ‘সমিতি বন্ধ হয়ে খবর পাওয়ার পর আমার মা গত শনিবার স্ট্রোক করেন। স্ট্রোক করার পর এখনও মা পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনি। তিল তিল জমানো টাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার ও পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নাওয়া-খাওয়া নেই। স্বপ্ন ছিল জমানো টাকা দিয়ে নওগাঁ শহরে কিছু জমি কিনে একটা বাড়ি করব। কিন্তু এখন আমি সর্বশান্ত। জায়গা-বাড়ি করা তো দূরের কথা এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাই মুশকিল হয়ে যাবে।’

দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে টাকা রেখে সঞ্চিত টাকা খুইয়েছেন নওগাঁ সদর, রাণীনগর, আত্রাই ও বদলগাছী উপজেলার অন্তত ৪০০ গ্রাহক। গ্রাহকের আমানতের ২২ কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির কর্মকর্তারা।

শুধু দোয়েল সমিতিই নয়; গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হচ্ছে অনেক সমিতি। এতে দরিদ্র মানুষ সমবায় সমিতির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার বদলে নিঃস্ব হচ্ছে। ভাঙছে তাঁদের স্বপ্ন।

একটি সরকারি অফিসে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন শহিদুল ইসলাম (৬৫)। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর পেনশন হিসেবে ৮ লাখ টাকা পান তিনি। দুই বছর আগে পেনশনের সমুদয় টাকা তিনি সুরমা মাল্টিপারপাস সমবায় সমিতি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রাখেন। প্রতি মাসে লাখে তিন হাজার টাকা করে মুনাফা দেওয়ার শর্তে তিনি ওই টাকা জমা রাখেন। টাকা জমা দেওয়ার পর থেকে প্রথম দিকে মাসে মাসে নিয়মিত লভ্যাংশ দিচ্ছিল। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সমিতির কর্মকর্তারা লভ্যাংশ দেওয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। এরমধ্যে গত মার্চ মাসে সমিতির নির্বাহী পরিচালক ছবেদুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা সমিতির কার্যালয়ে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। থানায় অভিযোগ করেও গত ৭ মাসেও সঞ্চিত টাকা ফেরত পানননি শহিদুল ইসলাম। একইভাবে ওই সমিতির চার শতাধিক গ্রাহকের অন্তত ৭০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সমিতির নির্বাহী পরিচালক ছবেদুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

মাদারগঞ্জ উপজেলার মাহফুজা বেগম। সত্তরোর্ধ্ব এই নারী লাঠিতে ভর দিয়ে এসেছেন টাকা আদায়ের মানববন্ধনে। ‘শতদল সমবায় সমিতি’তে রাখা টাকার জন্য ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। মাহফুজা বেগম বলেন, ‘৭০ হাজার টাকা তোলার কত চেষ্টা করলাম, তাও দিলো না। এখন আমার আছে শুধু এক আল্লাহ। আর কিছু নাই।’

একই অবস্থা সম্প্রতি বন্ধ হওয়া জগৎসিংপুর সূর্যমুখী বহুমুখী সমবায় সমিতির দুই শতাধিক গ্রাহকের। জগৎসিংহপুর এলাকার বাসিন্দা আকলিমা বিবি (৭০)। স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতার চার বছর ধরে ধাপে ধাপে জমা করেছিলেন ওই সমিতিতে। গত জুলাই মাসে সমিতির নির্বাহী পরিচালক মুকুল হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা রাতারাতি উধাও হয়ে যায়। এখন তিনি পাগল প্রায়।

আকলিমা বিবি বলেন, ‘সন্তান নাতি-নাতনিদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সূর্যমুখী সমবায় সমিতিতে টাকাগুলা জমা থুছিলাম। গত জুলাই মাসে হঠাৎ করে একদিন দেখি সমিতির অফিস তালা দেওয়া। পরিচালক মুকুল ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ নাই। মুকুলের বউ-ছাওয়ালও ভ্যাগে গেছে। এখন জমানো টাকা ফেরত ল্যাওয়ার জন্য থানা, ইউএনও অফিস ও ডিসি অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরোছি। কিন্তু কোনো কাম হছে না।’

শুধু আকলিমা, শহিদুল বা জাহিদুলই নয়, এমন হাজার হাজার মানুষের অন্তত ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমবায় সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তারা। সারাজীবনের কষ্টের টাকা হারিয়ে দিশেহারা মানুষগুলো। আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘পরিবারের জন্যই তো টাকা জমা রেখেছিলাম। এখন তো প্রয়োজনের সময় টাকা না পেয়ে আমার পরিবারই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর নওগাঁয় জেলায় আটটি সমবায় সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তারা গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দিয়ে হঠাৎ করে কার্যক্রম বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। ওই আটটি সমবায় সমিতি হচ্ছে, নওগাঁ সদর উপজেলায় সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, ডলফিন সমবায় সমিতি, জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি, বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন ও মেঘনা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, মহাদেবপুর উপজেলার ব্যতিক্রম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং মান্দা উপজেলার আল আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড। এসব সমবায় সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অন্তত পাঁচ হাজার গ্রাহকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। লাগাতার আন্দোলন ও মামলা করেও গ্রাহকেরা তাঁদের সঞ্চিত টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

আত্মগোপনে থাকা দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর থেকে সমিতির সদস্যরা সবাই একসঙ্গে আমানতের টাকা ফেরত চাইতে শুরু করে। সবাই একসঙ্গে জমা টাকা ফেরত চাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যাই। গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসিক ও স্থায়ী আমানত হিসেবে আমার সমতিতিতে প্রায় ২১ কোটি সঞ্চয় আছে। সেই টাকা থেকে ১৬ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ হিসেবে দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ঋণ দেওয়া আছে। সেই টাকা তুলতে না পারায় সদস্যদের টাকা ফেরত দিতে পারছি না। কিন্তু সদস্যরা তা মানতে চান না। টাকা না পেলে অনেকেই আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে গত শুক্রবার থেকে আমি আত্মগোপনে আছি। তবে প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তা দিলে আমি এলাকায় ফিরে আমার সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকদের সব টাকা ফেরত দেব। কারও টাকা আত্মসাৎ করব না।’

ভুক্তভোগীরা জানান, জেলা ও উপজেলা কার্যালয় থেকে সমবায় সমিতি হিসেবে নিবন্ধন নেওয়ার পর সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তা বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের প্রলুব্ধ করে অবৈধভাবে ব্যাংকের আদলে মাসিক ও বার্ষিক আমানত প্রকল্প, স্থায়ী বিনিয়োগ ও স্থায়ী আমানত নামে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে টাকা রাখতে শুরু করে। টাকা জমা রেখে গ্রাহকদের প্রতি মাসে মুনাফা দিতে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো। ধীরে ধীরে সমিতির গ্রাহকসংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানগুলো। এক সময় গ্রাহকদের আমানতের টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তারা।

নওগাঁ জেলা সমবায় সমিতি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর ১১টি উপজেলায় নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা ১ হাজার ৬২০টি। এর মাধ্যমে ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ৪৫০টি সমিতি।

গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে একের পর এক সমবায় সমিতির লাপাত্তা হওয়ার বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন নওগাঁর সাবেক সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, ‘প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সমবায় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অসর্তকর্তার কারণে এসব হচ্ছে। এতে নিরীহ ও অসহায় মানুষ সমবায় সমিতির খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে। এসব সমস্যা উত্তরণে নিবন্ধন দেওয়ার আগে আরও ভালো করে যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। নিবন্ধন দেওয়ার পর সমবায় কার্যালয়কে সমিতিগুলোকে ভালো করে মনিটরিং করতে হবে। এছাড়া প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদারকি বাড়াতে হবে।’

গ্রাহকের টাকা সমিতির লাপাত্তা হওয়ার বিষয়ে জেলা সমবায় কর্মকর্তা খোন্দকার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নওগাঁতে ৪৫০টির মতো ঋণদানকারী সমিতির কার্যক্রম বর্তমানে চলমান আছে। এর মধ্যে কয়েকটি সমবায় সমিতি সম্প্রতি গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে তাঁদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে এসব সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ও থানাতেও একাধিক মামলা চলমান আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকা উৎপাদনশীল খাতে না খাটিয়ে অনেক সময় সমিতির কর্মকর্তারা জমিজমা কিংবা বাড়ি-গাড়ি কিনে থাকেন। এসব করতে গিয়ে সমিতিগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সমিতি পরিচালনার কারণে গ্রাহকেরা যখন লভ্যাংশ কিংবা আমানতের টাকা ফেরত চান তখন তাঁদের টাকা দিতে পারছে না সমিতিগুলো। আগামীতে কোনো সমবায় সমিতি যাতে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চলতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানো হবে।’

Header Ad
Header Ad

জনগণ ও অর্থনীতির স্বার্থে ছাড় নয়, এনবিআর কর্মীদের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে—তাঁরা যেন অনতিবিলম্বে কর্মস্থলে ফিরে যান এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেন। সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, এর ব্যত্যয় হলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির স্বার্থে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকার বাধ্য হবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নকাজ পরিচালনায় প্রধান বাধা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। প্রয়োজনের তুলনায় রাজস্ব আহরণ কম হওয়ার জন্য সরকার এনবিআরের ভেতরে বিদ্যমান দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতিকে দায়ী করেছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার সকল অংশীজনের পরামর্শে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে সরকারের এই উদ্যোগে বাধা দিচ্ছেন এনবিআরের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। সরকার জানায়, বিগত দুই মাস ধরে কিছু ব্যক্তি অন্যায় ও অনৈতিকভাবে আন্দোলনের নামে আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। এমনকি অর্থবছরের শেষ দুই মাসে রাজস্ব আদায়ের গতি একেবারে স্থবির করে তুলেছেন তারা।

বিবৃতিতে সরকার এই আন্দোলনকে পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক বলে উল্লেখ করেছে, যা জাতীয় স্বার্থ ও সাধারণ নাগরিকের অধিকারের পরিপন্থী। সরকার আরও জানায়, আলোচনা ও দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা সংলাপে আসেননি বরং অনমনীয় ও হঠকারী আচরণে লিপ্ত থেকে চলেছেন দেশের অর্থনীতির ক্ষতির পথে।

জাতীয় স্বার্থে এবং অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে সরকার সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনসমূহের সব ধরনের চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস হিসেবে ঘোষণা করেছে।

বিবৃতির শেষাংশে সরকার আশা প্রকাশ করেছে, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে আইন মেনে দায়িত্ব পালন করবেন। তা না হলে জনস্বার্থে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ক্লাব বিশ্বকাপে আজ মেসির সামনে সাবেক ক্লাব পিএসজি

ছবি: সংগৃহীত

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে আজ রোববার (২৯ জুন) এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে লিওনেল মেসির বর্তমান ক্লাব ইন্টার মিয়ামি ও তার সাবেক ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ম্যাচটি শুরু হবে। এই ম্যাচ কেবল একটি কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করার লড়াই নয়, বরং এটি স্মৃতি, প্রতিশোধ ও ফুটবল ইতিহাসের এক আবেগঘন অধ্যায়।

২০২১ সালে বার্সেলোনা ছাড়ার পর মেসি যোগ দেন পিএসজিতে। যদিও সেখানে তিনি দুটি লিগ শিরোপা জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে সাফল্য পাননি এবং ক্লাব সমর্থকদের কাছেও ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিলেন অনিচ্ছিত এক নাম। শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালে মেজর লিগ সকারের (MLS) ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়ে নতুন করে শুরু করেন নিজের ফুটবল জীবন।

আজকের ম্যাচে মেসির সামনে দাঁড়াবে তার পুরনো ক্লাব পিএসজি এবং সাবেক কোচ লুইস এনরিকে। অন্যদিকে, ইন্টার মিয়ামিতে আছেন এনরিকেরই পুরোনো শিষ্যরা—মেসি, সুয়ারেজ, জর্দি আলবা ও সার্জিও বুস্কেটস। তাদের কোচ হিসেবে দায়িত্বে আছেন বার্সেলোনার আরেক প্রাক্তন তারকা হাভিয়ের মাশচেরানো। ফলে এই ম্যাচটি হয়ে উঠেছে একপ্রকার ‘বার্সেলোনা পুনর্মিলনী’র মঞ্চ।

 

  পিএসজি ও ইন্টার মিয়ামি। ছবি: সংগৃহীত

এই ম্যাচের আরেকটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট হচ্ছে ২০১৭ সালের সেই ‘রিমোন্তাদা’ ম্যাচ, যেখানে মেসি-সুয়ারেজ-বুস্কেটসদের হাত ধরে বার্সেলোনা ৪-০ গোলের ঘাটতি পুষিয়ে ৬-১ গোলে হারিয়েছিল পিএসজিকে। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে ফরাসি ক্লাবটিকে। এবার সেই ইতিহাস কি আবার লেখা হবে?

পিএসজি এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করে আত্মবিশ্বাসী হলেও গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের বোটাফোগোর কাছে হেরে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। তাদের সম্ভাব্য একাদশে থাকছেন দোনারুম্মা, হাকিমি, মারকিনিয়োস, পাচো, মেন্দেস, রুইজ, ভিতিনহা, নেভেস, কভারাত্সখেলিয়া, রামোস ও দুয়ে। অন্যদিকে, ইন্টার মিয়ামি পোর্তোর বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে শেষ ষোলোতে উঠে এসেছে। তাদের সম্ভাব্য একাদশে থাকছেন উস্তারি, ওয়েগান্দত, অ্যাভিলেস, ফ্যালকন, অ্যালেন, আয়েন্দে, রেদোন্দো, বুস্কেটস, সেগোভিয়া, মেসি ও সুয়ারেজ।

ম্যাচটির দিকে তাই শুধু সমর্থকরাই নয়, পুরো ফুটবল দুনিয়ার নজর। কারণ এই ম্যাচের প্রতিটি মিনিটে থাকবে ইতিহাস, আবেগ আর ‘নিরব প্রতিশোধ’-এর উত্তাপ।

Header Ad
Header Ad

অ্যান্টি-এজিং ওষুধেই মৃত্যু? রহস্যে ঢাকা শেফালি জারিওয়ালার অকালপ্রয়াণ

শেফালি জারিওয়ালা। ছবি: সংগৃহীত

বাহ্যিক সৌন্দর্য রক্ষায় এবং তারকাখ্যাতি ধরে রাখতে শোবিজের মানুষদের নিরন্তর প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয়। নিয়মিত ব্যায়াম, স্কিন ট্রিটমেন্ট থেকে শুরু করে বয়স লুকানোর ওষুধ—সবই যেন তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। ঠিক এমনই চর্চার মধ্যেই ছিলেন ভারতীয় মডেল ও অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা। তবে এবার গুঞ্জন উঠেছে, অ্যান্টি-এজিং ওষুধ গ্রহণ করাই হয়তো তার অকালমৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪০ বছর বয়সী শেফালি গত এক বছর ধরে যৌবন ধরে রাখতে বিশেষ চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এতে নিয়মিত ব্যবহার করা হতো ভিটামিন সি ও গ্লুটাথিয়নের মতো উপাদান, যা মূলত ত্বক উজ্জ্বল করা ও শরীর ডিটক্সিফাই করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে 'কসমেটিক ট্রিটমেন্ট' বলা হলেও অনেকে সন্দেহ করছেন, শরীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে এই ধরনের ওষুধ।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতের দিকে, যখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শেফালি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। এখনো মৃত্যুর সঠিক কারণ জানানো না হলেও, বয়স কমানোর ওষুধ এবং অ্যান্টি-এজিং চিকিৎসা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা।

 

শেফালি জারিওয়ালা। ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসকরা বলছেন, গ্লুটাথিয়ন সাধারণত হৃদযন্ত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলে না। তবে যেকোনো ধরনের ওষুধ শরীরে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অননুমোদিত বা নিয়মবহির্ভূত মাত্রায় গ্রহণ করলে তা বিপজ্জনক হতে পারে।

শোবিজে ক্যারিয়ারের শুরুতে মডেলিং করেই খ্যাতি অর্জন করেন শেফালি। প্রায় ৩৫টি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন তিনি। বলিউডে অভিষেক হয় ২০০৪ সালে ‘মুঝসে শাদি করোগে’ ছবির মাধ্যমে, যেখানে তিনি ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি ‘কাঁতা লাগা গার্ল’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।

শেফালির মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক সহকর্মী ও ভক্তরা সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে লিখেছেন—"সৌন্দর্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে জীবনটাই চলে গেল!"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জনগণ ও অর্থনীতির স্বার্থে ছাড় নয়, এনবিআর কর্মীদের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা
ক্লাব বিশ্বকাপে আজ মেসির সামনে সাবেক ক্লাব পিএসজি
অ্যান্টি-এজিং ওষুধেই মৃত্যু? রহস্যে ঢাকা শেফালি জারিওয়ালার অকালপ্রয়াণ
উত্তরায় হোটেল দখলের চেষ্টা, ‘মব সৃষ্টি’র ঘটনায় আটক ৯ জন
সান্তাহারে কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটার সময় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত যুবক
ভিজিট ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ সৌদি প্রবাসীদের জন্য সুখবর
আ.লীগ নেতার অপকর্ম বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে: রিজভী
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ বাতিল করল সরকার
ঢাকায় বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার
সরকার ব্যর্থ হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
উত্তরায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের ওপর উঠে গেলো ট্রাক, নিহত ৩
আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানের ১৩ সেনাকে হত্যা করেছে ভারত!
৫ বছর পর মেসির পারিশ্রমিক পরিশোধ করল বার্সেলোনা
দুপুরের মধ্যেই ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
বাকৃবি ডিবেটিং সংঘের সভাপতি অধ্যাপক খায়রুল, সম্পাদক শুভ্র
কুমিল্লায় আলোচিত ধর্ষণের মামলার মূলহোতা গ্রেফতার
কুমিল্লায় ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেফতার ৩
গাজায় ইসরাইলি হামলা, ২৪ ঘণ্টায় ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত
ড. ইউনূসের জন্মদিনে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা
পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ